Ajker Patrika

ঘাটে আবার কিসের স্বাস্থ্যবিধি?

প্রতিনিধি, শিবচর (মাদারীপুর)
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২১, ১২: ৫৪
ঘাটে আবার কিসের স্বাস্থ্যবিধি?

আগামীকাল রোববার থেকে রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানা খোলার খবর শুনেই ঢাকা ফিরতে শুরু করেছেন দক্ষিণাঞ্চলের লোকজন। আজ শনিবার ভোর থেকে এ নৌরুটের ফেরিতে হাজার হাজার যাত্রী পদ্মা পার হচ্ছেন। হঠাৎ করেই শিবচরের বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় জনসমাগমে ভরে উঠেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ভিড় আরও বাড়তে শুরু করেছে। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ থাকায় ফেরিতে যানবাহন উঠতে পারছে না। ঢাকায় ফেরার এই প্রতিযোগিতায় কেউ মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি।

স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি জানতে চাইলে ঢাকাগামী কয়েকজন যাত্রী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘাটে আবার কিসের স্বাস্থ্যবিধি? ঘাট কর্তৃপক্ষ কখনোই যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি ভাবেননি। ফেরিতে ওঠার কোনো শৃঙ্খলা ঘাটে কখনোই ছিল না। ফেরিঘাটের ২০০ মিটার দূর থেকেই যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়ার উৎসব চলছে। কর্তৃপক্ষই যেখানে শৃঙ্খলা বজায় রেখে পার করছে না, সেখানে সাধারণ যাত্রীরা কীভাবে শৃঙ্খলা বজায় রাখবে? যদি ভিড় কমলে ফেরিতে উঠতে চান, তাহলে সারা দিনেও পার হওয়া যাবে না।
 
যাত্রীরা আরও বলেন, জমানো টাকা শেষ। খেয়ে-না খেয়ে টিকে আছি। এখন কলকারখানা খুলবে। কাজে যোগ দিতে হবে। এই পরিস্থিতিতে করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাইরেও যেমন চলা যায় না, তেমনি সংক্রমণের ভয়ে ঘরে বসে থাকাও সম্ভব না। তাহলে পেটের চাহিদা কে মেটাবে? 

শিল্প-কারখানা খোলার খবরে বাংলাবাজার ঘাটে মানুষের উপচে পড়া ভিড়বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, আজ ভোর থেকেই নৌরুটে ঢাকাগামী যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে। ফেরিতে ওঠার সড়ক আটকে যাত্রীরা ভিড় করে আছেন। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে থ্রি-হুইলারে চেপে যাত্রীরা ঘাটে আসছেন। শুধু তা-ই নয়, পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কারসহ অসংখ্য যানবাহন ফেরিতে ওঠার অপেক্ষায় ঘাটে রয়েছে। যাত্রীদের চাপে যানবাহন পারাপার ব্যাহত হচ্ছে।

শরীয়তপুরের জাজিরা থেকে আসা যাত্রী মো. মিলন বলেন, ‘লকডাউনের প্রথমেই বাড়িতে চইলা আসছিলাম। ঢাকায় হকারি করি। কল-কারখানা বন্ধ থাকায় আমার ব্যবসাও বন্ধ আছিল। কাল কলকারখানা খুলবে। তাই ঢাকা যাইতাছি।’

মো. মিলন আরও বলেন, 'প্যাডে (পেটে) ভাত না থাকলে স্বাস্থ্যবিধি দিয়া কী করমু? আর ঘাটে হাজার হাজার মানুষ যাইতাছে। স্বাস্থ্যবিধি কেমনে মানব?’
 
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থেকে আসা পোশাককর্মী রহিমা বেগম বলেন, ‘গার্মেন্টস খোলার খবরে যাইতাছি। মনে শান্তি পাইছি খবর পাইয়া। কামকাইজ করতে না পারলে না খাইয়া মরতে হইবে।’ 
 
শিল্প-কারখানা খোলার খবরে বাংলাবাজার ঘাটে মানুষের উপচে পড়া ভিড়ঘাটসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ঘাটে যাত্রীদের যাওয়া-আসা থেমে নেই। লকডাউনের আগেও ভিড় ছিল। এখন আবার হাজার হাজার মানুষের ভিড়। এই ঘাট করোনা সংক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। 

বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাট সূত্র জানায়, আজ সকাল থেকে নৌরুটে ৪টি রো রো,৪টি কে-টাইপসহ মোট ১০টি ফেরি চলাচল করছে। গত দুই দিন বৈরী আবহাওয়া থাকায় নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়েছিল। ফলে নৌরুটে পদ্মা পারাপারের জন্য অপেক্ষারত পণ্যবাহী পরিবহনের সংখ্যা বেড়েছে। এ ছাড়া সকাল থেকে ফেরিতে যাত্রীদের চাপ রয়েছে। ঘাটে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটসহ ছোট-বড় অসংখ্য গাড়ি ফেরিতে পারাপার হচ্ছে। অপরদিকে, পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় স্রোতের গতিও বৃদ্ধি পেয়ে ফেরি পারাপারে দীর্ঘ সময় লাগছে।
 
ঘাট সূত্র আরও জানায়, বাস বন্ধ থাকায় বাংলাবাজার ঘাটে আসতে যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল, গোপালগঞ্জ, পটুয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, পিরোজপুর, মাদারীপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ভেঙে ভেঙে মাহেন্দ্র, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাসে করে যাত্রীরা ঘাটে আসছেন। এসব যানবাহনে স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসি বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, নৌরুটে সকাল থেকে ১০টি ফেরি চলছে। পণ্যবাহী ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। যাত্রীর চাপ থাকায় ফেরিতে তাঁদেরও বহন করা হচ্ছে। যাত্রীদের চাপে যানবাহন পারাপার ব্যাহত হচ্ছে।

বাংলাবাজার ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) মো. জামালউদ্দিন বলেন, ঘাটে আজ সকাল থেকেই যাত্রীদের ভিড় রয়েছে। শিল্প-কারখানা খোলার খবরে সব একসঙ্গে যেতে চাচ্ছে। ঘাটে যানবাহনেরও চাপ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টা পর ঝালকাঠির অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় অবরোধ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বহনকারী যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদ ঝালকাঠি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম সাগরসহ অন্য নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হামলাকারীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেলা আড়াইটায় অবরোধ শুরু হওয়ায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হলে তাঁরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মত হন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। আজ শুক্রবার রাতে দুজনের বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বোচাগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় জনতা ও বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সোয়া ৮টার দিকে সাবেক মেয়র আসলামের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছাই। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ছাড়া খালিদ মাহমুদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন দিপু চন্দ্র দাস। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‍্যাক)।

অন্যদিকে, দুই গণমাধ্যমে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর। এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে র‍্যাক। অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে র‍্যাক।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক বলেন, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা কিংবা হেনস্তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ব্যক্তি প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পত্রিকা দুটির অনেক সাংবাদিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

পত্রিকা দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর কর্মীদের সবাইকে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার ছাপা পত্রিকা বের করা সম্ভব হয়নি।

র‍্যাক নেতারা বলেন, মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিপক্ষ বানাতে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সময় এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ডিআরইউ মনে করে, ওসমান হাদি একজন দেশপ্রেমিক জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদিসহ ছাত্র-জনতার ত্যাগের কারণে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

হাদির মৃত্যুকে পুঁজি করে যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে, তারা হাদির অনুসারী নয়, এটা স্পষ্ট। কতিপয় মহল হাদির মৃত্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের কদর্য চেহারা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত