Ajker Patrika

হবিগঞ্জে দুই পক্ষের তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত অনেকে, আটক ১৪ 

হবিগঞ্জ ও নবীগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯: ৩৯
হবিগঞ্জে দুই পক্ষের তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত অনেকে, আটক ১৪ 

নবীগঞ্জে দুই গ্রুপের মধ্যে তিন ঘণ্টাব্যাপী ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অনেকে আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে মার্কেটসহ বিভিন্ন দোকানপাট। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের ১৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

এ ঘটনায় নবীগঞ্জ শহরে থমথমে পরিস্থিতি বরাজ করছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ ও র‍্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। 

আটককৃতরা হলেন ইনাতাবাদ গ্রামের নাসির মিয়া (২৫), একই গ্রামের আবু জাহেদ (৩৪), ফজল মিয়া (৩৮), ছুনু মিয়া (৩৪), জুবেদ মিয়া (২৪), বিল্লাল মিয়া (২৩), রাজু মিয়া (২৪), দিলদার (২৬), খালেদ মিয়া (২৮), সোলেমান (৩৫), মইন উদ্দিন (২১), মো. মাফিন উদ্দিন (২০) ও আনমুনু গ্রামের তৌহিদ মিয়া (৩৫) ও অন্তর মিয়া (২৬)। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুর্শি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও এনাতাবাদ গ্রামের খালেদুর রহমান খালেদের লোকজন এবং পৌর কাউন্সিলর আনমনু গ্রামের নানু মিয়ার লোকজনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার ও কলেজছাত্র তাহসিন হত্যার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এ ঘটনার জের ধরে সন্ধ্যায় আনমনু গ্রামের লোকজন ইউপি চেয়ারম্যান খালেদুর রহমানের মালিকানাধীন মার্কেট রাজা কমপ্লেক্স ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান খালেদের অনুসারী ও এনাতাবাদ গ্রামের লোকজন রাজা কমপ্লেক্সে জড়ো হন। পরে এনাতাবাদ ও আনমনু গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে উভয় পক্ষ। 

সংঘর্ষে পুলিশসহ দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। ছবি: আজকের পত্রিকাপুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, এ সময় ভাঙচুর করা হয় রাজা কমপ্লেক্সসহ কয়েকটি মার্কেট ও ২০টি দোকানপাট। অগ্নিসংযোগ করা হয় একটি মোটরসাইকেলে। নবীগঞ্জ থানার পুলিশ দফায় দফায় টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে। টানা তিন ঘণ্টা চলে সংঘর্ষ। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাস অনুপ, সার্কেল এএসপি আবুল খায়ের, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন দেলোয়ারসহ বিভিন্ন জনপ্রতিনিধির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অনেকে আহত হন। আহতদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। 

কুর্শি ইউপি চেয়ারম্যান খালেদুর রহমান খালেদ বলেন, ‘কলেজছাত্র তাহসিনকে হত্যার আগে প্রথমে আমার মার্কেটে মারধর করা হয়। পুলিশকে সিসিটিভি ফুটেজ দিতে চাইলে আনমনুর লোকজন আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। পরে আনমনু গ্রামের কিছু লোক ক্যামেরা ফুটেজের হার্ডড্রাইভ ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন এ ঘটনা প্রতিহত করে। পরে আমার মালিকানাধীন মার্কেট রাজা কমপ্লেক্স তারা ভাঙচুর করে।’ 

আনমনু গ্রামের লোকেরা জানান, চেয়ারম্যান খালেদ আনমনু গ্রামকে জড়িয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন এবং উসকানিমূলক কথাবার্তা বলেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করেন আনমনু গ্রামের লোকজন। এ নিয়ে পরে সংঘর্ষ হয়। 

আনমনু গ্রামের পৌর কাউন্সিলর নানু মিয়া বলেন, চেয়ারম্যান জানাজার নামাজে তাঁর গ্রামের লোকজনকে উদ্দেশ্য করে গালাগালি করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। 

দুই পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকটি মার্কেট ও অনেক দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকাএ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. মাসুক আলী বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৪৫ রাউন্ড টিয়ারশেল ও ১৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। এ ঘটনায় ওসি তদন্ত গোলাম মুর্শিদ, এসআই পরিমলসহ সাত পুলিশ সদস্য আহত হন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে।’ 

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাশ অনুপ বলেন, ‘আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অফিস দখল নিয়ে জুলাই রেভেলসের দুজনকে জখম

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
জুলাই রেভেলস সংগঠনের সদস্যের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. মাসুম ও মো. ফাহিম খান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
জুলাই রেভেলস সংগঠনের সদস্যের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. মাসুম ও মো. ফাহিম খান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

রাজধানীর উত্তরায় ‘অফিস দখল’কে কেন্দ্র করে জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় মো. মাসুম ও ফাহিম খান নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দক্ষিণখান ফায়দাবাদ এলাকা থেকে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে শনিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের পাবলিক কলেজ-সংলগ্ন জুলাই রেভেলসের অফিসে সংগঠনটির প্রস্তাবিত সহসংগঠক ইউসুফ আলী রেদওয়ান ও সদস্য মো. ইয়াসিনকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শনিবার রাতেই ইউসুফ আলী রেদওয়ান বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।

এ বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, জুলাই রেভেলসের সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় দক্ষিণখান থেকে মাসুম ও ফাহিম নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং এজাহারের অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জুলাই রেভেলসের সদস্যদের ওপর হামলার ‘মূল হোতা’ উত্তরা পূর্ব থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও শীর্ষ সন্ত্রাসী আলতাফ হোসেন ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ। নেপথ্যে রয়েছে, জুলাই রেভেলস অফিসটি দখল। জানা গেছে, উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের জুলাই রেভেলসের বর্তমান অফিসটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে উত্তরা পূর্ব থানা শ্রমিক লীগের অফিস ছিল। সেটি নিয়ন্ত্রণ করত সন্ত্রাসী আলতাফ ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ। তিনি দক্ষিণখানের ফায়দাবাদ এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগসহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে।

৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আলতাফ ও তাঁর নেতা-কর্মীরা পালিয়ে যান। এই সুযোগে শ্রমিক লীগের অফিসটি দখল করে ইউসুফ আলী রেদওয়ান ও তাঁর সংগঠনের লোকজন। পরে ওই অফিসে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি টাঙিয়ে জুলাই রেভেলস নামের একটি সংগঠন করা হয়।

জানা যায়, সম্প্রতি আলতাফ ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ উত্তরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আঁতাত করে প্রকাশ্যে আসেন। সেই সঙ্গে শ্রমিক লীগের অফিসটি দখল করে গড়া জুলাই রেভেলসের অফিসটি খালি করে দিতে বলেন। কিন্তু রেদওয়ান ও তাঁর সংগঠনের লোকজন এতে নারাজ ছিল; যা নিয়ে আলতাফ ও রেদওয়ানের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। এর জের ধরেই আলতাফ ও তাঁর সহযোগীরা রেদওয়ানকে কুপিয়ে জখম করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোর্শেদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্টের আগে এক কক্ষের অফিসটি ছিল শ্রমিক লীগের। শ্রমিক লীগের সেই অফিস দখল করে জুলাই রেভেলসের কার্যালয় করা হয়েছে। এদিকে শ্রমিক লীগের আলতাফ বিএনপির লোকজনের সঙ্গে মিল দিয়ে প্রকাশ্যে এসে ওই অফিস ফেরত চেয়েছিল। কিন্তু জুলাই রেভেলসের সদস্যরা সেটি না দেওয়ায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।’

ওসি আরও জানান, আহত রেদওয়ান বাদী হয়ে আলতাফকে প্রধান আসামি করে ১১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া মাসুম ও ফাহিমও এজাহারভুক্ত আসামি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সরকারি সার অবৈধভাবে বিক্রি, চুয়াডাঙ্গায় ডিলারকে জরিমানা

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি­
জব্দ করা সার। ছবি: আজকের পত্রিকা
জব্দ করা সার। ছবি: আজকের পত্রিকা

সরকারি সার অবৈধভাবে বিক্রির অপরাধে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় এক ডিলারকে ৫০ হাজার টাকা ও ক্রেতাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম।

জানা গেছে, সদর উপজেলার পাঁচমাইল এলাকার এক বিএডিসির সারের ডিলার অবৈধ উপায়ে আলমডাঙ্গার বলেশ্বরপুর এলাকার তাওহীদ হোসেন নামের এক ব্যক্তির কাছে ডিএপি ১১ বস্তা ও এমওপি ৯ বস্তা সার বিক্রি করেন।

বিষয়টি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পেরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আমিনুল ইসলাম দ্রুত অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁদের জরিমানা করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় বিএডিসি সার ডিলার মডার্ন অ্যাগ্রোর স্বত্বাধিকারী ইকবাল বিশ্বাসকে নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে অবৈধ উপায়ে সার কেনার অপরাধে ক্রেতা তাওহীদ হোসেনকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় সহযোগিতা করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিছুর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরিশালে বিএনপির ২ শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বিএনপি নেত্রী নাসরিনের ওপর সরোয়ার অনুসারীদের হামলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিএনপি নেত্রী নাসরিনের ওপর সরোয়ার অনুসারীদের হামলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশালে শহীদ বেদিতে ফুল দেওয়া নিয়ে হামলার ঘটনায় ২ শতাধিক বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে তিনি কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দেন। এর আগে দুপুরে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে হামলার শিকার হন নাসরিন।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন উল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ফুল দেওয়া নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। সেই ইস্যুতে বিএনপির নেত্রী নাসরিন থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

জানা গেছে, অভিযোগে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০ জনের কথা বলা হয়েছে। এদের অধিকাংশই ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির নেতা-কর্মী।

জানতে চাইলে বিএনপির নেত্রী আফরোজা খানম নাসরিন জানান, তাঁর ওপর যারা হামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে তিনি রোববার রাত ৯টার দিকে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে তাদের নাম তিনি প্রকাশও করেছেন।

নাসরিনের অভিযোগ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বরিশাল-৫ (মহানগর-সদর) আসনের মনোনীত প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ারের অনুসারীরা তাঁর ওপর হামলা করেছে।

এ ব্যাপারে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক জানান, রোববার দুপুরে ফুল দিয়ে তাঁরা যখন যাচ্ছেন, তখন বাইরে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নাসরিনের ঝামেলা হয়েছে। তবে কী হয়েছে জানেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ৩২
ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানের শ্যালক শিপু, স্ত্রী সামিয়া ও বান্ধবী মারিয়া। ছবি: সংগৃহীত
ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানের শ্যালক শিপু, স্ত্রী সামিয়া ও বান্ধবী মারিয়া। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রীসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক বার্তায় জানিয়েছে পুলিশের বিশেষ এই ইউনিট।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ফয়সালের স্ত্রী সামিয়া, তাঁর শ্যালক শিপু ও বান্ধবী মারিয়া।

র‍্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক ইন্তেখাব চৌধুরী জানান, সামিয়া ও শিপুকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এবং মারিয়াকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, গত শুক্রবার হাদিকে গুলির ঘটনার আগে ও পরে ফয়সালের সঙ্গে তাঁদের ফোনে ঘন ঘন যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে।

এ নিয়ে এ ঘটনায় র‍্যাব মোট চারজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে। এর আগে গুলির সময় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশ তিন দিনের রিমান্ডে নেয়।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার বিজয়নগর এলাকায় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে করা গুলিতে গুরুতর আহত হন রিকশায় থাকা ওসমান হাদি। তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে, হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে। আগামীকাল সোমবার দুপুরে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হবে।

আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাফর, ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির মধ্যে এক জরুরি কল কনফারেন্সে এ সিদ্ধান্ত নেন। পরে প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত দুদিন ধরে ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সরকার সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেছে। আজ এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের পরামর্শে ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বর্তমানে ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে।

আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাকসিডেন্ট ইমার্জেন্সি বিভাগে তাঁর চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ওসমান হাদির চিকিৎসাসংক্রান্ত সব ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হবে। তাঁর চিকিৎসাপ্রক্রিয়া সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন ড. ইউনূস।

ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া ও প্রার্থনা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত