Ajker Patrika

লালপুরে বগি রেখে চলে গেল ট্রেনের ইঞ্জিন

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
আজিমনগর স্টেশনে বগি ফেলে চলে যায় ট্রেনের ইঞ্জিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজিমনগর স্টেশনে বগি ফেলে চলে যায় ট্রেনের ইঞ্জিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাটোরের লালপুরে ঢাকা-রাজশাহীগামী আন্তনগর ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনের পেছন থেকে সব বগি খুলে বগি রেখে প্রায় ৪০০ গজ সামনে চলে যায়। ঘটনার আধা ঘণ্টা পর ইঞ্জিনটি পুশ ব্যাক করে পুনরায় বগির সঙ্গে সংযুক্ত করে ট্রেনটি আবার রাজশাহীর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে।

আজ সোমবার (১৪ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-রাজশাহীগামী আন্তনগর ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনটি উপজেলার ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসে। বেলা ১১টার দিকে আজিমনগর স্টেশন অতিক্রমকালে সংযোগ হুক খুলে গেলে ইঞ্জিনটি বগি বিচ্ছিন্ন করে সামনে এগিয়ে যায়। প্রায় ৩০ মিনিট পর সাড়ে ১১টার দিকে ট্রেনটি আবারও রাজশাহীর উদ্দেশে যাত্রা করে।

ট্রেনের যাত্রী শিক্ষার্থী মুক্তাদির আলম বলেন, ‘আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করার সময় হঠাৎ বগি থেমে যায়। পরে দেখি ইঞ্জিন বগি রেখে চলে গেছে। কিছুক্ষণ পর আবার ইঞ্জিন এসে বগি নিয়ে রাজশাহী উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। তখন সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আল্লাহর রহমতে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি।’

প্রত্যক্ষদর্শী আলমগীর হোসেন বলেন, বেলা ১১টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনটি আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করার সময় ইঞ্জিন থেকে বগি খুলে যায়। এ সময় ট্রেনের ইঞ্জিনটি বগি থেকে প্রায় ৪০০ গজ দূরে চলে যায়। প্রায় আধা ঘণ্টা পর ইঞ্জিনটি ফিরে এসে আবার বগি নিয়ে রাজশাহীর দিকে যাত্রা করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশনে কর্তব্যরত স্টেশনমাস্টার জীবন বৈরাগী বলেন, ‘আজ সোমবার সকাল ১০টা ৫৭ মিনিটে আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশন ভবন অতিক্রম করার সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনটির ইঞ্জিন পাটিং হয়ে যায়। পরে সাড়ে ১১টার দিকে ওই ইঞ্জিন এসে বগি লাগিয়ে আবার রাজশাহী অভিমুখে যাত্রা শুরু করে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেটে মধ্যরাতে গাড়ি গ্যারেজে আগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
পাঠানটুলা এলাকার নবাবী মসজিদ সংলগ্ন একটি গাড়ির গ্যারেজে গতকাল দিবাগত রাতে আগুন লাগে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাঠানটুলা এলাকার নবাবী মসজিদ সংলগ্ন একটি গাড়ির গ্যারেজে গতকাল দিবাগত রাতে আগুন লাগে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিলেট নগরের পাঠানটুলা এলাকার একটি গাড়ির গ্যারেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তবে তাৎক্ষণিক আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। রোববার (১৬ নভেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পাঠানটুলা এলাকার নবাবী মসজিদ সংলগ্ন একটি গাড়ির গ্যারেজে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে রাত ১টা ৪০ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

রাত ৩টায় আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, সিলেট বিভাগের উপপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম ভূঞা।

তিনি বলেন, ‘আমরা গ্যারেজের ভেতরেই আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হই। ওখানে প্রায় ১০ টি গাড়ি ও ২-৪ টি মোটরসাইকেল ছিল সম্ভবত। তদন্ত শেষে অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানানো হবে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনই নির্ণয় করা যায়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বরিশাল সিটি: কাজ নেই, তবু বসে থাকতে হয় ৮ জনকে

  • সাড়ে ৫ মাস আগে ৯ কর্মচারীকে ওএসডি করা হয়, পরদিন একজন স্বেচ্ছায় অবসরে যান।
  • সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বেঞ্চে বসে কিংবা দাঁড়িয়ে অলস সময় কাটান তাঁরা।
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
অফিস সময়ে কাজ ও বসার জায়গা নেই। বাইরের বেঞ্চে বসে সময় পার করেন বিসিসির ৮ কর্মচারী। সম্প্রতি প্রশাসকের দপ্তরের সামনে। ছবি: আজকের পত্রিকা
অফিস সময়ে কাজ ও বসার জায়গা নেই। বাইরের বেঞ্চে বসে সময় পার করেন বিসিসির ৮ কর্মচারী। সম্প্রতি প্রশাসকের দপ্তরের সামনে। ছবি: আজকের পত্রিকা

কাজ ও বসার জায়গা ছাড়া সাড়ে ৫ মাস ধরে বাইরের বেঞ্চে বসে অফিস সময় পার করতে হচ্ছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) ৮ কর্মচারীকে। বিসিসি প্রশাসকের দপ্তরের সামনের খোলা জায়গায় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বেঞ্চে বসে কিংবা দাঁড়িয়ে অলস সময় কাটান তাঁরা।

সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক শাখা সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ এপ্রিল করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী মো. রেজাউল বারী স্বাক্ষরিত ওএসডির অফিস আদেশে ৯ কর্মচারীকে প্রশাসকের দপ্তরে ওএসডি করা হয়।

ওএসডি হওয়া কর্মচারীরা হলেন অ্যাসেসর মোস্তা গাউসুল হক খুসবু ও মোয়াজ্জেম হোসেন, ব্যক্তিগত সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হেলাল উদ্দিন ও ইমরান সাকিল, হিসাব সহকারী সোহেল চৌধুরী, সহকারী অ্যাসেসর মেহেদী হাসান, হাটবাজার সহকারী রাহাত হোসেন, হিসাব সহকারী আবদুস সালাম ও পানি শাখার সহকারী তত্ত্বাবধায়ক সোহরাব হোসেন পান্না। অবশ্য পান্না ওএসডি হওয়ার পরদিনই স্বেচ্ছায় অবসরে যান।

ওএসডির পর থেকে ৮ কর্মচারীর বসার কোনো জায়গা নেই, নেই কোনো কাজ। কিন্তু প্রতিদিনই তাঁদের সকাল ৯টায় অফিসে গিয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা দিতে হয়। সে সঙ্গে বাইরের বেঞ্চে বসে থাকতে হয় শেষ অফিস সময় পর্যন্ত।

গত বৃহস্পতিবার নগর ভবনের বিসিসির প্রশাসক মো. রায়হান কাওছারের দপ্তরের সামনে এক বেঞ্চে বসে থাকতে দেখা গেছে ৮ কর্মচারীকে। কয়েকজন দর্শনার্থীও পাশের বেঞ্চে বসেছিলেন। তবে গত মঙ্গলবারের পর নগর ভবনে ঢোকেননি প্রশাসক রায়হান কাওছার।

প্রশাসক কার্যালয়ে থাকুন কিংবা নাই থাকুন, ওই কর্মচারীদের দিনভর এভাবেই বসে থাকতে হয়।

ব্যক্তিগত সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হেলাল উদ্দিন বলেন, ওএসডি কী কারণে করেছে জানেন না। তিনি বলেন, বিগত সময়ে ওএসডি হওয়া কর্মচারীরা এনএক্স ভবনে বসতেন; কিন্তু তাঁদের বসার কোনো জায়গা নেই।

জানতে চাইলে বিসিসির প্রশাসনিক শাখার দায়িত্বে থাকা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, করপোরেশনের স্বার্থে ৯ জনকে ওএসডি করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন অবসর নিয়েছেন। তাঁরা প্রশাসকের দপ্তরে নিয়োজিত। স্যারের দপ্তরের সামনে হাজিরা দিয়ে বসে থাকেন।

এ বিষয়ে বরিশালের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) হাফিজ আহমেদ বাবলু বলেন, ওএসডি করতে হলে সুস্পষ্ট কারণ দেখাতে হবে। অফিস আদেশে তা উল্লেখ না থাকলে আইনের ব্যত্যয় হবে।

বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা চীন সফরে যাওয়ায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। প্রশাসক মো. রায়হান কাওছারও ফোন রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে বরিশাল সিটির সচিব রুম্পা সিকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওএসডিরত কর্মচারীরা যে বেঞ্চে বসে থাকেন, তা আমার জানা ছিল না। তাঁদের বসার কোনো একটা ব্যবস্থা করা যায় কি না দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামের আনোয়ারা

অবহেলায় ম্লান পারকির সৌন্দর্য, কমছে পর্যটক

  • পর্যটন মৌসুম শুরু হলেও পর্যটকদের তেমন পদচারণ নেই পারকি সৈকতে।
  • ঝাউগাছ উপড়ে পড়ে থাকায় হারিয়েছে চিরচেনা রূপ, লাল কাঁকড়ার বিচরণও কম।
মো. ইমরান হোসাইন, কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) 
চট্টগ্রামের আনোয়ারার পারকি সৈকত। পর্যটন শুরু হলেও পর্যটকের সংখ্যা হাতে গোনা। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রামের আনোয়ারার পারকি সৈকত। পর্যটন শুরু হলেও পর্যটকের সংখ্যা হাতে গোনা। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। আজকের পত্রিকা

একসময় ‘ঝাউবাগান’ নামে বেশ পরিচিত ছিল। ঝাউগাছের ঘন ছায়ায় বসে দেখা যেত জাহাজ চলাচল, লাল কাঁকড়ার দৌড়ঝাঁপ আর সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য। এমন সৌন্দর্যের কারণে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার পারকি সৈকতের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল সারা দেশে।

বিশেষ করে চট্টগ্রাম শহর থেকে কম সময়ে ও কম খরচে ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ থাকায় দ্রুত জনপ্রিয় হয় পর্যটনকেন্দ্রটি। কিন্তু অযত্নে পড়ে থাকা এবং ঝাউবনের অধিকাংশ গাছ ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় পারকির সেই সৌন্দর্য ম্লান হয়ে গেছে। পর্যটন মৌসুম শুরু হলেও সৈকতে দর্শনার্থীদের তেমন পদচারণ নেই।

গত শনিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, সৈকতে বিভিন্ন স্থানে ঝাউগাছ উপড়ে পড়ে আছে। পর্যটকদের বিশ্রামের জন্য সারি সারি ছাতা ও বেঞ্চ থাকলেও হাতে গোনা পর্যটক রয়েছেন। লাল কাঁকড়ারও বিচরণ আগের মতো দেখা যায়নি। বিদ্যুৎ না থাকায় সন্ধ্যায় সৈকতের আশপাশে নামে ঘুটঘুটে অন্ধকার। সৈকত এলাকায় পর্যটকদের যানবাহন রাখার ওপর টোল আদায় করা হচ্ছে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডার ঘটনাও ঘটছে। নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কোনো ট্যুরিস্ট পুলিশও দেখা যায়নি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত দুই বছর নানা অব্যবস্থাপনা, অযত্নের কারণে পারকির সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা না থাকায় সন্ধ্যার পর পর্যটকেরা এখানে অবস্থান করতে ভয় পান। ভালো আলোর ব্যবস্থাও নেই।

সৈকতের আশপাশের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সৈকতটিতে গত তিন বছরে তিন শতাধিক ঝাউগাছ উপড়ে পড়েছে। এখন আর আগের মতো দর্শনার্থী সৈকতে আসে না। বছর দুই আগেও সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র-শনিবার ছাড়াও অন্য দিনে অন্তত ৫ হাজার দর্শনার্থী পারকি ঘুরতে আসতেন। কিন্তু এসবের বিপরীতে পর্যাপ্ত অবকাঠামো, পর্যটকদের নিরাপত্তা, আলোর ব্যবস্থা না থাকায় দিন দিন কমেছে পর্যটক। দুটি গণশৌচাগার থাকলেও তা দেখাশোনার অভাবে ব্যবহারের অনুপযোগী অবস্থায় পড়ে আছে।

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সৈকত ঘুরে পারকি দেখতে আসা পর্যটক মো. শাহেদুল আলম বলেন, ‘অব্যবস্থাপনার কারণে নানান হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে।’

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আনোয়ারা উপকূলকে রক্ষার জন্য পারকি সৈকতের বালিয়াড়িতে ১৯৯২-৯৩ অর্থবছরে ১২ হেক্টর জায়গায় আর্কিটেকচারাল পদ্ধতিতে ঝাউগাছ লাগানো হয়। এরপর ১৯৯৩-৯৪ অর্থবছরে ১৭ দশমিক ২ হেক্টর, ২০০৩-০৪ অর্থবছরে ৫ হেক্টর এবং ২০০৪-০৫ অর্থবছরে ৫ হেক্টর জায়গায় ঝাউবাগান করা হয়। এই সবুজ বেষ্টনী পারকি সৈকতের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি থেকেও রক্ষা করত। তবে প্রতিবছর দুর্যোগে সৈকতের ঝাউগাছ কমেছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে পারকি সৈকতসংলগ্ন এলাকায় ১৩ দশমিক ৩৩ একর জায়গায় ৭৯ কোটি টাকা বরাদ্দে একটি উন্নয়ন প্রকল্প শুরু হয়। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি।

স্থানীয় রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী কাজী জাফর আহমেদ বলেন, ‘সৈকতে বিদ্যুৎ-সংযোগ না থাকায় সন্ধ্যার পরপরই পর্যটকেরা আর সৈকতে থাকছেন না। সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং প্রয়োজনীয় আলোর ব্যবস্থা করার দাবি জানাই।’

পারকি সৈকতের ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, ‘পারকি সৈকতের মূল আকর্ষণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এটি এখন আর নেই। গত তিন বছর অযত্ন, অবহেলা ছাড়া পারকি কিছুই পায়নি। এ ছাড়া সৈকতের প্রবেশপথে টোল আদায় করা নিয়ে পর্যটকেরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কেউ কেউ বিরক্ত হয়ে ফিরেও যাচ্ছেন।’

আনোয়ারার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘পারকি সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দিনাজপুরের খানসামা: রোগীর সেবা নেই ১৬ কোটির হাসপাতালে

  • জনবল নেই, অর্থ বরাদ্দ নেই; নিরাপত্তাহীন অবস্থায় অবকাঠামো ও সরঞ্জাম।
  • কোটি টাকার চিকিৎসা যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, রয়েছে চুরির আশঙ্কা।
  • বিদ্যুৎ বিল বকেয়া প্রায় সাড়ে ১২ লাখ টাকা, সংযোগও বিচ্ছিন্ন।
এস. এম. রকি, খানসামা (দিনাজপুর)
দিনাজপুরের খানসামায় ২০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালে আসবাবপত্র ও সরঞ্জামে জমেছে ধুলাবালি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দিনাজপুরের খানসামায় ২০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালে আসবাবপত্র ও সরঞ্জামে জমেছে ধুলাবালি। ছবি: আজকের পত্রিকা

অবকাঠামো আছে, সরঞ্জামও আছে। তবু উদ্বোধনের চার বছর পরও সেবা কার্যক্রম চালু হয়নি দিনাজপুরের খানসামায় ২০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালে। এতে সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা। অযত্নে নষ্ট হচ্ছে হাসপাতালের বিভিন্ন সরঞ্জাম। এদিকে হাসপাতালটিতে নিরাপত্তাব্যবস্থা না থাকায় চিকিৎসা সরঞ্জামসহ নানা জিনিস রয়েছে চুরির ঝুঁকিতে।

২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর উদ্বোধন করা হয় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই হাসপাতাল। তবে জানা গেছে, জনবল নিয়োগ ও অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় হাসপাতালটি অচল পড়ে রয়েছে। এতে কোটি টাকার চিকিৎসা যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এদিকে হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া প্রায় সাড়ে ১২ লাখ টাকা। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ-সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।

গতকাল রোববার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের প্রধান ফটকে (মূল গেট) ঝুলছে তালা। উপজেলার আত্রাই নদের তীরে জিয়া সেতু মোড়ে নির্মিত দোতলা এই হাসাপাতাল ভবনটি এখন কার্যত পরিত্যক্ত। ভবনের পাশে রয়েছে তিনটি আবাসিক কোয়ার্টার, রান্নাঘর, গ্যারেজ ও বিদ্যুৎ স্টেশনসহ প্রয়োজনীয় স্থাপনা। তবে নেই কোনো জনবল। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে পড়ে থাকায় ভবনের বেশির ভাগ জায়গায় ধুলা, মাকড়সার জাল ও আগাছায় ভরে গেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি হাসপাতালের ভেতর থেকে বিদ্যুতের তার ও ভারী যন্ত্রপাতিসহ ৪-৫ লাখ টাকার মূল্যবান সরঞ্জাম চুরি হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে নির্মিত এই হাসপাতালটি প্রথমে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে এনে সীমিত বহির্বিভাগ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট থাকায় তাও বন্ধ হয়ে যায়।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই হাসপাতালটি চালু হলে খানসামার গোবিন্দপুর, টংগুয়া, বেলপুকুর, সহজপুর, হোসেনপুর, জাহাঙ্গীরপুর, বাশুলী, শুশুলী, ফরিদাবাদ, জয়গঞ্জ ও তুলসীপুরসহ আশপাশের একাধিক ইউনিয়নের মানুষ উপকৃত হতেন। পাশাপাশি পাশের বীরগঞ্জ, দেবীগঞ্জ ও নীলফামারী সদর উপজেলার বাসিন্দারাও সেবা পেতেন। কিন্তু নিরুপায় হয়ে এসব এলাকার রোগীদের এখনো নিয়মিত জেলা সদর বা অন্য উপজেলায় ছুটতে হচ্ছে চিকিৎসার জন্য।

স্থানীয় বাসিন্দা সাজিদ ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এত টাকা খরচ করে হাসপাতাল করছে; কিন্তু চিকিৎসাসেবা তো চালু হলো না। এখন পুরো ভবনটা মরুভূমির মতো পড়ে আছে। বারবার বলেও কোনো সমাধান পাইনি।’

খানসামা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এজিএম এ এস এম রাকিবুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, খানসামা ২০ শয্যা হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া প্রায় সাড়ে ১২ লাখ টাকা। দ্রুত বিল পরিশোধ করতে স্বাস্থ্য বিভাগকে লিখিত চিঠির মাধ্যমে অবগত করা হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালটির অবকাঠামো অত্যন্ত ভালো। কিন্তু জনবল ও আর্থিক বরাদ্দ না থাকায় এখনো সেবা চালু করা যায়নি। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি কয়েকবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানিয়েছি। সম্প্রতি ওই হাসপাতালের বিষয়ে তথ্য চেয়েছে, তা পাঠানো হয়েছে। নিয়মিত সেবা চালুর বিষয়ে যোগাযোগ অব্যাহত আছে।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান সরকার বলেন, হাসপাতালটি চালু করা হলে তৃণমূল মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি ঘটবে। তিনি বলেন, ২০ শয্যা হাসপাতালে সেবা কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত