Ajker Patrika

ভারত থেকে পুশ ইনের ২৬ হটস্পট ১৭ জেলায়

  • চলতি মাসের ২২ দিনে ১১০৬ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ
  • সবচেয়ে বেশি মানুষ এসেছেন মৌলভীবাজারের তিন সীমান্ত দিয়ে
  • দূরের রাজ্য থেকে আটক, রাতের অন্ধকারে বাংলাদেশে পুশ ইন
আমানুর রহমান রনি, ঢাকা 
আপডেট : ৩১ মে ২০২৫, ০৯: ১২
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন করা ব্যক্তিদের আটক করছে বিজিবি। ছবি: আজকের পত্রিকা
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন করা ব্যক্তিদের আটক করছে বিজিবি। ছবি: আজকের পত্রিকা

সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিনই বাংলাদেশে মানুষ ঠেলে পাঠাচ্ছে (পুশ ইন) ভারত। শুধু চলতি মে মাসের ২২ দিনেই ১ হাজার ১০৬ জনকে পুশ ইন করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এ কাজে সীমান্তবর্তী ১৭ জেলার ২৬টি স্থানকে বেঁচে নিয়েছে তারা। সবচেয়ে বেশি পুশ ইনের ঘটনা ঘটেছে মৌলভীবাজার জেলার তিন সীমান্ত দিয়ে।

সীমান্তে বিএসএফের পুশ ইন প্রতিরোধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও তা যথেষ্ট ফল দিচ্ছে না। কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশ সীমান্তের কিছু এলাকায় ঘনজঙ্গল ও দুর্গম পাহাড় থাকায় বিজিবির টহল কার্যক্রমে সীমাবদ্ধতার সুযোগ নিচ্ছে বিএসএফ। এই ২৬টি সীমান্ত এলাকাকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিজিবি। ওই সব এলাকায় টহল জোরদার, সীমান্ত পাহারায় স্থানীয়দের যুক্ত করাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে পাহারা দিয়ে পুশ ইন ঠেকানো যাচ্ছে না।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বিএসএফ সুযোগ বুঝে একেক দিন একেক সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন করছে। বিজিবি সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ৭ থেকে ২৯ মে পর্যন্ত এই ২২ দিনে ২৬টি দুর্গম সীমান্ত দিয়ে ১ হাজার ১০৬ জনকে পুশ ইন করেছে বিএসএফ। এর মধ্যে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং ইউনিয়নের আচালং সীমান্ত দিয়ে ১১৮, কুড়িগ্রামের রৌমারী, ভূরুঙ্গামারীর ভাওয়ালকুড়ি ও ফুলবাড়ী উপজেলার বালাতাড়ী সীমান্ত দিয়ে ৯৩ জনকে পুশ ইন করা হয়েছে। এ ছাড়া সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার নয়াগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ১১৫, মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর ও পাল্লাথল সীমান্ত দিয়ে ৩৪০, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার কেলেঙ্গা সীমান্ত দিয়ে ১৯, সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ছনবাড়ী সীমান্ত দিয়ে ১৬, কুমিল্লা সদর উপজেলার গোলাবাড়ীর কমুয়া সীমান্ত দিয়ে ১৩, ফেনীর ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজী সীমান্ত দিয়ে ৩৯, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার রহমতপুর গাটিয়ার ভিটা ও শ্রীরামপুর সীমান্ত দিয়ে ৭৮, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার বৈরুচুনা সীমান্ত দিয়ে ১৯, পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাঁড়িভাসা ইউনিয়নের বড়বাড়ী সীমান্ত দিয়ে ৩২, দিনাজপুরের বিরল উপজেলার এনায়েতপুর ও রামচন্দ্রপুর সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। একই সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৭, চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের হরিহরনগর ও দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা নিমতলী সীমান্ত দিয়ে ১৯, মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর-মাজপাড়া সীমান্ত দিয়ে ৩০, ঝিনাইদহের মহেশপুরের অধীন কুসুমপুর ও বেনীপুর সীমান্ত দিয়ে ৪২ এবং সাতক্ষীরার কুশখালী সীমান্ত দিয়ে ২৩ জনকে পুশ ইন করা হয়। এ ছাড়া সুন্দরবনের গহিন অরণ্যের মান্দারবাড়িয়া এলাকায় ৭৮ জনকে পুশ ইন করা হয়েছে।

সবচেয়ে বেশি পুশ ইন মৌলভীবাজারের ২ সীমান্ত দিয়ে

২৯ মে বিকেল পর্যন্ত বিজিবির দেওয়া তথ্য বলছে, সবচেয়ে বেশি পুশ ইন করা হয়েছে মৌলভীবাজার জেলার দুটি সীমান্ত দিয়ে। সেগুলো হলো জেলার বড়লেখার শাহবাজপুর ও পাল্লাথল সীমান্ত। এই দুই সীমান্ত দিয়ে মোট ৩৪০ জনকে পুশ ইন করেছে বিএসএফ, যা মোট পুশ ইনের তিন ভাগের এক ভাগ।

এই এলাকা থেকে এত বেশিসংখ্যক মানুষকে পুশ ইনের কারণ জানতে চাইলে সিলেট বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, মৌলভীবাজার সীমান্ত এলাকায় পাহাড় ও ঘনজঙ্গল। সেখানে বিজিবির সদস্যদের পাহাড় ডিঙিয়ে টহলে যেতে হয়। বিওপি থেকে কোনো কোনো এলাকায় যেতে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা সময় লাগে। জনমানবহীন ওই সব এলাকার ঘনজঙ্গলেও সবসময় বিজিবির টহল ও পাহারা থাকে। কিন্তু বিএসএফ সুযোগ বুঝে রাতের অন্ধকারে সীমান্তের কোনো এক জায়গা দিয়ে পুশ ইন করে চলে যায়। তাঁরা মূলত তাঁদের এলাকা দিয়ে ভুক্তভোগীদের জিরো পয়েন্টের দিকে ঠেলে দেয়।

দূরের রাজ্য থেকে আটক, রাতের অন্ধকারে পুশ ইন

ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আটক করে বাংলাদেশ সীমান্তে পুশ ইন করা হয়েছে এমন কয়েকজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত এপ্রিল থেকে দিল্লি, আসাম ও হরিয়ানার মতো দূরের রাজ্যগুলো থেকে তাঁদের আটক করে স্থানীয় পুলিশ। প্রথমে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ ও মেডিকেল পরীক্ষার পর কয়েকদিন আটকে রাখা হয়। যখন সংখ্যা শতাধিক ছাড়ায়, তখন ট্রেন ও গাড়িতে করে পুলিশ পাহারায় সীমান্ত এলাকায় এনে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। পরে গভীর রাতে বিএসএফ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইন করে।

হরিয়ানা থেকে আটক করে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়েছে এমন একজন হলেন আমির হোসেন। স্ত্রী ও চার সন্তানসহ তাঁর পুরো পরিবারকে কঠোর পাহারায় এনে সীমান্তে রাতে ছেড়ে দেয় বিএসএফ। তাঁদের বলা হয়, ‘সামনে হাঁটো, না হলে গুলি করব।’ পরে বিজিবি তাঁদের উদ্ধার করে।

এদিকে ২৭ মে বিকেলে বেনাপোল স্থালবন্দর দিয়ে ৩৫ নাগরিককে ভারত বাংলাদেশের কাছে ফেরত পাঠায়। তাঁদের ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময় ভারতে পাচার করা হয়েছিল। তাঁরা ভারতের পশ্চিম বাংলার বিভিন্ন সেফহোমে ছিলেন। পাচারের শিকার ৩৫ জনের বয়স ১৬-১৮ বছরের মধ্যে।

আরও যত পুশ ইন

এদিকে সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন অব্যাহত রেখেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গত বৃহস্পতিবার রাতে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের রেমা সীমান্ত দিয়ে ২২ জনকে পুশ ইন করেছে ভারত। বিজিবি সূত্র জানিয়েছে, সবাই বাংলাদেশি নাগরিক এবং তাঁরা কুড়িগ্রামের বাসিন্দা।

এ ছাড়া ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার মথুয়া সীমান্ত দিয়ে ১৩ জন পুশ ইন করেছে বিএসএফ। আর মৌলভীবাজারের জুড়ী সীমান্ত দিয়ে ১০ ও কমলগঞ্জ উপজেলার দুটি সীমান্ত দিয়ে ১৯ জনকে পুশ ইন করা হয়েছে। এর বাইরে খাগড়াছড়ি সীমান্ত দিয়ে আবারও ১৪ জনকে পুশ ইন করেছে বিএসএফ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল তিনজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিশুসহ আরও চারজন আহত হয়। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।  

হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এই ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চবি প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।

দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত