Ajker Patrika

২ কোটি টাকার সেতু এখন কাপড় শুকানোর জায়গা

ফয়সাল পারভেজ (মাগুরা) 
মাগুরা পৌরসভার নবগঙ্গা নদীর ওপরে নির্মিত সেতু। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাগুরা পৌরসভার নবগঙ্গা নদীর ওপরে নির্মিত সেতু। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাগুরা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামপুর পাড়ায় নবগঙ্গা নদীর ওপরে নির্মিত ২ কোটি টাকার আরসিসি গার্ডার সেতুটি কাজে আসছে না। সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকায় চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সেতু নির্মাণের স্থান নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতু নির্মাণের স্থান নির্বাচন সঠিক স্থানেও হয়নি। কবে সেতুর এই সমস্যা সমাধান হবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা।

মাগুরা পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট মাগুরা শহরের ইসলামপুর পাড়ার পূর্বাশা ঘাট এলাকায় নবগঙ্গা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। শহরের সঙ্গে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পারনান্দুয়ালী চরপাড়া গ্রামের সংযোগ স্থাপনের জন্য সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এতে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ২৬ লাখ টাকা এবং সংযোগ সড়ক নির্মাণে ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। সেতুর দৈর্ঘ্য ৪০ মিটার এবং প্রস্থ ৬ দশমিক ৭ মিটার। এর মধ্যে ফুটপাতও রয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ একাধিকবার বাড়ানো হলেও ২০২৩ সালের নভেম্বরেই সেতুটির উদ্বোধন হয়, কিন্তু সংযোগ সড়ক এখনো তৈরি হয়নি।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর সেতুটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাউফুজ্জামান শিখর এবং মাগুরা পৌরসভার মেয়র খুরশীদ হায়দার টুটুল। উদ্বোধনকালে তাঁরা জানান, শিগগিরই সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে। তবে সরকার পরিবর্তনের পর পৌরসভায় নতুন নেতৃত্ব আসায় প্রকল্পের কাজ ধীর গতিতে এগোচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের অভিযোগ করে জানান, সেতু নির্মাণকাজ পায় মেসার্স সৌরভ নিশিত জেবি নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতু নির্মাণের পর প্রতিষ্ঠানটি পুরো বিলের টাকা তুলে নিয়েছে। তবে ১০ শতাংশ টাকা জামানত হিসেবে মাগুরা পৌরসভার কাছে রাখা হয়েছে। এই টাকা কিছুদিনের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি তুলে নিতে পারবে। তবে সংযোগ সড়ক কীভাবে নির্মিত হবে সে বিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য উত্তর এখনো পাওয়া যায়নি।

তাঁরা আরও জানান, সেতু উদ্বোধনের পর থেকে স্থানীয়রা বাধ্য হয়ে সেতু পার হতে সমস্যা অনুভব করছেন। সেতুর দুপাশে সংযোগ সড়ক না থাকায়, তারা চলাচলের জন্য ঝুঁকি নিচ্ছেন। সেতুর দুপাশে কিছু স্থানীয়রা মাটি ও বালু ভরাট করলেও, তা দ্রুতই নদীতে ধসে গেছে। সেতু পার হওয়ার জন্য বয়স্কদের জন্য এটি বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া, সেতুর দুপাশে ব্যক্তিগত সম্পত্তির বাড়িঘর রয়েছে, যার কারণে সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয়রা আদালতে মামলা করেছেন।

সরেজমিন আজ মঙ্গলবার দেখা গেছে, স্থানীয়রা সেতু পার হচ্ছে দুপাশে সংযোগ সড়ক ছাড়াই। সেতুর দুপাশে স্থানীয়দের উদ্যোগে সামান্য বালু ও মাটি ভরাট থাকলেও তা এখন ধসে গেছে নবগঙ্গা নদীতে। উঁচু জায়গা পারি দিয়ে সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে বয়স্কদের। সেতুর দুপাশে সংযোগ সড়কের জায়গাতে রয়েছে ব্যক্তিগত জমিতে করা বাড়ি-ঘর। সেতুর সংযোগ সড়কের জন্য ব্যক্তিগত জমি ব্যবহার না করা নিয়ে একটি মামলাও করেছে স্থানীয়রা।

স্থানীয় আমির হোসেন বলেন, ‘এই সেতুটি কোনো দরকার ছিল না। কারণ এর ২০ মিটার দূরেই একটি বড় সেতু ছিল। খুব অল্প কিছু মানুষের বসবাস এই সেতুকে ঘিরে। এখানে অল্প টাকায় একটি হালকা সেতু বানালে হয়তো এই সংযোগ সড়ক করতে সমস্যা হতো না। একদিকে সেতু নির্মাণে উচ্চ ব্যয় অন্যদিকে সড়ক না থাকায় ভোগান্তি আরও বেড়েছে আমাদের। এখন মানুষ এর ওপরে কাপড় শুকায়। এ ছাড়া তো কোন কাজে আসছে বলে মনে হচ্ছে না।’

মাগুরা পৌরসভার নবগঙ্গা নদীর ওপরে নির্মিত সেতু। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাগুরা পৌরসভার নবগঙ্গা নদীর ওপরে নির্মিত সেতু। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেতুর পাশেই বাড়ি নওশের আলী। তিনি বলেন, ‘সেতুটি পার হতে গেলে খুব সতর্কতা নিয়ে পার হতে হবে। কারণ সড়ক নেই সেতুর দুপাশে। অনেকে সেতু পার হতে গিয়ে কোমরে ব্যথা পেয়েছেন। কেউ ছোট দুর্ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। বেশি সমস্যা হয়েছে এ এলাকার শিক্ষার্থীদের চলাচলে। আগে বাঁশের সাঁকো ছিল সেটাই ভালো ছিল। এত বড় সেতু নির্মাণ অর্থের অপচয় ছাড়া কিছু নয়।’

জানতে চাইলে মাগুরা পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান বারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ নিয়ে স্থানীয়দের ওপরে ছেড়ে দিয়েছি। সেতুর সংযোগ সড়ক যে জায়গাগুলোতে হওয়ার কথা এর প্রায় অংশ সরকারি জায়গায়। কিছু ব্যক্তিগতও রয়েছে। বাড়ি-ঘরের মালিকেদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে এটা মীমাংসা করবে বলেছে। তাহলে সংযোগ সড়ক হয়ে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

জাবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০৯
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

‘আগামীকাল বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন হবে’ এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) শরীফ ওসমান হাদীর মৃত্যুতে শোক ও প্রতিবাদ মিছিল করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদ মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন জাকসু, শাখা ছাত্রশিবির, শাখা ছাত্রশক্তি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) নেতা-কর্মীরা। সমাবেশে ‘আগামীকালকে (শুক্রবার) বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে’ বলে মন্তব্য করেন মোস্তাফিজুর রহমান।

সমাবেশে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক লড়াই করে বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব নয়। আমাদের লড়াই শুরু হবে শহীদ ওসমান হাদির ইনকিলাব মঞ্চের সাংস্কৃতিক লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে। আগামীকালকে বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর ধরে আমরা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। এই খুনি হাসিনার দল হাজার হাজার নিষ্পাপ বাংলাদেশের দামাল ছেলেদেরকে হত্যা করেও ওর রক্ত পিপাসা মেটেনি। বিদেশে বসে এখনো বিপ্লবীদের হত্যা করার ছক করছে। আমরা আজ এই বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে স্পষ্ট করে বলতে চাই শহীদ ওসমান হাদির রক্তের ওপর দিয়ে, শহীদের রক্তের ওপর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক থাকবে না। যে সমস্ত ভারতীয়রা বাংলাদেশে বৈধভাবে অবৈধভাবে বাংলাদেশে চাকরি করছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের ভারতে পুশব্যাক করতে হবে। ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে, যতক্ষণ পর্যন্ত না ওরা ওসমান হাদির খুনিকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করবে ততক্ষণ পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না।’

মোস্তাফিজুর রহমানের দেওয়া বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় সমালোচনা।

এরপর আজ শুক্রবার দুপুরেও মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে একই ধরনের বক্তব্য লিখে পোস্ট করেন। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, শুধু রাজনৈতিক লড়াইয়ে প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জিত হয় না। শহীদ ওসমান হাদি ভাই ইনকিলাব মঞ্চের মাধ্যমে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী প্রক্সি উদীচী, ছায়ানটের কালচারাল হেজেমনির বিরুদ্ধে যে লড়াই শুরু করেছিল সেই লড়াই জারি রাখতে হবে। তাদের সকল আধিপত্যবাদী বয়ানকে তছনছ করে দিতে হবে। ইট, পাথরের দেয়াল ভেঙে আধিপত্যবাদকে মোকাবিলা করা যায় না, সেটা হাদি আমাদের শিখিয়েছে।’

অন্য আরেকটি ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘গতকাল শহীদ শরিফ ওসমান হাদি ভাইয়ের মৃত্যু পরবর্তী প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশে প্রদত্ত আমার বক্তব্যের কিছু শব্দ নিয়ে এই স্পষ্টিকরণ প্রদান করছি। বক্তব্যে ব্যবহৃত “তছনছ” শব্দটির মাধ্যমে ভাঙচুরকে বোঝানো হয়নি। বরং এর অর্থ ছিল শহীদ হাদির যে স্বপ্ন নিয়মতান্ত্রিক ও প্রাতিষ্ঠানিক উপায়ে বিকল্প কাঠামো গড়ে তুলে, সর্বদা সচেতন থেকে ফ্যাসিবাদী বয়ানকে মোকাবিলা করা।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘এ প্রসঙ্গে আরও যুক্ত করা প্রয়োজন যে, উদীচীসহ উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানসমূহ বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের তল্পিবাহক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ভূমিকা রেখে আসছে। তারা বাংলাদেশের শত্রু, জনগণের শত্রু। তবে ফ্যাসিবাদের আদর্শিক ভিত্তিকে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক ও নিয়মতান্ত্রিকভাবেই মোকাবিলা করব, ইনশা আল্লাহ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসে আগুন, পুড়েছে নথিপত্র

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২২
জানালা দিয়ে অফিসের ভেতর আগুন লাগানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
জানালা দিয়ে অফিসের ভেতর আগুন লাগানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসের স্টোররুমে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে নিচতলার স্টোররুমে সংরক্ষিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি পুড়ে গেছে।

আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, সকালে ধোঁয়া দেখে আগুন লাগার বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দাদের নজরে আসে। পরে নির্বাচন অফিসের প্রহরী ও স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নেভান।

সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান ও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু দাউদ জানান, আগুনে কিছু নথি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। স্টোররুমের পেছনের জানালার পাশ থেকে আগুন লাগানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

খবর পেয়ে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক ইকবাল হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকনুজ জামানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দৌলতপুরে গ্রাম আদালতে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২১
হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের হিসাবরক্ষক আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত
হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের হিসাবরক্ষক আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে গ্রাম আদালতে সরকারি নামমাত্র ফি থাকলেও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের দাবি, উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে বিচার চাইতে বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে তাঁদের। ইতিমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদটির হিসাবরক্ষক কাম কম্পিউটার অপারেটর আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নান্টু আলী নামের এক ব্যক্তি। অভিযোগের সপক্ষে ভিডিও প্রমাণও দাখিল করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী, গ্রাম আদালতে দেওয়ানি মামলার ফি ২০ টাকা এবং ফৌজদারি মামলার ফি ১০ টাকা। অথচ ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের দাবি, এখানে মামলা দায়ের থেকে শুরু করে হাজিরা পর্যন্ত ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে।

ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জানান, স্বল্প সময়ে ও কম খরচে বিচার পাওয়ার আশায় তাঁরা গ্রাম আদালতে আসেন। কিন্তু এখানে এসেও তাঁদের অনেক টাকা খরচ হচ্ছে।

আল্লাহর দরগা বাজার এলাকার এক ঝালমুড়ি ও ফুচকা বিক্রেতা জানান, পারিবারিক কলহ-সংক্রান্ত মামলায় তাঁর কাছ থেকে ধাপে ধাপে ১ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। মুন্না নামের অন্য এক ভুক্তভোগী জানান, একটি সাধারণ অভিযোগ দায়ের করতে তাঁকে ৪০০ টাকা দিতে হয়েছে।

অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে হিসাবরক্ষক আবু সুফিয়ান জানান, যোগদানের পর থেকেই তিনি এমনভাবে টাকা নিয়ে আসছেন।

এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও চেয়ারম্যান উভয়ে অতিরিক্ত ফি আদায়ের ব্যাপারে অবগত নন বলে দাবি করেছেন।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনিন্দ্য গুহ বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে এবং সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০৭
ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির জানাজা আজ শনিবার বেলা ২টায় অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত এই জানাজাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জানাজার সময় আধা ঘণ্টা এগিয়ে আনা হয়েছে। এর আগে বেলা আড়াইটায় জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা আজ বেলা ২টায় নির্ধারিত হয়েছে।

জানাজা উপলক্ষে সংসদ ভবন ও আশপাশ এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে জানাজায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ১ হাজার বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহার করবেন। পুরো এলাকা সিসিটিভি ও গোয়েন্দা নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।

জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ কিছু নির্দেশনা জারি করা হয়েছে:

ব্যাগ বহন নিষেধ: জানাজায় আসা মুসল্লিদের কোনো প্রকার ব্যাগ বা ভারী বস্তু বহন না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ড্রোন ওড়ানো নিষিদ্ধ: নিরাপত্তাঝুঁকি এড়াতে সংসদ ভবন ও এর সংলগ্ন এলাকায় যেকোনো ধরনের ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ওসমান হাদির জানাজায় বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম হতে পারে বিবেচনা করে ট্রাফিক বিভাগ থেকেও যাতায়াতের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত