Ajker Patrika

গুলির ক্ষত নিয়ে বিছানায় পঙ্গু বাবার ছেলে, আয়ের পথ হারিয়ে দিশেহারা পরিবার

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২৪, ১৯: ০১
গুলির ক্ষত নিয়ে বিছানায় পঙ্গু বাবার ছেলে, আয়ের পথ হারিয়ে দিশেহারা পরিবার

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে কারফিউ চলাকালে গত ২০ জুলাই বিকেলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে বাইরে বের হন মো. মোস্তাকিম (১৮)। গাজীপুরে কারফিউ ভেঙে হঠাৎ রাস্তায় নেমে আসেন আন্দোলনকারীরা। পুলিশও তখন আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে নির্বিচার গুলি ছুড়তে থাকে। দৌড়ে পালানোর সময় একটি গুলি এসে লাগে মোস্তাকিমের পায়ে।

গুলিটি তাঁর হাঁটুর একপাশ দিয়ে লেগে অপর পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। উপস্থিত বন্ধুরা মোস্তাকিমকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় পাশের একটি হাসপাতালে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে তাঁকে রেফার্ড করেন চিকিৎসক। দেশের পরিস্থিতি খারাপ থাকায় পায়ে ব্যান্ডেজ করে কোনো রকম চিকিৎসা দিয়েই পরদিন তাঁকে বিদায় দেওয়া হয়।

গাজীপুরের বাসায় এক সপ্তাহ বিশ্রাম নেন মোস্তাকিম। চিকিৎসক জানিয়েছেন, গুলিতে মোস্তাকিমের পায়ের রগ ছিঁড়ে গেছে। ক্ষত শুকানোর পর অপারেশন করতে হবে। তারপর গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার সাতুর গ্রামে তাঁকে নিয়ে আসেন স্বজনেরা।

সেই থেকে ব্যান্ডেজ প্যাঁচানো পা নিয়ে বিছানায় শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন মোস্তাকিম। দরিদ্র পরিবারটি চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। মোস্তাকিম নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার সাতুর গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে।

চার ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয় মোস্তাকিম। বাবা বাচ্চু মিয়া ২০১৩ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এক পা ভেঙে পঙ্গু হয়েছেন। অভাবের পরিবার তাই ভাঙা পা নিয়েই বাড়ির কাছে ছোট একটি টং দোকান চালান তিনি। সম্পদ বলতে বাড়ির ১২ শতাংশ জায়গা ছাড়া আর কিছুই নেই। মোস্তাকিমের বড় ভাই মিজানুর বিয়ের পর সংসার থেকে আলাদা হয়ে গেছেন। ছোট দুই ভাই পড়াশোনা করে।

মোস্তাকিম পাশের আটপাড়া উপজেলার একটি কওমি মাদ্রাসা থেকে ২০২২ সালে হাফেজি সম্পন্ন করেন। তারপর রোজাগারের খোঁজে গাজীপুর শহরে চলে যান। সেখানে গিয়ে একটি পোশাক কারখানায় কাজ শুরু করেন। তাঁর আয় দিয়ে ভালোই চলছিল পরিবারের ভরণপোষণ আর ছোট ভাইদের পড়াশোনা। কিন্তু গুলিতে আহত হয়ে বিছানায় শুয়ে গুনতে হচ্ছে চিকিৎসা খরচ। এদিকে উপার্জন বন্ধ হওয়ায় কষ্টে দিনযাপন করছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

গতকাল মঙ্গলবার মোহনগঞ্জের সাতুর গ্রামে মোস্তাকিমদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পায়ের নিচে বালিশ রেখে বারান্দায় খাটের ওপর বসে আছেন মোস্তাকিম। ঘর থেকে বারান্দা এ পর্যন্তই তার চলাফেরার সীমানা। লাঠিতে ভর দিয়েই এটুকু জায়গা চলতে হয় তাঁর। তারপর গুলি লাগার বিষয়ে জানান বিস্তারিত।

হাফেজ মোস্তাকিম বলেন, ‘আন্দোলনের কারণে কারখানা বন্ধ ছিল কয়েক দিন ধরেই। তারপর আবার কারফিউ চলছিল। দরকারি জিনিসপত্র কেনার জন্য ২০ জুলাই বেলা তিনটার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত দেখে বাসা থেকে বের হই। গাজীপুর শহরের বড়বাড়ি মোড়ে যেতেই হঠাৎ কোথায় থেকে আন্দোলনকারীরা চলে আসে। মুহূর্তে তাদের দিকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে পুলিশ। আমার পাশে দুজন গুলিতে মারা যায়। আরও অনেকের হাতে-পায়ে গুলি লাগে। পরিস্থিতি খারাপ দেখে দৌড় দিই। তখনই একটি গুলি এসে আমার পায়ের হাঁটু বরাবর লাগে। গুলিটি পায়ের একপাশে লেগে অন্যপাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। তখনই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে জ্ঞান হারাই। আর কিছু বলতে পারি না।’

তিনি বলেন, ‘বন্ধুরা তুলে আমাকে হাসপাতালে নেয়। সেখানে গিয়ে জ্ঞান ফিরে দেখি হাসপাতালে অনেক আহত লোকজন। অনেকে মারা গেছে।’

মোস্তাকিম আরও বলেন, ‘প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েই পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করে আমাকে। পঙ্গুতে গিয়েও দেখি অনেক রোগী। সেখানে ব্যান্ডেজ করে এক দিন রেখেই বিদায় করে দেয়। বাসায় এসে এক সপ্তাহ বিশ্রাম নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে আসি। চিকিৎসক জানিয়েছেন, গুলিতে পায়ের রগ ছিঁড়ে গেছে। আপাতত পায়ের ক্ষত শুকাতে হবে। পরে আবার গিয়ে অপারেশন করাতে হবে।’

মোস্তাকিমের মা পুষ্প আক্তার বলেন, ‘স্বামী ২০১৩ সাল থেকে পঙ্গু। এই অবস্থায় পেটের দায়ে সামান্য একটা টং দোকান চালায় এটাতে তেমন আয় নেই। বড় ছেলে বিয়ের পর আলাদা হয়ে গেছে। মোস্তাকিমই পরিবারের একমাত্র অবলম্বন। ছোট দুইটা ছেলের পড়াশোনা, পরিবারের সবার খরচ সবই সামলাত মোস্তাকিম। বাড়ির জায়গাটা ছাড়া আর কোনো জমিজমা নেই। এই অবস্থায় ছেলের চিকিৎসা কীভাবে করাব। ঋণ করে চিকিৎসা করাচ্ছি। আর কত দিন চিকিৎসা করাতে পারব জানি না। আমার ছেলেটার জন্য সবার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’

পুষ্পা আক্তার আরও বলেন, ‘আমার ছেলেটা তো জীবনে কারও কোনো ক্ষতি করেনি। তার ওপর কেন এই বিপদ এল। কার কাছে এর বিচার দেব।’

মোস্তাকিমের বাবা বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘একমাত্র উপার্জনশীল ছেলেটা আহত হয়ে বিছানায় শুয়ে আছে। আমি নিজেও পঙ্গু। ঋণ করে চিকিৎসা খরচ চালাচ্ছি। কয়দিন পর আবার অপারেশন করাতে হবে। অনেক টাকা খরচ হবে। কীভাবে কী করব জানি না। পরিবার নিয়ে ঘোর অন্ধকার দেখতেছি। অভাবের কারণে হাফেজি পড়া শেষ করেই গার্মেন্টসে চাকরি নিয়েছে। বিপদ শুধু আমাদের গরিবের জন্যই আসে। আল্লাহ এর একমাত্র সমাধানকারী।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক এমপি সুকুমার রঞ্জন ঘোষ মারা গেছেন

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
সুকুমার রঞ্জন ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত
সুকুমার রঞ্জন ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সুকুমার রঞ্জন ঘোষ (৭০) মারা গেছেন। আজ সোমবার ভোরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, দুই মেয়েসহ বহু আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

পরিবারসূত্রে জানা যায়, সুকুমার রঞ্জন ঘোষ দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর ধরে পারকিনসন রোগে ভুগছিলেন। তিনি ধানমন্ডির বাসায় থাকতেন। গত কয়েক দিন ধরে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

সুকুমার রঞ্জন ঘোষ শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ শ্রীনগর উপজেলা সদরে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পর থেকে অসুস্থ ছিলেন।

উল্লেখ্য, সুকুমার রঞ্জন ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (কুলা প্রতীক) ও সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনকে (ধানের শীষ) পরাজিত করে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে চমক সৃষ্টি করেন। এরপর ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে নিহত দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক, স্ত্রীকে চাকরির আশ্বাস

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ১০
ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ভালুকায় গণপিটুনিতে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসের বাড়িতে শোকের মাতম এখনো থামেনি। একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটিকে হারিয়ে পুরো পরিবার যেন শোকে কাতর।

প্রতিদিনই বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে দিপুর পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে আর্থিক সহায়তাসহ নানা আশ্বাস। এ ছাড়া দিপুর পরিবারের জন্য বাড়িতে সার্বক্ষণিকভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

আজ সোমবার ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক সাইফুর রহমান নিহত দিপু দাসের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। তাঁর সঙ্গে তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলামসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দিপুর পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ২৫ হাজার টাকা, শীতবস্ত্র, শুকনো খাবার ও একটি সেলাই মেশিন পরিবারটিকে দেওয়া হয়। পাশাপাশি দিপুর স্ত্রীকে চাকরি দেওয়ার ঘোষণাও দেন জেলা প্রশাসক।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক সাইফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিহতের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। সহযোগিতাসহ সব সময় তাদের পাশে থাকার কথা জানিয়েছি।’

উল্লেখ্য, ১৮ ডিসেম্বর রাতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পোশাকশ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে উত্তেজিত জনতা। পরে তাঁর মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ ঘটনায় নিহতে দিপুর ছোট ভাই অপু দাস ১৯ ডিসেম্বর বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করে ভালুকা থানায় একটি মামলা করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

প্রতিবাদ সমাবেশ

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ভালুকায় দিপু দাস হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ময়মনসিংহ নগরী ও তারাকান্দায় মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে। আজ সচেতন ময়মনসিংহবাসীর ব্যানারে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তব্য দেন দিপু দাসের ছোট ভাই অপু দাস, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতা আল নুর মো. আয়াস, হৃদয় খান, সাংবাদিক মোজাম্মেল খোকন, কাজী মোহাম্মদ মোস্তফা প্রমুখ।

একই দাবিতে দিপু দাসের নিজ উপজেলা তারাকান্দায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ফ্রন্ট ও দিপু দাসের পরিবার। আজ সকালে তারাকান্দা বাজারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের তারাকান্দা উপজেলা সভাপতি বিজন কুমার ভৌমিক রতন, সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত শর্মা সরকার কাঞ্চনসহ দিপুর পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য দেন।

মানববন্ধনে বক্তারা কারখানার মালিকসহ প্রকৃত দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন এবং দিপু দাসের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ শিক্ষার্থীদের, যানজটে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় আট দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন রহমতপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে শিক্ষার্থীরা রহমতপুর এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন। ঘণ্টা তিনেক ধরে চলা অবরোধে মহাসড়কের উভয় পাশে যানজট তৈরি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন চালক ও যাত্রীরা।

ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত সপ্তাহ থেকে ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়েছেন তাঁরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষাকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) থেকে পৃথক করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান করা, সব কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদ শুধু ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের জন্য সংরক্ষণ, ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের বেসরকারি চাকরিতে ন্যূনতম দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের চাকরিতে যোগদানের পর ছয় মাসের বনিয়াদি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘৯ মাস আগে আট দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তখন শুধু আশ্বাস দিয়েছিল, বাস্তব কোনো উদ্যোগ নেয়নি।’ আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘যত দিন পর্যন্ত আমাদের দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মেনে না নেবে, তত দিন ক্যাম্পাস লকডাউন, প্রশাসনিক ভবন বন্ধসহ এই আন্দোলন চলবে।’

এ বিষয়ে রহমতপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ কিশোর কুমার মজুমদার বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাঁদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। তবে এসব দাবি বাস্তবায়নের বিষয়টি আমাদের এখতিয়ারভুক্ত নয়। এ বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিতাসে শাশুড়িকে চুবিয়ে হত্যায় জামাতা গ্রেপ্তার

হোমনা (কুমিল্লা) সংবাদদাতা
মো. জামাল সিকদার। ছবি: সংগৃহীত
মো. জামাল সিকদার। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় শাশুড়িকে খালে চুবিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি জামাতা মো. জামাল সিকদারকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল রোববার রাতে ঢাকার সাভারে আশুলিয়া থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। আজ সোমবার সকালে তাঁকে তিতাস থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে তিতাস থানা-পুলিশ দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায়।

গত ১০ অক্টোবর উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে সুফিয়া খাতুন নামে (৭০) এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করা হয়। পারিবারিক কলহের জেরে তাঁর জামাতা জামাল তাঁকে বসতবাড়ির কাছে খালে চুবিয়ে হত্যা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। খবর পেয়ে তিতাস থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকে পালিয়ে ছিলেন জামাল।

জানা গেছে, জামাল সুফিয়া বেগমের ভাই দিলু সিকদারের ছেলে। তাঁর সঙ্গে সুফিয়ার মেয়ে রহিমা বেগমের বিয়ে হয়। শ্বশুরবাড়ির পাশেই জামালের বাড়ি।

তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালিদ সাইফুল্লাহ জানান, শাশুড়িকে চুবিয়ে হত্যার প্রধান আসামি জামাল উদ্দিন শিকদারকে যৌথ বাহিনীর সহায়তায় গ্রেপ্তার করে আজ সকালে থানায় আনা হয়। পরে দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত