Ajker Patrika

নির্বাচনের এক দিন আগে যা বললেন আইভী    

নিজস্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ থেকে 
আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৭: ২৭
নির্বাচনের এক দিন আগে যা বললেন আইভী    

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের শেষ দিনের প্রচার আজ। গণমাধ্যমকর্মী থেকে শুরু করে সবারই চোখ নারায়ণগঞ্জে। আজ শুক্রবার সকাল থেকে পুরোদমে রাস্তায় নেমেছেন হাতি মার্কার প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার। কিন্তু জানা গেল, বেলা ৩টায় রেলগেটের আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে পথসভা ছাড়া তেমন কোনো শোডাউন নেই নৌকার প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর। 

সংবাদকর্মীরা যান আইভীর দেওভোগের বাসায়। শুক্রবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের বাসভবনে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি । 

বহিরাগতদের এনে নির্বাচন পরিচালনা করছেন। সার্কিট হাউসসহ বিভিন্ন হোটেলে তাঁরা থাকছেন, যেটা আচরণবিধি লঙ্ঘন। তৈমুর আলম খন্দকারের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে আইভী বলেন, ‘সার্কিট হাউসে কারা থাকছেন আমার জানা নেই। আমি যতটুকু জানি, অনেকেই নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসেন। সেটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজনও হতে পারে। অথবা অন্য কেউ হতে পারে। তবে কারা আসছেন। কারা থাকছেন, আমার জানা নাই। জনতাই আমার শক্তি। আমি কিন্তু মানুষের কাছেই যাই। তাই বহিরাগতদের দিয়ে নির্বাচন করাব কেন? উনি কাকে বুঝিয়েছেন জানি না। কারণ আমার বাড়ি নারায়ণগঞ্জে, মানুষও নারায়ণগঞ্জের। আমার বাড়ি রূপগঞ্জে না যে বহিরাগত কাউকে আনব।’ 

ঢাকা থেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের আগমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তারা হয়তো তাঁদের দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন কারণে হয়তো আসছেন। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি। তাঁরাও কিন্তু জানেন আইভী কীভাবে রাজনীতি করে। কীভাবে ভোটারদের কাছে যায়। যদি তা না জানতেন, তাহলে কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এই সময়ে আমাকে নৌকা দিতেন না। কারণ উনিও জানেন ওনার আইভী মানুষের দ্বারেই যায়। আমার একমাত্র পথ হলো জনগণ। তাই নেতারা আসতেই পারেন। নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ কী করছে, তাদের অবস্থানটা কোথায়, এটা পর্যবেক্ষণ করতে তাঁরা আসতে পারেন। কিন্তু আমাকেও মুক্ত করে দিয়েছেন। আমি তো সারাক্ষণ ভোটারদের কাছে যাচ্ছি।’

কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে বিরোধী পক্ষের অভিযোগে আপনারা বিব্রত কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ঢাকার পাশেই আসলে নারায়ণগঞ্জ। এখানে নির্বাচন হচ্ছে। আসতেই পারেন। দেখতেই পারেন। আর অনেকেই বলছেন এখানে নির্বাচন একটু ভিন্ন। তাই তাঁদের অনেকেই আসেন। আমাদের প্রতিপক্ষের কিন্তু অনেকেই আসেন। তাঁরা হয়তো নীরবে প্রচারণা করছেন।’ 

নির্বাচনে সহিংসতার আশঙ্কা করছে বিরোধী পক্ষ। আপনি কি আশা করছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি সব সময়ই নির্বাচনী সহিংসতার বিপক্ষে। উনি আমার চাচা। জন্মের পর থেকেই উনি মনে হয় আমাকে দেখছেন। এই বাড়িতে তিনি অনেকবার এসেছেন। আমার বাবার কর্মী ছিলেন। আমাদের বন্ধনটা অনেক আগের। যুদ্ধের ময়দানে হয়তো আমরা প্রতিদ্বন্দ্বী।’

নির্বাচনে কোনো সহিংসতা হবে মনে করেন না জানিয়ে আইভী বলেন, ‘আমার কোনো বাহিনীও নাই। আর কোনো দিন সহিংসতা করিও না। বরং সহিংসতা হলে আমার ক্ষতি হবে। ভোটাররা আসতে পারবে না। আমি যদি বলি, একটি পক্ষ তা-ই চাইছে। আমার যেসব এলাকা জমজমাট, সেখানে হয়তো কেউ সহিংসতা করে ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা দিতে পারে। ভোটের দিন যাতে উৎসবমুখর পরিবেশ থাকে এবং নারী ভোটাররা আসতে পারে। কারণ আমি জানি এই ভোটগুলো আমার। আমি নির্বাচনে জিতবই। সুতরাং আমার বিজয় সুনিশ্চিত জেনে কেউ যদি সহিংসতা করে, তাহলে এটা ঠিক হবে না। তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ করব তা নিয়ন্ত্রণ আনতে।’ 

কারা আপনার ভোটারদের বাধা দিচ্ছে, সেটা প্রতিপক্ষ নাকি নিজ দলের—এমন প্রশ্নের জবাবে আইভী বলেন, ‘যারা বাধা দিচ্ছে, তারা কিন্তু একটা সময়ে এক হয়ে যায়। আপন আর পর কী? এখানে তো নির্বাচনটা হচ্ছে আইভী বনাম অনেক কিছু। সে ক্ষেত্রে অনেক পক্ষই এক হতে পারে। আমি ধারণা করছি। আইভীকে পরাজিত করতে অনেক পক্ষই এক হয়ে গেছে। সেটা ঘরেরও হতে পারে, বাইরেরও হতে পারে। কীভাবে আমাকে পরাজিত করা যায়। বিশৃঙ্খলা করে ভোটটাকে ঝামেলা করা যায়। কারণ সবাই জানে আমার বিজয় সুনিশ্চিত।’

এই অনেক পক্ষ নিয়ে আপনি কি আপনার পুরোনো অবস্থানেই রয়েছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি আমার আগের জায়গায় রয়েছি। প্রথম থেকে যা বলেছি, এখনো সেই জায়গায় আছি। বারবার বলেছি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যাতে সতর্ক থাকে।’ 

বহু পক্ষের খেলা বন্ধে কেন্দ্রীয় নেতারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি আসলে ওইভাবে আলাপ-আলোচনা করি নাই। কারণ বিগত ২৮ ডিসেম্বর থেকে খুবই ব্যস্ত ছিলাম। তা ছাড়া দলের উচ্চপর্যায়ের বিষয়ে আমার কথা না বলাই ভালো।’
 
আইভী বলেন, ‘নির্বাচন যদি সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক হয় এবং কোথাও কেন্দ্র বন্ধ না হয়, তাহলে ইনশাআল্লাহ আমি লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হব। এটা আমার চাচা নিজেও জানেন, এখানে আসলে আমার কী অবস্থা।’ 

তৈমুর আলমের অভিযোগ আপনাকে মানসিকভাবে দুর্বল করার জন্য কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি স্ট্রং পার্সোনালিটির মানুষ। আমার বন্ধন হলো তৃণমূল পর্যায় থেকে সব জায়গার মানুষের। আমাকে দুর্বল করা এত সহজ কিছু নয়। আমি কোনো কিছুতেই দুর্বল হব না। দুর্বল করতে পারবে না। কেউ প্রভাবিত করতে পারবে না।’
 
আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রশাসনের বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি ঠিক জানি না, তাঁরা কী আলাপ করেছেন। তাঁরা বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়েছেন। আমার বিজয় নিয়ে তারা শঙ্কিত ছিলেন না। তাঁরা ভালো করেই জানেন আইভী বিজয়ী হবে। আমার মনে হয় কেন্দ্রের নেতারা কাউকে প্রভাবিত করছেন। তারা হয়তো এখানে এসে কাউকে পর্যবেক্ষণ করছেন। কোনো বিশৃঙ্খলা যাতে তৈরি না হয়। এত বড় দলে একটু সমস্যা থাকেই। তাই তাঁরা সেটাই পর্যবেক্ষণ করছেন বলে আমার মনে হয়।’ 

তাঁরা নিজ দলের কাউকে নজরদারিতে রাখছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে আইভী বলেন, ‘তা ঠিক বলব না। কেন্দ্র কী করছে, তাঁরাই বলবেন। আমি তো আপনাদের সামাল দিতে ব্যস্ত আছি। প্রতিটি নির্বাচনই চ্যালেঞ্জিং ছিল। প্রতিটির আলাদা আলাদা ধরন ছিল। এই নির্বাচন বিভিন্ন কারণেই চ্যালেঞ্জিং।’ 

মানুষের প্রত্যাশা কেমন—এ বিষয়ে আইভী বলেন, ‘প্রত্যাশার কোনো শেষ নাই। আপনি যত দেবেন, আরও চাহিদা তৈরি হবে। নারায়ণগঞ্জ কিন্তু পুরোনো জনবহুল শহর। এখানে ভাসমান মানুষ অনেক। প্রতিদিনই বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয়। তার পরও চেষ্টা ইট-পাথরের এই শহরকে সবুজায়নের জন্য। বাংলাদেশের স্থানীয় পর্যায়ে কাজ করা চ্যালেঞ্জিং। এখানে জবাবদিহিও বেশি। তাই আমি নগরকে একটু নিশ্বাস নেওয়ার জায়গা করে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। শেখ রাসেল পার্ক করতে গিয়ে মামলা-হামলার শিকার হয়েছি। কিন্তু কেউ রুখতে পারেনি। এখন তো সবাই যাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে কাজ করা খুব কঠিন। সেটা নিয়ে কাজ করি। কোনো কাজ থেকে পিছপা হইনি।’ 

সমর্থকদের আটক সম্পর্কে তৈমুরের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কাকে ধরেছে আমি জানি না। জানার চেষ্টাও করি নাই। নারায়ণগঞ্জ শহরে কিশোর গ্যাংয়ের অভাব নাই। কালকে রাতেও মোটরসাইকেল মহড়া হয়েছে। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে নৌকার ভোট চাইছে। আমার গাড়ির সামনে দুইটা মোটরসাইকেল থাকুক তা-ও চাই না। এই শহরের মানুষ আমার চরিত্র জানে। আমি রিকশায় যাই, নিজে হাঁটি। হঠাৎ করে মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে নৌকার ভোট চাওয়ার কারণটা কী? সন্ত্রাসী যেকোনো দলের হতে পারে। আমার চরিত্রের সঙ্গে যায় না। সেই কাজগুলো অতি উৎসাহী হয়ে কারা করছে? নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা আমি করি নাই। যদি কেউ করে, সেটা ঠিক রাখার দায়িত্ব প্রশাসনের। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হোক সবার চাওয়া। সন্ত্রাসীদের কোনো দল নাই। আমি তো ভয় পাচ্ছি কাউন্সিলর নির্বাচন নিয়ে সহিংসতা হয়ে আমার নির্বাচনে সমস্যা হয় নাকি। আমি বিজয়ী হব। চাচার সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে। তার সঙ্গে কাজ করব।’

সংখ্যালঘুদের ভোটে প্রভাবিত করার চেষ্টা হচ্ছে বলে একটা অভিযোগ এসেছে। তিনি বলেন, ‘এটা খুব খারাপ। নেতারা গেলে মানুষ ভয় পায়। ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এটাকে বাধা দিতে হবে। নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে কে বা কারা টাকা দিচ্ছে জানি না। আমার টাকা নাই। থাকলেও দিতাম না। নির্বাচনে টাকা দেওয়া নীতি-নৈতিকতার ব্যাপার। খুবই বিব্রতকর। প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করছি।’ 

শামীম ওসমানের অনুসারীরা কী কাজ করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি জানি না কে কাজ করেছে বা করে নাই। আমার দেখারও সময় ছিল না। কেন্দ্রীয় নেতারা এখানে ছিলেন। তাঁরা দেখবেন। আমি আওয়ামী লীগের সব কর্মীর প্রতি আহ্বান জানাব, তারা যেন আমাকে ভোট দেয়। আমি দলমতের ঊর্ধ্বে কাজ করেছি। ওই সিটে বসে দল, ধর্ম দেখি নাই। দায়িত্ব ইমানের সঙ্গে পালন করেছি। শুধু একজনের না, আমার দল আওয়ামী লীগের না, সবার কাছে ভোট চাই। এটা আমার অধিকার, আত্মিক সম্পর্কের দাবি। আপনারা আমাকে ভোট দেবেন। আমার কোনো বাহিনী নাই। তাই আমার জনগণ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর আস্থা রয়েছে। সহিংসতা হলে তারা রোধ করবেন।’ 

জিতলে আগামী দিনের কার্যক্রম নিয়ে নাসিকের দুইবারের মেয়র বলেন, ‘আমি শীতলক্ষ্যার দিকে নজর দেব। কদমরসুল ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে উদ্বোধন হবে। ভোটারদের কাছে অনুরোধ, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় ভোট দেবেন নৌকায়। আমি বিগত সময় থেকে অন্যায়ের বিপক্ষে সোচ্চার ছিলাম। যেটাতে সোচ্চার হওয়ার প্রয়োজন সেখানে হব। বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করব না। এই শহরে খুন ও রাহাজানির বিরুদ্ধে কথা বলেছি। নিজেও কখনো এটা করি না।’
 
ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলব, ‘আপনারা আইভীকে চেনেন ও জানেন। আমি আপনাদের মানুষ। নিজের দায়িত্ব ইমানের সঙ্গে পালন করেছি। টাকাপয়সার সঙ্গে লেনদেন ছিলাম না। কাজ করতে গেলে ভুলভ্রান্তি হতেই পারে। সেটাই হবে। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ, সুন্দর, নিরাপদ ও সবুজ শহর গড়ার জন্য আপনারা আমাকে ভোট দেবেন। বিপদে আপনাদের পাশে থাকব। সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি করব না। কারণ আমার কোনো বিশেষ বাহিনী নাই।’

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়াকে শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা

‘ক্ষমতার মোহে আল্লাহর আরশ কাঁপানোর মতো বেপরোয়া হলেন’

খালেদা জিয়ার জানাজা: যেসব পথে নিয়ন্ত্রিত থাকবে যান চলাচল

শহীদ জিয়ার কবরের পূর্ব পাশে খোঁড়া হচ্ছে নতুন কবর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘সাংগঠনিক কমিটি ভেঙে দিলে, সেই কমিটির নেতৃত্বেই নির্বাচনী কমিটি গঠন করুন।’

দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪৪
হাসান মামুন। ছবি: সংগৃহীত
হাসান মামুন। ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা–গলাচিপা) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী ও সদ্য বহিষ্কৃত বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন কেন্দ্রীয় নেতাদের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে নেতা-কর্মীদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বিএনপির সমঝোতার অংশ হিসেবে ওই আসনে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। এই ঘোষণার পর দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন হাসান মামুন। তিনি নুরুল হক নুরের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেন। এর আগে ২৮ ডিসেম্বর তিনি বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্যপদ থেকে অব্যাহতির জন্য পদত্যাগপত্র জমা দেন।

এদিকে গতকাল বুধবার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগে হাসান মামুনকে নির্বাহী কমিটির সদস্যপদসহ প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

বহিষ্কারের খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের পর হাসান মামুন তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে একাধিক পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে তিনি নেতা-কর্মী ও ভোটারদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

বুধবার রাত ৮টার দিকে এক পোস্টে তিনি লেখেন, বিএনপির সিদ্ধান্ত পূর্বনির্ধারিত ছিল এবং তিনি আগেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। একই পোস্টে নেতা-কর্মীদের সর্বোচ্চ ধৈর্য ধারণ ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে আরেক পোস্টে তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে লেখেন, মজলুম নেত্রীর ইন্তেকালের দিনে তৃণমূলের মজলুম নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত? একই সঙ্গে অতীতের একটি বহিষ্কার ও পরবর্তী সময়ে তা প্রত্যাহারের উদাহরণ তুলে ধরেন।

রাত ১১টার দিকে দেওয়া আরেক পোস্টে হাসান মামুন লেখেন, ৩৭ বছরের বিশ্বস্ত ও পরীক্ষিত কর্মীদের চেয়ে দুই দিনের অবিশ্বস্ত ও ফ্রন্ট মিত্রদের সঙ্গে চলা বিষধর সাপের সঙ্গে বসবাসের চেয়েও ঝুঁকিপূর্ণ।

সর্বশেষ পোস্টে তিনি লেখেন, সবাইকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে। সাংগঠনিক কমিটি ভেঙে দেওয়া হলে সেই কমিটির নেতৃত্বেই নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করার আহ্বান জানান তিনি। তার ভাষায়, নেতা-কর্মী ও ভোটাররাই তাদের মূল শক্তি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়াকে শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা

‘ক্ষমতার মোহে আল্লাহর আরশ কাঁপানোর মতো বেপরোয়া হলেন’

খালেদা জিয়ার জানাজা: যেসব পথে নিয়ন্ত্রিত থাকবে যান চলাচল

শহীদ জিয়ার কবরের পূর্ব পাশে খোঁড়া হচ্ছে নতুন কবর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুয়ারেই বিষাক্ত ধোঁয়া দম বন্ধ পড়াশোনা

জিল্লুর রহমান, মান্দা (নওগাঁ)
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৪৮
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশেই ইটভাটা। সম্প্রতি নওগাঁর মান্দা উপজেলার সাবাইহাট এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশেই ইটভাটা। সম্প্রতি নওগাঁর মান্দা উপজেলার সাবাইহাট এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিদ্যালয়ের আঙিনায় ভাসছে বিষাক্ত ধোঁয়া। নওগাঁর মান্দা উপজেলায় দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অদূরে দীর্ঘদিন ধরে একটি ইটভাটা পরিচালিত হওয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে কোমলমতি পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী। ইটভাটার লাগাতার কার্যক্রমে প্রতিদিনই স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে শিশুরা। শ্বাসকষ্ট, চোখ জ্বালা ও অসুস্থতায় ভুগেও ক্লাসে বসতে হচ্ছে শতাধিক শিক্ষার্থীকে। নিরাপদ শিক্ষাবান্ধব পরিবেশের বদলে কালো ধোঁয়ার নিচে বড় হচ্ছে তাদের শৈশব—যা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের জন্য এক গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে উপজেলার সাবাইহাট এলাকার ঝাঁঝরের মোড়ে ‘যমুনা ব্রিকস’ নামে ইটভাটাটি স্থাপন করা হয়েছে। ভাটার মাত্র ২৫০ মিটার দূরে রয়েছে একরুখী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একরুখী উচ্চবিদ্যালয়। আশপাশে রয়েছে আবাসিক এলাকা ও দুটি আমবাগান। গোসাইপুর গ্রামের কার্তিক চন্দ্র মণ্ডল নামের এক ব্যক্তি ভাটাটি পরিচালনা করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে ফিক্সড চিমনির মাধ্যমে ইট পোড়ানো হচ্ছে। কয়লার পাশাপাশি কাঠের খড়ি ব্যবহার করায় ধোঁয়ার মাত্রা আরও বেড়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাসে বসে পড়াশোনা করা কঠিন হয়ে পড়ছে।

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (২০১৩ সালের সংশোধনী) অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আবাসিক এলাকা ও বাগানের ১ কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন ও পরিচালনা নিষিদ্ধ। তবে এই আইন অমান্য করেই প্রায় ২০ বছর ভাটাটি পরিচালিত হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

একরুখী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, গত বছর ভাটা চালু হওয়ার পর তার এক সহপাঠী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং চিকিৎসা নিতে হয়। অনেক শিক্ষার্থী শ্বাসকষ্টে ভোগে বলেও জানায় সে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল ইসলাম বলেন, ইটভাটা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান কামরুল বলেন, ইটভাটাটি নিয়ে তেমন কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে কিছুদিন আগে ভাটামালিক ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছেন।

জানতে চাইলে ভাটামালিক কার্তিক চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়েই ভাটার কার্যক্রম পরিচালনা করছি। আগামী বছর থেকে আর ব্যবসা করব না।’

এ বিষয়ে ইউএনও আখতার জাহান সাথী বলেন, যমুনা ব্রিকসের পরিবেশ ছাড়পত্র ও অন্যান্য কাগজপত্র যাচাই করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে লাইসেন্সবিহীন সব ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়াকে শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা

‘ক্ষমতার মোহে আল্লাহর আরশ কাঁপানোর মতো বেপরোয়া হলেন’

খালেদা জিয়ার জানাজা: যেসব পথে নিয়ন্ত্রিত থাকবে যান চলাচল

শহীদ জিয়ার কবরের পূর্ব পাশে খোঁড়া হচ্ছে নতুন কবর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খাগড়াছড়ির ১ আসন

ভোটের মাঠে: জয়ের সমীকরণ পাল্টে দেবে পাহাড়ি ভোটার

  • স্বতন্ত্র ও আঞ্চলিক দলের প্রার্থীরা হেভিওয়েটদের জয়ে বড় বাধা হতে পারে।
  • পাহাড়ি-বাঙালি উভয় জনগোষ্ঠীর মানুষ আমাকে সমর্থন দিয়েছে: বিএনপির প্রার্থী
নীরব চৌধুরী বিটন, খাগড়াছড়ি
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ১৯
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশাল পাহাড়ি এলাকার তিনটি সংসদীয় আসনের মধ্যে একটি খাগড়াছড়ি। আসনটিতে বিভিন্ন দলের হেভিওয়েট প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র ও আঞ্চলিক দলের প্রার্থীরাও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। স্বতন্ত্র ও আঞ্চলিক দলের এসব প্রার্থী হেভিওয়েটদের জয়ে বড় বাধা হতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সবুজ পাহাড়ের রাজনীতির হিসাবনিকাশ বুঝতে মূল রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি আঞ্চলিক দলগুলোর ভোটের অঙ্ক কষতে হয় বিশ্লেষকদের। ভোটের সময় সেই অঙ্কে যুক্ত হয় পাহাড়ি-বাঙালি সমীকরণ। এবার জয়ের সমীকরণ পাল্টে দিতে পারে পাহাড়ি ভোটাররা।

২৯৮ নম্বর খাগড়াছড়ি আসনে বিএনপি, জামায়াত, স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ১৬ জন। তাঁরা হলেন বিএনপির প্রার্থী আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, জামায়াতের এয়াকুব আলী, ইসলামী আন্দোলনের মো. কাউসার, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশের নুর ইসলাম। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী সমীরণ দেওয়ান, সন্তোষিত চাকমা, লাব্রিচাই মারমা, ধর্ম জ্যোতি চাকমা, সোনা রতন চাকমা, স্বতন্ত্র প্রার্থী জিরুনা ত্রিপুরা, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মিথিলা রোয়াজা, খেলাফতে মজলিস মনোনীত আনোয়ার হোসাইন মিয়াজী, গণঅধিকার পরিষদ মনোনীত দীনময় রোয়াজা, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ মনোনীত মো. মোস্তাফা, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি মনোনীত উশোপ্রু মারমা। এদিকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মনোনীত প্রার্থী মনজিলা সুলতানা ঝুমা।

জানা গেছে, বিএনপি, জামায়াতসহ কয়েকটি দল প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও বেশ কৌশলী এবং শক্তিশালী। কারণ পাহাড়ি ভোটার। স্থানীয় আঞ্চলিক দল ও আঞ্চলিকতার প্রশ্নে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোটের বাক্সে বেশ এককাট্টা স্থানীয় ভোটাররা।

এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) নির্বাচনের ব্যাপারে আগে নীরব থাকলেও এখন তারা অনেকটা সরব। পাহাড়ের আরেক শক্তিশালী রাজনৈতিক সংগঠন জনসংহতি সমিতি জেএসএস (এমএন লারমা) সরাসরি ভোটে না এলেও পছন্দের প্রার্থীদের সমর্থন দেওয়ার কথা বলছে। ফলে জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য জয়ে আশার বাতিঘরে কিছুটা হতাশাও বেশ প্রকাশ্যে। এ ছাড়া প্রার্থীর যোগ্যতা, ভোটারদের বিগত দিনের বিশ্লেষণ এবং হিসাবনিকাশে জয়ে পদে পদে বাধার সম্মুখীন হতে পারে আশাবাদী দলগুলো।

আঞ্চলিক দলগুলো নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার আগপর্যন্ত পাহাড়ের ভোটের যে সমীকরণ ছিল; এখন সেটা পাল্টে গেছে। কারণ আঞ্চলিক দলগুলো নির্বাচনে না এলে ভোটের মাঠ অনেকটা বিএনপি ও জামায়াতের দখলেই থাকত। কিন্তু ইউপিডিএফ ও জেএসএসের নির্বাচনে থাকার ঘোষণা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নতুন মাত্রা দিয়েছে।

বিশ্লেষকদের ধারণা, আগামী নির্বাচন সরল-দ্বিমুখী লড়াইয়ের বদলে কোথাও কোথাও কঠিন-ত্রিমুখী লড়াইয়ে পরিণত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বিএনপি। যদিও আওয়ামী লীগহীন এই নির্বাচনে বিএনপি সারা দেশেই বড় জয়ের আশা করছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সমর্থকদের ভোট কোন বাক্সে পড়বে, সেটিও দেখার পালা এবার।

পাল্টে যাওয়া সমীকরণ

এ আসনে বিএনপির প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য খাগড়াছড়িতে জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভূঁইয়া প্রার্থী ঘোষণার আগ থেকেই গণসংযোগে রয়েছেন। প্রার্থিতা ও তফসিল ঘোষণার পর প্রচারে আরও সরব হয়ে উঠেছেন তিনি। ইউপিডিএফ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণার আগপর্যন্ত এখানে ওয়াদুদ ভূঁইয়ার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত এয়াকুব আলীকে ধরা হলেও এখন সমীকরণ পাল্টে গেছে।

বিএনপির প্রার্থী ওয়াদুদ ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি আগেও জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। জনগণ আমাকে চিনে। জেলার বেশির ভাগ সড়ক, স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, বিহার আমার সময়ে নির্মিত হয়েছে। পাহাড়ি-বাঙালি উভয় জনগোষ্ঠীর মানুষ আমাকে সমর্থন দিয়েছে। এরই মধ্যে চাকমা ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর মানুষ স্বতন্ত্রভাবে আমার সমর্থনে সমাবেশও করেছে।’

জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী এয়াকুব আলী বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ তৈরি করব, যেখানে নির্ভয়ে, নির্বিঘ্নে, নিরাপত্তা নিয়ে ভয়হীন দেশে ইনসাফের সঙ্গে বসবাস করবে। পাহাড়ি-বাঙালি মিলেমিশে তৈরি হবে এক সম্প্রীতির বাংলাদেশ।’

জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা বলেন, ‘আমরা নির্বাচনমুখী দল। তবে এই নির্বাচনে আমরা সরাসরি কোনো প্রার্থী না দিলেও কোনো না কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেব। তবে কোনো দলকে নয়। খাগড়াছড়ির এবার পরিস্থিতি আগের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন।’

পাহাড়িদের দীর্ঘদিনের ভূমি, নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক অধিকারসংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধানে জাতীয় দলগুলোর আন্তরিকতা নিয়ে অভিযোগও বেশ পুরোনো। এই প্রেক্ষাপটে নাগরিক সমাজের উদ্যোগে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী থেকে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিষয়টিকে বেশ গুরুত্বসহকারে দেখছেন স্থানীয় পাহাড়ি ভোটাররা। এখানেই তাঁরা এককাট্টা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়াকে শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা

‘ক্ষমতার মোহে আল্লাহর আরশ কাঁপানোর মতো বেপরোয়া হলেন’

খালেদা জিয়ার জানাজা: যেসব পথে নিয়ন্ত্রিত থাকবে যান চলাচল

শহীদ জিয়ার কবরের পূর্ব পাশে খোঁড়া হচ্ছে নতুন কবর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘ক্ষমতার মোহে আল্লাহর আরশ কাঁপানোর মতো বেপরোয়া হলেন’

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
হাসান মামুন। ছবি: সংগৃহীত
হাসান মামুন। ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী ও সদ্য বহিষ্কৃত বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

মঙ্গলবার রাত ৮টা ৩৪ মিনিটে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে হাসান মামুন বলেন, ‘সবকিছু বুঝলাম, তাই বলে মজলুম নেত্রীর ইন্তেকালের দিনে দলের ও রাজপথের মজলুম নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা? ক্ষমতার মোহে আল্লাহর আরশ কাঁপানোর মতো বেপরোয়া হলেন?’

এর আগে সন্ধ্যা ৭টা ১৪ মিনিটে আরেক পোস্টে হাসান মামুন বলেন, বিএনপি থেকে বহিষ্কারের আগেই তিনি দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। এ-সংক্রান্ত দুটি ছবি তিনি পোস্ট করেন, যেখানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশট সংযুক্ত ছিল। পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ২৮ ডিসেম্বর তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

পরে সন্ধ্যা ৭টা ২৬ মিনিটে দেওয়া আরেক পোস্টে হাসান মামুন লেখেন, ‘বিএনপির সিদ্ধান্ত পূর্বনির্ধারিত। আমি আগেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। নেতা-কর্মীদের সর্বোচ্চ ধৈর্য ধারণ ও ঐক্যবদ্ধ থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

রাত ৮টা ৩৮ মিনিটে দেওয়া পৃথক এক পোস্টে হাসান মামুন প্রশ্ন তোলেন, ‘ময়মনসিংহের ফখরুদ্দিন বাচ্চুকে বহিষ্কার, তার বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে মামলা করার কত দিন পরে ডেকে এনে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও সঙ্গে মনোনয়ন দেওয়া হলো?’

এরপর রাত ৮টা ৪০ মিনিটে আরেক পোস্টে হাসান মামুন লেখেন, ‘বিএনপির সকল সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান প্রদর্শনপূর্বক নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

উল্লেখ্য, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পটুয়াখালী-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন হাসান মামুন। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আসনটি গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে ছেড়ে দেয় বিএনপি। এরপরও দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন এবং সোমবার মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। একই সঙ্গে তিনি নিজ উদ্যোগে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এসব কর্মকাণ্ড বিএনপির গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলার পরিপন্থী হওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে হাসান মামুনকে দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়াকে শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা

‘ক্ষমতার মোহে আল্লাহর আরশ কাঁপানোর মতো বেপরোয়া হলেন’

খালেদা জিয়ার জানাজা: যেসব পথে নিয়ন্ত্রিত থাকবে যান চলাচল

শহীদ জিয়ার কবরের পূর্ব পাশে খোঁড়া হচ্ছে নতুন কবর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত