Ajker Patrika

ভিজিএফের চাল বিতরণ: বিএনপির এক পক্ষের বিরুদ্ধে আত্মসাতের অভিযোগ আরেক পক্ষের

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
চাল না পেয়ে ক্ষোভ দেখান নওহাটা পৌরসভার বাঘাটা মহল্লার বাসিন্দা কামাল আলী। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাল না পেয়ে ক্ষোভ দেখান নওহাটা পৌরসভার বাঘাটা মহল্লার বাসিন্দা কামাল আলী। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর নওহাটা পৌরসভার ভিজিএফের চাল বিতরণের ‘দায়িত্ব’ পেয়েছিল বিএনপি। বিতরণ শুরুর পর বিএনপিরই এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে যে অন্তত ৫০০ জনের চাল আত্মসাৎ করা হয়েছে। যদিও পৌর প্রশাসক বলছেন, চাল আত্মসাতের ঘটনা ঘটেনি। এক পক্ষের লোক চাল পাওয়ায় অন্য পক্ষ এমন অভিযোগ তুলছে।

পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, এবার ঈদ উপলক্ষে ৪ হাজার ৬২১ জনের জন্য মাথাপিছু ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ আসে। পৌরসভার একজন কর্মকর্তার কাছে থাকা তালিকায় দেখা যায়, পৌরসভা ৬০৮ জনের বরাদ্দ নিজেদের কাছে রাখে বিতরণের জন্য। আর জামায়াতে ইসলামীর নামে ৮৪৫টি, পৌর বিএনপির নামে ২ হাজার ৮৩১টি এবং ছাত্রদের অনুকূলে ৩৩৭টি কার্ড রাখা হয়। তবে পৌর বিএনপি ছাত্রদের নামে থাকা কার্ডগুলোও নিয়ে নেয়। অর্থাৎ পৌর বিএনপি মোট ৩ হাজার ১৬৮টি কার্ড বিতরণের দায়িত্ব পায়।

আজ মঙ্গলবার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের অনেকে এসে অভিযোগ তোলেন যে তাঁদের নামে পৌর বিএনপির পক্ষ থেকে কার্ড দেওয়া হলেও চাল দেওয়া হচ্ছে না। চাল নিতে গেলে তাঁদের জানানো হচ্ছে, এই কার্ডের চাল আগের দিনই বিতরণ হয়ে গেছে। এ সময় তাঁরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান।

পৌরসভার বাঘাটা মহল্লার বাসিন্দা কামাল আলী বলেন, ‘গতকাল রাত ৯টায় আমার বাবা শামসুল ইসলামের নামে কার্ড দিয়ে আসা হয়েছে। এখন চাল নিতে এলে বলছে, এই চাল গতকাল দুপুরের আগেই বিতরণ হয়ে গেছে। এই চাল কে তুলে নিয়েছে সেটা আমি জানি না।’

মহানন্দখালী মহল্লার বাসিন্দা এবাদত উল্লাহ সরকার বলেন, ‘কাইল থাইকা আমি ঘুরছি। আমার চাইল বেইচে খায়্যা লিয়েছে। আপনারা (সাংবাদিকরা) বিচার করেন। কইরে আমাক চাইলড্যা বাহির কইরে দেন। আমি গরিব মানুষ, আমার চাইলড্যাও বেইচে খাওয়া লাগবি ক্যান?’

এদিকে অনেককেই চাল পেতে না দেখে পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীনসহ তাঁর অনুসারীরা অভিযোগ তোলেন, চাল আত্মসাৎ করা হয়েছে। পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিকের পক্ষে তাঁর কর্মী মো. রক্সি চাল বিতরণের দায়িত্বে ছিলেন। রক্সি চাল সরিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন বিএনপির জয়নালের পক্ষের লোকজন। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিএনপি কর্মী রক্সিকে মারধরও করা হয়। পরে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন রক্সি।

জানতে চাইলে বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘রক্সিকেই চাল বিতরণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক। রক্সি ৫০০ থেকে ৬০০ মানুষের চাল আত্মসাৎ করেছে। ১ নম্বর ওয়ার্ডের এসব মানুষ চাল পায়নি। রক্সি বেচে খেয়েছে।’

এ সময় জয়নাল আবেদীন একটি কাগজে একটি স্বীকারোক্তি লেখা দেখান। তাতে থাকা স্বাক্ষরটি রক্সির বলে তিনি দাবি করেন। ওই কাগজে লেখা আছে, ‘আমি ভিজিএফের চাল বিতরণের দায়িত্বে ছিলাম। ভুলক্রমে ১ নম্বর ওয়ার্ডের চাল বিতরণে অনিয়ম হয়। এই দায় সম্পূর্ণ আমার। তাই চাল না পাওয়া ব্যক্তিদের রোষানলে পড়ি এবং আঘাতপ্রাপ্ত হই। পৌরসভার হাবিব ভাইয়ের অফিসে ভুল স্বীকার করে ১ নম্বর ওয়ার্ডের সকল চাল দেওয়ার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে স্বীকারোক্তি দিচ্ছি।’ এই কাগজটিতে সাক্ষী হিসেবে দুজন নারীর স্বাক্ষরও আছে।

তবে এমন কোনো স্বীকারোক্তি দেননি বলে দাবি করেছেন বিএনপিকর্মী রক্সি। তিনি বলেন, ‘জয়নাল আবেদিন ও তাঁর লোকজন আমাকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়েই চাল আত্মসাতের অভিযোগ তুলে মারধর করেছে। আমি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি, থানায় মামলা করব। এ জন্য এই কাগজ জয়নাল আবেদিন নিজে নিজে বানিয়েছে। স্বাক্ষর আমার না।’ আর জয়নালের দাবি, অন্তত ২০ জনের সামনে রক্সি তাতে সই করেছেন।

জানতে চাইলে পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, ‘পৌরসভা আমাদের সহযোগিতা চেয়েছিল। আমাদের ৩ হাজার ১৬৮টি কার্ড দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমি তালিকা দিয়েছিলাম ৩ হাজার ২০০ জনের। ৩২ জনের তালিকা বেশি দেওয়ায় পৌরসভা থেকে আপত্তি জানানো হয়েছিল। আমি বলেছিলাম, পৌরসভার জন্য যে ৬০৮টি কার্ড আছে, সেখান থেকে অথবা সব ওয়ার্ড থেকে কয়েকটা করে কার্ড কমিয়ে যেন এই ৩২ জনকে চাল দেওয়া হয়। কিন্তু তারা সেটি করেনি। ফলে এই ৩২ জন চাল পায়নি। আত্মসাতের অভিযোগ সঠিক না। এই ৩২ জনকে আমি নিজের পকেট থেকে চাল কিনে দেব।’

তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে নওহাটা পৌরসভার প্রশাসক পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিএনপিকে চাল বিতরণের কোনো কার্ড দেওয়া হয়নি। বিতরণের ক্ষেত্রে এলাকার গরিব মানুষদের চেনার জন্য বিএনপির সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে। চাল আত্মসাতের ঘটনাও ঘটেনি। তিনি বলেন, ‘আমার পছন্দের লোক না পেয়ে অন্যের পছন্দের লোক চাল পেলে বলবে চাল আত্মসাৎ হয়েছে। এখানে তেমন ঘটনাই ঘটেছে।’

চাল বিতরণের সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও বিএনপি কর্মী রক্সিকে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে আমি গিয়েছিলাম। একটু উত্তেজনা ছিল। এ জন্য পুলিশ রাখা ছিল। মারামারির কথা আমাকে কেউ বলেনি। এমন ঘটনা ঘটে থাকলে এবং ভুক্তভোগী অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজ সন্ধ্যা ৭টা থেকে বন্ধ থাকবে মেট্রোরেলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মেট্রোরেলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা থেকে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিশেষ অনুরোধে এই ব্যবস্থা নিয়েছে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

আজ দুপুরে এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক (গণসংযোগ) মো. আহসান উল্লাহ শরিফী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আজ সন্ধ্যা ৭টা থেকে মেট্রোরেল অপারেশনের অবশিষ্ট সময় (রাত ১০টা ১০ মিনিট) পর্যন্ত ট্রেন এই স্টেশনে থামবে না।

উল্লেখ্য, মেট্রোরেল সকাল সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১০টা ১০ মিনিট পর্যন্ত চলাচল করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নেত্রকোনায় খাবার ভেবে বিষ খেল তিন বছরের শিশু, অবস্থা আশঙ্কাজনক

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে খাবার ভেবে ফসলি জমিতে ব্যবহৃত বিষ খেয়ে মিম নামের তিন বছরের এক শিশু অসুস্থ হয়েছে। গুরুতর অবস্থায় শিশুটিকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার চণ্ডিগড় মউ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শিশুটিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। আহত শিশু মিম ওই গ্রামের শাফিউল্লাহর মেয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জীবিকার তাগিদে শিশুটির বাবা-মা ঢাকায় বসবাস করেন। গ্রামে নানির কাছে থাকত শিশু মিম। আজ দুপুরের দিকে বাড়িতে রাখা ফসলি জমিতে ব্যবহৃত বিষ খাবার ভেবে খেয়ে ফেলে সে। কিছুক্ষণ পর শিশুটির বমি শুরু হলে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা দীপা সরকার বলেন, শিশুটি খাবার ভেবে জমিতে ব্যবহৃত বিষ খেয়ে ফেলে। হাসপাতালে আনার পর প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হলেও তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। দ্রুত মমেক হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাইবান্ধায় টানা ৫ দিন পর দেখা মিলল সূর্যের

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
রেলস্টেশনে রোঁদে দাড়িয়ে আছে কয়েকজন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রেলস্টেশনে রোঁদে দাড়িয়ে আছে কয়েকজন। ছবি: আজকের পত্রিকা

টানা পাঁচ দিনের ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহের পর অবশেষে গাইবান্ধায় সূর্যের আলো দেখা গেছে। আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে রোদের উষ্ণতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে সাধারণ মানুষ বিশেষত কৃষক ও শ্রমজীবীরা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন।

গত পাঁচ দিন ধরে তীব্র শীতে কাবু হয়ে পড়ে গাইবান্ধার জনজীবন। বিশেষ করে, সকালে কাজে বেরিয়ে প্রচণ্ড ঠান্ডায় কষ্টে পড়েন দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষ। সূর্যের দেখা পাওয়ায় খেটে খাওয়া এসব মানুষের কাজে নামা এখন কিছুটা সহজ হয়েছে। এ ছাড়া ঠান্ডা ও কুয়াশায় বীজতলা নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগে ছিলেন কৃষকেরা। গাইবান্ধা সদর উপজেলার সরকারপাড়া এলাকার কৃষক সাদেক মিয়া বলেন, ‘টানা কয়েক দিন সূর্য না থাকায় অনেকটা চিন্তায় ছিলাম। বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। আজ রোদ ওঠায় অনেকটা ভরসা পাচ্ছি।’ বোয়ালী ইউনিয়নের কৃষক হাকিম আলী বলেন, ‘সূর্য না ওঠায় গরু-ছাগলসহ ধানের বীজতলা নিয়ে চিন্তায় পড়ে ছিলাম। আবহাওয়া আজ ভালো হওয়ার কারণে খুশি লাগছে।’ আরেক কৃষক কেরামত বলেন, শীত বেশি পড়লে বোরো ধানের বীজতলা পচে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। সূর্যের আলো পাওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা অনেকটা কমে গেছে।

গাইবান্ধা শহরের রিকশাচালক হুমায়ন বলেন, কয়েকদিন ধরে ঘন কুয়াশা আর শীতের কারণে মানুষ ঘর থেকে তেমন একটা বের হয়নি। আজ সূর্য ওঠায় রাস্তাঘাটে লোকজন বের হয়েছে।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়তে পারে। তবে দিনের বেলায় তাপমাত্রা বাড়লেও রাতের বেলায় তা কমবে।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘টানা শৈত্যপ্রবাহে বোরোর বীজতলা নিয়ে আমরা কিছুটা উদ্বিগ্ন ছিলাম। সূর্যের আলো ও তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ায় এখন ক্ষতির ঝুঁকি কমেছে।’ আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-মেয়েসহ তিনজনের মৃত্যু

ঢামেক প্রতিবেদক
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা এবং মহাখালী এলাকায় বাবা-মেয়েসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) ভোরে এ দুর্ঘটনা দুটি ঘটে।

সাতরাস্তায় ট্রাকচাপায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার যাত্রী বাবা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রফিকুল ইসলাম (৪০) এবং মেয়ে তানজিলার (১২) মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হয় ছেলে নুর ইসলাম (১৪)। অন্যদিকে মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে অজ্ঞাত যানবাহনের ধাক্কায় আনুমানিক ৩৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

আজ ভোর ৫টার দিকে চারজনকে আহতাবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে বাবা-মেয়ে ও অজ্ঞাত যুবককে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আহত নুর ইসলাম প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়।

মৃত রফিকুল ইসলামের ভাতিজা আব্দুর রাকিব বলেন, তাঁদের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার জটিয়াবো গ্রামে। বর্তমানে তাঁরা মগবাজার ওয়্যারলেস রেলগেট এলাকায় থাকতেন। আহত নুর ইসলাম ও নিহত তানজিলা স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত। তাঁদের বাবা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রফিকুল ইসলাম ওই এলাকায় ভিক্ষাবৃত্তি করতেন।

আব্দুর রাকিব আরও জানান, রাতে তাঁর চাচা রফিকুল ইসলাম দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে বের হন। মগবাজার থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছিলেন। জানতে পারি, সাতরাস্তা এলাকায় আসলে একটি ট্রাক অটোরিকশাটিকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। রিকশা থেকে ছিটকে পরে তিনজন আহত হয়। পরে পথচারীরা তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে বাবা ও মেয়ের মৃত্যু হয়।

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হামিদ জানান, বুধবার ভোরে পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা এলাকায় বাবা-মেয়ে মারা গেছে। অন্যদিকে মহাখালী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অজ্ঞাত যানবাহনের ধাক্কায় অজ্ঞাত এক যুবক মারা গেছে।

এসআই আরও জানান, সাতরাস্তা এলাকায় বাবা তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশাযোগে যাচ্ছিলেন। তখন একটি ট্রাক রিকশাটিকে চাপা দেয়। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে আসলে বাবা ও মেয়ে মারা যায়। আহত ছেলে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। ট্রাকটিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

এসআই আব্দুল হামিদ আরও জানান, মহাখালী এলাকায় মারা যাওয়া যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি। যানবাহন শনাক্তের চেষ্টা চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত