Ajker Patrika

চরাঞ্চলে চিকিৎসক সংকট: রোগী দেখেন ফার্মাসিস্টনার্স-স্টাফরা, স্বাস্থ্যঝুঁকি

  • সেবাবঞ্চিত হচ্ছে চরাঞ্চলের দুই লক্ষাধিক মানুষ
  • রোগের কথা শুনে প্যারাসিটামল, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ট্যাবলেট দেওয়া হয়
  • ৪৬ জনের জনবলকাঠামো গঠন করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ
ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ 
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৫, ১১: ১০
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেড় যুগেও পূর্ণতা পায়নি বিএনপি সরকারের আমলে নির্মিত ময়মনসিংহের চরাঞ্চল ২০ শয্যার হাসপাতাল। এতে সেবাবঞ্চিত হচ্ছে চরাঞ্চলের দুই লক্ষাধিক মানুষ। হাসপাতালের কমপ্লেক্স ও স্টাফদের আবাসন ভবন থাকলেও নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও লোকবল। অধিকাংশ সময়ই চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে রোগী দেখেন ফার্মাসিস্ট, নার্স ও স্টাফরা। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে মানুষ।

ব্রহ্মপুত্রের তীরঘেঁষা চরের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ২০০৬ সালে বিএনপি-জামাতের শাসনামলে ময়মনসিংহের সদর উপজেলার পরানগঞ্জে ২০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণ করে দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। হাসপাতালটি উদ্বোধনের পরপরই ক্ষমতা হারায় বিএনপি। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রায় ১৬ বছর অতিবাহিত হলেও ২০ শয্যার এ হাসপাতালে নিয়োগ হয়নি প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও লোকবল।

অভিযোগ রয়েছে, বিএনপি সরকারের আমলে হাসপাতালে বরাদ্দকৃত শয্যা, এক্স-রে মেশিনসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম নিজ এলাকা গৌরীপুরে নিয়ে যান আওয়ামী লীগ সরকারের তৎকালীন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান। স্থানীয়রা বলছেন, বিএনপি সরকার হাসপাতাল ভবনসহ চিকিৎসক ও স্টাফদের বেশ কয়েকটি আবাসন ভবন নির্মাণ করে গেলেও বিগত ১৮ বছরে হাসপাতালটি চালু করেনি আওয়ামী লীগ সরকার।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, সেবা নিতে লাইনে ১৫০-২০০ জন দাঁড়িয়ে আছে। তিনজন চিকিৎসক থাকলেও এদিন কেউ কর্মস্থলে যাননি। একজন ফার্মাসিস্ট ও নার্স রোগীদের কাছ থেকে রোগের বর্ণনা শুনে প্যারাসিটামল আর মেট্রোনিডাজল ট্যাবলেট দিচ্ছেন। স্থানীয়রা বলছেন, প্রায়ই চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে রোগী দেখেন ফার্মাসিস্ট ও নার্স। এতে রোগীরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে।

সেবা নিতে আসা বোররচর ভাটিপাড়া গ্রামের আবু হানিফা বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্ট ও গ্যাস্ট্রিকের যন্ত্রণায় ভুগছি। এখানে আসার পর তারা আমাকে এক পাতা ট্যাবলেট দিয়েছে। তা খেলে নাকি ভালো হয়ে যাব।’

বীর বওলা গ্রামের মো. হানিফ বলেন, ‘আমার গলাব্যথা; তাই এসেছিলাম হাসপাতালে। কিন্তু এসে কোনো ডাক্তার পাইনি।

যাঁরা আছেন, তাঁরাই আমাকে দেখে গলাব্যথার জন্য নাপা ট্যাবলেট দিয়েছেন।’

গোলাম আব্বাস বাবুল নামের স্থানীয় সাবেক এক ইউপি সদস্য বলেন, ‘বিএনপির আমলে হাসপাতালটি নির্মাণ হওয়ার কারণে পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়নি। এ কারণে এই অঞ্চলের দুই লক্ষাধিক মানুষ ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সেবাবঞ্চিত হয়েছে। তারা হাসপাতালটির বেডসহ যাবতীয় সরঞ্জামাদিও অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। আমরা এখন চাই, এই অঞ্চলের মানুষের সেবা নিশ্চিতের স্বার্থে পূর্ণাঙ্গভাবে হাসপাতালটি চালু হোক।’

আলী আজগর নামের স্থানীয় আরেকজন বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রতিহিংসার জন্য হাসপাতালটি জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। তিনজন চিকিৎসক থাকলেও প্রায় সময়ই তাঁরা আসেন না। রোগীদের সেবা দেন স্টাফরা। এতে তারা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে। বিশেষ করে এই এলাকা থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার। হাসপাতালটি পুরোপুরি চালু হলে গর্ভবতী মায়েদের জন্য অনেক সুবিধা হতো। আমরা চাই, জনবল নিয়োগের মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠানটি চালু হোক।’

তিনজন চিকিৎসকের মধ্যে একজন ডেপুটেশনে, আরেকজন ছুটিতে এবং অন্যজন প্রশিক্ষণে থাকায় রোগীদের কাছ থেকে রোগের কথা শুনে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির ফার্মাসিস্ট মিন্টু দে। তিনি বলেন, ‘টিকিটের মাধ্যমে প্রতিদিন ২০০-২৫০ জন সেবা নেন। চিকিৎসকেরা না আসায় রোগের কথা শুনে প্যারাসিটামল, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ট্যাবলেট দেওয়া হচ্ছে। এতে করে রোগীরা কোনো সমস্যায় পড়বে না।’

সিনিয়র স্টাফ নার্স রেখা খাতুন বলেন, ‘জনবলসংকটের কারণে আমরা প্রায়ই নিজেরা ওষুধ দিয়ে থাকি। রোগীরা আমাদের কাছে তাদের সমস্যার কথা বললে আমাদের বুঝে ওষুধ দিতে কোনো সমস্যা হয় না।’

সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহজাহান কবির জানান, হাসপাতালটিতে ২৩ জনের জনবল চাহিদা থাকলেও ১৩ জনের পদ শূন্য রয়েছে। জনবলসংকটের কারণে হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব হয়নি। হাসপাতালটি চালু করতে ৪৬ জনের জনবলকাঠামো গঠন করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। নিয়োগকাজ সম্পন্ন হলে চরাঞ্চলের মানুষের শতভাগ সেবা নিশ্চিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লঞ্চ দুর্ঘটনা: তারেক রহমানের গণসংবর্ধনা থেকে ফিরছিলেন যাত্রীরা

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
দুর্ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে গেছে লঞ্চ। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুর্ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে গেছে লঞ্চ। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে মধ্যরাতে দুই লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজনের মৃত্যু এবং অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ঝালকাঠিতে একটি লঞ্চ জব্দ করা হয়েছে। সেই লঞ্চের চারজনকের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

এদিকে জানা গেছে, দুর্ঘটনা কবলিত লঞ্চটি ভাড়া করেছিলেন বিএনপির স্থানীয় নেতা। ঢাকায় তারেক রহমানের গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগা দিতে এসেছিলেন তাঁরা। গতকাল বৃহস্পতিবার গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে তাঁর ফিরছিলেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা ও হরিণা এলাকার মাঝামাঝি স্থানে মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশার মধ্যে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ভোলা থেকে ঢাকাগামী জাকির সম্রাট–৩ লঞ্চের সঙ্গে ঢাকা–বরিশাল রুটের অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই একজনসহ মোট চারজনের মৃত্যু হয়।

সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহাগ রানা জানান, হতাহতদের উদ্ধার করে ঢাকায় নেওয়ার পর নিহতের সংখ্যা চারজনে দাঁড়ায়। নিহতদের পরিচয় শনাক্ত ও আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

বিআইডব্লিউটিএ চাঁদপুর ট্রাফিক পরিদর্শক বাবু লাল বৈদ্য জানান, দুর্ঘটনার সময় নদীতে ঘন কুয়াশা থাকায় দৃশ্যমানতা প্রায় শূন্যে নেমে আসে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় চালকের অবহেলা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজিত গণসংবর্ধনা সভায় যোগ দিতে ঝালকাঠি–২ আসনের মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চটি ভাড়া করেছিলেন।

ইসরাত সুলতানার নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা লঞ্চটিত করে গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে ঝালকাঠি লঞ্চঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। ২৫ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে ঝালকাঠির উদ্দেশে ফেরার পথে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

নিজাম শিপিং লাইনস সূত্রে জানা গেছে, ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চটি ভাড়া করেছিলেন।

ঝালকাঠি জেলা যুবদলের আহ্বায়ক শামীম তালুকদার জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি ঝালকাঠি লঞ্চঘাটে ছুটে আসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীরা সবাই সুস্থ রয়েছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেঘনায় দুর্ঘটনা: ঝালকাঠিতে অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চ জব্দ, আটক ৪

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালে নোঙর করা অ্যাডভেঞ্চার–৯। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালে নোঙর করা অ্যাডভেঞ্চার–৯। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে মাঝরাতে দুই লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজন নিহতের ঘটনার পর ঝালকাঠিতে ‘অ্যাডভেঞ্চার–৯’ নামে একটি লঞ্চ জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ। এ ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চটি ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালে নোঙর করলে বরিশাল নৌ-পুলিশ ও ঝালকাঠি থানা-পুলিশের সদস্যরা লঞ্চটি জব্দ করেন।

বরিশাল নৌ-পুলিশের পুলিশ সুপার এস এম নাজমুল হক জানান, চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে সংঘটিত ভয়াবহ দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চটির অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে লঞ্চটি ঝালকাঠিতে পৌঁছালে সেটি জব্দ করা হয়। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চের চারজন আটক। ছবি: আজকের পত্রিকা
অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চের চারজন আটক। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ মাহমুদ জানান, লঞ্চটি ঝালকাঠিতে নোঙর করার পর সারেং, সুকানি, সুপারভাইজার ও ইঞ্জিন চালক পালিয়ে যান। পরে চারজন কেবিন বয়কে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা ও হরিণা এলাকার মাঝামাঝি স্থানে মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশার মধ্যে ভোলা থেকে ঢাকাগামী জাকির সম্রাট–৩ লঞ্চের সঙ্গে ঢাকা–বরিশাল রুটের অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই একজনসহ মোট চারজনের মৃত্যু হয়। আহত হন আরও অন্তত ১৫ জন যাত্রী।

সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহাগ রানা জানান, হতাহতদের উদ্ধার করে ঢাকায় নেওয়ার পর নিহতের সংখ্যা চারজনে দাঁড়ায়। নিহতদের পরিচয় শনাক্ত ও আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

বিআইডব্লিউটিএ চাঁদপুর ট্রাফিক পরিদর্শক বাবু লাল বৈদ্য জানান, দুর্ঘটনার সময় নদীতে ঘন কুয়াশা থাকায় দৃশ্যমানতা প্রায় শূন্যে নেমে আসে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় চালকের অবহেলা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
নিহত শিশু শামীম। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শিশু শামীম। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া শিশু শামীম (১০) মারা গেছে। উদ্ধারের তিন দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। আজ শুক্রবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত ব্যক্তির মামা সাব্বির হোসেন ও সখীপুর থানা-পুলিশ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত শামীম উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের শাহিন আলমের ছেলে ও স্থানীয় কীর্তনখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

নিহত শিশুর পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শামীম বাড়ি থেকে বের হয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। একপর্যায়ে তাঁরা বাড়ির আশপাশের বনাঞ্চলে অনুসন্ধান চালান। পরে রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি বন থেকে শামীমকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রাত ৯টার দিকে তাকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার ধানমন্ডিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।

নিহত শামীমের মামা সাব্বির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম শিয়ালের আক্রমণে এমন হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, এটি শেয়াল-কুকুরের আক্রমণের চিহ্ন নয়, শিশুটির মাথা ও শরীরের আঘাত করা হয়েছে।’

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, নিহত শামীমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুমকীতে অটো-টমটম সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ২

দুমকী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা

পটুয়াখালীর দুমকীতে অটোরিকশা ও সিমেন্টবাহী টমটমের সংঘর্ষে দুজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লেবুখালী-বাউফল মহাসড়কের রাজাখালী (স্থানীয় নাম পিছাখালী ব্রিজ) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগা থেকে আসা যাত্রীবাহী অটোরিকশা বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্টবাহী টমটমের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয় বছরের রবিউল নিহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে ৬০ বছর বয়সী ইব্রাহিম খানকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত সুমন সরদার (২৫) ও আব্দুল কাদেরকে (৫০) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহত আব্দুল কাদেরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সুমনের একটি হাত সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। নিহত ও আহত ব্যক্তিদের বাড়ি বাউফল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম উদ্দীন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশা ও টমটমটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত