Ajker Patrika

আমাদের বক্তব্য উপেক্ষা করা হলে পরিণাম শুভ হবে না: সালাহউদ্দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
সিলেট বিভাগে বিএনপির ‘সদস্য ফরম সংগ্রহ/নবায়ন কর্মসূচি’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। আজ সোমবার বিকেলে নগরের শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিলেট বিভাগে বিএনপির ‘সদস্য ফরম সংগ্রহ/নবায়ন কর্মসূচি’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। আজ সোমবার বিকেলে নগরের শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে। ছবি: আজকের পত্রিকা

অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘আমরা কথা বললে অন্তর্বর্তী সরকার বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখায়। আর নির্বাচনের কথা বললে আরও বেশি অস্বস্তি প্রকাশ করে।’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই—যত দ্রুত সম্ভব, জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করুন। সেটাই ছিল আপনাদের প্রতিশ্রুতি। আমরা নম্রভাবে কথা বললেও সেটিকে দুর্বলতা ভাববেন না। আমাদের বক্তব্য উপেক্ষা করা হলে পরিণাম শুভ হবে না।’

আজ সোমবার বিকেলে সিলেট নগরের টিভি গেট এলাকায় শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বিভাগের বিএনপির ‘সদস্য ফরম সংগ্রহ/নবায়ন কর্মসূচি’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সালাহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন। তিনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘উপদেষ্টারা যেভাবে অগণতান্ত্রিক ভাষায় কথা বলছেন এবং যেসব সমস্যার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন, আমরা সেগুলোর তথ্য দিয়েছি। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। আদালতের রায়ে নির্বাচিত মেয়র ইশরাক হোসেনকে এখনো শপথ নিতে দেওয়া হয়নি। আইন ও গেজেট তোয়াক্কা না করে শাসন কেমন চলছে, তা আমরা দেখছি। এতে মনে হয়, আমরা যেন কোনো দাসখত দিয়ে দিয়েছি, আপনি যা বলবেন, সেটাই পালন করতে হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলছি—শপথের ব্যবস্থা করুন, অন্যথায় আন্দোলনের তীব্রতা আরও বাড়বে।’

‘সংস্কারের ফল পেতে নির্বাচিত সংসদের বিকল্প নেই’ উল্লেখ করে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের এই সদস্য আরও বলেন, ‘আমরা সেই কথা (নির্বাচনের) বললে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার খুব নারাজ হয়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের দাবি করবে না তো কী করবে? আপনারাই বলে দেন? বর্তমান বিশ্বে গণতান্ত্রিকভাবে শাসনব্যবস্থার জন্য নির্বাচনের বিকল্প নাই। সেই নির্বাচনের কথা বললে তাঁরা খুব গোস্বা হন। অনেক উপদেষ্টা আছেন, যাঁরা বলছেন, তাঁরা নাকি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত, গণ-অভ্যুত্থান নাকি তাঁদের নির্বাচিত করেছে।’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘একজন নবীন উপদেষ্টা বলেছেন, আমি নাম বলতে চাই না। তাঁরা যদি সেভাবে নির্বাচিত হয়ে যান, তাহলে বাংলাদেশে নির্বাচনব্যবস্থা আছে কেন? ইলেকশন কমিশনের কাজ কী? আমরা যারা ভোটার লিস্টে অন্তর্ভুক্ত হতে চাই, ভোটদান করতে চাই, যার জন্য দীর্ঘ ১৭ বছর সংগ্রাম রক্ত দিলাম, তাহলে এগুলোর তো কোনো দরকার নাই। তাঁরা অনির্বাচিতভাবে যত দিন খুশি অনির্দিষ্টকাল ক্ষমতা ভোগ করার জন্য স্বপ্ন দেখছে কেউ কেউ।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেছি, এখনো করব, আপনি যত শিগগির সম্ভব বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিন। এতে আপনার সম্মান রক্ষা হবে। দেশের মানুষ আশ্বস্ত হবে। দেশের মধ্যে একটি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা সৃষ্টি হবে। দেশে বিনিয়োগের জন্য একটা পরিবেশ সৃষ্টি হবে। দেশে-বিদেশে বিনিয়োগ আসবে। আমরা বাংলাদেশের মানুষ এটাই চাই।’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। রক্তাক্ত গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে, রক্তভেজা তারুণ্যের রক্তভেজা রাজপথে বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করেছে। ইতিহাসে বর্বরতম খুনি, স্বৈরশাসক, ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যাকারী, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে মৃত্যু হয়েছে আওয়ামী লীগের।’

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘অনেক নেতা অনেক কথা বলেছেন। অনেক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপিতে কি খরা পড়েছে যে আওয়ামী লীগ থেকেও সদস্য টানতে হবে? যে আওয়ামী লীগের রক্তে গণতন্ত্র নাই। যারা একবার আওয়ামী লীগের পতাকাতলে গেছে, তাদের কেন আপনাকে আহ্বান জানাতে হবে?’

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) জি কে গউছের সভাপতিত্বে ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ এম রাসেদুজ্জামান মিল্লাত। সম্মানিত অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, আরিফুল হক চৌধুরী ও এম এ মালিক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসমবায়বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আক্তার।

সিলেট জেলা ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা নুরুল হকের কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সভার সূচনা হয়। এরপর বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরে দায়িত্বে) তারিকুল আলম তেনজিন ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদ, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি আহ্বায়ক ফজলুল করিম ময়ুন, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচনী সমঝোতা: এখনো হিসাব মেলাচ্ছে জামায়াত ও এনসিপি

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ গুদামে তালাবদ্ধ কম্বল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যার বিচার দাবিতে আবারও শাহবাগ মোড়ে ইনকিলাব মঞ্চ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইনকিলাব মঞ্চ শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইনকিলাব মঞ্চ শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির কবর জিয়ারত করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। কবর জিয়ারত শেষে তারেক রহমান শাহবাগ এলাকা থেকে চলে আসার পর বেলা ১২টায় হাদি হত্যার বিচার চেয়ে আবারও শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।

আজ শনিবার সকাল ১১টার দিকে তারেক রহমানের শাহবাগে আসা উপলক্ষে ইনকিলাব মঞ্চ শাহবাগ মোড় থেকে পার্শ্ববর্তী পশ্চিম দিকে সাময়িক অবস্থান নেয়। এরপরে তাঁর কবর জিয়ারত শেষ হলে পুনরায় শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয় ইনকিলাব মঞ্চ। এ সময় স্লোগানে স্লোগানে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শাহবাগ চত্বর।

ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য মুন্সি বোরহান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা ১২টার সময়ে আবারও শাহবাগ মোড়ে এসেছি হাদির হত্যার বিচার চাইতে। তারেক রহমান হাদির কবর জিয়ারত করতে আসায় আমরা সাময়িক সময়ের জন্য শাহবাগের পশ্চিম দিকে একটি পাশে অবস্থান নিয়েছিলাম।’

আজ শনিবার বেলা ১১টা ১৬ মিনিটে শাহবাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে শায়িত শরিফ ওসমান বিন হাদির কবর জিয়ারত করেন তারেক রহমান। ওসমান হাদির কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দোয়া ও মোনাজাত করেন তিনি। এরপর সেখানে শায়িত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরেও শ্রদ্ধা জানান ও জিয়ারত করেন।

গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর হাদি হত্যার বিচার দাবি শাহবাগে অবস্থান নেয় ইনকিলাব মঞ্চ। রাতভর অবস্থানের পর সকাল ১১টার আগে শাহবাগ মোড় ছেড়ে একদিকে সরে যান অবস্থান কর্মসূচি পালনকারীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচনী সমঝোতা: এখনো হিসাব মেলাচ্ছে জামায়াত ও এনসিপি

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ গুদামে তালাবদ্ধ কম্বল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতের চেয়েও কাজ না পাওয়ার কষ্ট বেশি

­­­নওগাঁ প্রতিনিধি
কাজের অপেক্ষায় বসে আছেন কয়েকজন শ্রমজীবী। ছবি: আজকের পত্রিকা
কাজের অপেক্ষায় বসে আছেন কয়েকজন শ্রমজীবী। ছবি: আজকের পত্রিকা

নওগাঁয় গত কয়েক দিনে ক্রমান্বয়ে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। দিনের বেশির ভাগ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না। ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ। শীত উপেক্ষা করে কাজে বেরিয়েও অনেককে কাজ না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে খালি হাতে।

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কয়েক দিন ধরে ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে পুরো এলাকা। তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে। কুয়াশা ও হিমেল বাতাসের কারণে প্রয়োজন ছাড়া মানুষ খুব একটা ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।

সরেজমিনে দেখা যায়, কাকডাকা ভোরে কাজের সন্ধানে গ্রাম থেকে এসে মুক্তির মোড়, ব্রিজের মোড় ও শিবপুর ব্রিজ (বাইপাস) এলাকায় জড়ো হয়েছেন দিনমজুরেরা। জীবিকার তাগিদে আসা এসব শ্রমজীবীর সঙ্গে থাকে মাটি কাটার ঝুড়ি ও কোদাল। কিন্তু একদিকে শীতের কষ্ট, অন্যদিকে কাজ না পাওয়ার হতাশা—দুইয়ের বোঝা নিয়েই অনেককে ফিরতে হচ্ছে বাড়ি।

মুক্তির মোড়ে বসে থাকা ৭০ বছর বয়সী আবুল কাশেম বলেন, ‘কয়েক দিন শীত কম ছিল। এখন হঠাৎ খুব শীত পড়েছে, সঙ্গে বাতাস। এই শীতে ঘর থেকে বের হওয়াই কষ্ট। তারপরও পেটের দায়ে কাজে আসতে হয়। সর্দি-কাশি লেগেই থাকছে। আয় কমে যাওয়ায় খুব বিপদে আছি।’

আরেক শ্রমজীবী তছলিম বলেন, ‘ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে সাইকেল চালিয়ে কাজে এলে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়। গরিব মানুষ, কাজ না করলে চলবে না। শীতে যত কষ্টই হোক, বের হতে হয়। কিন্তু গত দুই দিন কোনো কাজই পাইনি।’

ব্রিজের মোড়ে কাজের অপেক্ষায় থাকা ৬৫ বছর বয়সী হাজের আলী বলেন, ‘আমাদের কাজ রোদ-বৃষ্টি সবকিছুর ওপর নির্ভর করে। শীত পড়ার পর থেকেই কাজ কমে গেছে। পারিশ্রমিক কম হলেও যা পাই তা-ই করি। কেউ কাজ পায়, কেউ পায় না। কাজ না পেলে কোদাল-ঝুড়ি নিয়ে বাড়ি ফিরে বসে থাকতে হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচনী সমঝোতা: এখনো হিসাব মেলাচ্ছে জামায়াত ও এনসিপি

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ গুদামে তালাবদ্ধ কম্বল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুয়াশায় যমুনায় আটকা বর-কনেসহ ৪৭ যাত্রীর নৌকা, ১৫ ঘণ্টা পর উদ্ধার

জামালপুর প্রতিনিধি 
বরযাত্রীবাহী নৌকাটি আজ দুপুর ১২টার দিকে মাদারগঞ্জের জামথল ঘাটে নিরাপদে পৌঁছায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরযাত্রীবাহী নৌকাটি আজ দুপুর ১২টার দিকে মাদারগঞ্জের জামথল ঘাটে নিরাপদে পৌঁছায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামালপুরের মাদারগঞ্জে ঘন কুয়াশার কারণে যমুনা নদীতে বর-কনেসহ ৪৭ জন যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা প্রায় ১৫ ঘণ্টা আটকে থাকার পর উদ্ধার হয়েছে। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে বগুড়া থেকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মাদারগঞ্জে ফেরার পথে যমুনা নদীর মাঝখানে নৌকাটি দিক হারিয়ে আটকে পড়ে। শনিবার দুপুরে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় নৌকাটি নিরাপদে ঘাটে পৌঁছায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদারগঞ্জ উপজেলার তারতাপাড়া গ্রামের সানোয়ার হোসেনের ছেলে নিলয় হাসানের (২০) সঙ্গে বগুড়া শহরের সাবগ্রাম এলাকার এক তরুণীর বিয়ে হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বর-কনেসহ ৪৭ জন যাত্রী নিয়ে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কালীতলা ঘাট থেকে একটি বড় নৌকা মাদারগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেয়।

রাত ৯টার দিকে যমুনা নদীর মাঝখানে ঘন কুয়াশার কারণে নৌকার চালক দিক হারিয়ে ফেলেন। একপর্যায়ে নৌকাটি মাঝনদীতে নোঙর করে অবস্থান নেয়। পরে রাত ১১টার দিকে যাত্রীরা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে সহায়তা চান।

বর-কনেসহ উদ্ধার হওয়া ৪৭ জন যাত্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা
বর-কনেসহ উদ্ধার হওয়া ৪৭ জন যাত্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা

খবর পেয়ে মাদারগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধার তৎপরতা শুরু করলেও কুয়াশার তীব্রতার কারণে রাতে নদীতে নামা সম্ভব হয়নি। শনিবার সকালে কুয়াশা কিছুটা কমলে ফায়ার সার্ভিস স্থানীয় মাঝিদের সহযোগিতায় উদ্ধারকারী নৌকা পাঠায়। সকাল ৯টার দিকে আটকে পড়া নৌকার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে যাত্রীদের নিয়ে নৌকাটি দুপুর ১২টার দিকে মাদারগঞ্জের জামথল ঘাটে নিরাপদে পৌঁছায়।

উদ্ধার হওয়া বর নিলয় হাসান বলেন, ‘ঘন কুয়াশার কারণে মাঝি কিছুই দেখতে পাচ্ছিল না। নারী ও শিশুসহ সবাই আতঙ্কে ছিল। সারা রাত তীব্র শীতের মধ্যে নদীর মাঝে কাটাতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সবাই সুস্থভাবে ফিরতে পেরেছি, আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচনী সমঝোতা: এখনো হিসাব মেলাচ্ছে জামায়াত ও এনসিপি

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ গুদামে তালাবদ্ধ কম্বল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গতকাল রাত ৯টার দিকে সাংস্কৃতিক পর্ব চলাকালে হামলা চালায় বহিরাগত ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল রাত ৯টার দিকে সাংস্কৃতিক পর্ব চলাকালে হামলা চালায় বহিরাগত ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনীর সমাপনী দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বহিরাগতদের হামলায় পণ্ড হয়েছে। সেখানে দেশবরেণ্য সংগীতশিল্পী নগরবাউল জেমসের গান গাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জেমস মঞ্চে পৌঁছার আগেই বহিরাগতদের হামলা ও ইটবৃষ্টির মুখে শেষ পর্যন্ত কনসার্টটি বাতিল ঘোষণা করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। এতে শিক্ষার্থী ও আয়োজকসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।

স্কুলের পুনর্মিলনী উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার থেকেই সাজসাজ রব ছিল ফরিদপুর শহরে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক পর্ব। সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে নগরবাউল জেমস তাঁর দল নিয়ে ফরিদপুর পৌঁছান এবং স্থানীয় একটি গেস্ট হাউসে বিশ্রাম নেন।

রাত ৯টায় অনুষ্ঠানের র‍্যাফল ড্র চলাকালে জিলা স্কুলের মূল ফটকের বাইরে অবস্থান নেওয়া কয়েক হাজার মানুষ ভেতরে প্রবেশের জন্য প্রবল চাপ সৃষ্টি করে।

রাত ৯টা ৩০ মিনিটে ভেতরে ঢুকতে না পেরে একদল যুবক সীমানাপ্রাচীর টপকে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে স্বেচ্ছাসেবকেরা বাধা দেন। এর পরপরই মুজিব সড়ক ও স্কুলের চারপাশ থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়।

রাত ১০টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। হামলাকারীরা প্রাচীর ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে এবং অনবরত ইট মারতে থাকে। এতে অনুষ্ঠানস্থলে থাকা শিক্ষার্থী ও দর্শকদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

আনিসুর রহমান সজল নামে একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা প্রায় ৪ হাজার ৫০০ জন নিবন্ধিত সদস্য ভেতরে উৎসব করছিলাম। কিন্তু জেমস আসার খবরে বাইরে ২০-২৫ হাজার মানুষ জড়ো হয়। হঠাৎ বৃষ্টির মতো বড় বড় ইট এসে আমাদের ওপর পড়তে থাকে। সাউন্ড সিস্টেমের মনিটর ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। অদ্ভুত বিষয় হলো, পরিস্থিতি যখন হাতের বাইরে চলে যাচ্ছিল, তখনো পুলিশ নীরব ছিল।’

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত প্রস্তুতি থাকলে এমন সহিংসতা এড়ানো যেত। তাঁরা অভিযোগ করেন, বড় কোনো আয়োজনে যে ধরনের নিরাপত্তা বলয় থাকা প্রয়োজন ছিল, এখানে তার ছিটেফোঁটাও ছিল না।

এদিকে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আয়োজক কমিটির অদূরদর্শিতাকেই দায়ী করেছেন জেমস। নগরবাউলের মুখপাত্র রুবাইয়াৎ ঠাকুর রবিন গণমাধ্যমকে বলেন, " ‘আমরা কনসার্ট করার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশৃঙ্খলা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে আয়োজকেরা আমাদের ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। এটি আয়োজকদের স্পষ্ট অব্যবস্থাপনা।’ জেমস নিজেও ব্যক্তিগতভাবে একে আয়োজকদের ব্যর্থতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুলের ভেতরের ধারণক্ষমতার চেয়ে বাইরে অন্তত দশগুণ মানুষ জমায়েত হয়েছিল। জিলা স্কুলের ভেতরের প্রাঙ্গণে এত বিশাল জনসমুদ্র সামলানো অসম্ভব ছিল। বহিরাগতদের বাধা দিতে গেলেই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।’

পুনর্মিলনী উদ্‌যাপন পরিষদের আহ্বায়ক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান শামীম বলেন, ‘নিরাপত্তার খাতিরেই আমরা অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেছি। আমাদের অনেক ছোট ছোট শিক্ষার্থী ও প্রবীণ সদস্যরা আহত হয়েছেন। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’

বর্তমানে ফরিদপুর জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয়দের মতে, জেমসের মতো শিল্পীর অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে শহরের প্রাণকেন্দ্রে জিলা স্কুলের মতো ছোট জায়গা বেছে নেওয়াটাই ছিল আয়োজকদের প্রথম ভুল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচনী সমঝোতা: এখনো হিসাব মেলাচ্ছে জামায়াত ও এনসিপি

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ গুদামে তালাবদ্ধ কম্বল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত