Ajker Patrika

ছয় বছরেই স্বপ্ন ম্লান: কমিউনিটি সেন্টার হয়ে উঠছে যশোর আইটি পার্ক

জাহিদ হাসান, যশোর
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৫: ১৫
ছয় বছরেই স্বপ্ন ম্লান: কমিউনিটি সেন্টার হয়ে উঠছে যশোর আইটি পার্ক

যশোরের শেখ হাসিনা সফটওয়ার টেকনোলজি পার্ক উদ্বোধনের ছয় বছর পূর্ণ হচ্ছে আগামীকাল রোববার। একটিমাত্র বিদেশি কোম্পানি এই পার্কে জায়গা বরাদ্দ নিলেও দুবছর আগে সেটিও পার্ক ছেড়ে চলে গেছে। এমনকি বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রথমদিকে চুক্তিবদ্ধ ৩৩টির মধ্যে ২৬টি কোম্পানি পার্ক ছেড়ে চলে গেছে। অবশিষ্ট যে সাতটি কোম্পানি রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে অধিকাংশই রুগ্ন।

এদিকে, আইসিটি শিল্পের বিকাশ ও উদ্যোক্তা সৃষ্টির উদ্দেশ্য নিয়ে পার্কটি পথচলা শুরু হলেও সেই মূল উদ্দেশ্য থেকে সরে গেছে পার্কটির দায়িত্বে থাকা কোম্পানি টেকসিটি। পার্কটিতে চাকরি মেলা, বিয়ে–বৌভাতের মতো অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে। লোকসান ঠেকাতে পার্কের তিন তারকা মানের ডরমিটরিটিতে চালু হয়েছে ‘হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট’।

২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই পার্ক উদ্বোধন করেন। এরপর সরকার টেকসিটি নামের একটি কোম্পানিকে পার্কটি দেখভালের দায়িত্ব দেয়। শিগগিরই উদ্যোক্তাদের সঙ্গে টেকসিটি কর্তৃপক্ষের বিরোধ বাড়তে থাকে।

নতুন করে টেকসিটি অন্তত ৩০টি কোম্পানিকে জায়গা বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু জায়গা ভাড়ার বিষয়ে কোনো নীতিমালা অনুসরণ না করার অভিযোগ রয়েছে। একই পার্কে ১৭ টাকা ২৬ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ২৯ টাকা পর্যন্ত প্রতি বর্গফুটের ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। একেক কোম্পানির কাছ থেকে একেক ধরনের ভাড়া আদায় করায় উদ্যোক্তাদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে।

এছাড়া বিদ্যুৎ বিলের বিষয়েও উদ্যোক্তাদের অভিযোগ রয়েছে, গড়ে ১৫ টাকা ইউনিট হিসাবে বিল আদায় করছে টেকসিটি। অথচ বিদ্যুৎ বিলের সরকারি ব্যবসায়িক রেট সর্বোচ্চ ১০ টাকা বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পার্কে গিয়ে উদ্যোক্তা ও প্রকল্প ব্যবস্থাপনা কোম্পানি টেকসিটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পার্ক স্থাপনের শুরুতে উদ্যোক্তারা বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে জায়গা বরাদ্দ নেন। ওই চুক্তিতে পার্ক ব্যবস্থাপনার জন্য তৃতীয় কোনো কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হবে—এমন কথা বলা নেই।

চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পরই উদ্যোক্তারা জানতে পারেন টেকসিটি নামের একটি কোম্পানিকে পার্কের জায়গা বরাদ্দ দেওয়ার এখতিয়ারসহ ব্যবস্থাপনার পুরো দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যে চুক্তির মাধ্যমে টেকসিটিকে দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেই চুক্তিটিও অসম। কারণ, জনগণের টাকায় স্থাপিত পার্কের আয়ের মাত্র ১৮ শতাংশ পাচ্ছে সরকার, ৮২ শতাংশ নিচ্ছে টেকসিটি কর্তৃপক্ষ। অথচ শুরুতে এই পার্কে টেকসিটির কোনো বিনিয়োগই নেই।

শেখ হাসিনা সফটওয়ার টেকনোলজি পার্ক।পার্ক ঘুরে দেখা গেছে, ৪০টির মতো কোম্পানি বর্তমানে অপারেশনে রয়েছে। যদিও টেকসিটি কর্তৃপক্ষের দাবি, ৫৭টি কেম্পানি জায়গা বরাদ্দ নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে মাত্র ১০টি কোম্পানি সফটওয়্যার তৈরি বা বিপণন নিয়ে কাজ করে। অবশিষ্ট কোম্পানিগুলো ই–কমার্স, কল সেন্টার, ইন্টারনেট সেবাদানকারী, ডিজিটাল মার্কেটিংসহ বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেকসিটির মহাব্যবস্থাপক (জেনারেল ম্যানেজার) শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, ‘নীতিমালা অনুযায়ী তিন ধরনের প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেগুলো হলো—তথ্য প্রযুক্তি, তথ্য প্রযুক্তির (ইএস) ওপরে নির্ভর করে এমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিপিও (বিজনেস প্রসেস আউট সোর্সিং)। বর্তমানে পার্কে ১০টি সফটওয়ার কোম্পানি রয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে কোনো বেশি ভাড়া বা বিদ্যুৎ বিল নেওয়া হয় না। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি দুই বছর পর ভাড়া বৃদ্ধি করে এই পর্যায়ে এসেছে। আইটি পার্কের সমস্যা ও বিনিযোগকারীদের সব অভিযোগ বাংলাদেশ হাই–টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ জানে।’

হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ কোম্পানিগুলোর মেয়াদ শেষ হয়েছে চলতি বছরের ২৬ অক্টোবর। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ২৬টি কোম্পানি ব্যবসা গুটিয়ে পার্ক ছেড়ে চলে গেছে।

কেন ব্যবসায়ীরা চলে গেলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যবসায়ীরা বলেন, দক্ষ জনশক্তির অভাবে ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া এই পার্কে যে ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, বাস্তবে তার কিছুই নেই। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ইন্টারনেট সেবার একাধিক লাইন থাকার কথা ছিল, কিন্তু তা নেই। বিদ্যুৎ বিল মাত্রাতিরিক্ত। শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে বাইরে আইটি পার্ক স্থাপিত হলেও সেই তুলনায় ভাড়া বেশি।

হাই–টেক পার্কের ভেতর খালি জায়গা।বিনিয়োকারীরা জানান, এই পার্কে ৬০০–৭০০ মানুষের কর্মস্থান হয়েছে। তবে ছয় বছরের অধিক সময় চাকরিরত কর্মীর সংখ্যা ১৫০ জনের বেশি না। বেশির ভাগ কর্মী আসা-যাওয়ার মধ্যেই থাকেন। ই–কমার্স ও কল সেন্টারে বেশি কর্মী কাজ করেন। তাঁদের বেতন ১০ হাজারের নিচে। যে কারণে তিন থেকে ছয় মাসের বেশি ওই কর্মীরা টিকছে না। ফলে আইটি খাতের দক্ষ জনশক্তিও এখানে তৈরি হচ্ছে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন উদ্যোক্তা বলেন, পার্কের ক্যাফেটেরিয়া ভবনে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সংবলিত মিলনায়তন রয়েছে। সেখানে প্রযুক্তিভিত্তিক কর্মশালা–সেমিনারের বদলে বিয়ে–বউ ভাতের অনুষ্ঠান বেশি হয়। যে কারণে পার্কের প্রযুক্তি ভিত্তিক পরিবেশ থাকছে না।

টেকসিটি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের অত্যন্ত ৫০টি অনুষ্ঠান হয়েছে। এর মধ্যে বিয়ে–বউ ভাতের মতো অনুষ্ঠান, এছাড়া চাকরি মেলাসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানও হয়েছে। 

 ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে সফটওয়্যার, অ্যানিমেশন, গ্রাফিক্স নিয়ে কাজ করার জন্য অ্যানিমেক্স অ্যানিমেশন স্টুডিও নামের একটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান পার্কটির ১৩ তলায় সাড়ে ৭শ বর্গফুট জায়গা নেয়। প্রায় সাড়ে তিন বছর পর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠানটি লোকসানের কারণে জায়গা ছেড়ে দেয়। এই প্রতিষ্ঠান বর্তমানে যশোরের একটি ভাড়া বাড়িতে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক শেখ মেহেদী হাসান শুভ বলেন, ‘পার্কটির প্রধান সমস্যা ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল। অযৌক্তিক বিল চাপিয়ে দিত। পার্কটিতে যে ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল নিয়ে কাজ করেছি; তারচেয়ে অনেক কম ভাড়া–বিলে শহরের যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভালোভাবে কাজ করা যায়। আইটি পার্কটি বর্তমানে টিকে আছে বিভিন্ন কল সেন্টারে ওপর। ওখানে দু–একটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া কেউ সফটওয়্যার ভিত্তিক কাজ করে না। পার্কটি সরকারের একটি নান্দনিক বিন্ডিং ছাড়া ওখানে কিছুই নাই।’

হাই–টেক পার্কের ভেতর খালি জায়গা।ফ্রিডম ফাইটার আইটির ডিজিএম মিকাইল হোসেন বলেন, ‘দেড় বছরের মতো কাজ করার পরে ঢাকাতে চলে যেতে হয়েছে। মূলত যে কাজে পার্কটি নির্মাণ করা হয়েছিল; সেটি ওখানে হয় না। ওখানে পরিবেশের কারণে ভালো কোনো ডেভেলপার যেতে চায় না। নেওয়ার আগে কর্তৃপক্ষ যেসব অঙ্গীকার করেছিল সেটি তারা রাখতে পারেনি। তাই দিনকে দিন লোকসানের মুখে পড়ে পার্কটি ছেড়ে যেতে হয়েছে।’

উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, পার্কের ভেতর সরকারি ডিজাস্টার রিকোভারি ডেটা সেন্টার নামের একটি স্থাপনা রয়েছে। ওই সেন্টারের বিদ্যুৎ বিল নিয়ে উদ্যোক্তাদের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, ওই সেন্টারটির বিদ্যুৎ বিল উদ্যোক্তাদের ঘাড়ে চাপানো হয়।

এসব বিষয়ে পার্কটির ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহসান কবির বলেন, ‘শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে তুলনামূলক ভাড়া বেশি। এছাড়া আমরা সর্বোচ্চ রেটে বিদ্যুৎ বিল দিয়ে থাকি। বিদ্যুৎ বিল কমানো বা বিলটা বিশেষ শিল্প জোনের আওতায় আনার জন্য পার্ক কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এটি দেশের প্রথম আইটি পার্ক। ফলে সবকিছুতেই মডেল হতে পারত এটি। কিন্তু সরকার এটিতে সেভাবে মনোযোগ দেয়নি। মনোযোগ দেয়নি বলেই সিলিকন ভ্যালির স্বপ্ন ম্লান হয়েছে। দেশের প্রথম আইটি পার্কের লক্ষ্য বাস্তবায়ন না হওয়াতে নতুন করে এই সেক্টরে বিমুখ হচ্ছে তরুণ উদ্যোক্তারা।’

টিকে থাকতে হোটেল–রিসোর্ট
দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলে আইসিটি শিল্পের বিকাশ ও উদ্যোক্তা সৃষ্টির উদ্দেশ্য নিয়ে, যশোর শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু সেই মূল উদ্দেশ্য থেকে সরে গেছে পার্কটির দায়িত্বে থাকা কোম্পানি টেকসিটি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের স্বার্থরক্ষা করতে গিয়ে পার্কটিতে চাকরি মেলা, বিয়ে–বৌভাতের মতো অনুষ্ঠান করছে।

লোকসান ঠেকাতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে পার্কের তিন তারকা মানের ডরমিটরিটিতে চালু হয়েছে ‘হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট’। খান প্রোপার্টিস নামের একটি কোম্পানি ১০ বছরের চুক্তিতে এই হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট খুলেছে। 

খান প্রোপার্টিসের প্রজেক্ট ম্যানেজার আল বাকি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যশোর একটি হাব। পার্কটিতে সুন্দর একটা বিল্ডিং থাকলেও, আধুনিক সুযোগ সুবিধা এখানে ছিল না। একই সঙ্গে ম্যানেজমেন্টটাও। ফলে এটা আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। হাইটেক পার্কে ডরমিটরিটিতে এখন আমরা হোটেল ও রিসোর্ট করছি। পার্কের বিভিন্ন পরিবেশ ও পুকুরটি সংস্কার করে রিসোর্ট করা হয়েছে। আপাতত ১০ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক অংশীদারির মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করা হবে।’

এ বিষয়ে টেকসিটির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, ‘ডরমিটরিটি বাইরের লোকদের ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার পর্যন্ত ভাড়া। কিন্তু এখানকার উদ্যোক্তাদের কাছে থেকে হাইটেকের নির্ধারিত ভাড়াই নেওয়া হয়। এছাড়া অডিটরিয়ামসহ সব সুবিধা পান উদ্যোক্তারা।’

তবে লক্ষ্য অনেকখানি অর্জিত হয়েছে বলে দাবি করেন বাংলাদেশ হাই–টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিএসএম জাফরুল্লাহ। হোয়াটসঅ্যাপে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে পার্কটিতে ৫৯টি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২৫০০ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া এখানে ১২টি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। কাজেই বলা যায় সরকার যে লক্ষ্য নিয়ে এই পার্ক স্থাপন করেছে, বিগত ছয় বছরে তা অনেকাংশেই বাস্তবায়ন হয়েছে।’

তবে আইসিটি ইকোসিস্টেম পরিপূর্ণরূপে কার্যকর হতে আরও সময় লাগবে বলে জানান তিনি।

শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের ভাড়া নিয়ে উদ্যোক্তাদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘এখানে মাসিক ভাড়া প্রতি বর্গফুটে মাত্র ১৬ টাকা এবং সার্ভিস চার্জ ৪ টাকা। এই ভাড়াকে কোনোভাবেই বেশি বলে মনে করে না কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বিভিন্ন সময় উদ্যোক্তাদের ভাড়া মওকুফ করা হয়। সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দেশে–বিদেশে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এত কিছুর পরও ভাড়া বেশি বলার সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। আর বিদ্যুৎ বিল হাই–টেক পার্ক নির্ধারণ করে না। বিদ্যুৎ বিভাগের নির্ধারিত বিল ব্যবহার অনুযায়ী কোম্পানিগুলোকে পরিশোধ করতে হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মির্জাপুরে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের চালক নিহত

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় এক মোটরসাইকেলের চালক নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের দেওহাটা ফ্লাইওভারের পশ্চিম পাশে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহত ব্যক্তির নাম জানা যায়নি। তবে তিনি গোড়াই সাউথ ইস্ট কারখানার কর্মী বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।

জানা গেছে, সকাল সোয়া ৭টার দিকে সকালে মোটরসাইকেল চালিয়ে মহাসড়কের ধীরগতির লেন দিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিলেন চালক। মহাসড়কের দেওহাটা ফ্লাইওভারের কাছে পৌঁছালে টাঙ্গাইল থেকে ছেড়ে আসা আলোকিত মধুপুর নামে যাত্রীবাহী বাস মহাসড়ক ছেড়ে ধীরগতির লেনে ঢুকে পড়ে মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেলের চালক নিহত হন।

দেওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক গিয়াসউদ্দিন জানান, নিহত ব্যক্তি গোড়াই সাউথ ইস্ট কারখানায় চাকরি করতেন বলে জানতে পেরেছেন। বাসটি জব্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভালুকায় সহকর্মীর গুলিতে আনসার সদস্য নিহত, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বজেন্দ্র দাসকে মৃত ঘোষণা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বজেন্দ্র দাসকে মৃত ঘোষণা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাক কারখানায় সহকর্মীর গুলিতে বজেন্দ্র বিশ্বাস (৪০) নামের এক আনসার সদস্য নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রাত ৭টায় উপজেলার মেহরাবাড়ি এলাকায় লাবিব গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সুলতানা সোয়েটার্স লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত সহকর্মী আনসার সদস্য নোমান মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিহত আনসার সদস্য বজেন্দ্র বিশ্বাস সিলেট সদর উপজেলার কাদিরপুর গ্রামের প্রবিত্র বিশ্বাসের ছেলে। অভিযুক্ত নোমান মিয়া সুনামগঞ্জ জেলার তাহেরপুর থানার বালুটুরি বাজার এলাকার লুৎফর রহমানের ছেলে। দুজনই সুলতানা সোয়েটার্স লিমিটেড কারখানায় কর্মরত ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কারখানাটিতে ২০ জন আনসার সদস্য কর্মরত ছিলেন। ঘটনার সময় আনসার সদস্য নোমান মিয়া ও বজেন্দ্র দাস একসঙ্গে বসেছিলেন। এ সময় অসাবধানতাবশত নোমান মিয়ার হাতে থাকা শটগান থেকে গুলি বের হলে বজেন্দ্র দাসের বাঁ ঊরুতে গুলি লাগে এবং তিনি গুরুতর আহত হন। পরে সহকর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর অভিযুক্ত নোমান মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নড়াইলে দুটি আসনে ২৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা

নড়াইল প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৪
নড়াইল-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ড. এ জেড এম ফরিদুজ্জামান ফরহাদ মনোনয়নপত্র জমা দেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
নড়াইল-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ড. এ জেড এম ফরিদুজ্জামান ফরহাদ মনোনয়নপত্র জমা দেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

নড়াইলের দুটি সংসদীয় আসনে বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদ, জাতীয় পার্টি, স্বতন্ত্রসহ মোট ২৪ জন প্রার্থী গতকাল সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ডক্টর মোহাম্মদ আবদুল ছালাম জানান, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টা পর্যন্ত ২৪ জন প্রার্থী তাঁদের মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে নড়াইল-১ আসনে ১৫ জন প্রার্থী এবং নড়াইল-২ আসনে ৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

নড়াইল-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম, জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে মাওলানা মো. ওবায়দুল্লাহ কায়সার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে মাওলানা আব্দুল আজিজ, জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মিলটন মোল্যা, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অধ্যাপক বি এম নাগিব হোসেন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) এস এম সাজ্জাদ হোসেন, সুকেশ সাহা আনন্দসহ ১৫ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

নড়াইল-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ড. এ জেড এম ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী আতাউর রহমান বাচ্চু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা তাজুল ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদ প্রার্থী হিসেবে নূর ইসলাম, জাতীয় পার্টির প্রার্থী খন্দকার ফায়েকুজ্জামান ফিরোজ, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মনিরুল ইসলাম, ফরিদা ইয়াসমিনসহ ৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আচরণবিধি মেনে প্রার্থীরা তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের বাইরে দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় দেশীয় অস্ত্র, গুলি ও মাদকসহ গ্রেপ্তার ৫

খুলনা প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০১
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনায় দেশীয় অস্ত্র, গুলি ও মাদকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। গতকাল সোমবার ভোরে নগরীর লবণচরা থানার মতিয়াখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তাঁরা পুলিশি হেফাজতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন লবণচরা থানার মতিয়াখালী এলাকার বাসিন্দা আবুল বাশারের ছেলে ইমন শরীফ, একই এলাকার বাসিন্দা আজিজুলের ছেলে সবুজ সাহা, সোনাডাঙ্গা থানা এলাকার বাসিন্দা হাবিব হাওলাদারের ছেলে ফারুখ হোসেন, পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার কাউখালী এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলীর ছেলে শাহরিয়ার এবং জয়কুল এলাকার বাসিন্দা হারুনুর রশিদের ছেলে সজল খান।

জানতে চাইলে লবণচরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তুহিনুজ্জামান বলেন, মেজর মাসুকের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী শিপইয়ার্ড এলাকার মতিয়াখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে উল্লিখিত আসমিদের আটক করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে শটগানের ৬টি গুলি, ২টি বিদেশি মদের বোতল, ২টি ধারলো ছুরি এবং ১১টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে। মাদক ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তাঁদের বিরুদ্ধ মামলা দায়ের করে। আসামিরা শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় তাঁদেরকে পুলিশি হেফাজতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত