ডিবির হারুন ও তাঁর ভাই শাহরিয়ারের আয়কর নথি জব্দের আদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮: ২৬
Thumbnail image
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) আলোচিত অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ ও তাঁর ভাই এ বি এম শাহরিয়ারের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিশেষ পিপি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ নির্দেশনা দেন।

পিপি আরও বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলা চলমান রয়েছে। ওই মামলার তদন্ত সুষ্ঠুভাবে করার জন্য আয়কর নথি জব্দ করার প্রয়োজন রয়েছে বিধায় আদালত মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জব্দ করার অনুমতি দিয়েছেন।

এর আগে ১৭ ডিসেম্বর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে হারুন তাঁর স্ত্রী শিরিন আক্তার ও ভাই শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করে দুদক। মামলাগুলো দুদক আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় দায়ের করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে সাবেক ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে ১৭ কোটি ৫১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ, তাঁর স্ত্রী শিরিন আক্তারের বিরুদ্ধে ১০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা এবং হারুনের ভাই এ বি এম শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে ১২ কোটি ৯৬ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদিন দুজনের আয়কর নথি জব্দের আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, ‘মামলা তদন্তকালে দেখা যায় যে সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) আসামি মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১৭ কোটি ৫১ লাখ ১৭ হাজার ৮০৬ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা ও ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। একইভাবে তাঁর ভাই শাহরিয়ার ১২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করেছেন।

আবেদনে আরও বলা হয়, ‘মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে কর সার্কেল-১২৯, কর অঞ্চল-০৬, ঢাকার দুজনের সকল আয়কর রিটার্নসহ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র জব্দ করে পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন।’

এর আগে গত বছর ২২ অক্টোবর হারুন অর রশীদ ও তাঁর পরিবারের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবের তথ্য জানতে চেয়ে দেশের সব ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর ও ডাক বিভাগে চিঠি দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)।

সেখানে হারুন ছাড়াও তাঁর মা-বাবা, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে বা বোনের যৌথ নামে অথবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়।

এরও আগে হারুন ও তাঁর পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছিল বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

গত বছর ২৪ অক্টোবর ডিবির হারুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদক সমন জারি করেছিলেন। কিন্তু তিনি হাজির হননি। গত বছর ২৭ আগস্ট হারুন ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেন ঢাকার আদালত।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত এই হারুন। ২০২২ সালের জুলাই থেকে ডিএমপির ডিবিপ্রধানের দায়িত্ব পালন করছিলেন হারুন অর রশীদ। গণ-আন্দোলনে সরকার পতনের চার দিন আগে গত ৩১ জুলাই তাঁকে সেখান থেকে সরিয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) দায়িত্ব দেওয়া হয়। সরকার পতনের পর তাঁর খোঁজ নেই।

সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন সময়ে ধরে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে রাখা এবং তাঁদের ভাত খাইয়ে আপ্যায়ন করার নজির স্থাপন করায় ব্যাপক আলোচিত ছিলেন এই হারুন। একসময় ভাতের হোটেলের মালিক হিসেবেও পরিচিতি পান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লিটন-তামিমের তাণ্ডবের পর রেকর্ড রানের জয় ঢাকার

বাসচাপায় ২ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত, লাশ উদ্ধারে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ

টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে চান সুজান হল

দেশে এইচএমপিভি ভাইরাস শনাক্ত, আক্রান্ত একজন নারী

ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক কি তবে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে মোড় নেবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত