Ajker Patrika

মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে ৭ দিনে হাজারের ওপর ডায়রিয়া রোগী

মতলব (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে ৭ দিনে হাজারের ওপর ডায়রিয়া রোগী

মতলব আইসিডিডিআরবির তথ্যানুযায়ী, গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৭ দিনে মতলব আইসিডিডিআরবিতে ১ হাজার ৩৯ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ১৩০ থেকে ১৪০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছে। ভর্তিকৃত রোগীদের মধ্যে শূন্য থেকে ২ বছর বয়সী ৭১৮ জন। ৩ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু ১২২ জন, ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে বিভিন্ন বয়সী ১৯৯ জন। 

গত ৭ দিনের মধ্যে ৫ ফেব্রুয়ারি সর্বোচ্চ ১৫১ জন রোগী ভর্তি হয়। গত বছরের তুলনায় এ বছর রোগী ভর্তি হয়েছে বেশি। বছরের নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসেই আবহাওয়াজনিত কারণে অর্থাৎ শীতের তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। 

হাসপাতাল সূত্র জানায় ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হাসপাতালের ৩টি কক্ষে ধারণ ক্ষমতা ৭০ জন রোগীর। বারান্দাসহ ১৫০ জন রোগী চিকিৎসা সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের ৩টি কক্ষে স্থান সংকুলান না হওয়ায় বারান্দায় বেড বিছিয়ে রোগীদের চিকিৎসা-সেবা দেওয়া হচ্ছে। ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে চাঁদপুর জেলা সদর, ফরিদগঞ্জ, হাইমচর, হাজীগঞ্জ, কচুয়া, শাহরাস্তি, মতলব উত্তর ও দক্ষিণ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর, কুমিল্লা জেলার বরুড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বুড়িচং, চান্দিনা, চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা সদর, কুমিল্লা সদর উত্তর, দাউদকান্দি, দেবিদ্বার, হোমনা, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, মুরাদনগর, নাঙ্গলকোট, তিতাস উপজেলা, কক্সবাজার  বাজার সদর, ফেনী, কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া, লক্ষ্মীপুর জেলা সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি উপজেলা, মুন্সিগঞ্জ জেলা সদর, নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ, চাটখিল, সোনাইমুড়ী, শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ, নারিয়া ও সখীপুর উপজেলা থেকে আসা রোগীরা চিকিৎসা-সেবা নিচ্ছে। তবে মতলবের ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা খুবই কম। গত ৭ দিনে চাঁদপুর সদর, হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, কুমিল্লার বরুড়া, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার রোগী বেশি ভর্তি হয়েছে। 

হাসপাতাল ও বারান্দায় ডায়রিয়া রোগী। হাসপাতালে চিকিৎসা-সেবা নিতে আসা চাঁদপুর সদর উপজেলার শিশু সুমাইয়া আক্তারের (৫), ফরিদগঞ্জ উপজেলার কবির হোসেন (১), পার্শ্ববর্তী জেলা কুমিল্লার বড়ুরা উপজেলার আওলাদ হোসেনের (২) অভিভাবক জানান, এ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান ভালো। ডাক্তাররা রোগীদের যত্নসহকারে সেবা দিচ্ছে। হাসপাতাল থেকে রোগীদের জন্য ওরস্যালাইন, সুজি ও বেবিজিংক ট্যাবলেট সরবরাহ করছে। 

আইসিডিডিআরবির সিনিয়র মেডিসিন অফিসার ডা. চন্দ্র শেখর দাস জানান, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি শীতকালীন ডায়রিয়া। ভাইরাসজনিত কারণে, দূষিত খাবার ও দূষিত পানি পান করা, ময়লা মুখে দেওয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় শিশুরা ডায়রিয়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তবে এসব রোগীদের নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ করে তুলতে চিকিৎসকেরা তাঁদের দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকেন। প্রতিদিন ৫ জন ডাক্তার, ৬ জন সিনিয়র নার্স, ২০ জন স্বাস্থ্য সহকারী ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা-সেবায় নিয়োজিত থাকেন। ভর্তি হওয়া রোগীদের সুস্থ হয়ে উঠতে ৫ থেকে সর্বোচ্চ ৭ দিন সময় লাগে। 

শূন্য থেকে ছয় মাস বয়সী শিশুদের পরিমাণমতো খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো, ৭ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের পরিমাণমতো খাবার স্যালাইন, একটি করে বেবিজিংক ট্যাবলেট এবং বাড়তি খাবারের মধ্যে সুজি, খিচুড়ি, ডাবের পানি, চিড়াসহ তরল খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দেন তিনি। ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু যদি পানির মতো পাতলা পায়খানা করে, বুকের দুধ টেনে খেতে না পারে এবং অতি মাত্রায় পিপাসা ও জ্বর, ঘনঘন বমি, পায়খানার সঙ্গে রক্ত দেখা দিলে দ্রুত নিকটস্থ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে নিয়ে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন তিনি। 

চাঁদপুরের মতলব আইসি ডিডিআরবি হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ১৩০ থেকে ১৪০ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। তবে চিকিৎসা-সেবা নিতে এসে কোনো রোগী মারা যায়নি। এমনই তথ্য জানান, মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতাল। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে তিন চোখ ও দুই মুখের বাছুরের জন্ম, এলাকায় চাঞ্চল্য

নরসিংদী প্রতিনিধি
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীতে অদ্ভুত আকৃতির বাছুরের জন্ম হয়েছে। বাছুরটির রয়েছে দুটি মুখ, দুটি জিহ্বা, দুটি কান ও তিনটি চোখ। এর মধ্যে একটি চোখ বাছুরের কপালের মাঝখানে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

২৩ ডিসেম্বর রাতে শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের পুবেরগাঁও গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাশেম খানের খামারে বাছুরটির জন্ম।

খামারমালিক কাশেম খান বলেন, বাছুরটি জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। স্বাভাবিকভাবে দুধ পান করতে না পারায় ফিডারের মাধ্যমে দুধ খাওয়াতে হচ্ছে।

তিনি জানান, তাঁর খামারের একটি গাভি বাছুরটির জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, এর আগেও গাভিটির বাছুর হয়েছে। কিন্তু এবারের মতো এমন অদ্ভুদ বাছুর আগে কখনো হয়নি।

ঘটনাটি জানাজানির পর থেকেই বাছুরটিকে একনজর দেখতে আশপাশের কৌতূহলী মানুষ খামারে আসছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জলিল বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে গরু-ছাগল দেখছি। কিন্তু তিন চোখ আর দুই মুখের বাছুর এই প্রথম দেখলাম। খবর পেয়ে দূর থেকে এসেছি।’

আরেক স্থানীয় নারী জরিনা বেগম বলেন, ‘বাছুরটা দেখতে অদ্ভুত লাগলেও মায়া হচ্ছে। বাছুরটির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অনেকেই দ্রুত প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন।’

এর আগে এ ধরনের বাছুর জন্মের বিষয়ে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাধারণত জেনেটিকস ডিফেক্টের কারণে গাভির এমন ত্রুটিপূর্ণ বাচ্চার জন্ম হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজীপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ নিহত ৩

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের কালীগঞ্জে রেললাইন দিয়ে হাঁটার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ তিন নারী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে টঙ্গী-ভৈরব রেলপথের আড়িখোলা রেলস্টেশনসংলগ্ন টেকপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নারীরা হলেন কালীগঞ্জ পৌরসভার দেওয়ালেরটেক গ্রামের মোবারক হোসেনের স্ত্রী সাদিয়া বেগম (২৪), একই এলাকার বাবু মিয়ার মেয়ে অনাদি আক্তার (১৩) এবং নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মরজাল এলাকার বাসিন্দা কমলা বেগম (৫৫)। নিহত কমলা বেগম ও অনাদি আক্তার সম্পর্কে নানি-নাতনি এবং সাদিয়া বেগম তাঁদের প্রতিবেশী ছিলেন।

স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আড়িখোলা রেলব্রিজ এলাকায় রেললাইনের ওপর দিয়ে তিনজন হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নোয়াখালীগামী ‘উপকূল এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি চলে আসে। এ সময় তাঁরা রেলব্রিজের ওপর থাকায় সেখান থেকে দ্রুত সরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। পরে ট্রেনটি তাঁদের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই কমলা বেগম ও সাদিয়া বেগমের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় অনাদি আক্তারকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জিয়াউর রহমান জানান, অনাদি আক্তারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুল হক জানান, এটি রেলওয়ের আওতাধীন দুর্ঘটনা হওয়ায় রেলওয়ে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।

রেলওয়ে নরসিংদী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) দিলীপ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল সম্পন্ন করেছি। নিহত নারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বিনা ময়নাতদন্তে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আরাকান আর্মিদের জন্য নেওয়া হচ্ছিল ১৫০০ মশারি, আটক ৫

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি  
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

বান্দরবানের থানচি উপজেলায় দুটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি নৌকার ইঞ্জিনের পাখা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট পার হওয়ার সময় নৌকাগুলো তল্লাশি করে এসব জিনিস জব্দ করে বিজিবি। এসব মশারি ও ইঞ্জিনের পাখা বান্দরবানের থানচির বড় মদক সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির জন্য নেওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছে বিজিবি। এ ঘটনায় নৌকা দুটি থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের থানচি থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আটক ব্যক্তিরা হলেন থোয়াই হ্লা চিং মারমা, উমং সাইং মারমা, হ্লাচিংথোয়াই মারমা, উক্যছাইন মারমা ও মো. ইউনুস।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে বিজিবি বলিপাড়া ৩৮ ব্যাটালিয়ানের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেনের জানান, নিজস্ব গোয়েন্দা সূত্রে তাঁরা জেনেছেন, দীর্ঘদিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ওষুধ, কাপড়, জুতা, মোজা, মশারি, নৌকা ইঞ্জিনের পাখা ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ মিয়ানমারের আরাকান আর্মির কাছে সরবরাহ করছে একটি সিন্ডিকেট চক্র। পাচারকারীদের ধরতে সীমান্তের বিজিবি চৌকিগুলোতে বিজিবি সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন।

জাকির হোসেন বলেন, গতকাল বুধবার তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট অতিক্রম করার সময় মালবাহী তিনটি ইঞ্জিন নৌকা দেখে বিজিবির সদস্যদের সন্দেহ হয়। এ সময় নৌকা থামাতে বললে একটি নৌকা দ্রুত চলে যায়। বাকি দুটি নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি ইঞ্জিন বোটসহ অন্যান্য পণ্য পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নলছিটি লঞ্চঘাট ওসমান হাদির নামে নামকরণ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
নলছিটি লঞ্চঘাট ।  ছবি: আজকের পত্রিকা
নলছিটি লঞ্চঘাট । ছবি: আজকের পত্রিকা

নলছিটি উপজেলার লঞ্চঘাট এখন থেকে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির নামে পরিচিত হবে। জন্মস্থান ও শৈশবের স্মৃতিতে গাথা এই লঞ্চঘাট তাঁর নামের সঙ্গে চিরস্থায়ীভাবে যুক্ত হলো।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় (২৫ ডিসেম্বর) জানান, শহীদ ওসমান হাদির জন্মস্থান নলছিটি। শৈশব, বেড়ে ওঠা এবং জীবনসংগ্রামের সঙ্গে লঞ্চঘাট এলাকার নিবিড় সম্পর্ক থাকার কারণে এটি তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে টার্মিনালের সংস্কার ও রঙের কাজ চলমান রয়েছে।

আগামী শনিবার নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ঘাটটি পরিদর্শন করবেন বলেও জানান তিনি।

নলছিটি লঞ্চঘাট শহীদ ওসমান হাদির জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঘাট থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে তার পৈতৃক বাড়ি। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে মানুষের আসা-যাওয়া দেখা এবং লঞ্চের ভিড়ে সময় কাটানো—এই ঘাট ছিল তার বেড়ে ওঠার নীরব সাক্ষী।

ঘাট এলাকার ব্যবসায়ী রব হাওলাদার বলেন, ‘আমরা চাইছিলাম হাদির স্মরণে এমন কিছু হোক, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রাখবে। তার শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া নিঃসন্দেহে স্মরণীয় সিদ্ধান্ত।’

ব্যবসায়ী শাহাদত আলম ফকির যোগ করেন, ‘এই ঘাটে আমরা হাদিকে ছোটবেলা থেকে দেখেছি। সে এখানকারই ছেলে ছিল। আজ তার নামে ঘাটের নামকরণ হওয়ায় আমরা গর্বিত।’

ওসমান হাদির প্রতিবেশী বেলায়েত হোসেন নান্নু বলেন, ‘হাদি এই এলাকার সন্তান। এই ঘাট, এই নদী, এই মানুষ—সবকিছুতেই তার স্মৃতি ছড়িয়ে আছে। লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া মানে, সে এখানেই চিরদিন বেঁচে থাকবে।’

উল্লেখ্য, ১২ ডিসেম্বর হত্যার উদ্দেশ্যে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। তাঁকে প্রথমে ঢাকায় ভর্তি করা হয় এবং পরে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর মারা যান ওসমান হাদি। পরবর্তীকালে তাঁর মরদেহ দেশে আনা হয় এবং সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে (জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে) সমাহিত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত