Ajker Patrika

করোনায় বই ব্যবসায় মন্দা, পেশা পাল্টানোর হিড়িক

আনিসুল হক জুয়েল, দিনাজপুর
করোনায় বই ব্যবসায় মন্দা, পেশা পাল্টানোর হিড়িক

দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ের জমজমাট ব্যবসা। একনামেই চেনে সবাই। মুন্সিপাড়ায় বই কিনতে গেলে যে কয়টা দোকানে সব রকম বই পাওয়া যায় তার মধ্যে সোবহানিয়া লাইব্রেরি অন্যতম। দাদার আমল থেকে সুনামের সঙ্গেই চলছিল ব্যবসা। পরিধি বাড়াতে শহরের দিনাজপুর সরকারি কলেজ মোড়ে লাইব্রেরির শাখা করার পাশাপাশি ব্যবসায় নান্দনিকতা আনতে শুরু করেন দৃষ্টিনন্দন কফি শপ। কলেজ মোড়ের সোবহানিয়া লাইব্রেরির শাখাটি ও কফি শপ ছাত্র-ছাত্রীদের কোলাহলে মুখরিত থাকত সব সময়। কিন্তু করোনার ধাক্কায় ব্যবসায় ভাটা পড়ে। ব্যাংকের ঋণ আর সুদ সামলাতে না পেরে ব্যবসা বন্ধ করে সপরিবারে এলাকা ছেড়েছেন সোবহানিয়া লাইব্রেরির কর্ণধার সিরাজ পাটোয়ারি। দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় লাপাত্তা রয়েছেন তিনি। ব্যাংক তাঁর বকেয়া আদায়ে লাইব্রেরিসহ সকল সম্পদ নিলামে তুলেছেন। 

জমজমাট ব্যবসায় হঠাৎ ছন্দপতন। যে ব্যবসায় দোকানে সকাল থেকে রাত ১০টা অবধি ভিড় লেগেই থাকত, সেখানে করোনার শুরু থেকে দোকানে ঝাঁপ ফেলে আবারও সুদিনের অপেক্ষায় রয়েছেন হাসমত বুক ডিপোর স্বত্বাধিকারী এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি দিনাজপুর জেলা শাখার সহসভাপতি আহসানউল্লাহ ভূঁইয়া কনক। করোনার শুরু থেকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে দোকান বন্ধ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশায় নিজের পুঁজি ভেঙে সংসার চালাচ্ছেন তিনি। 
জেলার কাহারোল উপজেলার দশ মাইলে লাইব্রেরির ব্যবসা করেন শহীদুল ইসলাম। করোনায় বইয়ের বেচা-কেনা না থাকায় বাধ্য হয়ে লাইব্রেরির ব্যবসা বন্ধ রেখে শুরু করেছেন কসমেটিক, মনোহারীসহ হরেক মালের বেচা-কেনা। শহীদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্কুল-কলেজ বন্ধ। কবে খুলবে তারও কোনো ঠিক নেই। বই বিক্রি একবারেই বন্ধ। বাধ্য হয়ে ব্যবসায় পরিবর্তন এনেছি। 

বিরল উপজেলার চৌরঙ্গী বাজারে খায়রুল লাইব্রেরির মালিক খায়রুল ইসলাম। ব্যবসা না থাকায় সব বই ফেরত দিয়েছেন। বদলে তুলেছেন কসমেটিকসহ জুতা। করোনা পরিস্থিতি ভালো হলে আবারও বইয়ের ব্যবসা শুরু করার ইচ্ছে আছে বলে জানান খায়রুল ইসলাম। 

শুধু শহীদুল বা খায়রুল নয়। জেলার বইয়ের দোকানগুলি এখন ক্রেতাশূন্য। দোকানদাররা প্রতিদিনই নিয়ম মাফিক দোকান খুলে বসে থাকেন ক্রেতাদের আশায়। সারা দিন শূন্যদৃষ্টি খুঁজে ফেরে ক্রেতাদের। গতকাল শহরের মুন্সিপাড়ায় গিয়ে দেখা যায় অধিকাংশ লাইব্রেরিই বন্ধ। যারা খুলেছেন তারা সারা দিনই বসে থাকেন ক্রেতাদের আশায়। 

মুন্সিপাড়ার রবিউল লাইব্রেরির মালিক রবিউল ইসলাম জানান, সকাল থেকে সারা দিনে বিক্রি করেছি মাত্র ষাট টাকা। গত বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছে মাত্র বিশ টাকা। আগে যেখানে মৌসুমে দৈনিক লক্ষাধিক টাকা বিক্রি হতো। অন্য সময়ে খুব কম হলেও দশ হাজার টাকা বিক্রি হতোই। এখন সারা মাসেও দশ হাজার টাকা বিক্রি হয় না। কিন্তু দোকানভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারীর বেতন আগের মতোই আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশায় দেড় বছর ধরে পুঁজি ভেঙে চলছি। আর পারছি না। এখন যে কোনো সময় দোকান বন্ধ করে দিতে হবে। 

বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি দিনাজপুর জেলা শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জেলায় তাদের নিবন্ধিত সদস্য সংখ্যা দুই শত পঁচিশ জন। গত বছর করোনায় নিবন্ধন করেছিল একশত পনেরো জন। আর এ বছর গতকাল পর্যন্ত নিবন্ধন করেছে মাত্র ৩৩ জন। জেলার অধিকাংশ ব্যবসায়ীই ব্যবসা পাল্টানোর চিন্তা করছে। 

বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি দিনাজপুর জেলা শাখার সভাপতি ও গ্রিন লাইব্রেরির স্বত্বাধিকারী মফিদুল ইসলাম সাদেক (স্বপন) বলেন, আমাদের ব্যবসাটি পুরোপুরি স্কুল-কলেজ নির্ভর। কিন্তু দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় আমাদের ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এ বছর নতুন বই যেভাবে এসেছিল স্কুল-কলেজ না খোলায় বইগুলি সেভাবেই ফেরত গেছে। এবার অটোপাস দেওয়ায় ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়েছে। এ ব্যবসার সঙ্গে লক্ষাধিক পরিবারের জীবিকা সম্পর্কিত। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রণোদনা কিংবা সাহায্য-সহযোগিতা পাইনি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পটিয়ায় বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত, আহত ৪

পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত হয়েছেন। এ সময় আরও চারজন আহত হয়েছেন। নিহত ট্রাকচালক মো. সালাম (৫৫) বগুড়া জেলার আকতার মিয়ার ছেলে। আহতরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইউনুচ মিয়ার ছেলে জাহেদুল ইসলাম (২৬), একই এলাকার জুয়েলের ছেলে জাকির ইসলাম (৩০), সবুর মিয়ার ছেলে সাকিব উল হাসান (১৭) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকার নাসরিন সুলতানা (২৯)।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান সড়কের পটিয়া উপজেলার আমজুরহাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, রাতে কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা হানিফ পরিবহনের একটি বাস আমজুরহাট এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পণ্যবাহী ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের সময় ট্রাকচালক মো. সালাম বাস ও ট্রাকের মাঝখানে আটকা পড়েন।

খবর পেয়ে পটিয়া ফায়ার সার্ভিসের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দীর্ঘ চেষ্টার পর তাঁকে উদ্ধার করে। পরে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

দুর্ঘটনায় আহত চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পটিয়া হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

পটিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রাজেশ বড়ুয়া জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রাত আড়াইটায় তাঁদের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে। পরে হাইওয়ে পুলিশ দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও ট্রাক উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাতকানিয়ায় খালের পাড় কেটে মাটি বিক্রি

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৭
খাল পাড় কেটে মাটি নিয়ে যাওয়ার কারণে পাশের ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাল পাড় কেটে মাটি নিয়ে যাওয়ার কারণে পাশের ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় খালের পাড় কেটে মাটি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক যুবকের বিরুদ্ধে। উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় মাদার্শা খালের পাড় থেকে এ মাটি কাটা হচ্ছে। এতে খালের পার্শ্ববর্তী ফসলি জমি ভেঙে খালে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে মাদার্শা খালের একপাশের পাড় থেকে মাটি কেটে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রামে ঘরের ভিটা ভরাটের জন্য বিক্রি করা হচ্ছে। রাতের আঁধারে ভেকু (এক্সকাভেটর) দিয়ে খালের পাড়ের এ মাটি কাটা হচ্ছে। খাল পাড় কেটে মাটি নিয়ে যাওয়ার কারণে পাশের ফসলি জমি ভেঙে খালে বিলীন হওয়ার পাশাপাশি খালের স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, নাদিমুল হাসান চৌধুরী নামের পার্শ্ববর্তী এলাকার এক ব্যক্তি তাঁর সহযোগীদের মাধ্যমে খালের পাড় কেটে মাটি বিক্রি করে চলেছেন। এতে আলী হোসেন নামের একজন কৃষকের বাদামখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে ক্ষতিপূরণ হিসেবে কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেন বলেন, অবিলম্বে খালের পাড় কাটা বন্ধ করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। আর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ কেটে নেওয়া খালপাড় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় আগামী বর্ষা মৌসুমে খালটির গতিপথ পরিবর্তন হয়ে আশপাশের এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আলী হোসেন বলেন, ‘ওই খালের পাড়ঘেঁষে বাদামের চাষ করেছিলাম। খাল পাড় থেকে মাটি কেটে বিক্রি করার কারণে আমার বাদামখেতটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় আমি তাঁদের বাধা দিয়েছিলাম। পরে তাঁরা আমাকে ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিয়েছেন।’

মাটি বিক্রির সঙ্গে জড়িত নাদিমুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘খালের দুই পাড়েই আমাদের জমি রয়েছে। গত বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে খালের একপাশে পলি জমে বিশাল মাটির স্তূপ তৈরি হয়েছিল। এ কারণে খালের অন্যপাশের জমি ভেঙে বিলীন হয়ে যাচ্ছিল। তাই জমির ভাঙন রোধে স্তূপ হয়ে থাকা পাশের কিছু মাটি কেটে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়েছি।’

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ইতিমধ্যে বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত হয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পর খালের পাড়ের মাটি কাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাতকানিয়ায় বন্দুকসহ এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার

সাতকানিয়া ( চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৯
অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারকৃত যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা
অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারকৃত যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে একটি দেশীয় তৈরি একনলা বন্দুক, ২০টি কার্তুজ ও দুটি দাসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম মোহাম্মদ সেলিম (৪১)। গতকাল রোববার বিকেলে উপজেলার পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের দৌলতপাড়ার ইছামতি আলীনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত মোহাম্মদ সেলিম পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দৌলতপাড়ার ইছামতি আলীনগর এলাকার মৃত মোহাম্মদ ইসহাকের ছেলে।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল হক বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে দেশীয় তৈরি একনলা বন্দুক, ২০টি কার্তুজ ও দুটি দাসহ মোহাম্মদ সেলিম নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে কলেজছাত্রকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যায় আটক ৩

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৩৭
সিএনজিচালিত অটোরিকশায় কয়েকজন যুবক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আব্দুর রহমানের ওপর আঘাত করে (ইনসেটে) আব্দুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
সিএনজিচালিত অটোরিকশায় কয়েকজন যুবক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আব্দুর রহমানের ওপর আঘাত করে (ইনসেটে) আব্দুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জ শহরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বসে থাকা অবস্থায় আব্দুর রহমান (২০) নামের এক কলেজছাত্রকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও আটক ব্যক্তিদের নাম-ঠিকানা জানাননি।

এর আগে গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা শহরের ১ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির অদূরে চৌরাস্তার মোড়ে আব্দুর রহমানকে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সন্ধ্যা ৭টার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহত আব্দুর রহমান সিরাজগঞ্জ সদরের সয়াধানগড়া খানপাড়া মহল্লার রেজাউল করিমের ছেলে। তিনি ইসলামিয়া সরকারি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

পুলিশ জানায়, ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেজে দেখা যায়, একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় সামনে ও পেছন দিক থেকে কয়েকজন যুবক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আব্দুর রহমানের ওপর একাধিকবার আঘাত করে। পরে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

নিহতের চাচা সোহাগ জানান, বিকেলে আব্দুর রহমান চৌরাস্তা এলাকায় প্রাইভেট পড়তে গিয়েছিল। সন্ধ্যার দিকে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, কারা বা কী কারণে হামলা চালিয়েছে, সে বিষয়ে তাঁরা কিছু জানেন না।

সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। মরদেহটি এখনো হাসপাতাল মর্গে আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত