Ajker Patrika

কিশোরগঞ্জে বিএনপির পদযাত্রায় পুলিশের বাধা, কাঁদানে গ্যাস, আহত শতাধিক

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২৩, ১৭: ৫৬
কিশোরগঞ্জে বিএনপির পদযাত্রায় পুলিশের বাধা, কাঁদানে গ্যাস, আহত শতাধিক

কিশোরগঞ্জে বিএনপির পদযাত্রায় পুলিশ বাধা দিলে দলটির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শহরের রথখোলা এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিপেটায় বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তা ছাড়া বিএনপির কর্মীদের ছোড়া ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন পুলিশের অন্তত ১০ সদস্য।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে পদযাত্রায় অংশ নিতে সকাল থেকে নেতা-কর্মীরা মিছিলসহ শহরের গুরুদয়াল সরকারি কলেজ মাঠে জড়ো হয়। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমের নেতৃত্বে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে পুরোনো স্টেডিয়ামের দিকে যাচ্ছিল।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তিদুপুর সোয়া ১২টার দিকে বিশাল মিছিল নিয়ে গুরুদয়াল কলেজ মাঠ থেকে শহরের রথখোলা এলাকায় গিয়ে পুরোনো স্টেডিয়ামের উদ্দেশে পদযাত্রা শুরু করে। রথখোলা মাঠের এখানে গেলে পুলিশ মিছিলে বাধা দেয়। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশের বাধা ঠেলে সামনে এগোতে চাইলে দুই পক্ষে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশের ওপর দলের কর্মীরা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। পরে পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিপেটা করে। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে ৭৭ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়।

এ সময় শহরের রথখোলা থেকে আখড়াবাজার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় দলের ক্ষুব্ধ কর্মীরা কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদের গাড়ি ভাঙচুর করেন। তা ছাড়া দুই পক্ষের সংঘর্ষে মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার আশরাফুল ইসলাম আহত হন।

তবে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের পদযাত্রা কর্মসূচিতে বিনা উসকানিতে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। তাতে আমাদের শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’

একপর্যায়ে দুই পক্ষে সংঘর্ষ শুরু হয়বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুলিশের হামলায় বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন জেলা বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক ফয়জুল করিম মুবিন, জেলা যুবদলের সভাপতি খসরুজ্জামান শরীফ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ সুমন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আলী মোস্তফা তাজবির, সাংগঠনিক সম্পাদক তারিকুজ্জামান পাৰ্ণেল, পল্লি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক শাহরিয়ার মুসা তানহা, সদর উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব সৈয়দ শাহ আলম, নিকলী উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাফিউল ইসলাম নওশাদ প্রমুখ। তাঁরা শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, বিএনপির কর্মসূচি ছিল গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে রথখোলা ময়দান পর্যন্ত। কিন্তু তারা পুরো জেলা শহরে মিছিল করতে চায়। পুলিশ বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দেয়নি। বিএনপির লোকজন পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বেশ কয়েকটি রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপসহ লাঠিপেটা করে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় পল্টন থানায় মামলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা হয়েছে।

আজ সোমবার সকাল সোয়া ৭টায় আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পল্টন থানার ডিউটি অফিসার উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) রকিবুল হাসান।

তিনি জানান, ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় তার এক আত্মীয় বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলা করেছেন। মামলাটি তদন্ত করছেন পল্টন থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ইয়াসিন মিয়া।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর সন্ধ্যার দিকে হাদিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।

হামলার এ ঘটনার পর থেকে র‍্যাব ও ঢাকা মহানগর পুলিশ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করলেও তাঁরা কেউ সরাসরি হামলাকারী নন।

গতকাল রোববার রাত পর্যন্ত গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক, মানব পাচারে জড়িত চক্রের দুই সহযোগী, সন্দেহভাজন শুটার ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবী। তদন্তসংশ্লিষ্ট একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানা গেছে।

হাদির হত্যাচেষ্টাকে কেন্দ্র করে অভিযানে সর্বশেষ গতকাল রাতে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সামিয়া, শ্যালক শিপু ও বান্ধবী মারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক বার্তায় জানিয়েছে র‍্যাব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পিরোজপুরে বাসের ধাক্কায় নসিমন চালক নিহত

পিরোজপুর প্রতিনিধি
নাজিরপুর থানা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নাজিরপুর থানা। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎পিরোজপুরের নাজিরপুরে ঢাকাগামী একটি বাসের ধাক্কায় রতন মজুমদার নামে এক নসিমন চলক নিহত হয়েছেন। রোববার রাতে পিরোজপুর-নাজিরপুর-ঢাকা মহাসড়কের শাখারীকাঠী ইউনিয়নের ডাকাতিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।‎

‎নিহত রতন মজুমদার (৫০)পিরোজপুর সদর উপজেলার সিকদার মল্লিক ইউনিয়নের জুজখোলা গ্রামের মৃত রবিন্দ্র মজুমদারের ছেলে।

‎স্থানীয়রা জানান, নিহত রতন ও তার সঙ্গে থাকা একজন নসিমনে করে মাটিভাংগা থেকে নাজিরপুরের দিকে আসছিলেন। এ সময় ঢাকাগামী একটি বাসের ধাক্কায় রতনের মাথায় আঘাত লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই রতন মারা যান।

‎পুলিশ জানায়, রতন ধান বিক্রি করে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় ডাকাতিয়া নামক স্থানে বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে তার মৃত্যু হয়। ‎

‎নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারুন-অর-রশীদ হাওলাদার বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হবে। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদিকে গুলি: আসামি গ্রেপ্তারের আশা ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৩৩
ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত
ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের আশা একরকম ছেড়েই দিচ্ছে পুলিশ। কারণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জোর অনুমান, হামলাকারীরা ইতিমধ্যে সীমান্ত পার হয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। গত শুক্রবারের হামলার ঘটনার পর থেকে র‍্যাব ও ঢাকা মহানগর পুলিশ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করলেও তাঁরা কেউ সরাসরি হামলাকারী নন।

গতকাল রোববার রাত পর্যন্ত গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক, মানব পাচারে জড়িত চক্রের দুই সহযোগী, সন্দেহভাজন শুটার ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবী। তদন্তসংশ্লিষ্ট একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানা গেছে।

হাদির হত্যাচেষ্টাকে কেন্দ্র করে অভিযানে সর্বশেষ গতকাল রাতে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সামিয়া, শ্যালক শিপু ও বান্ধবী মারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক বার্তায় জানিয়েছে র‍্যাব।

র‍্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক ইন্তেখাব চৌধুরী জানান, সামিয়া ও শিপুকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এবং মারিয়াকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, শুক্রবার হাদিকে গুলির ঘটনার আগে ও পরে ফয়সালের সঙ্গে তাঁদের ঘন ঘন ফোনে যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে।

পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, ফয়সাল করিম মাসুদ যে হাদির ওপর হামলা চালানো ‘শুটার’ আর আলমগীর শেখ মোটরসাইকেলচালক, তা শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁরা ‘ডিজিটাল ডিভাইস’ ব্যবহার করে অবস্থান লুকিয়ে রেখেছিলেন। হামলার পর এই দুজন ঢাকা থেকে বেরিয়ে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত পার হয়ে ভারতের মেঘালয় অঞ্চলে চলে যান। তদন্তকারীরা বলছেন, মূল সন্দেহভাজনেরা সীমান্ত পার হওয়ার আগে ধাপে ধাপে ঢাকা থেকে হালুয়াঘাট পর্যন্ত গেছেন।

গত শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় থাকা হাদিকে গুলি করা হয়। হামলাকারীরা মোটরসাইকেলে হাদিকে অনুসরণ করে খুব কাছ থেকে গুলি চালায়।

গতকাল বিকেলে এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এন এস নজরুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি অবশ্য জানান, সন্দেহভাজনদের কেউ বিদেশে পালিয়ে গেছেন কি না—এমন কোনো তথ্য ইমিগ্রেশন ডেটাবেইসে পাওয়া যায়নি। ফয়সালের সর্বশেষ দেশের বাইরে যাওয়ার তথ্য অনুযায়ী, তিনি জুলাই মাসে থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফেরেন। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত তাঁর বৈধভাবে দেশত্যাগের কোনো রেকর্ড নেই।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, সন্দেহভাজনদের বিষয়ে অভিযান চালিয়ে দেশের সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুরের নালিতাবাড়ী থেকে মানব পাচার চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিককে র‍্যাব গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। সীমান্ত থেকে আটক করা দুই ব্যক্তি হলেন সিবিয়ন দিও ও সঞ্চয় চিসম।

তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, আটক করা দুই ব্যক্তি মূল হামলাকারীদের সীমান্ত পার করতে সাহায্য করেছেন। তাঁদের মাধ্যমে মূল সন্দেহভাজনদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হলেও সফল হওয়া যায়নি।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামলায় অংশ নেওয়া দুজনের মোবাইল ফোনের তথ্য বিশ্লেষণ করে ঢাকার অদূরের একটি উপজেলা থেকে তাঁদের দুই সহযোগী মো. মিলন ও হাবিবুর রহমান হাবিবকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার দিন এই দুজনের সঙ্গে হামলাকারীদের শতাধিকবার ফোনে যোগাযোগ হয়। আর হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক মো. আবদুল হান্নানকে র‍্যাব-২ গ্রেপ্তার করে পল্টন থানায় হস্তান্তর করেছে।

পল্টন থানা-পুলিশ হান্নানকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ সময় আবদুল হান্নান আদালতকে বলেন, মোটরসাইকেলটি তিনি একটি শোরুমে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। মালিকানা পরিবর্তনের জন্য দুই মাস আগে কল দেওয়া হলেও অসুস্থ থাকায় তিনি যেতে পারেননি।

ভারতের প্রতি আহ্বান

এদিকে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করে হাদির ওপর হামলাকারীরা ভারতে ঢুকে পড়লে তাঁদের গ্রেপ্তার করে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর বিপরীতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম জনগণের স্বার্থের পরিপন্থী কোনো কার্যকলাপে ভারতের ভূখণ্ড কখনোই ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘আমরা আশা করি, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাসহ অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অবৈধ ৫ সার কারখানা বর্জ্যে বিপাকে স্থানীয়রা

  • জনবসতিপূর্ণ এলাকায় অনুমোদনহীন সার কারখানা।
  • দুর্গন্ধে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি­
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

জৈব কৃষি এবং পরিবেশবান্ধব সারের ক্রমবর্ধমান চাহিদার সুযোগ নিয়ে চুয়াডাঙ্গার আলুকদিয়া ইউনিয়নে গত কয়েক মাসে পাঁচটি ছোট-বড় ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) ও অন্যান্য জৈবসারের কারখানা গড়ে উঠেছে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে এই উদ্যোগ গতি আনলেও, কারখানার অব্যবস্থাপনা, প্রয়োজনীয় পরিবেশগত ছাড়পত্র এবং সার লাইসেন্স না থাকায় আশপাশের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কারখানার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিক না হওয়ায় বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বেড়েছে, যা স্থানীয়ভাবে বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা ছাড়া কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হওয়া সত্ত্বেও আয়কর বা মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) সরকারের কোষাগারে সঠিকভাবে জমা না দেওয়ায় রাষ্ট্র বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে বলেও জানান তাঁরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নে কৃষি খামার, মডার্ন অ্যাগ্রো ফার্ম, চুয়াডাঙ্গা অ্যাগ্রো কম্পোস্ট, চুয়াডাঙ্গা ভার্মি কম্পোস্ট ও মা অ্যাগ্রো নামের পাঁচটি অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠানে সার উৎপাদন করা হচ্ছে। জনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব কারখানায় খোলামেলা পরিবেশে বিপুল কাঁচা গোবর ও জৈব পদার্থ স্তূপ করে রাখা হয়েছে। ফলে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে চুয়াডাঙ্গা অ্যাগ্রো কম্পোস্ট ও চুয়াডাঙ্গা ভার্মি কম্পোস্টের স্বত্বাধিকারী এরফান বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি, আবেদন করেছি। তবে এখনো লাইসেন্স নেই।’ কৃষি খামার নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আশরাফুল বলেন, ‘এত নিয়ম আইন জানি না। এখন সরকার বন্ধ করতে বললে বন্ধ করে দেব।’

সরেজমিনে দেখা যায়, অননুমোদিত কারখানাগুলো বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মানদণ্ড অনুসরণ করছে না। ভার্মি কম্পোস্ট তৈরির প্রধান উপাদান হলো গোবর এবং অন্যান্য জৈব বর্জ্য। সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত না করলে এই কাঁচামাল এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ-পরবর্তী অব্যবস্থাপিত বর্জ্য সরাসরি পরিবেশে মিশে যাচ্ছে। কারখানার অপরিশোধিত তরল বর্জ্য সরাসরি নিকটস্থ পুকুর, খাল বা কৃষিজমিতে ফেলার কারণে ভূপৃষ্ঠের জল এবং মাটির মারাত্মক দূষণ ঘটছে। এই বর্জ্যের কারণে জলজ প্রাণীরও ক্ষতি হচ্ছে। এ ছাড়া কাঁচা গোবর ও জৈব পদার্থ খোলা জায়গায় দীর্ঘ সময় স্তূপ করে রাখলে বা সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করলে তা পচনের সময় তীব্র দুর্গন্ধ ছড়ায়। ফলে বায়ুর গুণমান নষ্ট এবং আশপাশের মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে যাচ্ছে। দুর্গন্ধ ও পরিবেশদূষণের কারণে কারখানা পরিচালনাকারীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রায়ই বিরোধ তৈরি হচ্ছে বলেও জানা গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, ‘অনুমোদনহীন কারখানা চালু রাখা যাবে না। আমরা বিষয়টির খোঁজ নিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নরেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘আলুকদিয়ায় কয়েকটি অবৈধ সার কারখানার বিষয়ে শুনেছি। আমরা দ্রুতই সেখানে অভিযান চালাব। ওই এলাকায় কেউ ছাড়পত্র নেননি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত