Ajker Patrika

মন্ত্রী সুজনের স্বজনদের দাপট ছিল পঞ্চগড়জুড়ে

  • জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে তাঁর ১০ স্বজন
  • দুই ভাতিজার ছিল সুদের ব্যবসা। চালাতেন টর্চার সেল
  • নির্যাতনের শিকার হয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্যও
পঞ্চগড় প্রতিনিধি 
নূরুল ইসলাম সুজন। ছবি: সংগৃহীত
নূরুল ইসলাম সুজন। ছবি: সংগৃহীত

জেলা আওয়ামী লীগসহ এর সহযোগী সংগঠনে পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, এলাকায় সিন্ডিকেট, জমি দখল, বিদ্যালয় কমিটি নিয়ন্ত্রণ, সুদ, জুয়া নিয়ন্ত্রণ; বিরুদ্ধমত দমন করতে নির্যাতন—সবই করেছেন তিনি। এ ছাড়া এলাকার অধিকাংশ স্থাপনাও করেছেন নিজ পরিবারের সদস্যদের নামে। বলা হচ্ছে সাবেক রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের কথা। সরকার পতনের পর তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। এরপর নির্যাতিত অনেকে এখন মুখ খুলতে শুরু করেছেন।

সুজন ছিলেন পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। জেলার সর্বশেষ কমিটিতে তাঁর পরিবার ও স্বজন রয়েছেন ১০ জন। এ ছাড়া দলের সহযোগী সংগঠনগুলোও ছিল তাঁর কবজায়। তাঁদের অনেকে এখন এলাকাছাড়া।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সুজন ক্ষমতার পাশাপাশি সম্পদ বাড়িয়েছেন বহুগুণ। কেবল হলফনামা অনুযায়ী গত ১৫ বছরে তাঁর অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে প্রায় ৩২ গুণ। নির্বাচনী হলফনামায় দেখা যায়, ২০০৮ সালে তাঁর অস্থাবর সম্পদ ছিল প্রায় ৮ লাখ টাকা। ২০২৩ সালে এসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় আড়াই কোটি টাকায়। তবে এলাকাবাসীর দাবি, এর বাইরে কয়েক শ গুণ সম্পদ আছে তাঁর।

সুজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, পরে যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন তিনি। তাঁর বড় ভাই সিরাজুল ইসলাম বীর মুক্তিযোদ্ধা ও পঞ্চগড়ের সংসদ সদস্য ছিলেন। তাঁর হাত ধরে মূলত রাজনীতিতে আসা সুজনের। এরপর ২০০৮ সাল থেকে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। গত ১৬ সেপ্টেম্বর সুজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশ।

নাম নিয়ে টানাটানি

আওয়ামী লীগের আমলে ঐতিহাসিক পঞ্চগড় রেলস্টেশনের নামকরণ করেন ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামের নামে। পঞ্চগড় স্টেডিয়ামের নামকরণও করা হয় তাঁর ভাইয়ের নামে। বোদা উপজেলার বিলুপ্ত পুঁটিমারী ছিটমহলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামনগর। সরকার পতনের পর এসব স্থাপনার নাম বদলের দাবি উঠেছে।

ভাতিজার টর্চার সেল

সুজন মন্ত্রী হওয়ার পর থেকে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তাঁর ভাইয়ের ছেলেরা এবং তাঁদের অনুসারীরা। স্থানীয়রা জানান, সুজনের চাচাতো ভাইয়ের দুই ছেলে রবিউল আওয়াল ডলার ও রাফিউল হাসান জানি এলাকায় চালিয়েছেন রামরাজত্ব। তাঁদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললেই নেওয়া হতো টর্চার সেলে। পুড়িয়ে দেওয়া হতো ঘরবাড়ি। টর্চার সেলে নিয়ে লিখে নেওয়া হতো জমি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জানি ও ডলারের টর্চার সেলের মদদদাতা সুজন।

সুজনের এই দুই ভাতিজা করতেন সুদের ব্যবসা। সুদের ওপর টাকা দিয়ে সেই টাকা আদায়ের নামে চলত নির্যাতন। অনেকেই টাকা পরিশোধ করার পরও হারিয়েছেন জমি। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সাইকেল মেকার হকিকুল নামের একজন আত্মহত্যাও করেছেন। তবে এরপরও থামেনি নির্যাতন।

বসানো হয়েছিল ছুরি

সুজনের এই দুই ভাতিজার কাছ থেকে সুদের টাকা নিয়েছিলেন রফিকুল (ছদ্মনাম)। টাকা পরিশোধও করেছিলেন। তবে এই দুজন দাবি করেন, তাঁদের টাকা দেওয়া হয়নি। এরপর রফিকুলকে ডেকে নেওয়া হয়। ভুক্তভোগীর স্ত্রী বলেন, তাঁকে ডেকে নিয়ে অজু করানোর পর কালেমা পড়িয়ে গলায় ছুরি বসানো হয়। কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে নতুন করে আবার ৬ লাখ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে প্রাণে রক্ষা পান রফিকুল।

আরেক ভুক্তভোগী হরিপুর এলাকার বাসিন্দা আব্বাস আলী। তিনি বলেন, ‘আমি তাঁদের কাছে সুদে টাকা নিয়েছিলাম ১ লাখ ৫ হাজার। ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ করি। বছরখানেক পরে আবারও বড় অঙ্কের টাকা দাবি করে। আমাকে তাঁদের বাড়িতে নিয়ে ভয়ভীতি দেখান। আমার কাছে জোর করে ৫১ শতক জমি লিখে নেন তাঁরা।’

দৌলতপুর এলাকার মোকসেদ আলী বলেন, ‘জানি ও ডলারদের কাছে আমরা ৫ শতক জমি পাব। ওর বাবাও জমিটি আমাদের বুঝিয়ে দেন। কিন্তু ওই জমিতে চাষাবাদ করতে গেলে আমাদের ওপর হামলা করেন জানি ও ডলাররা। একপর্যায়ে তাঁরা সাবেক মন্ত্রী সুজনের কাছে বিচার দেন। আমাদের বাড়িতে পুলিশ পাঠালে আমরা সবাই পালিয়ে যাই। এই সুযোগে জানি ও ডলার আমাদের তিনটি বাড়ি আগুনে জ্বালিয়ে দেন।’

নির্যাতন থেকে বাদ পড়েননি জনপ্রতিনিধিও। ময়দানদীঘি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ফজলুল হক বলেন, ‘আমি জানির কাছে ২ লাখ টাকা নিয়েছিলাম। এক বছরের মধ্যে টাকাটা পরিশোধ করি। আমি গ্রামীণ ব্যাংকে চাকরি করতাম। পেনশনের ১৪ লাখ টাকা ময়দানদীঘি রূপালী ব্যাংক শাখা থেকে তুলি। টাকাটা তুলতেই আমার হাত থেকে সব টাকা নিয়ে নেন জানি। পরে কিছু জমিও লিখে দিতে হয়।’

সরকার পতনের পর আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় অভিযোগের বিষয়ে জানি ও ডলারের বক্তব্য জানা যায়নি।

জেলা আওয়ামী লীগকে ‘পরিবার লীগ’ বানিয়েছিলেন সুজন। মন্ত্রী থাকাকালে প্রভাব খাটিয়ে নিজে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন। সর্বশেষ দলের কমিটিতে ঠাঁই হয় তাঁর ১০ স্বজনের। এ ছাড়া দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোও ছিল তাঁর কবজায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, সুজন পঞ্চগড় আওয়ামী লীগ শেষ করে দিয়েছেন। দলের মধ্যে বিভক্তি দলকে পুরোপুরি নষ্ট করে ফেলেছে।

সচিবদের প্রভাব

সুজন মন্ত্রী হওয়ার পর ‘জাদুর ছোঁয়া’ পেয়েছিলেন পিএস রাশেদ প্রধান ও এপিএস রেজাউল করিম রেজা। সুজন মন্ত্রী থাকাকালে রাশেদ প্রধানকেও করেন জেলা কমিটির কার্যকরী সদস্য। তাঁর মা সেলিনা বেগমকে করেন জেলা পরিষদের সদস্য। পরে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমানুল্লাহ বাচ্চু মারা গেলে প্রভাব খাটিয়ে মাকে বসান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদে।

এদিকে সুজনের ব্যক্তিগত সহকারী রেজাউল করিম রেজার বাবা ছিলেন দিনমজুর। সেই রেজাও কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। জেলার বিভিন্ন এলাকায় জমি রয়েছে ২৫ থেকে ৩৫ বিঘা। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান রিফা এন্টারপ্রাইজের মালিকও এই রেজা। এই প্রতিষ্ঠান মাসে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার পণ্য আমদানি করে থাকে।

বিএনপির পল্লি উন্নয়ন সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেন, ফ্যাসিবাদ কায়েম করে কোনো ব্যক্তি বা কোনো দল চিরস্থায়ী হতে পারে না। দুর্নীতির অভয়ারণ্য করেছেন তিনি। শুধু রেল নয়, ওনার পরিবারের ভাই ও ভাইয়ের ছেলেরা একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-এবি পার্টি-রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন জোট চূড়ান্ত, ঘোষণা বিকেলে

বিদেশে নেওয়ার অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

নয়া নিরাপত্তা কৌশল: চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাদ, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে জোর যুক্তরাষ্ট্রের

আজকের রাশিফল: সন্ধ্যায় অচেনা নম্বর থেকে ‘দারুণ অফার’ আসবে, ইগনোর করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রংপুর কারাগারে হাজতির মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর থেকে
জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: সংগৃহীত
জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: সংগৃহীত

রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থায় জাহাঙ্গীর আলম (৫৭) নামের এক হাজতির মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৭ ডিসেম্বর) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

নিহত জাহাঙ্গীর আলম রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌর শহরের মেনাজবাজার এলাকার শিল্পপতি মেনাজ উদ্দিনের ছেলে এবং হারাগাছ ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি। মেনাজ বিড়ি ফ্যাক্টরি ও মেনাজ ফিলিং স্টেশনসহ বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন জাহাঙ্গীর।

নিহতের স্বজনেরা জানান, পারিবারিক একটি মামলায় বুধবার জাহাঙ্গীর আদালতে হাজির হলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন বলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ৬ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে তাঁকে ছাড়পত্র দিলে কারাগারে নিয়ে আসা হয়।

রোববার ভোরে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

জাহাঙ্গীর আলম ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন বলেও জানান জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-এবি পার্টি-রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন জোট চূড়ান্ত, ঘোষণা বিকেলে

বিদেশে নেওয়ার অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

নয়া নিরাপত্তা কৌশল: চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাদ, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে জোর যুক্তরাষ্ট্রের

আজকের রাশিফল: সন্ধ্যায় অচেনা নম্বর থেকে ‘দারুণ অফার’ আসবে, ইগনোর করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গোপালগঞ্জে ওয়ার্ড জামায়াতের হিন্দু শাখার ৯ নেতা-কর্মীর পদত্যাগ

কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু শাখার ৯ নেতা-কর্মী পদত্যাগ করেছেন।

গতকাল শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার পিড়ারবাড়ি বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাঁরা পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ৮ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু শাখার সভাপতি বিপ্লব মল্লিক ওরফে (ঝন্টু)। তিনি বলেন, ‘আমরা ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি, সহসভাপতি, উপদেষ্টা ও সদস্যসহ ৯ জন পারিবারিক ও সামাজিক কারণে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু শাখার পদ ও সব কর্যক্রম থেকে পদত্যাগ করলাম।’

পদত্যাগ করা নেতা-কর্মীদের মধ্যে অন্যরা হলেন সহসভাপতি বিমল বালা, উপদেষ্টা নারায়ণ হালদার, সদস্য দুলাল মল্লিক, সবুজ মল্লিক, সুভাষ মধু, প্রকাশ সরকার, প্রদীপ ঢালী ও শিশির মল্লিক।

এ বিষয়ে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি ফরিদ উদ্দিন মাসউদ বলেন, ‘কিছুদিন আগে কমিটি হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা পদত্যাগ করেছেন কি না, তা আমার জানা নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-এবি পার্টি-রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন জোট চূড়ান্ত, ঘোষণা বিকেলে

বিদেশে নেওয়ার অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

নয়া নিরাপত্তা কৌশল: চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাদ, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে জোর যুক্তরাষ্ট্রের

আজকের রাশিফল: সন্ধ্যায় অচেনা নম্বর থেকে ‘দারুণ অফার’ আসবে, ইগনোর করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সার না পেয়ে কৃষকদের ফের মহাসড়ক অবরোধ

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
সার না পাওয়ায় লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর–লালমনিরহাট মহাসড়ক অবরোধ কৃষকদের। ছবি: আজকের পত্রিকা
সার না পাওয়ায় লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর–লালমনিরহাট মহাসড়ক অবরোধ কৃষকদের। ছবি: আজকের পত্রিকা

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় রবি মৌসুমে চাহিদামতো সার না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ শত শত কৃষক আবারও বুড়িমারী স্থলবন্দর–লালমনিরহাট মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। এ সময় তাঁরা সারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন এবং কৃষি কর্মকর্তা ও সার ডিলারের অপসারণ চান।

আজ রোববার বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত উপজেলার মেডিকেল মোড় এলাকায় বিসিআইসির পরিবেশক (ডিলার) মেসার্স ওয়াছেক খানের প্রতিষ্ঠানের সামনে এই অবরোধ হয়। প্রায় দু ঘণ্টা সড়ক অবরোধের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঘটনাস্থলে গিয়ে আশ্বাস দিলে কৃষকেরা অবরোধ তুলে নেন।

জানা গেছে, রবি মৌসুমে এখন এলাকার প্রধান ফসল ভুট্টা চাষাবাদ চলছে। পাশাপাশি অন্যান্য ফসলেরও আবাদ শুরু হয়েছে। কিন্তু চাষাবাদের শুরু থেকেই কৃষকেরা চাহিদা অনুযায়ী সার পাচ্ছেন না। আজ সকালে সিন্দুর্না এলাকার কৃষকদের জন্য নির্ধারিত ডিলার মেসার্স ওয়াছেক খানের দোকানে সার বিক্রির খবর ছড়িয়ে পড়লে কয়েক শ কৃষক সেখানে জড়ো হন।

কিছুক্ষণ পরই কৃষকেরা সার পাওয়ার জন্য দীর্ঘ সারি ধরেন। একপর্যায়ে ভিড় ঠেলে একযোগে সবাই সার নিতে চাইলে ডিলারের প্রতিনিধি হিমশিম খান এবং সার বিক্রি বন্ধ করে দেন। এতে ক্ষুব্ধ কৃষকেরা ডিলার ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তাঁরা ডিলার ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করেন।

প্রায় দুই ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধে উভয় পাশে শত শত যানবাহন আটকে পড়ে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ইউএনও শামীম মিঞা ও সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে কৃষকদের আশ্বাস দিলে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন।

এর আগে গত ৩০ নভেম্বর একই উপজেলার অডিটরিয়াম চত্বর এলাকায় মেসার্স মোর্শেদ সার ঘরের সামনে সার না পাওয়ায় মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন কৃষকেরা। সিন্দুর্না গ্রামের কৃষক এরশাদুল হক বলেন, ‘সারের জন্য চাষাবাদে সমস্যা হচ্ছে। অনেক হয়রানির পরও সার পাওয়া যায় না। তাই সবাই মিলে সড়ক অবরোধ করেছি।’

একই গ্রামের মাহফুজ ইসলাম বলেন, ‘ডিলারের কাছে গেলে বলে সার নাই। অনেক দিন ধরে ঘুরছি। আজ লাইন ধরেছিলাম, পরে শুনি সার নাকি নেই। কৃষি কর্মকর্তারা বলে সারের সংকট নেই, তাহলে আমরা সার পাই না কেন? ডিলাররা কৃষকদের না দিয়ে বেশি দামে বাইরে বিক্রি করে। ডিলার ও কৃষি কর্মকর্তাদের অপসারণ চাই।’

মেসার্স ওয়াছেক সার ঘরের মালিককে পাওয়া না গেলেও তাঁর প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুর ইসলাম বলেন, সারের কোনো সংকট নেই। সরকারি বরাদ্দ আছে—সব কৃষকই সার পাবেন। অনেক কৃষক একসঙ্গে সার নিতে গিয়ে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

এ বিষয়ে ইউএনও শামীম মিঞা বলেন, বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা কিছু সময় সড়ক অবরোধ করেছিলেন। একসঙ্গে অনেকে সার নিতে গিয়ে না পাওয়ায় এ সমস্যা হয়। সবাইকে বুঝিয়ে বলা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবাই সার পাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-এবি পার্টি-রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন জোট চূড়ান্ত, ঘোষণা বিকেলে

বিদেশে নেওয়ার অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

নয়া নিরাপত্তা কৌশল: চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাদ, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে জোর যুক্তরাষ্ট্রের

আজকের রাশিফল: সন্ধ্যায় অচেনা নম্বর থেকে ‘দারুণ অফার’ আসবে, ইগনোর করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হবিগঞ্জে ট্রাকচাপায় স্কুলশিক্ষক নিহত

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
রূপজিত কর রাজু। ছবি: সংগৃহীত
রূপজিত কর রাজু। ছবি: সংগৃহীত

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় ট্রাক চাপায় রূপজিত কর রাজু (৩৬) নামের এক স্কুলশিক্ষক নিহত হয়েছেন। আজ রোববার (৭ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার নতুনবাজার এলাকার বেন্দারপুল এলাকায় ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত রূপজিত কর রাজু উপজেলার মিরপুর সানশাইন মডেল হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক এবং বানিয়াগাঁও গ্রামের নিপেশ করের ছেলে।

জানা গেছে, রূপজিত সকাল ৭টার দিকে নতুনবাজার এলাকায় হাঁটতে যান। এ সময় শ্রীমঙ্গলগামী একটি সবজিবোঝাই ট্রাক রূপজিত এবং তাঁর সঙ্গে থাকা সুরঞ্জন দেব নামের আরেক ব্যক্তিকে চাপা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসক রূপজিতকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত সুরঞ্জন দেবকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

শিক্ষকের মৃত্যুতে মিরপুর সানশাইন মডেল হাইস্কুলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্কুলের সভাপতি এম শামছুদ্দিন বলেন, রূপজিত কর রাজুর স্মরণে আজকের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে এবং স্কুল এক দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বাহুবল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, সকালে একটি ট্রাকের চাপায় এক স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-এবি পার্টি-রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন জোট চূড়ান্ত, ঘোষণা বিকেলে

বিদেশে নেওয়ার অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

নয়া নিরাপত্তা কৌশল: চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাদ, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে জোর যুক্তরাষ্ট্রের

আজকের রাশিফল: সন্ধ্যায় অচেনা নম্বর থেকে ‘দারুণ অফার’ আসবে, ইগনোর করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত