Ajker Patrika

বিএনপির সমাবেশ: রাজশাহীতে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, চলছে ধরপাকড়

আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২২, ২৩: ১৪
বিএনপির সমাবেশ: রাজশাহীতে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, চলছে ধরপাকড়

রাজশাহীতে ৮ শর্তে বিভাগীয় গণসমাবেশের অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। আগামী ৩ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে (হাজী মুহম্মদ মুহসীন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ) হবে গণসমাবেশ। এরই মধ্যে সমাবেশের আগে ১০ দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) থেকে রাজশাহী বিভাগে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে পরিবহন মালিক সমিতি।

অন্যদিকে সমাবেশকে ঘিরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে মামলা ও ধরপাকড়। রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় গতকাল ও আজ বুধবার মিলিয়ে ৭২ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া প্রায় ৪২৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং হাজার খানেক অজ্ঞাত নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক রাতে বিএনপির ৬২ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দিবাগত রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে ১১, শিবগঞ্জে ১৩, নাচোলে ১৯, গোমস্তাপুরে ১৪ ও ভোলাহাটে ৫ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে স্থানীয় থানা-পুলিশ। পাঁচ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বিস্ফোরক আইনের মামলায় আজ বুধবার (৩০ নভেম্বর) তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের একের পর এক মামলা করার অভিযোগ করেছে বিএনপি। ১০ দিনে জেলার ৫ থানায় বিস্ফোরক আইনে ৫টি মামলা হয়েছে বলে দাবি বিএনপি নেতাদের। আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীর বিভাগীয় গণসমাবেশ ঠেকাতে নেতা-কর্মীদের নামে পুলিশ এসব ‘গায়েবি মামলা’ করছে বলে অভিযোগ তাদের। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম জাকারিয়া জানান, পুলিশের সাজানো মামলায় প্রায় ৪ শতাধিক কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। কাউকে বাড়ি থেকে, কাউকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা রাস্তা থেকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

রাজশাহী 
নাশকতার মামলায় রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গনিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান রঞ্জুকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে বাগমারার দেউলা চারমাথা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। মনিরুজ্জামান উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক। বিকেলে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম।

বাঘা (রাজশাহী)
রাজশাহীর বাঘায় নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনে বিএনপির তিন নেতাকে মামলায় গ্রেপ্তার করে বাঘা থানা-পুলিশ। বুধবার (৩০ নভেম্বর) সকালে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বাঘা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোখলেচুর রহমান মুকুল, জেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য ও উপজেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক শফিকুল ইসলাম (শফি), উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ফিরোজ হোসেন।

গত ১৯ নভেম্বর রাতে পাকুড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিসহ ১৫০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনে বাঘা থানায় উপপরিদর্শক (এসআই) শাহরিয়ার নাসিম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে, পাকুড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি দস্তুল হোসেনকে। এ ছাড়া এজাহারে কয়েকজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে কয়েকজনকে।

পুঠিয়া (রাজশাহী)
রাজশাহীর পুঠিয়ায় নাশকতা মামলায় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম মুক্তাকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩০ নভেম্বর) ভোররাতের দিকে পুঠিয়া সদরের কাঠালবাড়িয়া গ্রামের বাসভবন থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জানা গেছে, স্থানীয় বিএনপির কর্মী সমাবেশ ঘিরে গত ২১ নভেম্বর রাতে পুঠিয়ার মোল্লাপাড়া বাজারে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানা পুলিশ ১৬ জনের নামে ও আরও শতাধিক অজ্ঞাতনামা আসামি করে নাশকতার মামলা দায়ের করে।

এ মামলায় গত ২১ নভেম্বর জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি অধ্যাপক খোরশেদ আলমকে মোল্লাপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় বিএনপির ২০ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) গভীর রাতে রায়গঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. জুয়েল আকন্দ বাদী হয়ে রায়গঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। রায়গঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

মামলায় রায়গঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আইনুল হক, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস মন্ডল, জেলা বিএনপির সহপ্রচার সম্পাদক রেজাউল করীম খানসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ)
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার মামলায় বিএনপির ৫ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত  কর্মকর্তান (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম। মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার তাড়াশ-রানীরহাট আঞ্চলিক সড়কের লাউতা চার মাথা আকবর আলী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তালম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোজ্জামেল হক মজনু বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে পুলিশ রাতভর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিএনপির ৫ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার তালম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. সোহরাব হোসেন (৫৫), ইউনিয়ন যুব দলের আহ্বায়ক মো. দিদার খাঁন (৪২), তাড়াশ উপজেলা যুব দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাজিব আহম্মেদ মাসুম (৩৮), বারুহাস ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক  মুক্তার হোসেন সরকার (৪৫) ও মাধাইনগর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ (৪০)।

বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ)
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর ও বেলকুচিতে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ এনে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বুধবার (৩০ নভেম্বর) সকালে খুকনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ আফাজ উদ্দিন বেপারী বাদী হয়ে এনায়েতপুর থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করেন। এ ছাড়া গত রোববার রাতে বেলকুচি পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ আহম্মেদ উৎস বাদী হয়ে বেলকুচি থানায় পৃথক মামলা দায়ের করেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন এনায়েতপুর থানার ওসি আনিছুর রহমান।

প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, বাঘা (রাজশাহী), পুঠিয়া (রাজশাহী), সিরাজগঞ্জ, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ), বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) ও সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি সম্মিলিত নারী প্রয়াসের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিজয় দিবস উপলক্ষে ‘সম্মিলিত নারী প্রয়াস’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিজয় দিবস উপলক্ষে ‘সম্মিলিত নারী প্রয়াস’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের পাশাপাশি ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সব দলের জন্য সমান প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) তৈরির দাবি জানিয়েছেন সম্মিলিত নারী প্রয়াস সংগঠনের সভানেত্রী এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামীমা তাসনিম।

আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘নতুন বাংলাদেশ, চাই সুষ্ঠু নির্বাচন, চাই যোগ্য নেতৃত্ব’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকের আয়োজন করে সম্মিলিত নারী প্রয়াস।

সরকারের কাছে দাবি তুলে শামীমা তাসনিম বলেন, ‘সব দলের রাজনৈতিক সুযোগ রেখে সমান প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেটাকে আমরা বলছি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড। সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের নিরাপত্তা দিতে হবে এবং সেটি ভয়ভীতি যেন না দেখানো হয়। মানে ভোট দিতে যে আমি যাব, যেন সুস্থ অবস্থায় ফেরত আসতে পারি।’

অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছ নির্বাচনের কথা বলতে গিয়ে ড. শামীমা তাসনিম বলেন, বাংলাদেশে অতীতে যে দলই ক্ষমতায় এসেছে, তারা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো ব্যবহার করেছে। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে আমলা নিয়োগ এবং পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে দলীয় আনুগত্যকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। অতীতে ছাত্রলীগের কর্মীদের নিয়োগের বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি।

কথায় ও কাজে সৎ এবং জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন, যিনি দুর্নীতি করবেন না এবং দুর্নীতির প্রশ্রয় দেবেন না, যিনি বাংলাদেশকে একমাত্র স্থায়ী ঠিকানা মনে করবেন এবং বিদেশে কোনো ‘সেকেন্ড হোম’ রাখবেন না, আধিপত্যবিরোধী হবেন—এমন নেতৃত্ব আনার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

সম্মিলিত নারী প্রয়াস সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার নিয়ামা ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সংগঠনটির সেক্রেটারি ড. ফেরদৌস আরা খানম, সহকারী সম্পাদক মাহসিনা মমতাজ মারিয়া, লেকচারার ড. জেবুন্নেসা, ড. মেহের আফরোজ লুৎফা, জান্নাতুন নাইম প্রমি প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিক্ষক নেটওয়ার্ক বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি: রাকসু জিএস আম্মার

রাবি প্রতিনিধি  
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ৩০
রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মার। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) শিক্ষক নেটওয়ার্কের ‘ক্যাম্পাসে ছাত্র প্রতিনিধিদের এখতিয়ারবহির্ভূত তৎপরতা বন্ধ হোক’ শিরোনামে দেওয়া বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় এই আহ্বান জানান তিনি।

শিক্ষক নেটওয়ার্কের ফেসবুক পেজে দেওয়া ওই বিবৃতির মন্তব্যে আম্মার লেখেন, ‘শিক্ষক নেটওয়ার্ক বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি’।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘আমি কমেন্ট করেছি, ডিলিট করি নাই। তাঁরা (শিক্ষক নেটওয়ার্ক) আমার কাজকে যদি অপতৎপরতা হিসেবে দেখের, তাহলে আমিও তাঁদের বিবৃতি সন্দেহের চোখে দেখি। তাঁরা আমাকে একটি আহ্বান জানিয়েছেন, আমিও তাঁদের আহ্বান জানিয়েছি। তাঁরা এটাকে স্বাধীনতা হিসেবে দেখলে, আমিও আমার স্বাধীনতা প্রকাশ করছি।’

শিক্ষক নেটওয়ার্কের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মারের নেতৃত্বে নানা ধরনের মবপ্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। ডিনদের পদত্যাগ করানো, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের হয়রানি তৎপরতা চলমান আছে। রাকসুর জিএস প্রশাসনের কাছে জবাবদিহি না চেয়ে বরং ছয়জন ডিনের পদত্যাগ দাবি করেন। কেবল তা-ই নয়, নিজেই যেন “প্রশাসন” হয়ে অত্যন্ত ঔদ্ধত্যপূর্ণ ভাষায় ডিনদের বিরুদ্ধে হুমকি দেন, এমনকি এখতিয়ারবহির্ভূতভাবে নিজে পদত্যাগপত্র লিখে এনে বিভিন্ন বিভাগে গিয়ে ডিনদের খুঁজতে থাকেন, সম্ভবত লাঞ্ছিত করার উদ্দেশ্যে। মোট ১২ জন ডিনের প্রত্যেকেই গত আওয়ামী শাসনামলে নির্বাচিত হলেও, বাকি ছয়জন হয়তো রাকসু জিএসের বিবেচনায় “রাজনৈতিক বিবেচনায় উত্তীর্ণ”, ফলে তাঁদের পদত্যাগের দাবি ওঠেনি, তাঁদের নিয়ে অবমাননাকর কিছু বলাও হয়নি। এই উদ্ভূত অসম্মানজনক পরিস্থিতিতে “প্রগতিশীল শিক্ষক” হিসেবে পরিচিত ছয়জন ডিন দায়িত্ব পালতে অপারগতা প্রকাশ করেন।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে রাকসুর জিএস ভব্যতার সব সীমা ছাড়িয়ে বারবার ঘোষণা করতে থাকেন, লীগপন্থী শিক্ষকেরা ক্যাম্পাসে ঢুকলে কলার ধরে টেনে এনে প্রশাসন ভবনের সামনে বেঁধে রাখা হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যা করছেন, তা রাকসুর এখতিয়ারবহির্ভূত এবং তাঁদের আচরণও আগ্রাসী ও সন্ত্রাসীদের মতো। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমরা এর জবাবদিহি প্রত্যাশা করি। কেননা, রাকসুর নেতৃবৃন্দের এ রকম আচরণ কেবল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করেনি; এটা সরাসরি বিদ্যায়তনিক স্বাধীনতার ওপরে হামলা। এর “স্পাইরাল ইফেক্ট” পড়েছে সারা দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।’

সার্বিক বিষয়ে রাবির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও শিক্ষক নেটওয়ার্কের সদস্য সৌভিক রেজা বলেন, ‘শিক্ষক নেটওয়ার্ক ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে। যদি ভিন্ন মতাদর্শের হওয়ার কারণে চাকরি চলে যেত বা পদচ্যুত করানো হতো তাহলে তো শিক্ষক নেটওয়ার্কের অনেকেরই আওয়ামী আমলে চাকরি চলে যেত। ৭৩-এর অধ্যাদেশ আমাদেরকে একটা রক্ষাকবজ দিয়েছে, যে কারণে আমরা শিক্ষকেরা সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার পরও আমাদের চাকরি চলে যায়নি।’

সৌভিক রেজা আরও বলেন, ‘ভিন্ন মতাদর্শের শিক্ষক কর্মকর্তাদের গাছে বেঁধে রাখা, চাকরিচ্যুত কিংবা জোরপূর্বক পদত্যাগ করানো একজন শিক্ষার্থীর এখতিয়ারের বাইরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও এ ক্ষমতা রাখেন না। তবে শিক্ষকেরা কিন্তু আইনের ঊর্ধ্বে নন। আইনানুযায়ী তাঁদের শাস্তি দেওয়া যেতে পারে, তবে মব সৃষ্টি করে নয়। কেউ যদি সরাসরি হামলা বা দালালি করে থাকেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু একজন নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধি এভাবে কাউকে পদত্যাগে বাধ্য করতে পারেন না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাতক্ষীরায় জেলা আ.লীগ নেতার মনোনয়নপত্র জমা, সমর্থক আটক

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
এস এম মুজিবর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
এস এম মুজিবর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরার চারটি সংসদীয় আসনে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ.লীগ নেতাসহ ২৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। আজ সোমবার জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিজ নিজ মনোনয়নপত্র জমা দেন তাঁরা।

সাতক্ষীরা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সাতক্ষীরা-১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপির হাবিবুল ইসলাম হাবিব, জামায়াতের মো. ইজ্জতুল্লাহ, জাতীয় পার্টির জিয়াউর রহমান ও ইসলামী আন্দোলনের শেখ মো. রেজাউল করিম ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. ইয়ারুল ইসলাম।

আর কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক এস এম মুজিবর রহমান ওরফে সরদার মুজিব স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। পরে তাঁর পক্ষে মনোনয়ন জমা দেওয়ার অভিযোগে মাগফুর রহমান নামের এক সমর্থককে আটক করেছে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন জানান, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষে মনোনয়ন জমা দেওয়ার অভিযোগে মাগফুর রহমান নামের এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে আটক করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা-২ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জামায়াতের মুহাম্মদ আব্দুল খালেক, বিএনপির মো. আব্দুর রউফ, জাতীয় পার্টির মো. আশরাফুজ্জামান ও মাতলুব হোসেন।

এ ছাড়া এলডিপির শফিকুল ইসলাম শাহেদ, ইসলামী আন্দোলনের মুফতি রবিউল ইসলাম, বাংলাদেশ জাসদের মো. ইদ্রিস আলী ও এবি পার্টির জিএম সালাউদ্দীন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

সাতক্ষীরা-৩ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জামায়াতের মুহা. রবিউল ইসলাম, বিএনপির কাজী আলাউদ্দীন ও জাতীয় পার্টির মো. আলিপ হোসেন।

এ ছাড়া মাইনরিটি জনতা পার্টির রুবেল হোসেন, ইসলামী আন্দোলনের ওয়েজ কুরনী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এম এ আসফউদ্দৌলা খান, আসলাম আল মেহেদী ও ডা. শহিদুল আলম (বিএনপির বিদ্রোহী) মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

সাতক্ষীরা-৪ আসনে জামায়াতের গাজী নজরুল ইসলাম, বিএনপির মো. মনিরুজ্জামান ও জাতীয় পার্টির হুসেইন মো. মায়াজ, গণঅধিকার পরিষদের এইচ এম গোলাম রেজা, ইসলামী আন্দোলনের মোস্তফা আল মামুন ও আব্দুল ওয়াহেদ (বিএনপির বিদ্রোহী) প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোলায় বিজেপি কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর

ভোলা প্রতিনিধি
ভোলায় বিজেপি কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভোলায় বিজেপি কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে সোমবার বিকেলে ভোলায় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছুড়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।

বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শহরের নতুন বাজার এলাকায় জেলা বিজেপি অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে ছাত্রদলের নেতা সিফাত হত্যার প্রতিবাদ মিছিলে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আল আমিন অভিযোগ করেন, মিছিলটি নতুন বাজার এলাকায় বিজেপি অফিসের সামনে পৌঁছালে সেখান থেকে মিছিল লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হলে বিক্ষুব্ধ জনতা বিজেপি অফিসে হামলা চালায়।

বিজেপির অঙ্গ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক পার্টির জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সামছুল আলম অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাঁদের দলীয় অফিস বন্ধ ছিল। বিজেপির জনসমর্থনে ঈর্ষান্বিত হয়ে বিএনপি পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছে।

ভোলা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে বিজেপি অফিসে হামলা কিংবা কোনো ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে কি না তা আমাদের জানা নেই।’ তিনি আরও জানান, কে বা কারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, সেটা এখনো পুলিশ নিশ্চিত হতে পারেনি।

ভোলার জেলা প্রশাসক ডা. শামীম রহমান রাতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন সামনে রেখে যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন তৎপর রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত