Ajker Patrika

মর্যাদা ফিরে পেয়ে যশোর এমএম কলেজ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জনতার ঢল

­যশোর প্রতিনিধি
একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে অবস্থিত শহীদ মিনারকে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের স্বীকৃতি দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। ছবি: আজকের পত্রিকা
একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে অবস্থিত শহীদ মিনারকে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের স্বীকৃতি দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। ছবি: আজকের পত্রিকা

অবশেষে কেন্দ্রেই ফিরে গেল যশোরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। ছয় বছর পর একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে অবস্থিত শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্যে দিয়ে কেন্দ্রীয় মিনারের স্বীকৃতি ফিরে পেল।

দিবসটির প্রথম প্রহর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১ মিনিটে জেলা প্রশাসনের পক্ষে জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার নূর ই আলম সিদ্দিকীসহ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, যশোর শিক্ষাবোর্ড, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জেলা বিএনপিসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনীতিক, সাংবাদিক সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এদিন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ সমবেত হন এমএম কলেজ প্রাঙ্গণে।

কলেজ ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, যশোরের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়, যেটি এমএম কলেজ নামেই পরিচিত। ১৯৪১ সালে ‘যশোর কলেজ’ নামে প্রতিষ্ঠিত এবং ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ হয় ‘মাইকেল মধুসূদন কলেজ’। ১৯৬৮ সালের ১ মে প্রতিষ্ঠানটি সরকারি হয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পর প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি এমএম কলেজে স্থাপিত শহীদ মিনারে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছিলেন।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যশোর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়। ২০১৮ সালে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে পৌরসভার তৎকালীন মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু শহরের শহীদ মসিয়ূর রহমান সড়কের পাশে (ফাতেমা হাসপাতালের সামনে) নতুন একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করেন। এর নাম দেন ‘কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার’। সেটি অপ্রশস্ত একটি স্থানে হওয়ায় এবং দীর্ঘ দিনের শহীদ মিনারকে একা করে দেওয়ায় স্থানীয় সামাজিক ও সংস্কৃতিপ্রেমী ও সচেতন মহলের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। পৌরসভার মেয়র ও তৎকালীন প্রভাবশালী নেতা হওয়াতে সেই সময় কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলতে পারেননি। বিএনপি ও কয়েকটি বাম দল ছাড়া অন্যরা নতুন শহীদ মিনারে যেতে বাধ্য হয়।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুরোনো কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি ওঠে। এমন প্রেক্ষাপটে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপন প্রস্তুতি কমিটির’ সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে এই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, যশোরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার বলতে এমএম কলেজের শহীদ মিনারকে বোঝাবে। এই শহীদ মিনারেই এবার ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। একই সঙ্গে পৌরসভার অর্থায়নে নির্মিত শহীদ মিনারটি সাদা কাপড়ে ঘিরে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে অবস্থিত শহীদ মিনারকে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের স্বীকৃতি দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। ছবি: আজকের পত্রিকা
একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে অবস্থিত শহীদ মিনারকে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের স্বীকৃতি দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। ছবি: আজকের পত্রিকা

দীর্ঘ ছয় বছর পর যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে অবস্থিত শহীদ মিনার কেন্দ্রীয় স্বীকৃতি ফিরে পাওয়াতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে কলেজটির শিক্ষক শিক্ষার্থী ও যশোরবাসী। তাঁরা বলছেন, শহরের শহীদ মসিয়ূর রহমান সড়কের পাশে অপ্রশস্ত একটি স্থানে শহীদ মিনার নির্মাণ হওয়াতে স্বাচ্ছন্দ্যভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করা যেতেন না। এখন বৃহৎ ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ফিরে আসায় স্বস্তিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারছেন।

একুশের প্রথম প্রহরে সরেজমিনে এমএম কলেজে দেখা গেছে, ভাষাশহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে হাতে ফুল, কালো ব্যাজ ধারণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ঢল নামে আপামর জনতা। একুশের প্রথম প্রহর থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হয়। হাজারো মানুষকে শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনার অভিমুখে যেতে দেখা গেছে।

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে অবস্থিত শহীদ মিনারকে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের স্বীকৃতি দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। ছবি: আজকের পত্রিকা
একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে অবস্থিত শহীদ মিনারকে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের স্বীকৃতি দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। ছবি: আজকের পত্রিকা

জিলা স্কুল মোড় থেকে এমএম কলেজের দক্ষিণ গেট পর্যন্ত দীর্ঘ সারি। সেখান থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্য। হাতে ফুল নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে ধীর গতিতে এগিয়ে চলেছেন। খালি পায়ে একে একে তাঁরা শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রাঙ্গণে বেজে চলেছে একুশের গান। মহান একুশ উপলক্ষে এমএম কলেজ ক্যাম্পাসে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, ‘শহীদ মসিয়ূর রহমান সড়কে নির্মিত শহীদ মিনারে আমরা কোনো দিনই যাইনি। এমএম কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থিত শহীদ মিনারকেই আমরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার মানি। আমাদের দল বরাবরই দাবি করে আসছিল, এই শহীদ মিনারেই যেন শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয়। সেখানে এখন পর্যন্ত আমাদের পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী, বিপ্লবী যুবমৈত্রীসহ বিভিন্ন সংগঠন ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আসছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।

গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’

একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’

স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’

জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গলায় রশি পেঁচানো নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।

বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত