Ajker Patrika

কুষ্টিয়ায় কলেজছাত্রকে হাত-পা বেঁধে ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১০: ২০
কুষ্টিয়ায় কলেজছাত্রকে হাত-পা বেঁধে ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ

কুষ্টিয়া শহরের একটি চারতলা বাড়ির ছাদ থেকে ফেলে এক কলেজছাত্রকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কোর্টপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু রাসেল আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

নিহত কলেজছাত্রের নাম রুবেল হোসেন (২২)। তিনি কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে। রুবেল কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাওয়ার ডিপার্টমেন্টের ষষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্র ছিলেন। কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়া এলাকার একটি চারতলা ভবনের তৃতীয় তলায় ছাত্রাবাসে থাকতেন তিনি। 

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রশি দিয়ে হাত-পা ও কাপড় দিয়ে মুখ বাঁধা অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পথে রাত সাড়ে ১২টার দিকে রুবেলের মৃত্যু হয়। 

নিহত রুবেলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া মেসের বাসিন্দা আনিসুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তৃতীয় তলায় তিনটি রুমে আমরা ৯ জন থাকতাম। রুবেলের রুমে তিনজন থাকত। রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে চিৎকারের শব্দ শুনে নিচে নেমে এসে দেখি হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় রুবেল পড়ে আছে। তখন স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে বলেন।’ 

আনিসুর রহমান আরও বলেন, বিকেল থেকে রুবেলকে চিন্তিত থাকতে দেখেছি। সন্ধ্যার পরে একসঙ্গে ছাত্রাবাসের খরচের হিসাব করেছি। তবে এ ঘটনা কীভাবে, কারা ঘটিয়েছে সেটা জানি না। 

কামরুল হাসান শুভ নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ধারণা করছি, হাত-পা ও মুখ বেঁধে মারধর করে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে তাকে। তার দুই হাত, দুই পা সাদা রশি ও মুখ লাল কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল। ঘটনার পর পুলিশের সঙ্গে ভবনের তৃতীয় তলায় গেলে ওই রুমের বারান্দায় একই রঙের রশি টানানো থাকতে দেখেছি। এটা একটা হত্যাকাণ্ড। কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে।’

রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই ছাত্রাবাসে গিয়ে দেখা যায়, রুবেলের সঙ্গে একই রুমে থাকা হৃদয় ও রাইসুলসহ অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এ সময় বিষয়টি তদন্ত করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায় স্থানীয়রা। 

মাহিম নামের স্থানীয় এক যুবক জানান, ‘ঘটনার পরেই আমরা ছাত্রাবাসের ছেলেদের কাছে ঘটনা কী হয়েছে জিজ্ঞাসা করেছি। তারা কেউ কিছু জানে না বলছে। তবে চারতলা ভবনের ছাদ বন্ধ থাকে। বাড়ির মালিক ছাড়া ছাদের চাবি ছাত্রাবাসের এক ছেলের কাছে থাকে বলে জানতে পেরেছি। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক কিছু জানতে পারবে।’

কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মিঠুন চক্রবর্তী আজকের পত্রিকাকে বলেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাত ১১টার দিকে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। 

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু রাসেল বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রিকশায় চড়ে ডিসি অফিসে মির্জা ফখরুল, জমা দিলেন মনোনয়নপত্র

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৫৭
জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ইশরাত ফারজানার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকা
জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ইশরাত ফারজানার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঠাকুরগাঁও-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে রিকশায় চড়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বেলা ১১টার দিকে ঠাকুরগাঁও শহরের তাঁতিপাড়া মহল্লার পৈতৃক বাসভবন থেকে বের হন মির্জা ফখরুল। প্রথমে তিনি জেলা বিএনপি কার্যালয়ে যান এবং সেখানে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশ নেন। অনুষ্ঠান শেষে বেলা ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর করিমকে সঙ্গে নিয়ে একটি রিকশায় চড়ে বসেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুলের রিকশা যখন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দিকে রওনা দেয়, তখন পেছনে হেঁটে অনুগমন করেন কয়েক শ দলীয় নেতা-কর্মী, সমর্থক ও সাধারণ পেশাজীবী। বেলা ১১টা ৪৭ মিনিটে তিনি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পৌঁছান।

জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ইশরাত ফারজানা কার্যালয়ের প্রবেশমুখে দাঁড়িয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে অভ্যর্থনা জানান। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে ঠাকুরগাঁও-১ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমিন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জাফরউল্লাহসহ স্থানীয় জ্যেষ্ঠ নেতারা।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন পরে বাংলাদেশের মানুষ ভোটাধিকার পেয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল থেকে ঠাকুরগাঁও-১ আসনে মনোনয়ন পাওয়ায় আমি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও আমাদের নেতা জনাব তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

মির্জা ফখরুলের রিকশা যখন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দিকে রওনা দেয়, তখন পেছনে হেঁটে অনুগমন করেন কয়েক শ দলীয় নেতা-কর্মী। ছবি: আজকের পত্রিকা
মির্জা ফখরুলের রিকশা যখন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দিকে রওনা দেয়, তখন পেছনে হেঁটে অনুগমন করেন কয়েক শ দলীয় নেতা-কর্মী। ছবি: আজকের পত্রিকা

নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণের ভালোবাসায় নির্বাচিত হলে ঠাকুরগাঁও অঞ্চলের সামাজিক পরিবেশ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের উন্নয়নে কাজ করব। বিশেষ করে মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি আমার অগ্রাধিকার থাকবে।’ এ সময় তিনি এলাকার মানুষের কাছে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে ভোট চেয়ে দোয়া কামনা করেন।

বিএনপি মহাসচিবের প্রস্থানের পর জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরাও জেলার তিনটি আসনের জন্য তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কারওয়ানবাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, ধাওয়া পাল্টাধাওয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল। ছবি: জাহিদুল ইসলাম
কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল। ছবি: জাহিদুল ইসলাম

রাজধানীর বৃহত্তম কাঁচাবাজার কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধনে হামলার পর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

আজ সোমবার বেলা ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

দুপুরে কিচেন মার্কেটের সামনে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন করেন। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকেরা তাদের ওপর হামলা করে। এই হামলার প্রতিবাদে লাঠি মিছিল করে ব্যবসায়ীরা। এ সময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এখনো সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভালুকায় শ্রমিকবাহী বাস উল্টে এক শ্রমিক নিহত, আহত ২০

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৪৯
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ময়মনসিংহের ভালুকায় শ্রমিকবাহী বাস উল্টে এক শ্রমিক নিহত ও অন্তত ২০ শ্রমিক আহত হয়েছেন। আহতদের ভালুকা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল পৌনে ৮টায় ভরাডোবা-ঘাটাইল সড়কের ভালুকা উপজেলার নারাঙ্গী হাইজ্যাক মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সুমন মিয়া ভালুকা উপজেলার উথুরা গ্রামের শওকত আলীর ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কোনাবাকাইল থেকে ছেড়ে আসা নিঝুরী গ্রিন টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার একটি শ্রমিকবাহী বাস ভরাডোবা-ঘাটাইল সড়কের ভালুকা উপজেলার নারাঙ্গী হাইজ্যাক মোড় এলাকায় পৌঁছালে বাসটির চাকা পাংচার হয়ে উল্টে যায়। এতে কারখানার ইউনিট-৩-এর কোয়ালিটি সেকশনের শ্রমিক সুমন মিয়াসহ (২৫) অন্তত ২১ জন শ্রমিক আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে ভালুকা সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সুমন মিয়াকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।

ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গোপালগঞ্জে বাসচাপায় পুলিশের কনস্টেবল নিহত

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মুকসুদপুর উপজেলার ভাঙ্গাপোল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মুকসুদপুর উপজেলার ভাঙ্গাপোল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে বাসের চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। নিহত পুলিশ সদস্যের নাম রবিউল ইসলাম। তিনি নড়াইল সদর থানায় কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মুকসুদপুর উপজেলার ভাঙ্গাপোল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সরকারি কাজে মোটরসাইকেলে নড়াইল সদর থানা থেকে মুকসুদপুর থানায় যাচ্ছিলেন রবিউল ইসলাম। পথে ভাঙ্গাপোল এলাকায় পৌঁছালে দ্রুতগামী বনফুল পরিবহনের একটি বাস মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়।

গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

নিহত রবিউল ইসলাম মুকসুদপুর উপজেলার নওহাটা গ্রামের বজলার রহমান ওরফে হিরু মিয়ার ছেলে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত