Ajker Patrika

পঞ্চগড়ে সংঘর্ষ: এখনো খোলেনি বিদ্যালয়, অনেকেই থাকছেন মসজিদে ও শিক্ষালয়ে

সাইফুল আলম বাবু, পঞ্চগড়
আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৩, ০০: ০২
পঞ্চগড়ে সংঘর্ষ: এখনো খোলেনি বিদ্যালয়, অনেকেই থাকছেন মসজিদে ও শিক্ষালয়ে

অটোতে ব্যবসার মালামাল নিয়ে পঞ্চগড় শহর থেকে যাচ্ছিলেন আহমদনগর বাজারের দোকানদার আনোয়ার হোসেন (৪৫)। তার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের আহমদনগর এলাকায়। বললেন, আহমদনগরে বাড়ি হলেও তার বাড়িতে দুষ্কৃতকারীরা হামলা বা অগ্নিসংযোগ করেনি। জানতে চাইলে বলেন, প্রতিবেশী আহমদিয়াদের প্রায় সব বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। সব বাড়িরই প্রায় সবকিছু পুড়েছে। আহমদিয়া না হলেও তাঁর জন্ম এখানে জানিয়ে বলেন, এমন বীভৎস দৃশ্য কখনো দেখেননি। তার মতে এমন ‘অপকর্ম’ ঠিক হয়নি।

গ্রাহকের চাহিদা থাকায় শুক্রবারের পরে রোববার দোকান খুলেছেন। দোকানে শাকসবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক জিনিসই আছে। তবে বেচাকেনা প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। আগে যেখানে প্রতিদিন ৭-৮ হাজার টাকা বেচাকেনা হতো সেখানে এখন হয় ২ বা আড়াই হাজার টাকা। এরপরও দোকান আগেভাগেই বন্ধ করে দিতে হয় নিরাপত্তার আশঙ্কায়। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হোক এমন চাওয়া তার।

আহমদনগরে ঢুকতে সড়কের পাশে একটি বাড়ির মাহমুদ আহমদ সুমন (৪৬) বলেন, বাড়ির সবাই ছিল জলসায়। এতে দুষ্কৃতকারীরা লুটপাট করে বাড়িতে আগুন দেয়। এতে প্রতিটি ঘরের ওপরের টিনের চালাগুলো বিনষ্ট হয়ে গেছে। নতুন করে ঠিক না করা পর্যন্ত এগুলোতে বসবাস করা যাবে না। বাড়িতে ১০টি ঘর ছিল। কিছুদিন আগে তার মা ভারতে গিয়ে সেখান থেকে আত্মীয়স্বজনদের জন্য নানা উপহার সামগ্রী আনেন। জলসা উপলক্ষে ভোজনেরও আয়োজন ছিল। বাড়িতে প্রায় ২০ জনের মতো অতিথি ও তাদের কাপড়-চোপড়সহ নানা উপকরণ ছিল। সব এক নিমেষেই যেন হারিয়ে গেল। শনিবার সবার পরনের কাপড় ছাড়া অবশিষ্ট কিছু ছিল না। তিনি নিজেও দুইদিন এক কাপড়েই দিন কাটান বলে জানান। 

আগুনে পুড়ে যাওয়া আহমদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়আহমদ সুমন বলেন, ‘সবাই আল্লাহর নামে সবকিছু করেছে, অথচ আল্লাহভীতি কারও মধ্যে ছিল না। থাকলে এমন অমানবিক কাজ করতে পারত না। বাড়িটি বসবাসের উপযোগী না হওয়ায় মা-বাবাকে বীরগঞ্জে বোনের বাড়িতে পাঠিয়ে নিজে থাকেন মসজিদে।’

জামেয়া আহমদিয়া বাংলাদেশ নামে আহমদিয়াদের ধর্মীয় শিক্ষালয়ে থাকেন নুর ইসলামের স্ত্রী রেজিয়া বেগম (৫৫)। গত শুক্রবারের হামলায় তিনিসহ প্রায় সবাই জলসায় ছিলেন জানিয়ে রেজিয়া বেগম বলেন, বাড়িতে তিনটি ব্যাগে কাপড়, ঘরে ধান, কাপড় জমির প্রয়োজনীয় দলীলসহ ঘরবাড়ি পুড়িয়ে শেষ করে দিয়েছে। এখন বাড়িটি দেখায় কঙ্কালের মতো। দিনের বেলা বাড়িঘর দেখতে গেলেও রাতে থাকতে হয় শিক্ষালয়ে।

নিরাপত্তা নিশ্চিতে এখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থানআহমদিয়াদের সূত্রে জানা গেছে, এখনো প্রায় ২০০ পরিবার আহমদিয়া বিভিন্ন শিক্ষালয়, মসজিদে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছেন। তিন বেলা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে সম্প্রদায় থেকে। তবে ঘর পুনর্নির্মাণ বা মেরামতে এখনো কেউ হাত দেননি আবারও হামলার আতঙ্কে। তবে আগামীকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ত্রাণ সহায়তা পেয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন বলে অনেকেই জানিয়েছেন। রেলপথমন্ত্রী এ ত্রাণসহায়তা বিতরণ করবেন বলে জানা গেছে।

দুষ্কৃতকারীদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি আহমদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়টিও। বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাবসহ বেশ কয়েকটি কক্ষ আগুনে ঝলসে দেওয়া হয়। এতে লোহার তৈরি বেঞ্চগুলোও এবড়োখেবড়ো-থেবড়ে হয়ে গেছে। স্থানীয়দের ধারণা গান পাউডার দিয়ে এসব পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নয়তো সাধারণ আগুনে এসব পুড়ত না। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীও আসছেন। প্রথম দিন সোমবার ১৫ জন ও গতকাল ২০ জনের মতো শিক্ষার্থী এসেছে। হয়তো ধীরে ধীরে শিক্ষার্থী বাড়বে বলে জানিয়েছেন আহমদনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুয়েল প্রধান।

জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে পাঠানো হয়েছে। এখনো কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। তবে, আগামীকাল বুধবার রেলপথমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করবেন। পরে নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এনসিপির হান্নান মাসউদকে হত্যার হুমকি: যুবক গ্রেপ্তার

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার করা ইসরাত রায়হান অমি। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার করা ইসরাত রায়হান অমি। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে শাপলা কলি প্রতীকের সংসদ সদস্য প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদ এবং তাঁর কর্মীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার যুবকের নাম ইসরাত রায়হান অমি। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাতিয়া উপজেলার চরইশ্বর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দরোড এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানায়, ইসরাত রায়হান অমি চরইশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদের ছেলে। তাঁর বিরুদ্ধে হাতিয়া থানায় তিনটি মামলা রয়েছে।

পুলিশের তথ্যমতে, শুক্রবার রাতে ইসরাত রায়হান অমি এনসিপির এক কর্মীর কাছে মেসেঞ্জারে উসকানিমূলক বার্তা পাঠান। ওই বার্তায় তিনি লেখেন, আব্দুল হালিম আজাদকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হলে হান্নান মাসউদ, তানভীরসহ অন্য নেতাদের হাতিয়ার উত্তরাঞ্চলে চলাচল ‘হারাম’ করে দেওয়া হবে। বার্তায় আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আমাদের নেতা-কর্মীরা সরাসরি গিলে খেয়ে ফেলবে।’

এ বিষয়ে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, অভিযান চালিয়ে ইসরাত রায়হান অমিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া চলমান। তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বা সরাসরি উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করবে, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বকশীগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় রুপিসহ যুবক আটক

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি 
আটক করা যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা
আটক করা যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামালপুরের বকশীগঞ্জে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ভারতীয় রুপিসহ মো. আসাদ (৩০) নামের এক যুবককে আটক করেছেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্যরা। আটক আসাদ উপজেলার ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের বালুগাঁও গ্রামের আবু হোসেনের ছেলে। গতকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে কামালপুর সীমান্তবর্তী সাতানীপাড়া এলাকার ১০৮৬ নম্বর পিলারের কাছ থেকে তাঁকে আটক করা হয়। পরে রাতেই তাঁকে বকশীগঞ্জ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ সময় তাঁর কাছে থাকা ভারতীয় ১৮ হাজার রুপি উদ্ধার করেন সাতানীপাড়া বর্ডার আউটপোস্টের (বিওপি) বিজিবি সদস্যরা।

জামালপুর ৩৫ বিজিবির সাতানীপাড়া বিওপি সূত্রে জানা গেছে, গোপন খবরের ভিত্তিতে সাতানীপাড়া বিওপির বিজিবির নায়েব সুবেদার ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে টহল দল অভিযান পরিচালনা করেন। একপর্যায়ে ভারতীয় রুপি বহনকারী মো. আসাদকে আটক করা হয়।

সাতানীপাড়া বিওপির বিজিবির নায়েব সুবেদার ইসমাইল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ১৮ হাজার ভারতীয় রুপিসহ আসাদ নামের এক যুবককে আটক করা হয়েছে। তাঁকে বকশীগঞ্জ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মকবুল হোসেন বলেন, আটক আসাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাইড্রোসেফালাসে আক্রান্ত আয়শার চিকিৎসা বন্ধ, অর্থাভাবে মানবেতর জীবন

কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি 
শিশু আয়শাকে কোলে নিয়ে বসে আছেন তার মা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিশু আয়শাকে কোলে নিয়ে বসে আছেন তার মা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি পাগলাটারী গ্রামের আশেক আলী ও সুমি বেগম দম্পতির আট বছর বয়সী মেয়ে আয়শা সিদ্দিকা হাইড্রোসেফালাস রোগে আক্রান্ত হয়ে চরম দুর্ভোগের জীবন কাটাচ্ছে। জন্মের পর থেকেই অস্বাভাবিকভাবে বড় হতে থাকে তার মাথা। দারিদ্র্যের কারণে দীর্ঘদিন ধরে তার চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, আয়শার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন প্রায় ১০ লাখ টাকা। তবে দরিদ্র এই পরিবারের সবটুকু সম্বল ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। ফলে অর্থের অভাবে বর্তমানে শিশুটির চিকিৎসা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এতে অস্বাভাবিক বড় মাথা ও তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করছে ছোট্ট আয়শা।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ওই দম্পতির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আয়শা বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে। মাথার ওজন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সে নিজে নড়াচড়া করতে পারে না। প্রস্রাব-পায়খানা করাতে হলে দুজন তাকে ধরতে হয়।

আয়শার মা সুমি বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ের মাথার ওজন এতটাই বেড়ে গেছে যে একা ধরে রাখা যায় না। নাকে মাংস বেড়ে যাওয়ায় ঠিকমতো শ্বাসও নিতে পারে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে ডাক্তারের পরামর্শে মেয়েকে ঢাকায় নিয়ে গিয়েছিলাম। চিকিৎসক অপারেশনের কথা বলেছেন। অপারেশনে খরচ হবে প্রায় ৭ লাখ টাকা, অন্যান্য খরচসহ প্রায় ১০ লাখ টাকা লাগবে। এত টাকা আমাদের সামর্থ্যের বাইরে। তাই মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসতে হয়েছে।’

জানা যায়, প্রায় চার বছর আগে একটি জাতীয় দৈনিকে (নয়া দিগন্ত) আয়শার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে দুজন প্রবাসী ব্যক্তি ৩৫ হাজার টাকা সহায়তা করেছিলেন। সেই অর্থে কিছুদিন চিকিৎসা চললেও পরে আর তা সম্ভব হয়নি।

আয়শার বাবা আশেক আলী ও মা সুমি বেগম বলেন, ‘দেশের কোনো বিত্তবান কিংবা প্রবাসী মানবিক মানুষ যদি সহযোগিতার হাত বাড়ান, তাহলে আমাদের অবুঝ শিশুটির চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারতাম।’

এলাকাবাসীও আয়শার চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবান ও মানবিক ব্যক্তিদের সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সবজি গ্রামে শীতকালীন চাষে ব্যস্ত গোপালগঞ্জের কৃষকেরা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোপালগঞ্জের ‘সবজি গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত সদর উপজেলার রঘুনাথপুর, সিলনা ও গুয়াধানা এবং টুঙ্গীপাড়া উপজেলার রুপাহাটি, গোপালপুর, মিত্রডাঙ্গা ও বন্যাবাড়ি গ্রামের কৃষকেরা শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মৌসুমভেদে সারা বছরই এসব গ্রামের কৃষকেরা নানা ধরনের শাকসবজি আবাদ করে থাকেন।

চলতি শীত মৌসুমে জমি ও মাছের ঘেরপাড়ে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, টমেটো, ব্রকলিসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন কৃষকেরা। নিজেদের কষ্টার্জিত বিষমুক্ত ও বালাইমুক্ত নিরাপদ সবজি বাজারে নিয়ে বিক্রি করে ভালো আয় করছেন তাঁরা। উৎপাদন ভালো হওয়ায় এবং বাজারে ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় কৃষকদের সংসারে ফিরছে সচ্ছলতা।

এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, সবুজে সবুজে ভরে উঠেছে বিস্তীর্ণ মাঠ। রঘুনাথপুর, সিলনা, গুয়াধানা, গোপালপুর ও মিত্রডাঙ্গা গ্রামের মাঠজুড়ে সারি সারি ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, টমেটো, মুলা, পালংশাকসহ নানা ধরনের শীতকালীন সবজি শোভা পাচ্ছে। শুধু জমিতে নয়, মাছের ঘেরপাড়েও লাউ, করলা, টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করা হয়েছে।

কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে চারা রোপণ, সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ক্ষেতখামারে। এসব গ্রামের মানুষের প্রধান আয়ের উৎস হলো সবজি চাষ। শাকসবজির ফলনেই নির্ভর করে হাজারো কৃষকের জীবন-জীবিকা।

এ বছর এসব গ্রামে সবজির ফলন ভালো হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে আশপাশের জেলা থেকেও ব্যাপারীরা এসে সবজি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। পাইকারি বাজারে মিষ্টিকুমড়া প্রতিটি ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং লাউ ২০ থেকে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সিলনা গ্রামের কৃষক প্রমথ ওঝা বলেন, ‘আমরা মৌসুম অনুযায়ী সবজি চাষ করি। শীতকালে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, টমেটো ও শাকসবজি চাষ করে সংসারের খরচ ও সন্তানদের পড়াশোনার ব্যয় মেটাই। এই ফসলের ওপরই আমাদের জীবন।’

সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

একই গ্রামের শিলা ওঝা বলেন, ‘১৫ কাঠা জমিতে সবজি চাষ করেছি। ফসল ভালো হয়েছে, লাভও ভালো হবে। এই চাষ করেই আমরা ভালো আছি।’

সিলনা গ্রামের কিষানি রিতা কীর্তনিয়া বলেন, ‘আমি ২২ বছর ধরে সবজি চাষ করছি। ভাসমান বেডেও নানা ধরনের সবজি উৎপাদন করি। এতে ভালো লাভ হচ্ছে। গোপালগঞ্জসহ বাইরের জেলার ব্যাপারীরা এসেও আমাদের কাছ থেকে সবজি কিনে নেয়।’

সিংগারকুল গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ঘেরপাড়ে টমেটো ও শসা চাষ করেছি। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। টমেটো প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং শসা ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করছি।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গোপালগঞ্জের উপপরিচালক ড. মো. মামুনুর রহমান বলেন, ‘জেলার প্রায় ৪০ শতক জমি নিচু হওয়ায় কৃষকেরা সারা বছর ঘেরপাড়ে সবজি চাষ করেন। রবি মৌসুমে জমিতে ব্যাপকভাবে সবজি আবাদ হয়। এ বছর প্রায় ৪ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা এরই মধ্যে অর্জিত হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত বছরের চেয়ে ভালো ফলনের আশা করছি। মাঠপর্যায়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত