Ajker Patrika

রমনায় বোমা হামলা: নরসিংদীর চরেই ১৪ বছর কাটিয়েছেন শফিকুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২২, ১৬: ৩৬
রমনায় বোমা হামলা: নরসিংদীর চরেই ১৪ বছর কাটিয়েছেন শফিকুল

রমনার বটমূলে হামলার পর প্রথম আট বছর কিছুটা প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়িয়েছেন। এ সময় জঙ্গিগোষ্ঠী হরকাতুল জিহাদের (হুজি-বি) সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ২০০৮ সালের পর এই হত্যা মামলায় যখন চারদিকে ধরপাকড় শুরু হয় তখনই প্রথম পুরোপুরি আত্মগোপনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। নরসিংদীর একটি চরে মাদ্রাসার শিক্ষক হিসেবে আব্দুল করিম নামে ১৪ বছর কাটিয়ে দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেকে আর গোপন করতে পারলেন না। ২১ বছর পর রমনার বটমূলে বোমা হামলার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুফতি শফিকুল ইসলামকে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে থেকে গ্রেপ্তার করল র‍্যাব।

সংস্থাটি বলছে, এই সময়কালে মসজিদে ইমামতি, মহিলা মাদ্রাসায় শিক্ষকতা আর ধর্মের নামে বিভ্রান্তিমূলক অপব্যাখ্যা প্রচার করে সময় কাটিয়েছেন তিনি। আত্মগোপনের কৌশল হিসেবে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতেন না। 

আজ শুক্রবার কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানিয়েছেন র‍্যাবের মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, ২০০১ সালে রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা এবং ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদরে বৈদ্যের বাজারে গ্রেনেড হামলায় সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াসহ পাঁচজন নিহতের ঘটনায় শফিকুল সম্পৃক্ত ছিলেন। রমনার বটমূলে হামলার পর ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি আত্মগোপনে থেকে সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এমনকি ঘটনার দিনও তিনি খিলগাঁওয়ে একটি মাদ্রাসায় অবস্থান করে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছিলেন।

র‍্যাব বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বোমা হামলার সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন। গ্রেপ্তার আসামি মুফতি শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় ছয়টি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। 

র‍্যাবের মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন শফিকুল ইসলামের বিষয়ে ব্রিফ করেন২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালানো হয়। হামলায় ঘটনাস্থলেই ৯ জনের মৃত্যু হয়। পরে হাসপাতালে মারা যান একজন। এ ঘটনায় জঙ্গিগোষ্ঠী হরকাতুল জিহাদের (হুজি-বি) শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নানসহ ১৪ জঙ্গিকে আসামি করা হয়। মামলার ১৩ বছরের মাথায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত মুফতি হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, ১৪ আসামির মধ্যে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া চার আসামি এখনো পলাতক রয়েছেন।

গ্রেপ্তার শফিকুল ইসলাম সর্ম্পকে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, তিনি পঞ্চম শ্রেণি পাস করার পর মাদ্রাসায় পড়াশোনা শুরু করেন। শুরুতেই ১৯৭৫ সালে চকবাজারের একটি মাদ্রাসা থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত হেদায়ায় পড়াশোনা করেন। হেদায়া পাস করার পর ১৯৮৩ সালে পার্শ্ববর্তী দেশে দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত দাওরায়ে হাদিস (টাইটেল) পাস করে বাংলাদেশে ফেরত আসেন। ১৯৮৭ সালে পাকিস্তানের করাচিতে ইউসুফ বিন নুরী মাদ্রাসায় ফতোয়া বিভাগে ভর্তি হয়ে তিন বছরের ইফতা (ফতোয়া) কোর্স সম্পন্ন করেন। ১৯৮৯ সালে পাকিস্তানে অবস্থানকালীন তিনি আফগানিস্তানে চলে যান এবং তালেবানদের পক্ষে যুদ্ধ করেন। সেখান থেকে ১৯৮৯ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। বাংলাদেশে আসার পর তিনি ঢাকার খিলগাঁওয়ে একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৮৭ সালে পাকিস্তানের করাচির নিউ টাউনে পড়াশোনা করার সময় সেই প্রতিষ্ঠানে মুফতি হান্নানও পড়াশোনা করতে গেলে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয়। পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানে ভ্রমণে গেলে আফগানিস্তানে থাকাকালীন জঙ্গি সংগঠন ‘হরকাতুল জিহাদের’ সঙ্গে সম্পৃক্ত হন তিনি। 

১৯৯০ সালে দেশে ফেরত এসে সমমনাদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে ‘হরকাতুল জিহাদ (বি)’ সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে এবং দাওয়াতের কাজ শুরু করেন। তিনি ১৯৯০ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ‘হরকাতুল জিহাদ (বি)’ এর প্রচার সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি হরকাতুল জিহাদের আমির হন। পরে ১৯৯৭ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি হরকাতুল জিহাদের সুরা সদস্য ছিলেন। 

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্রেপ্তার শফিকুল ইসলাম নরসিংদী থাকাকালীন নিজের পরিচয় গোপন করে “আব্দুল করিম” ছদ্মনামে পরিচয় দিতেন। এ ছাড়া তিনি আব্দুল করিম নাম ব্যবহার করে ওই এলাকার চরে অবস্থিত একটি মসজিদে মাসিক ৫ হাজার টাকা বেতনে ইমামতির চাকরি করতেন।’

রমনার বটমূলে হামলার মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আটজনের মধ্যে এখনো তিনজন পলাতক রয়েছেন। তাঁরা হলেন মাওলানা আব্দুল হাই, মাওলানা তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর। এ মামলায় দুজন জেলহাজতে মারা গেছেন। একজন মুফতি হান্নান, অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হওয়ায় দণ্ডাদেশ কার্যকর হয়। আর বাকিরা জেলহাজতে রয়েছেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনা-৩ আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল, বৈধ ৯টি

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনা-৩ (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহান আলী-আড়ংঘাটা) আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এই আসনে ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে ৯ জনের মনোনয়ন বৈধ এবং ৩ জনের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়। আজ বুধবার দুপুরে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সাল কাদের এই তথ্য জানান।

ফয়সাল কাদের জানান, ঋণখেলাপিসহ বিভিন্ন কারণে যাঁদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে, তাঁরা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রউফ মোল্যা, আবুল হাসান সিদ্দিক ও আরিফুর রহমান মিঠু। তবে তাঁরা চাইলে বিধি অনুযায়ী আপিল করতে পারবেন।

এই আসনে যাঁদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে, তাঁরা হলেন ইসলামী আন্দোলনের মো. আউয়াল, বিএনপির রকিবুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর মাহফুজুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ খান লিটন ও মইন মোহাম্মদ মায়াজ, বাসদের জনার্দন দত্ত, খেলাফত মজলিসের এফ এম হারুন অর রশিদ, এনডিএমের শেখ আরমান হোসেন এবং জাতীয় পার্টির আব্দুল্লাহ আল মামুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড়, থার্টি ফার্স্ট নাইটে ৭ দফা বিধিনিষেধ পুলিশের

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ০৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রতিবছর থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটে। এ বছরও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুরা কক্সবাজারে এসেছেন। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সারা দেশে শোকের আবহ বিরাজ করায় অনেকেই ভ্রমণ বাতিল করেছেন বলে জানিয়েছেন পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এদিকে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামীকাল ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সমুদ্রসৈকতসহ উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ও জনসমাগম না করতে ৭ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার জেলা পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব, অপপ্রচার ও উসকানিমূলক বক্তব্য ছড়ানো, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট, নাশকতা কিংবা সহিংস কর্মকাণ্ড থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়া উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানো, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানো নিষিদ্ধ থাকবে।

জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অলক বিশ্বাস বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার শহর ও সমুদ্রসৈকতে আতশবাজি ও পটকা বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। একই সময়ে উন্মুক্ত স্থান ও রাস্তায় কোনো কনসার্ট কিংবা নাচগানের আয়োজন করা যাবে না। পাশাপাশি ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বার ও মদের দোকানে বেচাকেনা বন্ধ থাকবে।

অলক বিশ্বাস জানান, বিধিনিষেধ কার্যকরের পাশাপাশি শহরের প্রবেশমুখসহ গুরুত্বপূর্ণ ১০টি স্থানে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে নজরদারি জোরদার করা হবে।

পর্যটকের উপস্থিতি

বছরের শেষ দিন ও নতুন বছরের শুরুতে কক্সবাজারে সাধারণত পর্যটকের ঢল নামে। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারাও সৈকতে ভিড় জমান। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে ৮-৯ বছর ধরে সৈকতে বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণের উন্মুক্ত কোনো আয়োজন হচ্ছে না। শহরের কয়েকটি মানসম্মত হোটেল ও রিসোর্টে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান হলেও এবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সেসব আয়োজনও বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হোটেলের মালিকেরা।

হোটেল ও রিসোর্টের মালিকেরা বলেন, ‘শোকাবহ পরিস্থিতির কারণে অনেক পর্যটক বুধবারের কক্ষ বুকিং বাতিল করেছেন। আবার যাঁরা মঙ্গল বা বুধবার কক্সবাজারে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন, তাঁদের বড় অংশই সফর স্থগিত করেছেন।’

কক্সবাজার শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউস ও কটেজে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার পর্যটকের রাতযাপনের ব্যবস্থা রয়েছে। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, সব মিলিয়ে প্রায় ৯০ শতাংশ কক্ষ বুকিং রয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খানসামায় গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দা থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ১৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার ২ নম্বর ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের টংগুয়া চেয়ারম্যানপাড়া গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গভীর রাতে গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দায় একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ভ্যানযোগে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাছেত সরদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, লাশটির পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। মৃত্যুর কারণ ও পরিচয় উদ্‌ঘাটনে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, সিসিটিভির হার্ডডিস্ক নিয়ে আত্মগোপনে স্বামী

বগুড়া প্রতিনিধি
নিহত রিফাত জাহান রিংকি। ছবি: সংগৃহীত
নিহত রিফাত জাহান রিংকি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ায় রিফাত জাহান রিংকি (১৯) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১১টার দিকে সদর উপজেলার নুনগোলা দক্ষিণ পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মৃত্যুর পরপরই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়ির সিসিটিভির হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় এই ঘটনায় সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।

নিহত রিংকি শাজাহানপুর উপজেলার নন্দকুল উত্তর পাড়া গ্রামের রাশেদুল ইসলামের মেয়ে। পাঁচ বছর আগে নুনগোলা এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে নুরুন্নবীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের চার বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে প্রতিবেশীরা রিংকিকে বাড়ির উঠানে স্বাভাবিকভাবে ব্যাডমিন্টন খেলতে দেখেন। যদিও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মাঝেমধ্যে পারিবারিক কলহের কথা শোনা যেত। রাতের দিকে হঠাৎ তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

নিহত রিংকির বোন আশা খাতুন জানান, বিকেলে রিংকির মোবাইল থেকে তাঁর ফোনে একটি মিসকল আসে। পরে একাধিকবার ফোন করলেও রিংকি ফোন ধরেননি। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতে নুরুন্নবী ফোন করে জানায়, রিংকির ওপর জিনের আছর পড়েছে। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রিংকির নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তখন তাঁর গলায় আঘাতের চিহ্ন লক্ষ করা যায়।

রিংকির মামি আয়না খাতুন বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে রিংকিকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই আলামত নষ্ট করতে বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পালিয়ে যায়। আমরা এর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।’

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী নুরুন্নবী ও তাঁর পরিবারের কোনো সদস্য বাড়িতে নেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘটনার পরপরই তাঁরা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু রায়হান বলেন, ‘এর আগে তাঁদের মধ্যে কোনো ঝগড়াবিবাদের কথা আমার জানা ছিল না। হঠাৎ রাতে মৃত্যুর খবর পাই। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। প্রাথমিক সুরতহালে আত্মহত্যার কোনো সুস্পষ্ট আলামত পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত