Ajker Patrika

শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত না দেওয়ায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

রাজশাহী প্রতিনিধি
শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত না দেওয়ায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ফরম পূরণের জন্য নেওয়া শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত না দেওয়ায় নাটোরের লালপুর উপজেলার বিলমাড়িয়া মহাবিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বুধবার দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বাদী মামলাটি দায়ের করেন। 
 
এজাহারে রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে ৬৯ হাজার ২৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনার কারণে এইচএসসি পরীক্ষা না হলেও পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের টাকা তিনি ফেরত দেননি। 

অভিযুক্ত রেজাউল করিম রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খয়েরহাট এলাকার মৃত আহম্মদ আলীর ছেলে। 

মামলার এজাহারে বলা হয়, বিলমাড়িয়া মহাবিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে রেজাউল করিম দায়িত্বরত ছিলেন। ২০২০ ও ২০২১ সালের বিলমাড়িয়া মহাবিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীরা ফরম পূরণ করেন। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে সশরীরে পরীক্ষা বাতিল করা হয়। এতে পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের টাকা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে মোতাবেক বিলমাড়িয়া মহাবিদ্যালয়ের ২০২০ সালের পরীক্ষার্থীদের ২৭ হাজার ৯৭৫ টাকা এবং ২০২১ সালের পরীক্ষার্থীদের ৪১ হাজার ৪৮ টাকা (সর্বমোট ৬৯ হাজার ২৩ টাকা) ফেরত দেয় রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড। এই টাকা তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রেজাউল করিমের নামে চেক প্রদান করে শিক্ষা বোর্ড। কিন্তু তিনি ব্যাংক থেকে টাকা তুললেও পরীক্ষার্থীদের তা ফেরত দেননি। 

এদিকে, সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী টাকা ফেরত পেতে গত বছরের ২১ ডিসেম্বর কয়েকজন পরীক্ষার্থী রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত আবেদন করে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০২০ ও ২০২২ সালের ফরম পূরণের ৬৯ হাজার ২৩ টাকা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনা জানি জানি হলে ম্যানেজিং কমিটি রেজাউল করিমকে এই টাকা ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ফেরত প্রদানের জন্য বলা হয়। কিন্তু তিনি সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। এমন পরিস্থিতে গভর্নিং বডির সদস্যরা অধ্যক্ষের কক্ষে গত ৫ জানুয়ারি ডেকে এনে তাঁর কাছে থাকা শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দিতে বলেন। কিন্তু তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। গত ৬ জানুয়ারি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থেকে অব্যাহতি পেয়ে একই কলেজে সহকারী অধ্যাপক ফিরে যান রেজাউল করিম। 

এরপর পরীক্ষার্থীদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কলেজের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য মাইনুল ইসলাম নাটোরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের সঙ্গে গভর্নিং বডির সিদ্ধান্তের রেজুলেশন, ছাত্র-ছাত্রী কর্তৃক দাখিলকৃত বোর্ড চেয়ারম্যান বরাবর দরখাস্ত, জাতীয় পরিচয়পত্রের ছায়ালিপি, ব্যাংক এবং বোর্ড থেকে দেওয়া স্টেটমেন্ট সংযুক্ত করা হয়। অভিযোগটি আমলে নিয়ে আদালতে স্পেশাল মামলা হিসেবে রেজিস্ট্রিভুক্ত করা হয়। 

এদিকে, অভিযোগটি তফসিলভুক্ত হওয়ায় আদালত গত ১৮ জানুয়ারি দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে পাঠান। পরবর্তীতে মামলা গ্রহণের সিদ্ধান্তের জন্য দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয় গত ২৫ জানুয়ারি প্রধান কার্যালয়ে পাঠায়। গত ২৩ মার্চ মামলা দায়েরের অনুমোদন দেয় দুদক। 

দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন জানান, পরীক্ষার্থীদের টাকা আত্মসাতের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্তে আর কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তা আমলে নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সরকারি সহায়তা নয়, গণচাঁদাতেই কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংস্কার করবে উদীচী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর তোপখানায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর তোপখানায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

দুর্বৃত্তদের আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কেন্দ্রীয় কার্যালয় নিজস্ব উদ্যোগে এবং গণচাঁদা সংগ্রহ করে সংস্কার করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। সংগঠনটি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, কার্যালয় সংস্কারের জন্য তারা সরকার বা কোনো করপোরেট প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোনো আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করবে না।

উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদ সেলিম এবং সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে এক যৌথ বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন, ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে উদীচী কখনোই সরকারি অনুদানের ওপর নির্ভরশীল ছিল না। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সংগ্রহ করা গণচাঁদাই সংগঠনের মূল চালিকাশক্তি। এবারও ক্ষতিগ্রস্ত কার্যালয়টিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে উদীচীর দেশ-বিদেশের হাজারো শিল্পী ও কর্মী তাদের পরিশ্রমের উপার্জনের টাকা দিয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন।

বিবৃতিতে আরও সতর্ক করে বলা হয়, উদীচীর নাম করে অন্য কেউ যদি আর্থিক সহায়তা চায় এবং এর ফলে কেউ প্রতারিত হন, তবে তার দায়ভার কেন্দ্রীয় সংসদ নেবে না।

উদীচী নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার এবং ছায়ানট ভবনে হামলার পর থেকেই উদীচীর ওপর হামলার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উসকানি দেওয়া হলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বা প্রশাসন নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

ফলে গত ১৯ ডিসেম্বর (শুক্রবার) সন্ধ্যায় মৌলবাদী অপশক্তি বিনা বাধায় উদীচী কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করে। এতে সংগঠনের ৫৭ বছরের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, দুষ্প্রাপ্য বাদ্যযন্ত্র ও আসবাবপত্র ভস্মীভূত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

হামলা ঠেকাতে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করে বিবৃতিতে বলা হয়, উদীচীর এখন একটাই প্রত্যাশা—এই ন্যক্কারজনক হামলার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। বিচারের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, যারা বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানাতে চায় এবং সাম্রাজ্যবাদী শক্তির হস্তক্ষেপ চায়, এ দেশের মানুষ তাদের ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবে না। মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে জুলাই অভ্যুত্থান পর্যন্ত সাধারণ মানুষের যে ত্যাগের ইতিহাস, তা কোনো ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রে ব্যর্থ হতে দেওয়া হবে না বলেও তারা অঙ্গীকার করেন। একই সঙ্গে দেশের সকল শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে এই অন্ধকারের অপশক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানায় উদীচী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শহীদ করপোরাল মাসুদ রানার মরদেহের অপেক্ষায় স্বজন ও এলাকাবাসী

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৫১
শহীদ কর্পোরাল মাসুদ রানার মরদেহের অপেক্ষায় স্বজন ও এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা
শহীদ কর্পোরাল মাসুদ রানার মরদেহের অপেক্ষায় স্বজন ও এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করা করপোরাল মাসুদ রানাকে শেষবারের মতো একনজর দেখতে অধীর অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। সুদানে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে ড্রোন হামলায় নিহত বীর সেনানীর বাড়ি নাটোরের লালপুর উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের বোয়ালিয়াপাড়া গ্রামে।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মাসুদ রানার মরদেহ বহনকারী হেলিকপ্টার তাঁর গ্রামের বাড়ি-সংলগ্ন উপজেলার করিমপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণের কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে একটু দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। পরে যথাযথ সামরিক মর্যাদায় তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৫ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি বিমানে করে মাসুদ রানাসহ শহীদ ছয় শান্তিরক্ষীর মরদেহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই শহীদ মাসুদের গ্রামের বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করে এলাকার লোকজন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকালে ঢাকা সেনানিবাস কেন্দ্রীয় মসজিদে শহীদদের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর হেলিকপ্টারযোগে শহীদ মাসুদ রানার মরদেহ আনা হবে তাঁর নিজ গ্রামে। সেখানে পৌঁছানোর পর দ্বিতীয় জানাজা শেষে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় স্থানীয় কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হবে।

মরদেহ বহনকারী হেলিকপ্টার অবতরণের জন্য করিমপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠটি ইতিমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে অস্থায়ী হেলিপ্যাড নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে।

মাসুদ রানা উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের বোয়ালিয়াপাড়া গ্রামের মৃত সাহার উদ্দিনের বড় ছেলে। ২০০৬ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। মাসুদ রানার মেজো ভাই মনিরুল ইসলাম এবং ছোট ভাই রনি আলমও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য।

স্বজনেরা জানান, গত ৭ নভেম্বর স্ত্রী ও আট বছরের একমাত্র কন্যা মাগফিরাতুল মাওয়া আমিনাকে রেখে শান্তি রক্ষা মিশনে যোগ দিতে সুদানে যান মাসুদ রানা। মিশন শুরুর মাত্র এক মাস সাত দিনের মাথায় ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় ড্রোন হামলায় তিনি শহীদ হন। শান্তিরক্ষী হিসেবে দেশের মুখ উজ্জ্বল করার স্বপ্ন নিয়ে দেশ ছাড়লেও কফিনে মুড়িয়ে ফিরছেন এই বীর।

নাটোর স্টেডিয়ামের আর্মি সেনাক্যাম্পের কমান্ডার মেজর মো. নাজমুল আলম আবীর বলেন, ‘শহীদ মাসুদের দাফন সম্পন্ন করতে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রয়োজনীয় সব কার্যক্রম সম্পন্ন করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, ওই হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী শহীদ হন। তাদেরই একজন নাটোরের লালপুরের কৃতী সন্তান করপোরাল মাসুদ রানা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাবনা-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা বিএনপির আনোয়ারুল ইসলামের

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৫৬
গতকাল রাতে চাটমোহর পৌর সদরের পাঠানপাড়া এলাকায় নিজ বাসভবনে মতবিনিময় সভায় কেএম আনোয়ারুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল রাতে চাটমোহর পৌর সদরের পাঠানপাড়া এলাকায় নিজ বাসভবনে মতবিনিময় সভায় কেএম আনোয়ারুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনা-৩ আসনে (চাটমোহর–ভাঙ্গুড়া–ফরিদপুর) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কে এম আনোয়ারুল ইসলাম। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে চাটমোহর পৌর সদরের পাঠানপাড়া এলাকায় নিজ বাসভবনে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় দলীয় নেতা-কর্মীদের সামনে তিনি এই ঘোষণা দেন।

মতবিনিময় সভায় চাটমোহর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তাইজুলের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল মুত্তালিব প্রামানিকের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কুদ্দুস আলো মাস্টার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নজির সরকার, সহসাংগঠনিক সম্পাদক গোলজার হোসেন প্রমুখ।

এ ছাড়া ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরা। বক্তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাবেক এমপি কে এম আনোয়ারুল ইসলামকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

কে এম আনোরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে দুবার এমপি এবং দুবার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলাম। এখন জনগণ চাইছে আমি নির্বাচনে অংশ নিই। জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমি প্রার্থিতা ঘোষণা করেছি। সাধারণ জনগণ বহিরাগত কোনো প্রার্থী চায় না। নির্বাচনী অনুকূল পরিবেশ থাকলে আমার জয় নিশ্চিত ইনশা আল্লাহ। আমার শেষনিশ্বাস পর্যন্ত আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকব।’

চাটমোহর উপজেলা ও পৌর বিএনপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার পৌর ও ইউনিয়ন বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, পাবনা-৩ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ। এর আগে কে এম আনোয়ারুল ইসলাম ও হাসাদুল ইসলাম হীরার নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে পরীক্ষাকেন্দ্রে মহড়া দেওয়া সেই যুবক গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার করা আসামি। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার করা আসামি। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা চলাকালে প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দিয়ে শিক্ষকদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে আল-সাদ (৩০) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গ্রেপ্তার আল-সাদ আলফাডাঙ্গা পৌরসভার আনোয়ার হোসেনের ছেলে এবং স্থানীয় বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলামের ভাগনে।

আজ রোববার র‍্যাব-১০ ফরিদপুর ক্যাম্পের সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) তাপস কর্মকার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, র‍্যাব-৬-এর সহযোগিতায় গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় খুলনা শহরের ময়লাপোতা এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়ে আল-সাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে আলফাডাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

র‍্যাব জানিয়েছে, ৯ ডিসেম্বর আলফাডাঙ্গা পৌরসভার কামারগ্রামে আলফাডাঙ্গা আদর্শ ডিগ্রি কলেজে পরীক্ষা চলাকালে ১৪৪ ধারা অমান্য করে আল-সাদ কলেজে প্রবেশ করে ত্রাস সৃষ্টি করেন। কলেজের সিসিটিভি ক্যামেরায় পুরো ঘটনা ধরা পড়ে। ফুটেজে দেখা যায়, একটি মোটরসাইকেলে দুই যুবক আসেন। পেছনে বসা আল-সাদের হাতে বড় আকৃতির দেশীয় অস্ত্র (রামদা) উঁচিয়ে নিয়ে আসেন। এ সময় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা দৌড়ে ছড়িয়ে পড়েন। এরপর কলেজের মূল ভবনে প্রবেশ করেন এবং কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে যান।

র‍্যাব কর্মকর্তা তাপস কর্মকার জানান, আল-সাদ কর্তব্যরত শিক্ষক ও কলেজের অধ্যক্ষকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। পরে তাঁর সহযোগী সাদি খানকে (২৭) সঙ্গে নিয়ে হাতে তলোয়ারসহ কলেজ ক্যাম্পাসে পুনরায় প্রবেশ করে শিক্ষকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দেন। এতে পরীক্ষার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।

ঘটনার দুই দিন পর কলেজের কর্মচারী নাজমুল হোসেন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আল-সাদ ও তাঁর সহযোগী সাদি খানকে আসামি করা হয়েছে।

আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসনাত বলেন, গ্রেপ্তার আল-সাদকে রাতেই থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আদালতে প্রেরণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অপর যুবককে গ্রেপ্তার করতে অভিযান এখনো অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত