Ajker Patrika

নবাবগঞ্জে জমির দলিল ও টাকা লুট করতে বাবা-মাকে হত্যা

প্রতিনিধি নবাবগঞ্জ ও দিনাজপুর
আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ২৯
নবাবগঞ্জে জমির দলিল ও টাকা লুট করতে বাবা-মাকে হত্যা

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায় স্বামী-স্ত্রীকে খুনের ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। জমির দলিল ও টাকা লুট করতেই নিহত মো. হাফিজুর রহমান বড় ছেলে আ. মতিন মিঠু এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানায় পুলিশ। এ ঘটনায় আ. মতিন মিঠুসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) শচীন চাকমা। 

এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নিহত মো. হাফিজুর রহমান বড় ছেলে আ. মতিন মিঠু, উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের ধরঞ্জী গ্রামের মো. রাজা মিয়ার ছেলে রাজন মিয়া (২৫), একই গ্রামের এনামুল হকের ছেলে মো. উজ্জ্বল হোসেন (২৫)। 

এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে নবাবগঞ্জ থানার ৬ নম্বর ভাদুরিয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত নির্শা কাজলদীঘি গ্রামের হাফিজুর রহমানের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় গৃহকর্তা হাফিজুর রহমান (৭৫) এবং তাঁর স্ত্রী ফেন্সীয়ারা বেগম অজ্ঞাতনামা ডাকাতদের হাতে খুন হন। পরে মৃতের ছোট ছেলে মো. আব্দুল মালেকের (২৩) নবাবগঞ্জ থানায় একটি খুনসহ ডাকাতি মামলা দায়ের করেন। দিনাজপুর জেলা পুলিশ ঘটনাটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্ত শুরু করেন। পুলিশের একাধিক টিম ও গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা বেশ কিছু বিষয়কে সামনে নিয়ে তদন্ত পরিচালনা করেন। 

অবশেষে গত বুধবার মামলার ঘটনাটির রহস্য উদ্ঘাটন করতে সমর্থ হয় পুলিশ। 

পুলিশ সুপার শচীন চাকমা জানান, ঘটনার পর হতে নিহত হাফিজুর রহমানের ছেলে মো. আব্দুল মতিন মিঠুর (৫০) আচরণ সন্দেহজনক মনে হয়। এই সূত্র ধরে পরবর্তীতে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি দুজন জড়িত থাকার প্রমাণ পায় পুলিশ। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে দিনাজপুর সরকারি কলেজ এলাকা থেকে রাজন মিয়াকে এবং দাউদপুর এলাকা থেকে মো. উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অন্যদিকে একই দিনে বাবা-মার হত্যায় জড়িত থাকায় মৃতের ছেলে মো. আব্দুল মতিন মিঠুকেও গ্রেপ্তার করা হয়। 

পুলিশ সুপার জানান, মৃত হাফিজুর রহমানের ছেলে গ্রেপ্তারকৃত আসামি মিঠু তাঁর বাবার হেফাজতে থাকা জমির দলিল চুরি করার জন্য তাঁর ফুপাতো ভাই সুলতান মাহমুদের সঙ্গে এ ঘটনার পরিকল্পনা করেন। মিঠু তাঁর বাবার কাছে থাকা জমির দলিল এনে দেবে বিনিময়ে বাড়িতে থাকা টাকা নিবে। পরবর্তীতে সেই পরিকল্পনা মতো সুলতান মাহমুদ তাঁর সহযোগীদের নিয়ে একাধিকবার চেষ্টার পর ঘটনার দিন আসামিরা প্রাচীর টপকে বাড়িতে প্রবেশ করে। এ সময় ফেন্সীয়ারা বেগম প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে বের হন। এই সুযোগে আসামিরা ঘরের ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপর প্রথমে ফেন্সীয়ারা বেগমকে অন্য রুমে বেঁধে ফেলেন। পরে শোয়ার ঘরে গিয়ে জমির দলিল, টাকা ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় হাফিজুর রহমানকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে প্রথমে তাঁকে হত্যা করেন এবং পরবর্তীতে উপায়ন্তর না পেয়ে ফেন্সীয়ারা বেগমকেও হত্যা করেন তাঁরা। পরে লুণ্ঠিত টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যার যার মতো চলে যান। 

এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে এবং শিগগিরই তাঁদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কা, নিহত ২

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৬
কাভার্ড ভ্যানের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে গেছে।
কাভার্ড ভ্যানের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে গেছে।

নাটোরের বড়াইগ্রামে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় দুজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন কাভার্ড ভ্যানের চালক সোহাগ হোসেন (৩০) এবং যাত্রী বিপ্লব হোসেন (৩৫)। আজ মঙ্গলবার সকালে মানিকপুর এলাকায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত সোহাগ নলডাঙ্গা উপজেলার বেলঘড়িয়া এলাকার ফরজ আলীর ছেলে। অন্যদিকে নিহত বিপ্লব টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার চৌবাড়িয়ার ওহেদ আলীর ছেলে। তিনি একটি কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি ছিলেন।

দুর্ঘটনার পর ট্রাক নিয়ে চালক পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।

বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, সকাল ৬টার দিকে নাটোর থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রাক মানিকপুর এলাকায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে দাঁড়িয়ে ছিল। একই দিক থেকে ছেড়ে আসা একটি কাভার্ড ভ্যান পেছন থেকে ট্রাকটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে কাভার্ড ভ্যানের চালক ও যাত্রী নিহত হন। ওসি আরও বলেন, লাশ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তরের ও আইনগত বিষয় চলমান রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জে মনোনয়নপত্র জমা দেননি বিএনপির বিদ্রোহী নেতারা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
মনোনয়নপত্রের ফরম সংগ্রহ করলেও শেষ পর্যন্ত তা জমা দেননি বিএনপির বিদ্রোহী নেতারা।
মনোনয়নপত্রের ফরম সংগ্রহ করলেও শেষ পর্যন্ত তা জমা দেননি বিএনপির বিদ্রোহী নেতারা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল, গোমস্তাপুর, ভোলাহাট) আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন বিএনপির চার বিদ্রোহী নেতা। তবে ফরম সংগ্রহ করলেও জমা দেওয়ার শেষ দিন সোমবার পর্যন্ত তা জমা দেননি তাঁরা। ফলে এই আসনে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে থাকছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি মো. আমিনুল ইসলাম। এ ছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মনোনীত এক প্রার্থীও শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন দাখিল করেননি।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে ১০ প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেও জমা দিয়েছেন ৫ জন।

মনোনয়নপত্র জমা না দেওয়া বিএনপি নেতারা হলেন বুয়েটের আহসানুল্লাহ হল সংসদের সাবেক ভিপি ও সাবেক ছাত্রনেতা ইঞ্জিনিয়ার ইমদাদুল হক মাসুদ, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগাঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম তুহিন, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক মাসউদা আফরোজ হক শুচি ও বিএনপি নেতা সাহাফুজ আলম অপু। এ ছাড়াও এনসিপি মনোনীত প্রার্থী ও এনসিপির জেলা শাখার সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব নাজমুল হুদা খান রুবেল মনোনয়নপত্র জমা দেননি।

এই আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, বিএনপির প্রার্থী মো. আমিনুল ইসলাম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ড. মিজানুর রহমান, জাতীয় পার্টির মুহা. খুরশিদ আলম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মো. সাদেকুল ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের মো. ইব্রাহিম খলিল।

দলীয় মনোনয়ন না পাওয়া জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক মাসউদা আফরোজ হক শুচি বলেন, ‘দলীয় প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা থেকেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলাম। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্ত যেহেতু পরিবর্তন হয়নি, তাই মনোনয়নপত্র জমা দিইনি।’

মনোনয়ন না পাওয়া আরেক বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইমদাদুল হক মাসুদ বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তন হয়নি, তাই মনোনয়নপত্র জমা দিইনি।’

এর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী বদলের দাবিতে মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্য নেতারা এককাট্টা হয়ে অন্তত ১২ বার মশাল মিছিল, মতবিনিময় ও আলোচনা সভা, রেলপথ অবরোধ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মির্জাপুরে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের চালক নিহত

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় এক মোটরসাইকেলের চালক নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের দেওহাটা ফ্লাইওভারের পশ্চিম পাশে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহত ব্যক্তির নাম জানা যায়নি। তবে তিনি গোড়াই সাউথ ইস্ট কারখানার কর্মী বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।

জানা গেছে, সকাল সোয়া ৭টার দিকে সকালে মোটরসাইকেল চালিয়ে মহাসড়কের ধীরগতির লেন দিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিলেন চালক। মহাসড়কের দেওহাটা ফ্লাইওভারের কাছে পৌঁছালে টাঙ্গাইল থেকে ছেড়ে আসা আলোকিত মধুপুর নামে যাত্রীবাহী বাস মহাসড়ক ছেড়ে ধীরগতির লেনে ঢুকে পড়ে মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেলের চালক নিহত হন।

দেওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক গিয়াসউদ্দিন জানান, নিহত ব্যক্তি গোড়াই সাউথ ইস্ট কারখানায় চাকরি করতেন বলে জানতে পেরেছেন। বাসটি জব্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভালুকায় সহকর্মীর গুলিতে আনসার সদস্য নিহত, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৪০
ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বজেন্দ্র দাসকে মৃত ঘোষণা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বজেন্দ্র দাসকে মৃত ঘোষণা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাক কারখানায় সহকর্মীর গুলিতে বজেন্দ্র বিশ্বাস (৪০) নামের এক আনসার সদস্য নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রাত ৭টায় উপজেলার মেহরাবাড়ি এলাকায় লাবিব গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সুলতানা সোয়েটার্স লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত সহকর্মী আনসার সদস্য নোমান মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিহত আনসার সদস্য বজেন্দ্র বিশ্বাস সিলেট সদর উপজেলার কাদিরপুর গ্রামের পবিত্র বিশ্বাসের ছেলে। অভিযুক্ত নোমান মিয়া সুনামগঞ্জ জেলার তাহেরপুর থানার বালুটুরি বাজার এলাকার লুৎফর রহমানের ছেলে। দুজনই সুলতানা সোয়েটার্স লিমিটেড কারখানায় কর্মরত ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কারখানাটিতে ২০ জন আনসার সদস্য কর্মরত ছিলেন। ঘটনার সময় আনসার সদস্য নোমান মিয়া ও বজেন্দ্র দাস একসঙ্গে বসেছিলেন। এ সময় অসাবধানতাবশত নোমান মিয়ার হাতে থাকা শটগান থেকে গুলি বের হলে বজেন্দ্র দাসের বাঁ ঊরুতে গুলি লাগে এবং তিনি গুরুতর আহত হন। পরে সহকর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর অভিযুক্ত নোমান মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত