Ajker Patrika

৪০ বছর আগের ৩০০০ টাকা ঋণ শোধ করে ইতিকাফে বসলেন নব্বই-ঊর্ধ্ব প্রবীণ

হারুনূর রশিদ, (রায়পুরা) নরসিংদী
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ২২: ২৫
৪০ বছর আগের ৩০০০ টাকা ঋণ শোধ করে ইতিকাফে বসলেন নব্বই-ঊর্ধ্ব প্রবীণ

‘ইতিকাফ আল্লাহ কবুল করবেন কি না জানি না। কয়দিন আর বাচমু, ঋণ পরিশোধ না করলে তো আল্লাহ মাফ করবে না। ৪০ বছর আগের মহাজনের দেনা পরিশোধ করতে পেরেছি। এখন মরেও শান্তি পাব।’ কথাগুলো বলছিলেন ৪০ বছর আগের ঋণ পরিশোধ করে মসজিদে ইতিকাফে বসা নব্বই-ঊর্ধ্ব প্রবীণ মো. ফুল মিয়া। 

তিনি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরসুবুদ্দি ইউনিয়নের বাটখোলা উত্তরপাড়ার বাসিন্দা। বাড়ির মহল্লার মসজিদে ইতিকাফে বসার আগে ফুল মিয়া পরিশোধ করেছেন ৪০ বছর আগে মহাজনের কাছ থেকে নেওয়া ৩ হাজার টাকা। 

গতকাল শনিবার বিকেলে এ নিয়ে কথা হয় ফুল মিয়ার সঙ্গে। তিনি হাসিমুখে বলেন, ‘প্রায় ৪০ বছর আগে ডৌকারচরের মো. লোকমান চেয়ারম্যানের (সাবেক) কাছ থেকে আমিসহ এই এলাকার অনেকেই বাকিতে মাল (সুতা) বাড়িতে এনে তাঁত বুইনতাম। তাঁত বুনে তা বিক্রি করে কোনোমতে চলতো সংসার। হঠাৎ তাঁত ব্যবসায় সবার লস হয়ে যায় (নব্বইয়ের দশকে হ্যান্ডলুমের বিপর্যয়ে অনেক তাঁতি নিঃস্ব হয়ে যায়), আমিসহ অনেকের টাকাও আটকে যায়। সংসারেও অভাব, খাওয়া-পরার বেহাল অবস্থায় দিন গেছে। ভয়ে তাঁর সঙ্গে আর দেখা করিনি। এমনে কেটে যায় বহু বছর। ঋণের টাকা পরিশোধ করা হয়ে ওঠেনি।’ 

ফুল মিয়া আরও বলেন, ‘মাঝেমধ্যেই ভাবি টাকাটা (ঋণ) পরিশোধ কইরা দেম। কেউ জানে না আমার কাছে লোকমান চেয়ারম্যান টাকা পাইব, কেউ আমার কাছে চায়ও না। আমি তো জানি, আমার কাছে টাকা পাইব। টাকা পরিশোধ করে দিতাম চাইলেও টাকাটা আর জমাইতাম পারি না, জমাইলেও খরচ হইয়া যায়। মহাজন মারা যায়, কার কাছে দিমু, কীভাবে দিমু, অনেক চিন্তাভাবনায় আর দেওয়া হয় নাই।’
 
টাকা ফেরত দেওয়ার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ফুল মিয়া বলেন, ‘এইবার ঠিক করছি, যে করেই হোক টাকাটা জমায়ে ঋণটা পরিশোধ করুম। আগে থেকেই ভাইব্বা রাখছি রমজান আইলে এত্তেকাফে বমু, তার আগে যে করেই হোক টাকাটা নিয়ে চেয়ারম্যানের বাড়িতে যামু। টাকাটা ভাও-জোগাড় করে এত্তেকাফে বসার আগে পাশের গ্রাম ডৌকারচরের চেয়ারম্যানের বাড়িতে গেলাম। বাড়িতে গিয়ে পাইলাম চেয়ারম্যানের ভাই আব্দুল হাইকে, ওনারে আমি আগে থেকেই চিনতাম। লোকমান সাবের একজন ছেলে আছে, নাম হুনছি সোহেল, আমি চিনি না। তার কাছে জানতে চাইলাম সোহেল কোথায়? আব্দুল হাইয়ের পরিবার (স্ত্রী) সেখানে ছিল। উনারা জানালেন তাঁরা বাড়িতে থাকে না, ঢাহা (ঢাকা) থাকেন। উনাদের কাছে সব ঘটনা খোলাসা করে বলে টাকাটা আব্দুল হাইয়ের হাতে দিলাম।’

ফুল মিয়া আরও বলেন, ‘হেরপর তাঁরা বলল, ‘‘আমরা টাকা পাইছি। কত মানুষ কত টাকা মেরে দিছে, আপনি ৩ হাজার টাকা নিয়া আসছেন? টাকাটা আপনি রেখে দেন।’’— বলে জোর করে দিয়ে দিল। তহন আমিও জোর করে উনার হাতে ৫০০ টাকা দিয়ে বললাম, রাখলে আমি খুশি হইমু, এ রকম বলে কোনো রকমে দিয়া আসছি।’

অশীতিপর এই বৃদ্ধ এরপর কিছুটা আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘উনারা টাকাটা না নিয়ে ফেরত দিয়া উল্টো যথেষ্ট আদর-ইজ্জত করলেন। ঘরে নিয়ে সোফায় বসায়ছে। রোজা না থাকলে মনে হয় না খাওয়ায়ে ছাড়তেন না। তাঁদের ব্যবহারে আমি অনেক খুশি। আমি টাকাটা নিয়ে গেছি এতেই তারাঁ খুশি।’ ঘটনার বর্ণনা দেওয়ার পর তাঁর চোখেমুখে এক যুবকের হাসি ফুটে ওঠে।   

স্ত্রী ও চার ছেলে নিয়ে ফুল মিয়ার সংসার। সারা জীবন অভাব-অনটন ও বয়সের ছাপ দেহজুড়ে স্পষ্ট। বয়সের ভারে ন্যুব্জ পড়েছে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। শরীরের বাসা বেঁধেছে নানাবিধ রোগ। এরপরও তিনি কারও করুণা নিয়ে চলেন না। এখনো যুবকের মতোই দৃঢ় মনোবল তাঁর। কাজ-কর্মের পাশাপাশি ইবাদত করেই কাটান ফুল মিয়া। কষ্ট হলেও নিজের উপার্জনেই চলতে চান শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। 
 
স্থানীয় বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ, ফারুক মোল্লা, শামসুল হক বলেন, ‘এই যুগে এমন মানুষ পাওয়া খুবই বিরল ব্যাপার। তিনি পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করেন। এরপরও এত বছর পরে ঋণ পরিশোধ করেছেন। এতে সমাজের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন—সততা ও দায়িত্ববোধ কাকে বলে। তাঁর এমন কাজে এলাকাবাসী গর্বিত।’

মসজিদের ইমাম নূর মোহাম্মদ বলেন, ঋণ পরিশোধের ব্যাপারে পবিত্র কোরআন শরিফে অত্যধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এমনকি আল্লাহতায়ালা নির্দেশ দিয়েছেন, যেন মৃত ব্যক্তির সম্পদ বণ্টন ও ওসিয়ত পালনের পূর্বেই তাঁর ঋণ পরিশোধ করা হয়। হাদিসে আছে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর সাহাবিদের জানাজা পড়াতেন না, যদি তাঁর ঋণ অপরিশোধিত থাকত। তাই ফুল মিয়ার কাজে এলাকার সবাই অভিভূত।’

মহাজন লোকমান হোসেনের ছেলে মো. সোহেল পারভেজ বর্তমানে ঢাকায় বসবাস করেন। তিনি বাংলাদেশ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘লোকটি ইতিকাফে বসার আগে নিজের ঋণের কথা ভেবেছেন। এই সমাজে অনেকেই লোকদেখানো অনেক কিছু করে, বহুবার হজ করে, কিন্তু তাঁরা দেনা-পাওনার কথা ভাবেন না। কিন্তু বৃষ্টিতে ভিজে বাড়িতে এসে ওই চাচা বলেন, ‘‘প্রায় ৪০ বছর আগে আমি সোহেল পারভেজের বাবা লোকমান হোসেনের কাছ থেকে সুতা কিনেছিলাম। টাকাটা পরিশোধ করতে পারিনি। আমি এই রমজানে ইতিকাফে বসব। তাই আমি আমার ঋণ পরিশোধ করতে চাই। অনেক কষ্ট করে তিন হাজার টাকা জোগাড় করে মহাজনের ঋণের টাকাটা দিতে এসেছি, না নিলে আমি কষ্ট পাব।’’’

সোহেল পারভেজ আরও বলেন, ‘আমি বললাম, ‘‘আপনি এসেছেন এতেই অনেক খুশি। এই টাকার প্রতি আমাদের কোনো দাবি নেই। তারপরও তিনি জোর করে ৫০০ টাকা দিয়ে গেছেন। এলাকায় গেলে আমি চাচাকে দেখতে যাব। আল্লাহ চাচাকে নেক হায়াত দান করুক। চাচার জন্য দোয়া করি। আল্লাহ চাচার সকল গুনাহ মাফ করুক। আমার তিন বোন ও বাবার একমাত্র ছেলে আমি। আমি আমার পরিবারের পক্ষে চাচাসহ সকল তাঁতিদের পাওনা মাফ করে দিয়েছি।’”

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদপুরে নতুন ভোটারদের নিয়ে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণ’ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চাঁদপুরে শতাধিক নতুন ভোটারের অংশগ্রহণে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের আয়োজনে এবং সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চাঁদপুর জেলা কমিটির সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি হয়।

আজ সকাল সাড়ে ৯টায় চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও বেলুন উড়িয়ে নির্বাচনী অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান মিয়া। নতুন ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি, গণতন্ত্রের মূল্যবোধ, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, সুশাসন ইত্যাদি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ হয়েছে। সুজনের সহযোগিতায় এই আয়োজন অবশ্যই অংশগ্রহণকারীদের অনেক সমৃদ্ধ করবে এবং সচেতন নাগরিক তৈরি হবে।’

পরে কলেজের অডিটরিয়ামে ৫০টি এমসিকিউ পদ্ধতির প্রশ্নের মাধ্যমে ৩০ মিনিটের পরীক্ষা হয়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত ১০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তাঁদের মধ্য থেকে প্রথম থেকে তৃতীয় স্থান অর্জনকারী তিনজন জাতীয় নির্বাচনী অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবেন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের সনদ দেওয়া হয়।

পরীক্ষা শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য ও বিজয়ীদের হাতে সনদ তুলে দেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম সরকার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুজন চাঁদপুরের সভাপতি অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন। সঞ্চালনায় ছিলেন সুজনের আঞ্চলিক সমন্বয়ক নাছির উদ্দিন।

সুজন চাঁদপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রহিব বাদশা, শিক্ষক ওমর ফারুক, সংগঠক সালাউদ্দিন, কর আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল ফারুক, সাংবাদিক আলম পলাশ, জাকির হোসেন, শোভন আল-ইমরান, মোরশেদ আলম রোকন, মো. মাসুদ আলম, শরীফুল ইসলামসহ সুজন জেলা কমিটির সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চায়ের দোকানে চলে একটি বাতি-ফ্যান, বিদ্যুৎ বিল এল সাড়ে ৫৫ হাজার টাকা

টঙ্গিবাড়ী (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি 
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাজারে ছোট একটি চায়ের দোকান চালান বাদশা ব্যাপারী। দোকানে কেবল একটি বাতি ও একটি ফ্যান চালানো হয়। সাধারণত তাঁর মাসিক বিল ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে আসে। কিন্তু চলতি মাসে তাঁর হাতে এসেছে ৫৫ হাজার ৫৫০ টাকার বিদ্যুৎ বিল। বিল হাতে পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় ইউনিয়নের লিটুখান বাজারের দোকানদার বাদশা ব্যাপারী। বিদ্যুৎ বিলের ব্যাপারে বাদশা বলেন, ‘এটা অসম্ভব। আমার দোকানে এত বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগই নেই। বিলের নম্বরে ফোন করলে শুধু অফিসে যেতে বলে।’

এমন ‘ভুতুড়ে’ বিদ্যুৎ বিল পেয়েছেন লিটুখান বাজারের আরেক দোকানদার শহীদ খান। বাজারে খাবারের দোকান রয়েছে তাঁর। দোকানে দুটি বাতি, একটি ফ্যান ও একটি ছোট ফ্রিজ ব্যবহার করা হয়। প্রতি মাসে যেখানে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা বিল দিতেন, সেখানে এবার বিল এসেছে ২৪ হাজার ২১৬ টাকা। শহীদ বলেন, ‘বিলটা দেখে দাঁড়াতেই পারছিলাম না। এমন বিল হলে দোকান চালানোই কঠিন হয়ে যাবে।’

বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, কয়েক মাস ধরে এলাকায় এমন অস্বাভাবিক বিল আসছে। তাঁদের ধারণা, মিটার রিডিং অথবা বিলিং পদ্ধতিতে গুরুতর ত্রুটি রয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে সঠিক হিসাব ঠিক করার পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

বিল প্রস্তুতকারী কর্মী সুমি রানী দাস বলেন, সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের অফিসে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘তারা অফিসে এলে আমরা সরেজমিন যাচাই করে বিল পুনরায় বিবেচনা করব।’

টঙ্গিবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. আব্দুস ছালাম বলেন, ‘মিটার রিডিং বা বিলিং সিস্টেমে ত্রুটি থাকতে পারে। আমরা সরেজমিন যাচাই করে দ্রুত সমাধানের পদক্ষেপ নেব। ভোক্তাদের অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার বাথরুমে পড়ে ছিল নারী প্রভাষকের লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

বগুড়া প্রতিনিধি
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার এক বাসা থেকে ফাবিয়া তাসনিম সিধি (২৯) নামের এক প্রভাষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত ফাবিয়া বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক। বছর দেড়েক আগে তিনি কলেজটিতে যোগদান করেন।

এই তথ্য নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান জানান, ফাবিয়া অবিবাহিত। তিনি বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ডা. রাশেদুল হাসানের বাড়ির তিনতলায় ভাড়া বাসায় তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। কয়েক দিন আগে তাঁর মা গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যান। গতকাল দুপুরের পর থেকে মেয়েকে ফোনে না পাওয়ায় তাঁর মা রাত ১০টার দিকে বগুড়া আসেন। অনেক ডাকাডাকি করে দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বাসার বাথরুমে ফাবিয়ার লাশ দেখতে পায়।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ছাড়াও জিবে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়া ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল শিশুসহ চারজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ১৬
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চার যাত্রী নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে দুজন নারী, একজন পুরুষ ও তিন বছর বয়সী এক শিশু রয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় জানা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। বাসচাপায় ঘটনাস্থলে তিনজন মারা যান। আহত চারজনকে উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক শিশুর মৃত্যু হয়।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে তিনজন মারা যান। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেন ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফ হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত