Ajker Patrika

ভাতার আশ্বাসে হত্যাচেষ্টা মামলা, বাদী চেনেন না কাউকে

গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর থানা। ছবি: সংগৃহীত
গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর থানা। ছবি: সংগৃহীত

‘আন্দোলনের সময় আমার ফাইভে পড়া ছেলের বুকের নিচে গুলি লাগছে। হাসপাতালে চিকিৎসা করাইছি। কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পাইনি। এই ঘটনায় হত্যাচেষ্টার মামলায় আমি তো কারও নাম দেই নাই। এতগুলো যে আসামি এদের কাউকে চিনিও না। এখন মামলাটা কীভাবে খালাস হবে সেই ধান্দা আমার। মানুষের হয়রানি করলে খারাপ হয়, অভিশাপ দেয়, আমি পাপ কইরা লাইছি ভাই।’ এসব কথা বলেন গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় হামলা চালিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা এক মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলম।

জাহাঙ্গীর আলম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় তাঁর ছেলে মমিনুল ইসলাম গুলিতে আহত হওয়ার ঘটনায় গত ১ অক্টোবর গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। তার গ্রামের বাড়ি বগুড়ায়। বর্তমানে গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর থানা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থেকে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। মমিনুল কাশিমপুর এলাকায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

দীর্ঘশ্বাস ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ছেলের বুকের নিচে গুলি লাগছে। নানান জনের কথা শুনে আমি শওকত চেয়ারম্যানের (গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি) কাছে গিয়েছিলাম। সে আমারে কইল ‘থানায় একটি জিডি কর, জিডি করলে ‘২৪ এর মুক্তিযোদ্ধার ভাতা পাবে, সরকারি সাহায্য পাবে’। পরে জিডি করার জন্য চেয়ারম্যানের লোক সাইফুল ইসলাম বলার পর একটি কাগজের স্বাক্ষর দিয়েছিলাম। আমি তো লেখাপড়া জানি না। সেখানে কী লেখা ছিল, তা আমার কিছুই জানা নাই। মামলাটা আমি ইচ্ছা কইরা করি নাই। আমি না বুঝে করছি।

জাহাঙ্গীর আলম আক্ষেপ করে বলেন, আমি যার বাসায় ছয়-সাত বছর ভাড়া থাকলাম, তাঁর ভগ্নিপতি, তাঁর ভাইরে আমার মামলায় আসামি দিছে। অথচ আমি এর কিছুই জানি না। আমি তো কারও নাম দেই নাই বা আমি এতগুলো যে নামের আসামি এদের কাউকে চিনিও না। এখন মামলাটা কীভাবে খালাস হবে, সেই ধান্দা আমার। মানুষের হয়রানি করলে খারাপ হয়, অভিশাপ দেয়, আমি পাপ কইরা লাইছি ভাই।

হত্যাচেষ্টা মামলার বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নিতে চান? জানতে চাইলে রিকশাচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি চাই একটাও মানুষ যেন কষ্ট না পায়, আমাকেও যেন অভিশাপ না দেয়। আমি চাই মামলাডা শেষ কইরা দিতে। মামলাডা কীভাবে শেষ করবার পারুম আপনি আমারে একটা পথ দেখাই দেন।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সময় গত ৪ আগস্ট বাদীর ছেলে বুকের নিচে গুলিবিদ্ধ হয়। এ ঘটনায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খানসহ ১০২ জনের নামে ও ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। গাজীপুর মহানগর বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে মামলায় ১০ জন বিএনপি নেতাকে আসামি করা হয়েছে।

আসামি হওয়া বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা হলেন তারেক জিয়া মুক্তি পরিষদের গাজীপুর মহানগর কমিটির সভাপতি আবু সাঈদ মিয়া, মহানগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুব আলম মহি, একই এলাকার বাসিন্দা গাজীপুর মহানগর বিএনপির সদস্য মো. রকিবুল ইসলাম রকি, বিএনপির সাবেক ছাত্রনেতা মো. আসাদ মণ্ডল, মহানগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির প্রচার সম্পাদক মো. ইউসুফ আলী খান, মহানগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সহসভাপতি হানিফ মোল্লা, মহানগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের মো. সোহেল ইসলাম, সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. আয়নাল মিয়া ও তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে সাবেক ছাত্রদল নেতা পারভেজ আহমেদ পবন। মামলা দায়েরের পর কয়েকজন জামিন নিলেও অনেকে এখনো পলাতক রয়েছেন।

এ মামলার আসামি বিএনপি নেতা আবু সাঈদ মিয়া বলেন, আমি মহানগর বিএনপির সম্পাদক রনির ভক্ত হওয়ায় শওকত সরকারের সহযোগী সাইফুল ইসলাম আমাকে হয়রানিমূলকভাবে আসামি করেছে।

এই মামলার অপর আসামি ও বিএনপি নেতা মো. মাহবুব আলম মহি জানান, মঞ্জুরুল করিম রনিকে কাশিমপুর এলাকায় একটি সভা করতে দেওয়ার কারণে সভাপতি শওকত সরকার আমাদের মোট ১০ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে মিথ্যা মামলায় আসামি করেছেন।

সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. আয়নাল মিয়া জানান, সাবেক বিএনপির প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক মান্নান ও তাঁর ছেলে রনির পক্ষে কাজ করার কারণে আমাকে এবং আমার কলেজ পড়ুয়া ছেলেকে এই মামলায় হয়রানিমূলকভাবে আসামি করা হয়েছে। আমরা ন্যায় বিচার চাই।

এসব অভিযোগের বিষয়ে সাইফুল ইসলাম সরকার বলেন, আজকে পর্যন্ত জাহাঙ্গীর আলম নামে কাউকে আমি চিনি না। এই নামে কেউ আমার কাছে আসেনি। আমি কারও কোনো স্বাক্ষর নেইনি। মামলা করা হয় থানায়। মামলার বিষয়ে আপনি থানায় খবর নেন।

অভিযোগের বিষয়ে গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার বলেন, ‘আমি এ ধরনের কোনো মামলার ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নই। আমার কাছে কেউ আসেনি এবং আমি কাউকে কোনো মামলা করার জন্য প্ররোচিত করিনি। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি সাইফুল ইসলাম সরকারকে চিনি, তিনি মাঝেমধ্যে আমার কাছে আসেন।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে শওকত হোসেন বলেন, মামলায় বিএনপির কেউ আসামি হয়েছে কিনা আমি জানি না। মামলায় যারা আসামি হয়েছে, তাঁদের মধ্যে প্রকৃত বিএনপির কেউ যদি থাকে এবং তাঁরা যদি আমার কাছে আসে, তাহলে তাঁদের আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি, খোঁজ নিব। বাদীর অজ্ঞাতে অথবা তাঁকে না জানিয়ে যদি কোনো ব্যক্তিকে আসামি করা হয়ে সে বিষয়টি দেখার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে বলব। এ ছাড়া এ মামলায় নিরীহ কোনো ব্যক্তি হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখব।

নাজমুল করিম আরও বলেন, বাদী চাইলে কোর্টে একটি অ্যাফিডেভিট দিয়ে তিনি বক্তব্য দিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আমরা আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

রাবি প্রতিনিধি 
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের স্বাগত মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের স্বাগত মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা

ছাত্রদল আপনার মতো ‘ফুটেজখোর’ সালাহউদ্দিন আম্মারকে মাত্র ৩০ মিনিটের ব্যবধানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দিতে সক্ষম বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি শাকিলুর রহমান সোহাগ।

শাকিলুর রহমান আরও বলেন, কয়েক দিন ধরে রাকসুর নামধারী কিছু নেতা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিভিন্ন ডিনের কার্যালয়, এমনকি উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরের দপ্তরে তালা ঝুলিয়ে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে স্বাগতমিছিল শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এদিকে রাকসু জিএস সালাহউদ্দিন আম্মারের উদ্দেশে ছাত্রদল নেতার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে এই বক্তব্যের প্রতিবাদে সালাহউদ্দিন আম্মার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দেন।

সমাবেশে ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, ২৫ ডিসেম্বরের পর ক্যাম্পাসে কোনো শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে প্রবেশ করবেন না, সবার সমান নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এরপর যারা মব সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করবে, তাদের শক্ত হাতে প্রতিহত করা হবে।

সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, বাংলার বাতাসে যে ষড়যন্ত্রের গন্ধ ছিল, তা উপেক্ষা করে বাংলার গণমানুষের শক্তির ওপর ভর করে অনেক বছর পর তারেক রহমান দেশে ফিরছেন। দেশের মানুষের মঙ্গল, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যেই তাঁর এই প্রত্যাবর্তন।

সুলতান আহমেদ আরও বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরা মানেই অপসংস্কৃতি ও মব কালচারের অবসান। এটি অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েমের স্বপ্নকারীদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের বিজয় এবং দেশে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সূচনা। এ ছাড়া ২৫ ডিসেম্বরের পর যারা মব সৃষ্টি করবে, তাদের ধরে হাত-পা বেঁধে প্রশাসনের কাছে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল মিঠু বলেন, দেশনায়ক তারেক রহমান ষড়যন্ত্রের আঘাতে পঙ্গুত্ববরণ করে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যেতে বাধ্য হন। কিন্তু ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার পরিকল্পিতভাবে তাঁকে দেশে ফিরতে দেয়নি। চাইলে তিনি নীরবে প্রবাসে জীবন কাটাতে পারতেন, কিন্তু একটি ছোট কেবিনে বসে নিরলসভাবে তিনি সারা দেশে জাতীয়তাবাদী চেতনার জাগরণ ঘটিয়েছেন। এই ধারাবাহিক আন্দোলনের ফলেই ৫ আগস্টের বিপ্লব সম্ভব হয়েছে।

এর আগে মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ছাত্রদলের নিজস্ব স্ট্যান্ডে এসে মিলিত হয়। এ সময় অন্যদের মাঝে শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সরদার জহুরুলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নেত্রকোনায় অটোস্ট্যান্ডে যাত্রী ওঠানামা নিয়ে সংঘর্ষে যুবক নিহত

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
জিহাদুল ইসলাম । ছবি: আজকের পত্রিকা
জিহাদুল ইসলাম । ছবি: আজকের পত্রিকা

নেত্রকোনার পূর্বধলায় অটোস্ট্যান্ডে যাত্রী ওঠানামাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জিহাদুল ইসলাম (৩২) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন।

আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বেলা ৩টার দিকে পূর্বধলা উপজেলায় চৌরাস্তা মোড়ে ইলাসপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজল কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহত জিহাদুল ইসলাম পূর্বধলার সদর ইউনিয়নের ইলাসপুর গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে। তিনি পেশায় ট্রাকচালক। তাঁর দুটি সন্তান রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চৌরাস্তা অটোস্ট্যান্ডে যাত্রী ওঠানামা নিয়ে দুই অটোচালকের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। জিহাদুল বিষয়টি সমাধান করতে গেলে অটোচালক নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে তাঁর ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়। স্থানীয় লোকজন বিবাদ থামিয়ে উভয় পক্ষকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।

কিছুক্ষণ পর অটোচালক নিজাম উদ্দিন দেশীয় অস্ত্রসহ তাঁর লোকজন নিয়ে এসে জিহাদুলের ওপর হামলা করেন। এ সময় জিহাদুলের পক্ষের লোকজনও তাঁদের প্রতিহত করেন। সংঘর্ষের একপর্যায়ে নিজাম উদ্দিন শাবল দিয়ে জিহাদুলকে আঘাত করে গুরুতর জখম করেন।

গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা জিহাদুলকে উদ্ধার করে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক সোহেল রানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জিহাদুলকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজল কুমার সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। তিনি বলেন, অটোরিকশায় যাত্রী ওঠানামা ও ভাড়াকে কেন্দ্র করে অটোচালক নিজাম উদ্দিন ও জিহাদুলের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে এ সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে তাঁদের মধ্যে আগে থেকেই জমি-সংক্রান্ত ঝামেলা রয়েছে। জিহাদুলের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দিদারুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পাশাপাশি সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। নিহত ব্যক্তির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বাবার শেষকৃত্যে অংশ নিলেন আওয়ামী লীগ নেতা প্রদ্যুৎ কুমার

দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি  
প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বাবার শেষকৃত্যে অংশ নেন আওয়ামী লীগ নেতা প্রদ্যুৎ কুমার সরকার। ছবি: আজকের পত্রিকা
প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বাবার শেষকৃত্যে অংশ নেন আওয়ামী লীগ নেতা প্রদ্যুৎ কুমার সরকার। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর দুর্গাপুরে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বাবার শেষকৃত্যে অংশ নিয়েছেন প্রদ্যুৎ কুমার সরকার নামের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের এক নেতা। আজ সোমবার দুপুরে কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে তিনি উপজেলার বেলঘরিয়া গ্রামে বাবার শেষকৃত্যে অংশ নেন।

প্রদ্যুৎ কুমার সরকার রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক। তাঁর বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বেলঘরিয়া গ্রামে।

গতকাল রোববার রাতে বার্ধক্যজনিত কারণে প্রদ্যুৎ কুমারের বাবা পল্লিচিকিৎসক গোপাল চন্দ্র সরকার মারা যান। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আজ প্যারোলে মুক্তি পান প্রদ্যুৎ কুমার। বেলা প্রায় ২টা ৩০ মিনিটে কারাগার থেকে মুক্তি নিয়ে বেলা ৩টার দিকে তিনি নিজ গ্রামে আসেন। পরে পুলিশি প্রহরায় বাড়ির পাশে বাবার দাহকর্মে অংশ নেন তিনি।

প্রদ্যুৎ কুমারের ছোট ভাই সুকেশ কুমার জানান, বাবার মৃত্যুর পর প্যারোলে মুক্তির জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর লিখিত আবেদন করলে বেলা

১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা প্যারোলে মুক্তি পান তাঁর ভাই।

জানা গেছে, এ বছরের ২ সেপ্টেম্বর নগরীর ভাড়া বাসা থেকে প্রদ্যুৎ কুমারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে রাজশাহী নগরীর শাহমখদুম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়। বর্তমানে তিনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রয়েছেন।

দুর্গাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা থানা থেকে অংশ নিয়েছিলাম। বিস্তারিত তথ্য জেলা পুলিশের হাতে ছিল। তারাই সব বলতে পারবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করায় স্ত্রীর কারাদণ্ড

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৩
মানিকগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। ছবি: সংগৃহীত
মানিকগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। ছবি: সংগৃহীত

স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগে বাদীকে এক দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন মানিকগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। গতকাল রোববার দুপুরে আদালতের বিচারক মামুন হাসান খান এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত নারী হলেন শারমিন আক্তার। বাবার বাড়ি সাটুরিয়া উপজেলার তেবাড়িয়া গ্রামে। পার্শ্ববর্তী জেলা টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার মানরা গ্রামের শহীদ হোসেনের সাবেক স্ত্রী।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ নভেম্বর শারমিন আক্তার ও শহীদ হোসেনের তালাক সম্পন্ন হয়। কাবিনের অর্থ ও এক সন্তানের ভরণপোষণ বাবদ শারমিনকে ১৪ লাখ টাকা দেন শহীদ হোসেন। এর দুই দিন পর (১৯ নভেম্বর) তালাকের বিষয়টি গোপন করে সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক দাবির অভিযোগে মামলা করেন শারমিন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আসামি শহীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।

গতকাল রোববার দুপুরে আসামি শহীদ ও বাদী শারমিন আদালতে হাজির হন। এ সময় দুই পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে মামলাটি মিথ্যা হিসেবে প্রমাণিত হয়। এরপর মামলা থেকে আসামিকে অব্যাহতি দেন। পাশাপাশি মিথ্যা মামলা করার দায়ে শারমিনকে এক দিনের কারাদণ্ড দেন বিচারক মামুন হাসান খান।

খালাসপ্রাপ্ত শহীদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, দাম্পত্যকলহের কারণে সংসার করা সম্ভব হয়নি। পরে স্ত্রীর সম্মতিতে তাঁদের মধ্যে তালাক হয়ে যায় এবং আর্থিক দেনা-পাওনা পরিশোধ করা হয়। এরপরও তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়।

আদালতে দেওয়া বক্তব্যে বাদী শারমিন আক্তার দাবি করেন, তিনি কাবিনের টাকা পেয়েছেন। তবে আগে চাকরি বাবদ শহীদ তাঁর কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। এ কারণে তিনি মামলা করেছেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আজিজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করায় আদালতের বিচারক ওই নারীকে এক দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশে আসামি শারমিনকে কারাগারে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত