Ajker Patrika

ধ্বংসস্তূপেই ঋত্বিক ঘটকের জন্ম উৎসব

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯: ৪১
ইটের স্তূপের ওপর ঋত্বিক ঘটকের ছবি। আজকের পত্রিকা
ইটের স্তূপের ওপর ঋত্বিক ঘটকের ছবি। আজকের পত্রিকা

জরাজীর্ণ হলেও চার মাস আগেও বাড়িটি দাঁড়িয়ে ছিল। এখন ধ্বংসস্তূপ। ভাঙা বাড়ির ইটগুলো তিনটি স্তূপ করে গুছিয়ে রাখা হয়েছে। এগুলো কালজয়ী চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক কুমার ঘটকের বাড়ির ইট। মোমবাতি জ্বলছে। ইটের একটি স্তূপের ওপরে ঋত্বিক ঘটকের বড় একটি ছবি। জন্মদিনে যেন এভাবেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া নিজ বাড়িতে ‘ফিরলেন’ ঋত্বিক ঘটক।

রাজশাহী নগরের মিয়াপাড়ায় ঋত্বিক ঘটকের এই পৈতৃক বাড়ি। এ বাড়িতেই শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্যের একটি সময় কাটিয়েছেন ঋত্বিক ঘটক। রাজশাহীর সাংস্কৃতিককর্মীদের দাবির মুখে সংরক্ষণের উদ্যোগের মধ্যেই গত ৬ আগস্ট বাড়িটি পুরোপুরি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের লোকজন বাড়িটি ভেঙে ফেলেছে বলে মনে করেন স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মীরা।

ঋত্বিকের পরিবার কলকাতা চলে যাওয়ার পর ১৯৮৯ সালে তৎকালীন সরকার এ বাড়ির ৩৪ শতাংশ জমি রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালকে ইজারা দিয়েছিল। ঋত্বিকের ভিটার উত্তর অংশে গড়ে তোলা হয় হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের আধুনিক ভবন। আর এই ভবনের দক্ষিণ অংশে ছিল ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতিবিজড়িত পুরোনো বাড়ি।

রাজশাহীর ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি দীর্ঘদিন ধরেই ঋত্বিকের বাড়িটি সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে আসছিল। সরকারও এতে সাড়া দিয়েছিল। কিন্তু নানাভাবেই এতে বিরোধিতা করে আসছিল হোমিওপ্যাথি কলেজ। ফিল্ম সোসাইটি প্রতিবছর ঋত্বিকের জন্মদিনে এ বাড়ির আঙিনায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। এতে অসহযোগিতা দেখা যেত হোমিওপ্যাথি কলেজের। দর্শনার্থীদের কেউ বাড়িটি দেখতে এলে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভেতরে ঢোকার অনুমতি দিত না বলেও অভিযোগ আছে। এর মধ্যেই গত ৬ ও ৭ আগস্ট বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

এবার ঋত্বিক ঘটকের ৯৯ তম জন্মবার্ষিকীতে আজ সোমবার সন্ধ্যায় ওই ভাঙা বাড়ির ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই আলোচনা সভার আয়োজন করে ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি। ইটের দুটি স্তূপের মাঝের অল্প একটি ফাঁকা স্থানে করা হয় অতিথিদের বসার জায়গা। দুটি ইটের স্তূপে জ্বালানো হয় অসংখ্য মোমবাতি। একটি স্তূপের ওপর রাখা হয় ঋত্বিক ঘটকের ছবি। অন্য আরেকটি ইটের স্তূপের ওপর ব্যানারে লেখা ছিল, ‘ঋত্বিক ঘটকের ৯৯ তম জন্মবার্ষিকী’।

হোমিওপ্যাথিক কলেজের ‘বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের’ পক্ষ থেকেও এখানে-ওখানে সাঁটানো কিছু ব্যানার-ফেস্টুন চোখে পড়ল। একটিতে লেখা, ‘কতিপয় নামসর্বস্ব ভূমিদস্যু সংগঠনের কবল থেকে রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল রক্ষায় প্রতিবাদ’। একটি ফেস্টুনে লেখা, ‘আরডিএ কর্তৃক অনুমোদিত কলেজ ও হাসপাতাল বিল্ডিং এর মূল নকশার পূর্ণ বাস্তবায়ন চাই’।

অন্য একটি ফেস্টুনে লিখে রাখা হয়েছে, ‘মিথ্যা প্রচারণা বন্ধ করুন। তথাকথিত ভাঙা বাড়ি কারও ব্যক্তিগত নয় বরং হোমিও কলেজের নিজস্ব সম্পত্তি’। আরেকটি ফেস্টুনে লেখা, ‘ভূমিদস্যুদের কবল থেকে হোমিও কলেজকে রক্ষা করুন’।

ধ্বংসস্তূপের মধ্যে ঋত্বিক ঘটকের জন্ম উৎসব পালিত হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ধ্বংসস্তূপের মধ্যে ঋত্বিক ঘটকের জন্ম উৎসব পালিত হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঋত্বিকের জন্মবার্ষিকীর আলোচনায় বক্তব্য দিতে গিয়ে এসব ব্যানার-ফেস্টুনের কথা তুলে ধরলেন সভাপ্রধান ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হোসেন মাসুদ। বললেন, ‘আমাদের ভূমিদস্যু বলা হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় এটা লিখে রাখা হয়েছে। কিন্তু ভূমি অফিসে রেকর্ড আছে এই জমির মালিক ঋত্বিক ঘটকের মা ইন্দুবালা দেবী। এখন যদি আপনাদের (কলেজ কর্তৃপক্ষ) প্রশ্ন করি, আপনারা কোথায় দাঁড়িয়ে আছেন?’

তিনি বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি কলেজের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। কলেজ যেখানে আছে, সেখানেই থাকবে। শুধু ঋত্বিক ঘটকের মূল বাড়ির যে অংশটুকু সেটা সংরক্ষণ করতে হবে। আমাদের এ দাবির মুখে সরকার ৫২ লাখ টাকার প্রকল্পও দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবায়নের আগেই ‘ছাত্র-জনতা’ ও ‘দুষ্কৃতকারীদের’ ওপর দায় চাপিয়ে বাড়িটি ভেঙে ফেলা হলো। পাবনায় সুচিত্রা সেনের বাড়িও দখল করে নিয়েছিল একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেটা উদ্ধার হয়েছে। এটাও হবে। যারা ঋত্বিক ঘটকের বাড়ি ভাঙার সঙ্গে জড়িত তারা অপরাধী। তারা ঐতিহ্যকে হত্যা করেছেন। এদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’

অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা আকরাম খান। তিনি বলেন, ‘দিনে দিনে আমরা সাংস্কৃতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়েছি। ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক ভিটা এভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া তার বড় প্রমাণ। এখন আমরা কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারি সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। গুঁড়িয়ে দেওয়া বাড়ি নিয়ে আমাদের মন খারাপ করে বসে থাকলে চলবে না। হতাশ হওয়া যাবে না। ভাঙা বাড়ি থেকেই যেন আমরা ফিনিক্স পাখির মতো উঠতে পারি। সামনে ঋত্বিকের ১০০ তম জন্মবার্ষিকী। তার আগেই আমাদের উঠে দাঁড়াতে হবে। ঋত্বিককেন্দ্রীক চলচ্চিত্রচর্চা গতিশীল করতে হবে। আমরা যেন এখানে দায়বদ্ধ হয়ে থাকতে পারি।’

ইটের স্তূপে মোমবাতি জ্বালানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইটের স্তূপে মোমবাতি জ্বালানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

আলোচক হিসেবে কথা বলেন ভাষাসৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি। তিনি বলেন, ‘যে জাতি গুণিজনের কদর করে না, সেখানে গুণীজন জন্মে না। তাই আমরা চাই, যার যেটুকু সম্মান প্রাপ্য, তাকে সেটা দেওয়া হোক। এক সময় ঋত্বিক ঘটকদের জন্য রাজশাহী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য সমৃদ্ধ ছিল। এখন সেই কর্মকাণ্ড নেই। এত দিনেও ঋত্বিকের ভিটা সংরক্ষণ কেন হয়নি, সেটা ভেবে আমি অবাক হচ্ছি। ঋত্বিক ঘটকের বাড়িটি উদ্ধার করে এখানে স্মৃতি কমপ্লেক্স কিংবা জাদুঘর করা উচিত। এ উদ্যোগ যারা নিয়েছেন, তারা সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন। অচিরেই যেন এই কাজটা বাস্তবায়ন হয়, এটাই আমার চাওয়া।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন—রাজশাহীর প্রবীণ সাংবাদিক ও আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান খান আলম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আ. আল-মামুন। অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্র নির্মাতা মোহাম্মাদ তাওকীর ইসলাম, ডিরেক্টরস অ্যান্ড অ্যাক্টরস গিল্ড, রাজশাহীর সভাপতি ওয়ালিউর রহমান বাবুসহ সাংস্কৃতিককর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সবনাজ মোস্তারি স্মৃতি। খেলাঘর আসর, রাজশাহীর শিল্পীদের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে অনুষ্ঠানের অতিথিবৃন্দ মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেন।

তিন দিনের এ আয়োজনের দ্বিতীয় দিন আগামীকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আলোচনা শেষে ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘অযান্ত্রিক’ (১৯৫৮) প্রদর্শিত হবে। আর অনুষ্ঠানের শেষদিন বুধবার সন্ধ্যায় আলোচনার পর প্রদর্শিত হবে ‘মেঘে ঢাকা তারা’ (১৯৬০)।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

লক্ষ্মীপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র মাহফুজ আলম, এনসিপির পক্ষে মনোনয়নপত্র নিলেন বড় ভাই মাহবুব

এনসিপির নির্বাচনকালীন কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ালেন নুসরাত তাবাসসুম

ভারতীয়দের ওয়ার্ক পারমিট বাতিলসহ ৪ দফা দাবি ঘোষণা করল ইনকিলাব মঞ্চ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কর্মসূচি থেকে ফেরার পথে পিকআপের ধাক্কায় জামায়াত নেতা নিহত

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
নিহত শরিফুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শরিফুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

যশোরের মনিরামপুরে পিকআপের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে শরিফুল ইসলাম (৫৫) নামে এক জামায়াত নেতা নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন কামরুজ্জামান নামে মোটরসাইকেলের অপর আরোহী। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে যশোর-চুকনগর সড়কের মনিরামপুর সরকারি কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

মনিরামপুর থানার ওসি রজিউল্লাহ খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিহতের লাশ মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা আছে।

নিহত শরিফুল ইসলাম উপজেলার হানুয়ার গ্রামের মাওলানা আব্দুস সালামের ছেলে। তিনি মনিরামপুর উপজেলা জামায়াতের কর্মপরিষদের সদস্য ও উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি। রাজগঞ্জ বাজারে তাঁর হোমিও চিকিৎসাকেন্দ্র রয়েছে।

আহত কামরুজ্জামান হানুয়ার গ্রামের ওমর ফারুকের ছেলে। তিনি মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

পুলিশ জানায়, শরিফুল ইসলাম ও কামরুজ্জামান উপজেলার জালঝাড়া জামায়াতে ইসলামীর অফিস থেকে মোটরসাইকেলে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁরা মনিরামপুর সরকারি কলেজের সামনে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে আসা পিকআপ ধাক্কা দিলে দুজনে ছিটকে পড়ে বুকে ও মাথায় মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শরিফুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন।

মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মেহেদী হাসান বলেন, ‘হাসপাতালে আনার পর আমরা শরিফুল ইসলামকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। আহত অপরজন চিকিৎসাধীন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

লক্ষ্মীপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র মাহফুজ আলম, এনসিপির পক্ষে মনোনয়নপত্র নিলেন বড় ভাই মাহবুব

এনসিপির নির্বাচনকালীন কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ালেন নুসরাত তাবাসসুম

ভারতীয়দের ওয়ার্ক পারমিট বাতিলসহ ৪ দফা দাবি ঘোষণা করল ইনকিলাব মঞ্চ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নতুন বই এলেও পদ্মার চরে কাটছে না শিক্ষকসংকট

তামীম আদনান, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া)
শিক্ষক কম থাকায় অনেক সময় ক্লাস হয় না। এতে শহরের শিক্ষার্থীদের তুলনায় পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিক্ষক কম থাকায় অনেক সময় ক্লাস হয় না। এতে শহরের শিক্ষার্থীদের তুলনায় পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নতুন বছর মানেই নতুন বইয়ের উচ্ছ্বাস। আর মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই বছরের প্রথম দিনে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পদ্মার চরের ২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছাবে নতুন বই। ঝকঝকে বইয়ের গন্ধে মুখর হবে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। তবে সেই আনন্দের মাঝেই দীর্ঘদিনের তীব্র শিক্ষকসংকট চরের শিশুদের শিক্ষাজীবনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের পদ্মার চরের ২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুমোদিত শিক্ষক পদ ১৫০টি। বর্তমানে সেখানে কর্মরত আছেন মাত্র ৮৫ জন। ফলে দীর্ঘদিন ধরে ৬৫টি শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও বিদ্যালয় সূত্র জানায়, দুর্গম চরাঞ্চলে নতুন শিক্ষক নিয়োগ পেলেও যাতায়াত ও আবাসন সমস্যা দেখিয়ে অনেকেই বেশি দিন সেখানে থাকতে চান না। অল্প সময়ের মধ্যেই নানা সুপারিশে তাঁরা সুবিধাজনক এলাকায় বদলি হয়ে যান। প্রতিবছর শিক্ষক নিয়োগ হলেও দুর্গম চরাঞ্চলে শিক্ষক ধরে রাখার জন্য কার্যকর নীতিমালা বা প্রণোদনা না থাকায় সংকটটি বছরের পর বছর রয়ে যাচ্ছে।

সরেজমিন চরাঞ্চলের বিদ্যালয়গুলো ঘুরে দেখা গেছে, অনেক স্কুলে প্রাক্‌-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছয়টি শ্রেণির বিপরীতে মাত্র দুই থেকে তিনজন শিক্ষক রয়েছেন। কোথাও আবার একজন শিক্ষকই পুরো বিদ্যালয়ের পাঠদান সামলাচ্ছেন। এক শিক্ষকের পক্ষে একসঙ্গে একাধিক শ্রেণিতে পাঠদান কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এর পাশাপাশি কর্মরত শিক্ষকদের একটি বড় অংশ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করায় দাপ্তরিক কাজেই তাঁদের বেশির ভাগ সময় ব্যয় হচ্ছে।

শিক্ষক কম থাকায় অনেক সময় ক্লাস হয় না। এতে শহরের শিক্ষার্থীদের তুলনায় পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিক্ষক কম থাকায় অনেক সময় ক্লাস হয় না। এতে শহরের শিক্ষার্থীদের তুলনায় পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চিলমারী ইউনিয়নের খারিজাথাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের প্রায়ই উপজেলা শিক্ষা অফিসে যেতে হয়। দুর্গম চরাঞ্চল পাড়ি দিয়ে যাওয়া-আসাতেই পুরো দিন শেষ হয়ে যায়। ফলে ওই দিনগুলোতে অনেক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যত বন্ধ থাকে।’

চর থেকে উপজেলা সদরে একজন শিক্ষকের যাতায়াতে গড়ে চার ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। এতে খরচ হয় প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। বর্ষা মৌসুমে নৌকাই একমাত্র ভরসা, আর শুষ্ক মৌসুমে মোটরসাইকেলে চলাচল করতে হয়। নারী শিক্ষকদের জন্য এই যাতায়াত আরও কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে।

পূর্ব খারিজাথাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পারভিনা আক্তার জানান, তিনি ১৮ বছর ধরে চরাঞ্চলে শিক্ষকতা করছেন। বর্তমানে তাঁর বিদ্যালয়ে ৩৬৫ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে পাঠদান করছেন মাত্র তিনজন শিক্ষক। প্রতিটি শ্রেণিতে গড়ে ৬০ থেকে ৬৫ জন শিক্ষার্থী। তিনি দাপ্তরিক কাজে বাইরে থাকলে মাত্র দুজন শিক্ষক দিয়ে পুরো বিদ্যালয়ের পাঠদান চালাতে হয়। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘এই অবস্থায় শিক্ষার্থীদের কী শিক্ষা দিচ্ছি—সেটাই বড় প্রশ্ন। বহুবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, কিন্তু কোনো স্থায়ী সমাধান আসেনি।’

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সোনাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, শিক্ষক কম থাকায় অনেক সময় ক্লাস হয় না। তার ভাষ্য, ‘আমরা স্কুলে গিয়ে বসে থাকি। আবার অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একসঙ্গে বসানো হয়।’

অভিভাবকদের অভিযোগ আরও তীব্র। আব্দুর রাজ্জাক নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমাদের সন্তানের হাতে নতুন বই আছে, কিন্তু মাথার ওপর শিক্ষক নেই। শহরের স্কুলে যেখানে শিক্ষক ভরপুর, সেখানে চরের শিশুদের জন্য কেন স্থায়ী ব্যবস্থা নেই।’

চরের অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষকসংকটের কারণে তাঁদের সন্তানেরা শহরের শিক্ষার্থীদের তুলনায় পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে। নিয়মিত পাঠদান না হওয়ায় শিক্ষার মান দুর্বল হচ্ছে। তবুও অনেক শিক্ষার্থী একের পর এক শ্রেণি পেরিয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে গিয়ে পড়ালেখাই ছেড়ে দিচ্ছে।

দৌলতপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুস্তাক আহম্মেদ বলেন, ‘নতুন শিক্ষক এলেও তারা নানা অজুহাতে চরাঞ্চলে থাকতে চান না। বিভিন্ন সুপারিশে সুবিধাজনক এলাকায় চলে যান। জানুয়ারিতে নতুন শিক্ষক নিয়োগের কথা রয়েছে। আমরা চাহিদা পাঠিয়েছি। নতুন শিক্ষক পেলে কিছুটা হলেও সংকট কাটবে বলে আশা করছি।’

তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, চরের দায়িত্বে থাকা অনেক শিক্ষক স্বেচ্ছায় সুবিধাজনক স্থানে বদলির আবেদন করেছেন। নতুন শিক্ষক নিয়োগের পর তাঁরা সেখান থেকে চলে আসবেন। ফলে সংকট দ্রুত কাটার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, দৌলতপুর উপজেলায় মোট ২১৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৮২টিতে প্রধান শিক্ষক নেই। এ ছাড়া ১ হাজার ১৬৬টি সহকারী শিক্ষক পদের বিপরীতে ১৩২টি পদ শূন্য রয়েছে, যার সিংহভাগই পদ্মার চরাঞ্চলে। চলতি বছরে উপজেলায় প্রায় ৪০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষার্থী নতুন বই পাবে।

নতুন বইয়ের আনন্দের মাঝেই শিক্ষকসংকটের এই দীর্ঘশ্বাস পদ্মার চরের হাজারো শিশুর শিক্ষা ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে—এমনটাই মনে করছেন সচেতন মহল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

লক্ষ্মীপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র মাহফুজ আলম, এনসিপির পক্ষে মনোনয়নপত্র নিলেন বড় ভাই মাহবুব

এনসিপির নির্বাচনকালীন কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ালেন নুসরাত তাবাসসুম

ভারতীয়দের ওয়ার্ক পারমিট বাতিলসহ ৪ দফা দাবি ঘোষণা করল ইনকিলাব মঞ্চ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রেললাইনের পাত তুলে ফেলায় ইঞ্জিনসহ দুই বগি লাইনচ্যুত, ঢাকা-ময়মনসিংহ রেল যোগাযোগ বন্ধ

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ঢাকাগামী অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনসহ দুটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকাগামী অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনসহ দুটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে রেললাইনের পাত খুলে ফেলায় ঢাকাগামী অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনসহ দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। দুর্ঘটনার পর ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) ভোর ৫টা ১০ মিনিটে গফরগাঁও রেলস্টেশনে ঢোকার আগে এ ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা প্রায় ২০ ফুট রেললাইনের পাত খুলে ফেলায় তারাকান্দি থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়।

গফরগাঁও রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার মো. হানিফ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমি এখনো ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারিনি। তবে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে জেনেছি, রেললাইনের পাত খুলে ফেলায় ইঞ্জিনসহ দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।’

রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) ময়মনসিংহের পরিদর্শক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাস্থলে আমাদের সদস্যরা রয়েছেন। রেললাইনের প্রায় ২০ ফুট অংশ খুলে ফেলায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ চলছে এবং দ্রুত রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পান আক্তারুজ্জামান বাচ্চু। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের সমর্থকেরা আন্দোলনে নামেন। এর পর থেকে রেললাইন অবরোধ ও অগ্নিসংযোগ করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

লক্ষ্মীপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র মাহফুজ আলম, এনসিপির পক্ষে মনোনয়নপত্র নিলেন বড় ভাই মাহবুব

এনসিপির নির্বাচনকালীন কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ালেন নুসরাত তাবাসসুম

ভারতীয়দের ওয়ার্ক পারমিট বাতিলসহ ৪ দফা দাবি ঘোষণা করল ইনকিলাব মঞ্চ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: তহবিলের হিসাব না পেয়ে দৃশ্যত স্থবির রাকসু

  • ১৯৯০-২০১৩ পর্যন্ত তহবিলের হিসাব দিতে পারছে না প্রশাসন।
  • বিতর্ক উৎসব ও অনলাইন সেবার মতো নানা কাজ হয়েছে: ভিপি জাহিদ
দীন ইসলাম, রাবি
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫০
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের দুই মাস পার হলেও ইশতেহার বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। শিক্ষার্থীরা বলছেন, রাকসু প্রতিশ্রুত সংস্কারের বদলে জাতীয় রাজনীতি ও প্রতীকী কর্মকাণ্ডে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তবে প্রতিনিধিদের দাবি, প্রশাসন রাকসুর তহবিলের সঠিক হিসাব দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তাঁরা যথাযথভাবে অগ্রসর হতে পারছেন না।

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর গত ১৬ অক্টোবর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২৬ অক্টোবর শপথগ্রহণ করেন নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। তবে দুই মাস পার হয়ে গেলে এখনো রাকসু তহবিলের হিসাব দিতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ২০১৩ সালের পর থেকে হিসাব দিতে পারলেও ১৯৯০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সময়ের তহবিলের কোনো হিসাব দিতে পারছে না প্রশাসন। এ বিষয়ে রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর দেখি কোনো ফাইল, কোনো হিসাবই ছিল না। শূন্য থেকে পুরো ভিত্তি গড়ে তুলতে হয়েছে।’

রাকসুর ভিপি ও এজিএসসহ ২৩ পদের মধ্যে ২০ জনই শিবিরসমর্থিত প্যানেলের। এই প্যানেলের ইশতেহারে ১২ মাসে ২৪টি সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তহবিলের যথাযথ হিসাব দিতে না পারায় কাজের অগ্রগতি ব্যাহত হওয়ার কথা জানিয়েছেন রাকসু প্রতিনিধিরা। তাঁরা বলছেন, দায়িত্ব গ্রহণের পরই তাঁরা প্রশাসনকে তহবিলের হিসাব বুঝিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। প্রশাসন ১৫ দিনের সময় নিয়ে পূর্ণাঙ্গ হিসাব দেওয়ার কথা জানালেও শেষ পর্যন্ত তা দিতে পারেনি।

রাকসুর ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই বিতর্ক উৎসব, মাঠ সংস্কার, পানির ফিল্টার স্থাপন ও অনলাইন সেবাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছি। হয়তো অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতার কারণে কাজের গতি আশানুরূপ নয়। তবে রাকসুর কাজ বাদ দিচ্ছি না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘৩৫ বছর ধরে এগুলো নিয়ে কেউ কাজ করেনি। এখন কাজ হচ্ছে এবং সবকিছু আস্তে আস্তে সামনে আসবে। ব্যাংক থেকে স্টেটমেন্টগুলো জমা করতে আরও সময় লাগবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

লক্ষ্মীপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র মাহফুজ আলম, এনসিপির পক্ষে মনোনয়নপত্র নিলেন বড় ভাই মাহবুব

এনসিপির নির্বাচনকালীন কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ালেন নুসরাত তাবাসসুম

ভারতীয়দের ওয়ার্ক পারমিট বাতিলসহ ৪ দফা দাবি ঘোষণা করল ইনকিলাব মঞ্চ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত