নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

আটকের পর বিজলী কুমার রায় (৪০) শুধু নিজের নামটাই বলতে পেরেছিলেন। বাড়ি জানতে চাইলে বলতেন, ‘বিহার।’ আর কিছুই বলতে পারতেন না। শরীয়তপুর কারা কর্তৃপক্ষ ধরেই নেয়, তাঁর বাড়ি ভারতের বিহার। প্রত্যর্পণের সুবিধায় তাঁকে পাঠিয়ে দেয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগারে। ছয় মাসের সাজা শেষ হয়, বিজলী বাড়ি যেতে চান। বিজিবি তাঁকে সীমান্তে নিয়ে যায়, কিন্তু অভিভাবক নেই বলে ফিরিয়ে দেয় বিএসএফ। বিজলীর বাড়ি ফেরা হয় না। অবশেষে তিনি যখন বাড়ি ফিরবেন, কিন্তু জীবিত নন লাশ হয়ে।
বিজলীর বাড়ি ফেরার গল্পটা সিনেমার মতো। গত বছর অক্টোবরে বিজলীর খোঁজ পান ঢাকার সাংবাদিক শামসুল হুদা। তিনি এ পর্যন্ত দুই দেশের কারাগারে আটকে থাকা ৪৩ জনকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছেন। তিনি হয়ে উঠেছেন ‘বাঙালি বজরঙ্গি ভাইজান।’ ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ সিনেমার ছোট্ট মেয়েটি বাক্প্রতিবন্ধী। আর বিজলী কুমার মানসিক ভারসাম্যহীন। আজ শুক্রবার বিজলীর মরদেহ নিয়ে সীমান্তে যান সাংবাদিক শামসুল হুদা।
কীভাবে বিজলীর খোঁজ পাওয়া গেল, সে গল্পটি শুনিয়েছেন শামসুল হুদা। তিনি জানান, ২০২১ সালের মে মাসে শরীয়তপুরের জাজিরা থানার পুলিশ বিজলী রায়কে আটক করে। তারপর অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আদালতে তাঁর ছয় মাসের জেল হয়। কারা কর্তৃপক্ষ ধরেই নেয় বিজলীর বাড়ি ভারতের বিহারে। তাই প্রত্যর্পণের সুবিধার্থে তাঁকে পাঠিয়ে দেয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগারে। এখানে এমন বন্দীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১১। গত বছরের অক্টোবরে এই কারাগার পরিদর্শনে যান চুয়াডাঙ্গার একজন জেল সুপার। তিনি শামসুল হুদার কথা জানতেন।
তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেল সুপারকে জানান, শামসুল হুদা আটকে পড়া এমন বন্দীদের পরিবারের সঙ্গে যুক্ত করে দেন। তারপর ফোন করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেল সুপার। তিনি ১১ জন বন্দীর একটি তালিকা দেন। কাজ শুরু করেন শামসুল হুদা। এরই মধ্যে ছয়জনকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। এরপর বিজলী রায়কে নিয়ে কাজ করছিলেন শামসুল হুদা। বাড়ি ফেরার আগেই তিনি মারা গেলেন।
বিজলীকে খুঁজে পাওয়া থেকে পরিবারের কাছে মরদেহ নিয়ে যাওয়ার পুরো ঘটনা নিয়ে বর্ণনা দেন শামসুল। তাঁর বর্ণনায়, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর বিহারের মোজাফফরপুর জেলার মিনাপুর থানার একটি গ্রামে বিজলী রায়ের পরিবারকে খুঁজে পান। এ ব্যাপারে সেখানকার গ্রাম পঞ্চায়েত যথেষ্ট সহায়তা করেন। এরপর ২৯ ডিসেম্বর বিজলী রায়ের যাবতীয় অফিশিয়াল ডকুমেন্ট ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসে পাঠানো হয়। বিজলীর ভাই বদ্রি রায় মাঝেমধ্যেই ফোন করে খোঁজ নিতেন। জানাতেন তাঁর ভাইয়ের শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে, সে যেন ভালো থাকে সেদিকে খেয়াল রাখার অনুরোধ জানাতে থাকেন। বদ্রি রায় বেশ কয়েকবার তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন, কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা থাকায় সরাসরি তাঁর সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে কয়েকটি ছবি বদ্রিকে পাঠানো হয়েছিল।
তখন পর্যন্ত সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল, কিন্তু হঠাৎ করে গত ১৫ জানুয়ারি বদ্রি রায় বিহার থেকে শামসুল হুদাকে ফোন করেন। জানান, বাংলাদেশ থেকে কেউ একজন তাঁকে কল করেছিলেন। সেই নম্বরটি নিয়ে কল করলে শামসুল হুদা দেখেন, এটি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. আমানুল্লাহর নম্বর। শামসুল হুদা ভাবলেন, বিজলী রায় তো চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলে ছিলেন। তাহলে রাজশাহী জেলার কেন তাঁকে ফোন করলেন? প্রশ্ন করতেই শুনলেন দুঃসংবাদ। বিজলী কয়েক দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। তাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী পাঠানো হয়। রাজশাহী আসার পর বিজলী রায় মারা গেছেন।
এরপর বিজলী রায়ের মরদেহ ছিল রাজশাহী মেডিকেল কলেজের হিমঘরে। এদিকে তাঁর মরদেহ বিহারে পাঠানোর তৎপরতা শুরু করেন শামসুল হুদা। চিঠি চালাচালি চলতে থাকেন। ১৬ জানুয়ারি সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায় কারা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বিজলীর মৃত্যুর বিষয়টি অবহিত করেন।
মহাপরিদর্শক দপ্তর থেকে বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে জানানো হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘুরে চিঠিটি দূতাবাসে পৌঁছে। ঢাকার ভারতীয় দূতাবাস অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ১৩ দিনের মধ্যেই ১২ ফেব্রুয়ারি বিজলী রায়ের মরদেহটি পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে সরকারি পরিপত্র জারি করে। দূতাবাস থেকে পাঠানো চিঠিটি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘুরে কারা অধিদপ্তরের কাছে দ্রুততার সঙ্গে পৌঁছানোর জন্য প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন শামসুল হুদা।
পরবর্তীকালে ২৬ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগ থেকে একটি চিঠি ভারতীয় দূতাবাসে পাঠানো হয়। এর সূত্র ধরে কারা কর্তৃপক্ষ এবং মহাপরিদর্শক কার্যালয় থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে কি না খোঁজ করতে থাকলেও কোনো কূলকিনারা পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে ৩ মার্চ হাইকমিশন থেকে পাওয়া সুরক্ষা বিভাগের চিঠিটি কারা অধিদপ্তরে পাঠানো হলে এর ভিত্তিতে শেষ বিকেলে ত্বড়িত গতিতে বিজলী রায়ের মরদেহের ছাড়পত্র রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর কারা কর্তৃপক্ষ মরদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য বিজিবিকে অনুরোধ করে চিঠি দেয়। বিজিবি তখন চিঠি দেয় বিএসএফকে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় বিএসএফের পক্ষ থেকে কারা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয় যে তারা মরদেহ গ্রহণ করতে সম্মত। ওই রাতেই বিজিবির সঙ্গে কথা বলে সব ব্যবস্থা করে কারা কর্তৃপক্ষ।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. আমান উল্লাহ বলেন, ‘দেশের কোনো বন্দী মারা গেলে আমরা পরের দিনের মধ্যেই পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করতে পারি। কিন্তু ভারতীয়দের ক্ষেত্রে তা হয় না। প্রথমে মন্ত্রণালয়, কারা অধিদপ্তরকে জানাতে হয়। ভারতীয় দূতাবাসকেও জানাতে হয়। দূতাবাস তখন ভারতে ভেরিফিকেশন করে যে ওই ব্যক্তি ভারতীয় কি না। এরপরই তারা লাশ গ্রহণে সম্মত হয়। এ প্রক্রিয়ায় একটা সময় লেগে যায়।’
তিনি বলেন, ‘সবশেষ বিএসএফের ক্লিয়ারেন্সটা আমরা গত রাত ৮টায় পাই। এরপরই আমরা বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করার অনুরোধ জানাই। বিজিবি সব ব্যবস্থা করে। আজ ভোরে রামেক হাসপাতালের হিমঘর থেকে লাশ কারাগারের সামনে আনা হয়। সেখানে অফিশিয়াল প্রক্রিয়া শেষ করে লাশ চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়।’
বিজলীর পরিবারকে খুঁজে পেতে সাংবাদিক শামসুল হুদার বড় অবদান রয়েছে বলে জানান জেলা কারাগারের জেলার জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘বিজলীর পরিবারকে খুঁজে পেতে সাংবাদিক শামসুল হুদা বড় ভূমিকা রেখেছেন। তিনি এই কাজটা অনেক দিন ধরেই করছেন।’
সাংবাদিক শামসুল হুদা রোটারি ক্লাব অব বনানীর সদস্য। গত ৮ মার্চ সংগঠনের সাপ্তাহিক বৈঠকে বিজলী কুমারের মরদেহ পাঠানোর বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়। বৈঠকে উপস্থিত সবাই পরিবারের সদস্যর কাছে মরদেহটি পৌঁছানোর দায়িত্ব শামসুল হুদাকেই দেন। বরাদ্দ করা হয় অর্থও। আর মরদেহটি রাজশাহী থেকে বিহার নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাপনায় ছিল ঢাকা পেকার্স। কফিন থেকে সবকিছুই ব্যবস্থা করেছে ঢাকা পেকার্স।
শামসুল হুদা জানান, দুপুরে তাঁরা সোনামসজিদ স্থলবন্দরে লাশ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। বিজলী কুমারের ভাই এসেছেন। স্থানীয় থানা-পুলিশ আসার পর লাশ হস্তান্তর হবে। তিনি ভাইয়ের কাছে বিজলীর লাশ হস্তান্তর করে ফিরে আসবেন।

আটকের পর বিজলী কুমার রায় (৪০) শুধু নিজের নামটাই বলতে পেরেছিলেন। বাড়ি জানতে চাইলে বলতেন, ‘বিহার।’ আর কিছুই বলতে পারতেন না। শরীয়তপুর কারা কর্তৃপক্ষ ধরেই নেয়, তাঁর বাড়ি ভারতের বিহার। প্রত্যর্পণের সুবিধায় তাঁকে পাঠিয়ে দেয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগারে। ছয় মাসের সাজা শেষ হয়, বিজলী বাড়ি যেতে চান। বিজিবি তাঁকে সীমান্তে নিয়ে যায়, কিন্তু অভিভাবক নেই বলে ফিরিয়ে দেয় বিএসএফ। বিজলীর বাড়ি ফেরা হয় না। অবশেষে তিনি যখন বাড়ি ফিরবেন, কিন্তু জীবিত নন লাশ হয়ে।
বিজলীর বাড়ি ফেরার গল্পটা সিনেমার মতো। গত বছর অক্টোবরে বিজলীর খোঁজ পান ঢাকার সাংবাদিক শামসুল হুদা। তিনি এ পর্যন্ত দুই দেশের কারাগারে আটকে থাকা ৪৩ জনকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছেন। তিনি হয়ে উঠেছেন ‘বাঙালি বজরঙ্গি ভাইজান।’ ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ সিনেমার ছোট্ট মেয়েটি বাক্প্রতিবন্ধী। আর বিজলী কুমার মানসিক ভারসাম্যহীন। আজ শুক্রবার বিজলীর মরদেহ নিয়ে সীমান্তে যান সাংবাদিক শামসুল হুদা।
কীভাবে বিজলীর খোঁজ পাওয়া গেল, সে গল্পটি শুনিয়েছেন শামসুল হুদা। তিনি জানান, ২০২১ সালের মে মাসে শরীয়তপুরের জাজিরা থানার পুলিশ বিজলী রায়কে আটক করে। তারপর অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আদালতে তাঁর ছয় মাসের জেল হয়। কারা কর্তৃপক্ষ ধরেই নেয় বিজলীর বাড়ি ভারতের বিহারে। তাই প্রত্যর্পণের সুবিধার্থে তাঁকে পাঠিয়ে দেয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগারে। এখানে এমন বন্দীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১১। গত বছরের অক্টোবরে এই কারাগার পরিদর্শনে যান চুয়াডাঙ্গার একজন জেল সুপার। তিনি শামসুল হুদার কথা জানতেন।
তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেল সুপারকে জানান, শামসুল হুদা আটকে পড়া এমন বন্দীদের পরিবারের সঙ্গে যুক্ত করে দেন। তারপর ফোন করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেল সুপার। তিনি ১১ জন বন্দীর একটি তালিকা দেন। কাজ শুরু করেন শামসুল হুদা। এরই মধ্যে ছয়জনকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। এরপর বিজলী রায়কে নিয়ে কাজ করছিলেন শামসুল হুদা। বাড়ি ফেরার আগেই তিনি মারা গেলেন।
বিজলীকে খুঁজে পাওয়া থেকে পরিবারের কাছে মরদেহ নিয়ে যাওয়ার পুরো ঘটনা নিয়ে বর্ণনা দেন শামসুল। তাঁর বর্ণনায়, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর বিহারের মোজাফফরপুর জেলার মিনাপুর থানার একটি গ্রামে বিজলী রায়ের পরিবারকে খুঁজে পান। এ ব্যাপারে সেখানকার গ্রাম পঞ্চায়েত যথেষ্ট সহায়তা করেন। এরপর ২৯ ডিসেম্বর বিজলী রায়ের যাবতীয় অফিশিয়াল ডকুমেন্ট ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসে পাঠানো হয়। বিজলীর ভাই বদ্রি রায় মাঝেমধ্যেই ফোন করে খোঁজ নিতেন। জানাতেন তাঁর ভাইয়ের শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে, সে যেন ভালো থাকে সেদিকে খেয়াল রাখার অনুরোধ জানাতে থাকেন। বদ্রি রায় বেশ কয়েকবার তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন, কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা থাকায় সরাসরি তাঁর সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে কয়েকটি ছবি বদ্রিকে পাঠানো হয়েছিল।
তখন পর্যন্ত সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল, কিন্তু হঠাৎ করে গত ১৫ জানুয়ারি বদ্রি রায় বিহার থেকে শামসুল হুদাকে ফোন করেন। জানান, বাংলাদেশ থেকে কেউ একজন তাঁকে কল করেছিলেন। সেই নম্বরটি নিয়ে কল করলে শামসুল হুদা দেখেন, এটি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. আমানুল্লাহর নম্বর। শামসুল হুদা ভাবলেন, বিজলী রায় তো চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলে ছিলেন। তাহলে রাজশাহী জেলার কেন তাঁকে ফোন করলেন? প্রশ্ন করতেই শুনলেন দুঃসংবাদ। বিজলী কয়েক দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। তাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী পাঠানো হয়। রাজশাহী আসার পর বিজলী রায় মারা গেছেন।
এরপর বিজলী রায়ের মরদেহ ছিল রাজশাহী মেডিকেল কলেজের হিমঘরে। এদিকে তাঁর মরদেহ বিহারে পাঠানোর তৎপরতা শুরু করেন শামসুল হুদা। চিঠি চালাচালি চলতে থাকেন। ১৬ জানুয়ারি সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায় কারা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বিজলীর মৃত্যুর বিষয়টি অবহিত করেন।
মহাপরিদর্শক দপ্তর থেকে বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে জানানো হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘুরে চিঠিটি দূতাবাসে পৌঁছে। ঢাকার ভারতীয় দূতাবাস অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ১৩ দিনের মধ্যেই ১২ ফেব্রুয়ারি বিজলী রায়ের মরদেহটি পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে সরকারি পরিপত্র জারি করে। দূতাবাস থেকে পাঠানো চিঠিটি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘুরে কারা অধিদপ্তরের কাছে দ্রুততার সঙ্গে পৌঁছানোর জন্য প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন শামসুল হুদা।
পরবর্তীকালে ২৬ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগ থেকে একটি চিঠি ভারতীয় দূতাবাসে পাঠানো হয়। এর সূত্র ধরে কারা কর্তৃপক্ষ এবং মহাপরিদর্শক কার্যালয় থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে কি না খোঁজ করতে থাকলেও কোনো কূলকিনারা পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে ৩ মার্চ হাইকমিশন থেকে পাওয়া সুরক্ষা বিভাগের চিঠিটি কারা অধিদপ্তরে পাঠানো হলে এর ভিত্তিতে শেষ বিকেলে ত্বড়িত গতিতে বিজলী রায়ের মরদেহের ছাড়পত্র রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর কারা কর্তৃপক্ষ মরদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য বিজিবিকে অনুরোধ করে চিঠি দেয়। বিজিবি তখন চিঠি দেয় বিএসএফকে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় বিএসএফের পক্ষ থেকে কারা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয় যে তারা মরদেহ গ্রহণ করতে সম্মত। ওই রাতেই বিজিবির সঙ্গে কথা বলে সব ব্যবস্থা করে কারা কর্তৃপক্ষ।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. আমান উল্লাহ বলেন, ‘দেশের কোনো বন্দী মারা গেলে আমরা পরের দিনের মধ্যেই পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করতে পারি। কিন্তু ভারতীয়দের ক্ষেত্রে তা হয় না। প্রথমে মন্ত্রণালয়, কারা অধিদপ্তরকে জানাতে হয়। ভারতীয় দূতাবাসকেও জানাতে হয়। দূতাবাস তখন ভারতে ভেরিফিকেশন করে যে ওই ব্যক্তি ভারতীয় কি না। এরপরই তারা লাশ গ্রহণে সম্মত হয়। এ প্রক্রিয়ায় একটা সময় লেগে যায়।’
তিনি বলেন, ‘সবশেষ বিএসএফের ক্লিয়ারেন্সটা আমরা গত রাত ৮টায় পাই। এরপরই আমরা বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করার অনুরোধ জানাই। বিজিবি সব ব্যবস্থা করে। আজ ভোরে রামেক হাসপাতালের হিমঘর থেকে লাশ কারাগারের সামনে আনা হয়। সেখানে অফিশিয়াল প্রক্রিয়া শেষ করে লাশ চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়।’
বিজলীর পরিবারকে খুঁজে পেতে সাংবাদিক শামসুল হুদার বড় অবদান রয়েছে বলে জানান জেলা কারাগারের জেলার জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘বিজলীর পরিবারকে খুঁজে পেতে সাংবাদিক শামসুল হুদা বড় ভূমিকা রেখেছেন। তিনি এই কাজটা অনেক দিন ধরেই করছেন।’
সাংবাদিক শামসুল হুদা রোটারি ক্লাব অব বনানীর সদস্য। গত ৮ মার্চ সংগঠনের সাপ্তাহিক বৈঠকে বিজলী কুমারের মরদেহ পাঠানোর বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়। বৈঠকে উপস্থিত সবাই পরিবারের সদস্যর কাছে মরদেহটি পৌঁছানোর দায়িত্ব শামসুল হুদাকেই দেন। বরাদ্দ করা হয় অর্থও। আর মরদেহটি রাজশাহী থেকে বিহার নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাপনায় ছিল ঢাকা পেকার্স। কফিন থেকে সবকিছুই ব্যবস্থা করেছে ঢাকা পেকার্স।
শামসুল হুদা জানান, দুপুরে তাঁরা সোনামসজিদ স্থলবন্দরে লাশ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। বিজলী কুমারের ভাই এসেছেন। স্থানীয় থানা-পুলিশ আসার পর লাশ হস্তান্তর হবে। তিনি ভাইয়ের কাছে বিজলীর লাশ হস্তান্তর করে ফিরে আসবেন।

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদ খননের পরও সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। উপজেলার ফকিরহাট বাজারসংলগ্ন এলাকা দিয়ে নেওয়া খুলনা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে নৌচলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দেখা দিয়েছে মারাত্মক নাব্যতাসংকট।
৫ ঘণ্টা আগে
আইনের আশ্রয় নিতে এসে ভয় নিয়ে ঢুকতে হচ্ছে আদালতে। অর্ধশত বছরের পুরোনো দুটি পরিত্যক্ত ভবনের মাঝ দিয়েই বরগুনার আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল প্রবেশপথ। জরাজীর্ণ ভবন দুটি যেকোনো সময় ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী...
৫ ঘণ্টা আগে
দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চলে ভ্যানচালক ওমর ফারুকের (৩৮) ওপর। পেরেক ঢোকানো হয় হাত-পায়ে। পানি চাইলে শীতের রাতে নগ্ন করে চুবানো হয় নদীতে। তারপর দফায় দফায় নির্যাতন। পায়ুপথে ঢোকানো হয় মরিচের গুঁড়া। এতে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন ফারুক। ওই অবস্থায় তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
৭ ঘণ্টা আগে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের খুলনা বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আলোচিত তনিমা তন্বীকে আটক করেছে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
৭ ঘণ্টা আগেফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদ খননের পরও সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। উপজেলার ফকিরহাট বাজারসংলগ্ন এলাকা দিয়ে নেওয়া খুলনা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে নৌচলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দেখা দিয়েছে মারাত্মক নাব্যতাসংকট।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ফকিরহাট বাজারের পাশ দিয়ে যাওয়া ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের একটি সেতুর নিচে ভৈরব নদের মাঝ বরাবর বড় পানির পাইপ রয়েছে। পাইপটি রক্ষায় নদীর ভেতর আড়াআড়িভাবে লোহার খাম্বা বসিয়ে বেড়া দেওয়ায় নদীটিতে বাঁধ তৈরি হয়েছে। ফলে জোয়ার-ভাটার স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়ে নদীগর্ভে দ্রুত পলি জমছে। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নৌচলাচল।
স্থানীয়রা বলেন, ফকিরহাট, মোল্লাহাট এবং আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনসহ নৌপথ সচল রাখতে ২০২০ সালে ভৈরব নদের সাড়ে ১৭ কিমি পুনঃখনন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তবে খননের সুফল কাজে আসেনি। মোল্লাহাটের মধুমতী নদী থেকে খুলনা শহরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য স্থাপন করা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গত বর্ষা মৌসুমে নদী দিয়ে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হওয়ায় ফকিরহাট এবং আশপাশের এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি ও মাছের ঘের পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যায়।
ফকিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী মুকুন্দ পাল বলেন, নৌচলাচল বন্ধ থাকায় ব্যবসায় মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। নৌপথ চালু থাকলে খুলনা, মোংলা বন্দর, বাগেরহাট ও বরিশালের সঙ্গে স্বল্প খরচে পণ্য পরিবহন সম্ভব হতো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমনা আইরিন বলেন, ওয়াসার পাইপটি ফকিরহাটসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য দীর্ঘদিনের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
খুলনা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরমান সিদ্দিক বলেন, ওই স্থানে পাইপলাইনের মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি চীন থেকে আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। যন্ত্রপাতি এলে পাইপলাইনটি নৌযান চলাচলের উপযোগী করা হবে।

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদ খননের পরও সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। উপজেলার ফকিরহাট বাজারসংলগ্ন এলাকা দিয়ে নেওয়া খুলনা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে নৌচলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দেখা দিয়েছে মারাত্মক নাব্যতাসংকট।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ফকিরহাট বাজারের পাশ দিয়ে যাওয়া ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের একটি সেতুর নিচে ভৈরব নদের মাঝ বরাবর বড় পানির পাইপ রয়েছে। পাইপটি রক্ষায় নদীর ভেতর আড়াআড়িভাবে লোহার খাম্বা বসিয়ে বেড়া দেওয়ায় নদীটিতে বাঁধ তৈরি হয়েছে। ফলে জোয়ার-ভাটার স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়ে নদীগর্ভে দ্রুত পলি জমছে। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নৌচলাচল।
স্থানীয়রা বলেন, ফকিরহাট, মোল্লাহাট এবং আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনসহ নৌপথ সচল রাখতে ২০২০ সালে ভৈরব নদের সাড়ে ১৭ কিমি পুনঃখনন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তবে খননের সুফল কাজে আসেনি। মোল্লাহাটের মধুমতী নদী থেকে খুলনা শহরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য স্থাপন করা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গত বর্ষা মৌসুমে নদী দিয়ে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হওয়ায় ফকিরহাট এবং আশপাশের এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি ও মাছের ঘের পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যায়।
ফকিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী মুকুন্দ পাল বলেন, নৌচলাচল বন্ধ থাকায় ব্যবসায় মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। নৌপথ চালু থাকলে খুলনা, মোংলা বন্দর, বাগেরহাট ও বরিশালের সঙ্গে স্বল্প খরচে পণ্য পরিবহন সম্ভব হতো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমনা আইরিন বলেন, ওয়াসার পাইপটি ফকিরহাটসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য দীর্ঘদিনের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
খুলনা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরমান সিদ্দিক বলেন, ওই স্থানে পাইপলাইনের মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি চীন থেকে আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। যন্ত্রপাতি এলে পাইপলাইনটি নৌযান চলাচলের উপযোগী করা হবে।

বিজলীর খোঁজ পান ঢাকার সাংবাদিক শামসুল হুদা। তিনি এ পর্যন্ত দুই দেশের কারাগারে আটকে থাকা ৪৩ জনকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছেন। তিনি হয়ে উঠেছেন ‘বাঙালি বজরঙ্গি ভাইজান’।
১৪ মার্চ ২০২৫
আইনের আশ্রয় নিতে এসে ভয় নিয়ে ঢুকতে হচ্ছে আদালতে। অর্ধশত বছরের পুরোনো দুটি পরিত্যক্ত ভবনের মাঝ দিয়েই বরগুনার আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল প্রবেশপথ। জরাজীর্ণ ভবন দুটি যেকোনো সময় ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী...
৫ ঘণ্টা আগে
দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চলে ভ্যানচালক ওমর ফারুকের (৩৮) ওপর। পেরেক ঢোকানো হয় হাত-পায়ে। পানি চাইলে শীতের রাতে নগ্ন করে চুবানো হয় নদীতে। তারপর দফায় দফায় নির্যাতন। পায়ুপথে ঢোকানো হয় মরিচের গুঁড়া। এতে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন ফারুক। ওই অবস্থায় তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
৭ ঘণ্টা আগে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের খুলনা বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আলোচিত তনিমা তন্বীকে আটক করেছে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
৭ ঘণ্টা আগেমো. হোসাইন আলী কাজী

আইনের আশ্রয় নিতে এসে ভয় নিয়ে ঢুকতে হচ্ছে আদালতে। অর্ধশত বছরের পুরোনো দুটি পরিত্যক্ত ভবনের মাঝ দিয়েই বরগুনার আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল প্রবেশপথ। জরাজীর্ণ ভবন দুটি যেকোনো সময় ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী ও আদালতের কর্মচারীরা ওই পথ ব্যবহার করছেন। বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ভবন দুটি দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, ১৯৭৫ সালে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে মেশিনারিজ যন্ত্রাংশ ও কৃষি উপকরণ সংরক্ষণের জন্য দুটি দ্বিতল পাকা ভবন নির্মাণ করে। প্রায় ১৫ বছর আগে উপজেলা প্রশাসন ভবন দুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সেগুলো অপসারণে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
পরিত্যক্ত ওই ভবন দুটির মাঝখান দিয়েই আদালতের প্রধান প্রবেশদ্বার নির্মিত। প্রতিদিন বিচারকাজে অংশ নিতে হাজারো মানুষ ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নিচ দিয়ে আদালতে যাতায়াত করেন। স্থানীয়দের দাবি, ভবন দুটি এতটাই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে যে, যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে। এতে প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে।
গত রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবন দুটির বিভিন্ন অংশ থেকে ইট, পাথর ও বিম খসে পড়ছে। দেয়ালজুড়ে জন্মেছে পরগাছা। ভেতরের অবস্থা এমন যে দিনের বেলায়ও সেখানে ঢুকতে ভয় পান মানুষ। ভবন দুটি ভুতুড়ে অবস্থায় পরিণত হওয়ায় আদালত প্রাঙ্গণের পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে।
বিচারপ্রার্থী আব্দুল মাজেদ বলেন, ‘আদালতের সামনে এভাবে দুটি পরিত্যক্ত ভবন থাকা যেমন দৃষ্টিকটু, তেমনি তা আমাদের জীবনের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রুত ভবন দুটি অপসারণ করা প্রয়োজন।’
আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার মো. আবুবকর বলেন, আদালতের প্রবেশপথের দুই পাশে পরিত্যক্ত দুটি ভবন পড়ে আছে। ভবন ধসে পড়লে বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটতে পারে।
জেলা বার সদস্য ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. জসিম উদ্দিন বলেন, পরিত্যক্ত ভবন দুটি অপসারণের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে একাধিকবার অবহিত করা হয়েছে। বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত ভবন দুটি অপসারণ করা জরুরি।
জানতে চাইলে আমতলী উপজেলা বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ভবন দুটি বহু আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কেন এখনো সেগুলো অপসারণ করা হয়নি, তা আমারও বোধগম্য নয়।’
এ বিষয়ে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস আলী বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউএনও মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী বলেন, পরিত্যক্ত ভবন দুটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যেই অপসারণ করা হবে।

আইনের আশ্রয় নিতে এসে ভয় নিয়ে ঢুকতে হচ্ছে আদালতে। অর্ধশত বছরের পুরোনো দুটি পরিত্যক্ত ভবনের মাঝ দিয়েই বরগুনার আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল প্রবেশপথ। জরাজীর্ণ ভবন দুটি যেকোনো সময় ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী ও আদালতের কর্মচারীরা ওই পথ ব্যবহার করছেন। বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ভবন দুটি দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, ১৯৭৫ সালে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে মেশিনারিজ যন্ত্রাংশ ও কৃষি উপকরণ সংরক্ষণের জন্য দুটি দ্বিতল পাকা ভবন নির্মাণ করে। প্রায় ১৫ বছর আগে উপজেলা প্রশাসন ভবন দুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সেগুলো অপসারণে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
পরিত্যক্ত ওই ভবন দুটির মাঝখান দিয়েই আদালতের প্রধান প্রবেশদ্বার নির্মিত। প্রতিদিন বিচারকাজে অংশ নিতে হাজারো মানুষ ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নিচ দিয়ে আদালতে যাতায়াত করেন। স্থানীয়দের দাবি, ভবন দুটি এতটাই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে যে, যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে। এতে প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে।
গত রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবন দুটির বিভিন্ন অংশ থেকে ইট, পাথর ও বিম খসে পড়ছে। দেয়ালজুড়ে জন্মেছে পরগাছা। ভেতরের অবস্থা এমন যে দিনের বেলায়ও সেখানে ঢুকতে ভয় পান মানুষ। ভবন দুটি ভুতুড়ে অবস্থায় পরিণত হওয়ায় আদালত প্রাঙ্গণের পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে।
বিচারপ্রার্থী আব্দুল মাজেদ বলেন, ‘আদালতের সামনে এভাবে দুটি পরিত্যক্ত ভবন থাকা যেমন দৃষ্টিকটু, তেমনি তা আমাদের জীবনের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রুত ভবন দুটি অপসারণ করা প্রয়োজন।’
আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার মো. আবুবকর বলেন, আদালতের প্রবেশপথের দুই পাশে পরিত্যক্ত দুটি ভবন পড়ে আছে। ভবন ধসে পড়লে বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটতে পারে।
জেলা বার সদস্য ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. জসিম উদ্দিন বলেন, পরিত্যক্ত ভবন দুটি অপসারণের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে একাধিকবার অবহিত করা হয়েছে। বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত ভবন দুটি অপসারণ করা জরুরি।
জানতে চাইলে আমতলী উপজেলা বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ভবন দুটি বহু আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কেন এখনো সেগুলো অপসারণ করা হয়নি, তা আমারও বোধগম্য নয়।’
এ বিষয়ে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস আলী বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউএনও মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী বলেন, পরিত্যক্ত ভবন দুটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যেই অপসারণ করা হবে।

বিজলীর খোঁজ পান ঢাকার সাংবাদিক শামসুল হুদা। তিনি এ পর্যন্ত দুই দেশের কারাগারে আটকে থাকা ৪৩ জনকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছেন। তিনি হয়ে উঠেছেন ‘বাঙালি বজরঙ্গি ভাইজান’।
১৪ মার্চ ২০২৫
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদ খননের পরও সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। উপজেলার ফকিরহাট বাজারসংলগ্ন এলাকা দিয়ে নেওয়া খুলনা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে নৌচলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দেখা দিয়েছে মারাত্মক নাব্যতাসংকট।
৫ ঘণ্টা আগে
দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চলে ভ্যানচালক ওমর ফারুকের (৩৮) ওপর। পেরেক ঢোকানো হয় হাত-পায়ে। পানি চাইলে শীতের রাতে নগ্ন করে চুবানো হয় নদীতে। তারপর দফায় দফায় নির্যাতন। পায়ুপথে ঢোকানো হয় মরিচের গুঁড়া। এতে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন ফারুক। ওই অবস্থায় তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
৭ ঘণ্টা আগে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের খুলনা বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আলোচিত তনিমা তন্বীকে আটক করেছে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চলে ভ্যানচালক ওমর ফারুকের (৩৮) ওপর। পেরেক ঢোকানো হয় হাত-পায়ে। পানি চাইলে শীতের রাতে নগ্ন করে চুবানো হয় নদীতে। তারপর দফায় দফায় নির্যাতন। পায়ুপথে ঢোকানো হয় মরিচের গুঁড়া। এতে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন ফারুক। ওই অবস্থায় তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে কারাগার থেকে হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত ফারুকের বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা সদরের চাঁনপাড়া মহল্লায়। বাবার নাম মসলেম সরদার। গত বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলা সদরের সিএনজি সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে সমিতির সদস্যরা তাঁকে নির্মম নির্যাতন করেন। স্থানীয়রা জানান, চুরির অভিযোগে নির্যাতন করা হলেও পরে মাদক উদ্ধারের নাটক সাজানো হয়। এক পুরিয়া গাঁজার জন্য ফারুককে সাত দিনের কারাদণ্ড এবং ১০০ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা। পরে ওই রাতেই তাঁকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রেখে যায় বাগমারা থানা-পুলিশ। শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় পরদিন সকালে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।
গত বুধবার উপজেলা সদরে গেলে ব্যাটারি চুরির অপবাদ দিয়ে ওমর ফারুককে আটকে রাখেন সিএনজি সমিতির সদস্যরা। সমিতির সভাপতি রেজাউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে সমিতির ২০-২৫ জন সদস্য মব সৃষ্টি করে তাঁকে নির্মম নির্যাতন করেন। চুরির কথা স্বীকার করাতে চার হাত-পায়ে পেরেক ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। নগ্ন করে ফেলে রাখা হয় রাস্তায়। পানি খেতে চাইলে পাশের নদীতে চুবানো হয়। পায়ুপথে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় মরিচের গুঁড়া। একপর্যায়ে অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে এক পুরিয়া গাঁজা এনে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থা দেখে পুলিশ সদস্যরা আর তাঁকে নিয়ে যেতে চাননি। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা। তিনি নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে মুমূর্ষু ভ্যানচালক ফারুককে সাত দিন কারাদণ্ড ও ১০০ টাকা অর্থদণ্ড দেন।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শাহ আলম খান জানান, ওই রাতেই পুলিশ ওমর ফারুককে আহত অবস্থায় কারাগারে দিয়ে যায়। তাঁর অবস্থা খারাপ দেখে পরদিন সকালে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ফারুক মারা যান। এরপর ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ফারুকের বাবা মসলেম সরদারও ভ্যানচালক। তিনি বলেন, মিথ্যা অভিযোগে ছেলেকে নির্যাতন করা হয়েছে। চুরি না করলেও স্বীকার করাতে এভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।
ফারুকের মা পারুল বেগম বলেন, ‘গরিব বলে আমার ছেলেকে এভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসা না করিয়ে প্রশাসন তাকে কারাগারে পাঠায়। সিএনজির লোকজন দেখায়, তার কাছে গাঁজা পাওয়া গেছে। কিন্তু সে মাদক সেবন করত না। প্রশাসন নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আমার মৃতপ্রায় ছেলেকে জেলে দিয়ে খুব খারাপ কাজ করেছে। তখনো সঠিক চিকিৎসা হলে বেঁচে যেত। আমি এই ঘটনার সাথে জড়িত সবার বিচার চাই।’
এ বিষয়ে কথা বলতে ভবানীগঞ্জ সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি রেজাউল করিমের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। সামনাসামনি না গেলে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলবেন না বলে জানান।
মুমূর্ষু ব্যক্তিকে কারাগারে নেওয়ার বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করি না। আদেশ হলে আমাদের কাজ কারাগারে পৌঁছে দেওয়া। সেটাই করেছি।’ নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরিবার চাইলে মামলা করতে পারে। তারপর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মুমূর্ষু ব্যক্তির চিকিৎসা না করিয়ে কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা বলেন, তিনি একটি সভায় ব্যস্ত আছেন। সভা শেষে ফোন করবেন। পরে আর ফোন করেননি। আবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
বিভাগীয় কমিশনার ড. আ ন ম বজলুর রশীদ বলেন, এ বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চলে ভ্যানচালক ওমর ফারুকের (৩৮) ওপর। পেরেক ঢোকানো হয় হাত-পায়ে। পানি চাইলে শীতের রাতে নগ্ন করে চুবানো হয় নদীতে। তারপর দফায় দফায় নির্যাতন। পায়ুপথে ঢোকানো হয় মরিচের গুঁড়া। এতে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন ফারুক। ওই অবস্থায় তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে কারাগার থেকে হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত ফারুকের বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা সদরের চাঁনপাড়া মহল্লায়। বাবার নাম মসলেম সরদার। গত বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলা সদরের সিএনজি সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে সমিতির সদস্যরা তাঁকে নির্মম নির্যাতন করেন। স্থানীয়রা জানান, চুরির অভিযোগে নির্যাতন করা হলেও পরে মাদক উদ্ধারের নাটক সাজানো হয়। এক পুরিয়া গাঁজার জন্য ফারুককে সাত দিনের কারাদণ্ড এবং ১০০ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা। পরে ওই রাতেই তাঁকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রেখে যায় বাগমারা থানা-পুলিশ। শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় পরদিন সকালে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।
গত বুধবার উপজেলা সদরে গেলে ব্যাটারি চুরির অপবাদ দিয়ে ওমর ফারুককে আটকে রাখেন সিএনজি সমিতির সদস্যরা। সমিতির সভাপতি রেজাউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে সমিতির ২০-২৫ জন সদস্য মব সৃষ্টি করে তাঁকে নির্মম নির্যাতন করেন। চুরির কথা স্বীকার করাতে চার হাত-পায়ে পেরেক ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। নগ্ন করে ফেলে রাখা হয় রাস্তায়। পানি খেতে চাইলে পাশের নদীতে চুবানো হয়। পায়ুপথে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় মরিচের গুঁড়া। একপর্যায়ে অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে এক পুরিয়া গাঁজা এনে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থা দেখে পুলিশ সদস্যরা আর তাঁকে নিয়ে যেতে চাননি। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা। তিনি নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে মুমূর্ষু ভ্যানচালক ফারুককে সাত দিন কারাদণ্ড ও ১০০ টাকা অর্থদণ্ড দেন।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শাহ আলম খান জানান, ওই রাতেই পুলিশ ওমর ফারুককে আহত অবস্থায় কারাগারে দিয়ে যায়। তাঁর অবস্থা খারাপ দেখে পরদিন সকালে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ফারুক মারা যান। এরপর ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ফারুকের বাবা মসলেম সরদারও ভ্যানচালক। তিনি বলেন, মিথ্যা অভিযোগে ছেলেকে নির্যাতন করা হয়েছে। চুরি না করলেও স্বীকার করাতে এভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।
ফারুকের মা পারুল বেগম বলেন, ‘গরিব বলে আমার ছেলেকে এভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসা না করিয়ে প্রশাসন তাকে কারাগারে পাঠায়। সিএনজির লোকজন দেখায়, তার কাছে গাঁজা পাওয়া গেছে। কিন্তু সে মাদক সেবন করত না। প্রশাসন নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আমার মৃতপ্রায় ছেলেকে জেলে দিয়ে খুব খারাপ কাজ করেছে। তখনো সঠিক চিকিৎসা হলে বেঁচে যেত। আমি এই ঘটনার সাথে জড়িত সবার বিচার চাই।’
এ বিষয়ে কথা বলতে ভবানীগঞ্জ সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি রেজাউল করিমের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। সামনাসামনি না গেলে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলবেন না বলে জানান।
মুমূর্ষু ব্যক্তিকে কারাগারে নেওয়ার বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করি না। আদেশ হলে আমাদের কাজ কারাগারে পৌঁছে দেওয়া। সেটাই করেছি।’ নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরিবার চাইলে মামলা করতে পারে। তারপর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মুমূর্ষু ব্যক্তির চিকিৎসা না করিয়ে কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভুঞা বলেন, তিনি একটি সভায় ব্যস্ত আছেন। সভা শেষে ফোন করবেন। পরে আর ফোন করেননি। আবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
বিভাগীয় কমিশনার ড. আ ন ম বজলুর রশীদ বলেন, এ বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

বিজলীর খোঁজ পান ঢাকার সাংবাদিক শামসুল হুদা। তিনি এ পর্যন্ত দুই দেশের কারাগারে আটকে থাকা ৪৩ জনকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছেন। তিনি হয়ে উঠেছেন ‘বাঙালি বজরঙ্গি ভাইজান’।
১৪ মার্চ ২০২৫
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদ খননের পরও সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। উপজেলার ফকিরহাট বাজারসংলগ্ন এলাকা দিয়ে নেওয়া খুলনা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে নৌচলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দেখা দিয়েছে মারাত্মক নাব্যতাসংকট।
৫ ঘণ্টা আগে
আইনের আশ্রয় নিতে এসে ভয় নিয়ে ঢুকতে হচ্ছে আদালতে। অর্ধশত বছরের পুরোনো দুটি পরিত্যক্ত ভবনের মাঝ দিয়েই বরগুনার আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল প্রবেশপথ। জরাজীর্ণ ভবন দুটি যেকোনো সময় ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী...
৫ ঘণ্টা আগে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের খুলনা বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আলোচিত তনিমা তন্বীকে আটক করেছে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
৭ ঘণ্টা আগেখুলনা প্রতিনিধি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের খুলনা বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আলোচিত তনিমা তন্বীকে আটক করেছে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে মহানগরীর টুটপাড়া থেকে তন্বীকে আটক করা হয়। খুলনা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি তৈমুর ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে মহানগরীর সোনাডাঙ্গার আল আকসা মসজিদ রোডে অবস্থিত ১০৯ মুক্তা হাউসের নিচতলার তন্বীর বাসায় মোতালেব গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার পর স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি খুলনাসহ দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তোলে।
এ ঘটনায় পুলিশ ওই কক্ষ থেকে মাদক সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।
এর আগে মুক্তা হাউসের মালিকের স্ত্রী আশরাফুন্নাহার জানিয়েছিলেন, স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তন্বী গত ১ ডিসেম্বর নিচতলাটি ভাড়া নিয়েছিলেন। তিনি নিজেকে এনজিও কর্মী হিসেবে দাবি করে প্রায় সময় বাড়ির বাইরে থাকতেন। তাঁর কক্ষে একাধিক পুরুষের আসা-যাওয়া ছিল। পরে অন্যদের মাধ্যমে তাঁর অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়টি জানতে পেরে চলতি মাসেই বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয়। তবে বাড়ির ছাড়ার আগেই গুলিবিদ্ধের ঘটনাটি ঘটেছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের খুলনা বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আলোচিত তনিমা তন্বীকে আটক করেছে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে মহানগরীর টুটপাড়া থেকে তন্বীকে আটক করা হয়। খুলনা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি তৈমুর ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে মহানগরীর সোনাডাঙ্গার আল আকসা মসজিদ রোডে অবস্থিত ১০৯ মুক্তা হাউসের নিচতলার তন্বীর বাসায় মোতালেব গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার পর স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি খুলনাসহ দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তোলে।
এ ঘটনায় পুলিশ ওই কক্ষ থেকে মাদক সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।
এর আগে মুক্তা হাউসের মালিকের স্ত্রী আশরাফুন্নাহার জানিয়েছিলেন, স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তন্বী গত ১ ডিসেম্বর নিচতলাটি ভাড়া নিয়েছিলেন। তিনি নিজেকে এনজিও কর্মী হিসেবে দাবি করে প্রায় সময় বাড়ির বাইরে থাকতেন। তাঁর কক্ষে একাধিক পুরুষের আসা-যাওয়া ছিল। পরে অন্যদের মাধ্যমে তাঁর অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়টি জানতে পেরে চলতি মাসেই বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয়। তবে বাড়ির ছাড়ার আগেই গুলিবিদ্ধের ঘটনাটি ঘটেছে।

বিজলীর খোঁজ পান ঢাকার সাংবাদিক শামসুল হুদা। তিনি এ পর্যন্ত দুই দেশের কারাগারে আটকে থাকা ৪৩ জনকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছেন। তিনি হয়ে উঠেছেন ‘বাঙালি বজরঙ্গি ভাইজান’।
১৪ মার্চ ২০২৫
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদ খননের পরও সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। উপজেলার ফকিরহাট বাজারসংলগ্ন এলাকা দিয়ে নেওয়া খুলনা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে নৌচলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দেখা দিয়েছে মারাত্মক নাব্যতাসংকট।
৫ ঘণ্টা আগে
আইনের আশ্রয় নিতে এসে ভয় নিয়ে ঢুকতে হচ্ছে আদালতে। অর্ধশত বছরের পুরোনো দুটি পরিত্যক্ত ভবনের মাঝ দিয়েই বরগুনার আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল প্রবেশপথ। জরাজীর্ণ ভবন দুটি যেকোনো সময় ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী...
৫ ঘণ্টা আগে
দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চলে ভ্যানচালক ওমর ফারুকের (৩৮) ওপর। পেরেক ঢোকানো হয় হাত-পায়ে। পানি চাইলে শীতের রাতে নগ্ন করে চুবানো হয় নদীতে। তারপর দফায় দফায় নির্যাতন। পায়ুপথে ঢোকানো হয় মরিচের গুঁড়া। এতে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন ফারুক। ওই অবস্থায় তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
৭ ঘণ্টা আগে