Ajker Patrika

ইসলামপুরে শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত 

এম. কে. দোলন বিশ্বাস, ইসলামপুর (জামালপুর)
আপডেট : ১৬ মার্চ ২০২৪, ১৭: ৩২
ইসলামপুরে শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত 

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (টিও) মোহাম্মদ ফেরদৌস প্রায় দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। এতে বিদ্যালয় পরিদর্শন, বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা উত্তোলনসহ দাপ্তরিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। 

ইউএনওর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনমূলে সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি পেয়ে জামালপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে যোগদানের আদেশপ্রাপ্ত হন টিও মোহাম্মদ ফেরদৌস। পরদিন ৮ ফেব্রুয়ারি ওই প্রজ্ঞাপন আংশিক সংশোধনে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে মোহাম্মদ ফেরদৌসকে যোগদান করতে প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই প্রজ্ঞাপনে টিও মোহাম্মদ ফেরদৌসকে পদায়ন করা কর্মস্থল লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি যোগদান করতে বলা হয়। কিন্তু তিনি এখনো কোনো সিনিয়র কর্মকর্তার কাছে টিও পদের দায়িত্বভার হস্তান্তর করেননি। 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন মোহাম্মদ ফেরদৌস। তিনি ২০২০ সালের ৪ জুন ইসলামপুরে যোগদান করেন। উপজেলার ছয়টি এটিও পদের মধ্যে চারটি পদই শূন্য রয়েছে। ১৭৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এই উপজেলায়। এ ছাড়া আরও রয়েছে ৩০টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দেখভাল করে থাকেন টিও। কিন্তু অনেক দিন ধরে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় ভেঙে পড়েছে এই উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম। 

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে সুনসান নীরবতা। বেশির ভাগ কক্ষে ঝুলছে তালা। কয়েকটি কক্ষ খোলা থাকলেও নেই কোনো কর্মকর্তা ও লোকজন। টিও মোহাম্মদ ফেরদৌস অনুপস্থিত। তাঁর অনুপস্থিতিতে দাপ্তরিক কাজ সারছেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিও) মো. আইয়ুব আলী। মাঠ পর্যায়ে দেখভাল করছেন এটিও মো. আব্দুল গফুর খান। মূলত এই দুজন কর্মকর্তা দিয়েই চলছে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম। 

বাংলাদেশ সহকারী শিক্ষক সমাজ উপজেলা শাখার সভাপতি ও ডি-বালিয়ামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. ইসমাইল হোসেন মোহন বলেন, ‘এমনিতেই বিদ্যালয়গুলো এবং শিক্ষকদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা ছয়টি এটিও পদের স্থলে দুজন কর্মরত। এরপর টিও স্যার অনেক দিন ধরে কর্মস্থলে না থাকায় বিদ্যালয়গুলো যথাযথ দেখভাল করা হচ্ছে না। ফলে প্রাথমিক শিক্ষা যেন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে।’ 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক ও জেজেকেএম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুর রহমান খান বলেন, ‘টিও স্যার অনুপস্থিত থাকায় বিদ্যালয় মেরামতের জন্য সরকারি বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করা যাচ্ছে না। দাপ্তরিক কার্যক্রম বাস্তবায়নে সৃষ্টি হয়েছে নানাবিধ জটিলতা। টিও পদ শূন্য রেখে প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার কোনোভাবেই চলতে পারে না। কাজেই দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখা জরুরি।’ 

উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিও) মো. আইয়ুব আলী বলেন, ‘টিও পদের দায়িত্বভার হস্তান্তর করেননি ফেরদৌস স্যার। এমনিতেই জনবলের সংকট, তার মধ্যে স্যার নেই। তিনি অনেক দিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় দাপ্তরিক কাজ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নিয়মানুযায়ী বিদ্যালয় পরিদর্শন করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিয়েছে। মাত্র দুজন এটিও দিয়ে প্রাথমিকের শিক্ষা বিভাগ চালানো খুবই কষ্টকর। জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টি সমাধান হওয়া দরকার।’ 

সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশীদ বলেন, ‘ইতিমধ্যে কর্মস্থলে টিও মোহাম্মদ ফেরদৌসের অনুপস্থিতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শুনেছি পদোন্নতি এবং যোগদানের বিষয়ে দুই দিনের ব্যবধানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় দুই প্রজ্ঞাপন জারি করায় শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌস উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেছেন। তবে ওই বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত কাগজপত্র পাইনি। বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ 

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌসউপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম জামাল আব্দুন নাছের বাবুল বলেন, ‘কর্মস্থলে শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌসের অনুপস্থিতির বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ইউএনওকে বলা হয়েছে। আশা রাখি ইতিমধ্যে তিনি পদক্ষেপ নিয়েছেন।’ 

ইউএনও মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে কর্মস্থলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌস অনুপস্থিত রয়েছেন। এতে বিভাগীয় কার্যক্রম চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা রাখি, শিগগিরই সমাধান হয়ে যাবে।’ 

এ বিষয়ে জানতে ইসলামপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে একাধিকবার মোবাইল ফোনে চেষ্টা করা হয়। তিনি কল না ধরায় কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

আজ শনিবার বিকেলে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল লতিফ মজুমদার মোবাইল ফোনে বলেন, ‘প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী যোগদানের নির্ধারিত তারিখ পেরিয়ে গেলেও এখনো এই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌস যোগদান করেননি। কী কারণে যোগদান করছেন না, সেটাও তিনি আমাদেরকে জানাননি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কৃষকের ঘরে ১২ ফুট লম্বা গাঁজার গাছ, আটক

বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
দিনাজপুরের বিরামপুরে গাঁজার গাছসহ আটক ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দিনাজপুরের বিরামপুরে গাঁজার গাছসহ আটক ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় ১২ ফুট উচ্চতার একটি গাঁজার গাছসহ এক কৃষককে আটক করেছে পুলিশ। পরে আজ শুক্রবার তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

বিরামপুর থানার জ্যেষ্ঠ উপপরিদর্শক (এসআই) সাজিদুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জোতবাণী ইউনিয়নের চাকুল গ্রামে অভিযান চালানো হয়। এ সময় মৃত দছির উদ্দিনের ছেলে আজিজার রহমানের (৪৫) বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে গাঁজার গাছটি জব্দ করা হয়।

পরে আজিজার রহমানকে আটক করা হয়। পুলিশ জানায়, গাছটির উচ্চতা প্রায় ১২ ফুট, ওজন ১০ কেজি এবং আনুমানিক মূল্য এক লাখ টাকা।

এ বিষয়ে বিরামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। আজ আসামিকে দিনাজপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিস্ফোরক মামলায় আওয়ামী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জেলে

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
গ্রেপ্তার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার চাটমোহরে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে চাটমোহর থানার পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ও রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ শুক্রবার দুপুরে বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা (৭০) এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও পৌর সদরের মধ্য শালিখা মহল্লার বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন (৫৪)।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের বামনগ্রাম নিজ বাড়ি থেকে আওয়ামী লীগ নেতা নবীর উদ্দিন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ছাড়া একই দিন রাতে মধ্য শালিখা মহল্লার নিজ বাড়ি থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই দুজনের বিরুদ্ধে চাটমোহর থানায় বিস্ফোরক মামলা রয়েছে। আজ সকালে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রামেকে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। অনেকের ক্ষেত্রে ভর্তি রাখার প্রয়োজন থাকলেও সেটি সম্ভব হতো না। কিছু কিছু রোগী রাখা হতো মেডিসিন বিভাগেই।

এবার প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর হাসপাতালটিতে পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। এ ওয়ার্ডে ২৫টি শয্যা আছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য সাতটি, শিশু-কিশোরদের জন্য পাঁচটি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য তিনটি শয্যা সংরক্ষিত। এ ছাড়া রোগীদের থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার সৃষ্টি করা হয়েছে এ ওয়ার্ডে।

রামেক হাসপাতালের সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদের উদ্যোগে হাসপাতালের পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই ওয়ার্ড করা হয়েছে। গত বুধবার তিনি এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধিদল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। তারা মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমবে। এ ছাড়া মেডিকেল কলেজের অ্যাক্রেডিটেশনেও সমস্যা হতে পারে। তখন এ কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে যাওয়ার সুযোগ কমবে। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এই ওয়ার্ডটি জরুরি ছিল।

তাই রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে এই ওয়ার্ড চালু করার জন্য হাসপাতাল পরিচালকের কাছে অনুরোধ করা হয়। সবকিছু শুনে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন। ওয়ার্ডে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এ হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটিই অবাক করার বিষয়। প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও চিকিৎসা নিতে পারবে।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহাম্মদ রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি। এরপর তিনি হাসপাতাল ও রোগীদের কল্যাণে নতুন অনেক উদ্যোগ নিয়ে বাস্তবায়ন করেছেন। হাসপাতালকে করে তুলেছেন রোগীবান্ধব। বাড়িয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার মান। বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

মানসিক রোগীদের জন্য নতুন ওয়ার্ড চালুর আগে গেল ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য হাসপাতালে বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করেন শামীম আহাম্মদ। এরপর এখন পর্যন্ত হাসপাতালে একজন সাপে কাটা রোগীরও মৃত্যু হয়নি। আগে প্রায় প্রতিদিনই সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হতো এ হাসপাতালে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মান্নাকে ৩৮ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ পরিশোধে ‘কলব্যাক নোটিশ’

শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২০
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ফাইল ছবি
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ফাইল ছবি

আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা খেলাপি ঋণ পরিশোধে ‘কলব্যাক নোটিশ’ জারি করেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, বগুড়া শাখা। গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এ নোটিশ ইস্যু করা হয়।

নোটিশে বলা হয়েছে, ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করা হলে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। ব্যাংকের নোটিশ অনুযায়ী, ২০১০ সালে ২২ কোটি টাকার বিনিয়োগ অনুমোদন করা হলেও মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বর্তমানে মোট বকেয়া দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। নোটিশে বলা হয়, আফাকু কোল্ড স্টোরেজ একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও মান্না ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ পরিশোধ করেননি। বারবার নোটিশ দেওয়া হলেও টাকা পরিশোধের কোনো চেষ্টাও করেননি তিনি।

গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এই নোটিশ ইস্যু করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এই নোটিশ ইস্যু করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া শাখাপ্রধান তৌহিদ রেজা স্বাক্ষরিত নোটিশে আরও বলা হয়, ‘মঞ্জুরিপত্রের নিয়মানুযায়ী প্রতিটি ডিলে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে কিস্তির টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও আপনাকে/আপনাদেরকে মৌখিকভাবে, ব্যক্তিগতভাবে ও মোবাইল ফোনে বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও আপনি/আপনারা তা পরিশোধ করেননি। ইতিপূর্বে আপনাকে লিখিতভাবে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে, তবুও বিনিয়োগের দায় পরিশোধ করেননি। আপনার/আপনাদের লেনদেনের পরিস্থিতি দেখে আমাদের কাছে অনুমিত হচ্ছে যে, আপনার/আপনাদের সঙ্গে আমাদের আর ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অতএব, আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বিনিয়োগের সমুদয় দায় ৩৮৪.৭৬ মিলিয়ন টাকা পরিশোধ করে হিসাবসমূহ নিষ্পত্তি করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকবে।’

এদিকে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসন থেকে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। কিন্তু গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) তৃতীয় অধ্যায় (নির্বাচন) ১২(১)(ঠ) ধারা অনুসারে কোনো ঋণগ্রহীতা খেলাপি হলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য বিবেচিত হবেন।

এ বিষয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ আছে, এটা সঠিক। তবে চিঠির বিষয়ে এখনো কিছু জানি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত