Ajker Patrika

‘জুলাই অভ্যুত্থানের ঐক্যের আলোকে সংস্কার শেষে আসুন আমরা নির্বাচনে যাই’

গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুরে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশে যে গণতন্ত্রের অভিযাত্রা শুরু করেছিলাম, তা ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বইঠার ঘটনা ম্লান করে দিয়েছিল। সেই ২৮ অক্টোবর থেকে ভারতীয় আধিপত্যবাদীদের এ দেশীয় সেবাদাস দেশের মসনদে বারবার বসার চেষ্টা করেছে। ২০০৬ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আমরা একটি কালো অধ্যায় পার করেছি। এই সময়ে কারও গণতান্ত্রিক অধিকার ছিল না, রাজনৈতিক অধিকার ছিল না, ভোটাধিকার ছিল না, ধর্মীয় মূল্যবোধ পায়ের নিচে পিষে ফেলা হয়েছিল।’

আজ শুক্রবার সকালে গাজীপুর সদরের ভবানীপুর মুক্তিযোদ্ধা কলেজ মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গাজীপুর জেলা শাখার কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিয়া গোলাম পরওয়ার এসব কথা বলেন।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘আমরা একটি কালো যুগ পার করেছি বিগত ১৮টি বছর। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনে প্রকাশ্য দিবালোকে খুনি সন্ত্রাসী ফ্যাসিস্ট সমস্ত গুম, হত্যাকাণ্ড, রিমান্ড, ক্রসফায়ারের মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনার নির্দেশে পল্টনে লগি-বইঠা দিয়ে আমাদের সাতজন তরুণ নেতাকে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তাঁদের মৃতদেহের ওপর উঠে ঘৃণ্য উল্লাস করেছিল তারা। আমরা সেই ইতিহাস ভুলে যাইনি।’

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে অর্থনীতিতে চলেছিল লুটপাট, জুডিশিয়ারি অঙ্গনে কোনো ন্যায়বিচার ছিল না, শাসনক্ষমতা এই শেখ পরিবার ও আওয়ামী লীগ সিন্ডিকেট করে তছনছ করে দিয়েছিল। কত মানুষ শহীদ হয়েছে, কত মানুষ আহত হয়েছে, পঙ্গু হয়েছে, লক্ষ লক্ষ মানুষ কারা বরণ করেছে। কত শিশু, কত বৃদ্ধ, কত মা আল্লাহর কাছে চোখের পানি ফেলে কান্না করেছে। অত্যাচারী শাসকের হাত থেকে এ জনপদকে রক্ষা করার জন্য দোয়া করেছে। আমরা জানি না কোন শহীদ বা কার হাতকে আল্লাহ কবুল করেছেন। গত ৫ আগস্ট আসমান থেকে আল্লাহর রহমতের ধারা বর্ষিত হয়েছে।’

জামায়াত নেতা পরওয়ার বলেন, ‘এই স্বৈরাচার কত মানুষকে হত্যা করল, কত নেতা-কর্মীকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে দিল। বিগত ’১৪, ’১৮, ’২৪ সালে তিনটা ভোট আমরা দিতে পারিনি। রাজনৈতিক দলের আন্দোলনকে গুম করে, নিষিদ্ধ করে আর নির্যাতন করে বিরোধী আন্দোলনকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে।’

শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়াকে নজিরবিহীন উল্লেখ করে জামায়াতের সেক্রেটারি বলেন, ‘আমরা পৃথিবীর ইতিহাসে অনেক স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্টের বিদায় দেখেছি। কিন্তু এইভাবে জনতার রুদ্র রোষে কাউকে পালিয়ে যেতে দেখিনি। এত দাম্ভিক এত অহংকারী, এই ১৭, ১৮ বছরে ওনার মেজাজটা কী ছিল? ওকে মারো, ওকে ধরো, ওকে নিষিদ্ধ করো, ওকে গুলি করো, আয়নাঘরে নাও, রিমান্ডে নাও, রাজনৈতিক অধিকার নেই, ভোটাধিকার নেই। এত অহংকার, এত দাম্ভিকতা আল্লাহতায়ালা কখনো পছন্দ করেন না। আমরা মনে মনে এটা কামনা করতাম, নিশ্চয়ই আমাদের জন্য আল্লাহর রহমত অপেক্ষা করছে।’

সাবেক এই এমপি বলেন, ‘আমাদের বহু নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে বৃদ্ধ বয়সে কারাগারে নিষ্ঠুর নির্যাতন করেছে, তাঁদের ফাঁসি দিয়েছে। মিথ্যা মামলা, মিথ্যা সাক্ষ্য, মিথ্যা ট্রাইব্যুনাল, মিথ্যা বিচারক, সাজানো রায় দিয়ে ইতিহাসের বর্বরতম জুডিশিয়াল কিলিং করে আমাদের নেতাদের হত্যা করা হয়েছে। বিদেশ থেকে রায় লিখে দেওয়া হয়েছে। সেই হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড হচ্ছে শেখ হাসিনা।’ তিনি বলেন, ‘যে ট্রাইব্যুনাল দিয়েছিল আলেমদের ফাঁসি দেওয়ার জন্য, আল্লাহর কী বিচার, এখন সেই ট্রাইব্যুনালেই তার বিচারের আয়োজন চলছে। দুই শর ওপর মামলা হয়ে গেছে ট্রাইব্যুনালে। রেড অ্যালার্ট জারি হয়েছে, ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে।’

গাজীপুরে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুরে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ছবি: আজকের পত্রিকা

মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, ‘তিনি এখন ভারতে পালিয়ে গিয়েছেন। সেখান থেকেও তিনি ষড়যন্ত্র করছেন। একজন আন্তর্জাতিক খুনি ও সব খুনের মাস্টারমাইন্ডকে ভারত আশ্রয় দিয়ে জেনেভা কনভেনশন এবং সকল আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করেছে। তাহলে আমরা এটা বলতে বাধ্য, এত বছরের জুলুম নির্যাতন, লুটপাট খুনের পেছনে তাদেরও হাত ছিল। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতকে চিঠি দেওয়া হয়েছে শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার জন্য। তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’

জুলাই বিপ্লবের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক পরওয়ার বলেন, ‘এ আন্দোলনে ২ হাজার ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছে, ৪০ হাজার ছাত্র-জনতা আহত হয়েছে, পঙ্গু হয়েছে। এই যে ত্যাগ, এই যে আত্মদান, রক্তদান, যারা চলে গেল তারা তো বিজয় দেখে যেতে পারল না। তাদের স্ত্রী-সন্তান-শিশুরা কাঁদে, আহতরা হাসপাতালে, মুক্তির স্বাদ তারা দেখতে পারছে না। যারা আত্মত্যাগ করে গেল, তাদের রক্তের এই ঋণ, এই ত্যাগ আমাদের শোধ করতে হবে। আমরা সবাই তাদের রক্তের কাছে ঋণী আছি। তা শোধ করার একটাই উপায় তা হচ্ছে, তারা যে ইনসাফপূর্ণ একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য রক্ত দিয়েছিল, সেই স্বাধীন, সোনার, সমৃদ্ধ, নিরাপদ, কল্যাণ রাষ্ট্রের বাংলাদেশ আমাদের গড়তে হবে। তাহলেই শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করা যাবে। একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা এই নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। কিন্তু সেখানেও অন্তরায়। জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ঐক্যের চেতনা ছিল, কোনো ষড়যন্ত্র কোনো লোভ নতুন করে এই অগ্রযাত্রাকে মাঝে মাঝে যেন বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে।’

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যারা রাজপথে ছিলাম, নেতৃত্ব দিয়েছি, রক্ত দিয়েছি, শহীদ হয়েছি; তাদের কাছে আমার মিনতি, জুলাই অভ্যুত্থানের যে চেতনা, এই ঐক্যের আলোকে আসুন এটাকে জাতীয় ঐক্যের পরিবেশ তৈরি করে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন, সেই সংস্কারটুকু করে আমরা নির্বাচনে যাই।’

জেলা জামায়াতের আমির ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ড. মো. সামিউল হক ফারুকী, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য মো. আবুল হাশেম খান, গাজীপুর মহানগর আমির অধ্যাপক মুহা. জামাল উদ্দিন প্রমুখ। এ ছাড়া জুলাই আগস্ট আন্দোলনে আহত পোশাককর্মী মুকুল কুমার দত্ত এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় সকাল থেকেই মনোনয়ন জমা দেওয়া শুরু

খুলনা প্রতিনিধি
মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনা‌রেল মিয়া গোলাম প‌রোয়ার। ছবি: আজকের পত্রিকা
মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনা‌রেল মিয়া গোলাম প‌রোয়ার। ছবি: আজকের পত্রিকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন আজ সোমবার। শী‌তের তীব্রতাকে উপেক্ষা ক‌রে এদিন সকাল থেকেই বিভিন্ন দ‌লের প্রার্থীরা তাঁদের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নি‌য়ে মনোনয়নপত্র জমা দি‌তে ‌রিটা‌র্নিং কর্মকর্তা ও খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত হ‌তে থা‌কেন।

এদি‌কে প‌রি‌স্থি‌তি স্বাভা‌বিক রাখতে সকাল থে‌কে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সাম‌নে অতিরিক্ত পু‌লিশ মোতা‌য়েন করা হয়েছে।

সকাল সা‌ড়ে ৯টার দিকে মনোনয়নপত্র জমা দি‌তে জেলা প্রশাসকের কার্যাল‌য়ের নিচে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নি‌য়ে উপস্থিত হন খুলনা-৫ আস‌নের সংসদ সদস‌্য প্রার্থী ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনা‌রেল মিয়া গোলাম প‌রোয়ার। সকাল ৯টা ৫১ মি‌নি‌টের দি‌কে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনা‌রেল মিয়া গোলাম প‌রোয়ার তাঁর ম‌নোনয়নপত্র জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা আ স ম জাম‌সেদ খোন্দকা‌রের হ‌তে তু‌লে দেন।

এরপর মনোনয়নপত্র তু‌লে দেন খুলনা-৬ আস‌নের প্রার্থী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপ‌রিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী প‌রিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। তারপ‌রে দেন খুলনা-২ আস‌নের প্রার্থী বাংলা‌দেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস‌্য ও মহানগরী জামায়া‌তের সেক্রেটারি জেনা‌রেল অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল। এরপর পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লা-৪: হাসনাত আবদুল্লাহর সমর্থনে সরে দাঁড়ালেন জামায়াত প্রার্থী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
হাসনাত আবদুল্লাহ ও সাইফুল ইসলাম (শহিদ)। ছবি: সংগৃহীত
হাসনাত আবদুল্লাহ ও সাইফুল ইসলাম (শহিদ)। ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর পক্ষে নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের আলোকে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম (শহিদ) নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

গতকাল রোববার ঢাকায় এনসিপি, জামায়াতে ইসলামী এবং সমমনা ৮টি দলের মধ্যে একটি নির্বাচনী সমঝোতা ঘোষিত হয়। এই জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কুমিল্লা-৪ আসনে এই পরিবর্তন আসে। উল্লেখ্য, এই দেবীদ্বার আসনটি এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর নিজস্ব এলাকা।

সাইফুল ইসলাম কুমিল্লা উত্তর জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে তিনি রোববার রাতে তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্টের মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। কেন্দ্রীয় সংগঠনের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে নির্বাচন থেকে নিজেকে আড়াল করে নিলাম। আল্লাহ যেন দ্বীন কায়েমের পথে আমৃত্যু টিকে থাকার তৌফিক দান করেন।’

পরে এ প্রসঙ্গে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, সংগঠনের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও আমি দেবীদ্বারের মানুষের পাশে সব সময় থাকব। হয়তো জনগণের সব প্রত্যাশা পূর্ণাঙ্গভাবে পূরণ করতে পারব না, তবে সংগঠনের এই সিদ্ধান্ত সামগ্রিকভাবে কল্যাণ বয়ে আনবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

গত ২৩ ডিসেম্বর এনসিপির নেতা-কর্মীরা হাসনাত আবদুল্লাহর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। বিশেষ করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। জামায়াত প্রার্থীর সরে দাঁড়ানোর ফলে হাসনাত আবদুল্লাহর অবস্থান এই আসনে আরও শক্তিশালী হলো বলে মনে করছেন স্থানীয় ভোটররা।

এর আগে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে শুভকামনা জানিয়ে ঢাকা-১১ আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী আতিকুর রহমান নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। গতকাল রোববার রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে এ কথা জানান ছাত্রশিবিরের সাবেক এই কেন্দ্রীয় সভাপতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পটিয়ায় বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত, আহত ৪

পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত হয়েছেন। এ সময় আরও চারজন আহত হয়েছেন। নিহত ট্রাকচালক মো. সালাম (৫৫) বগুড়া জেলার আকতার মিয়ার ছেলে। আহতরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইউনুচ মিয়ার ছেলে জাহেদুল ইসলাম (২৬), একই এলাকার জুয়েলের ছেলে জাকির ইসলাম (৩০), সবুর মিয়ার ছেলে সাকিব উল হাসান (১৭) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকার নাসরিন সুলতানা (২৯)।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান সড়কের পটিয়া উপজেলার আমজুরহাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, রাতে কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা হানিফ পরিবহনের একটি বাস আমজুরহাট এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পণ্যবাহী ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের সময় ট্রাকচালক মো. সালাম বাস ও ট্রাকের মাঝখানে আটকা পড়েন।

খবর পেয়ে পটিয়া ফায়ার সার্ভিসের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দীর্ঘ চেষ্টার পর তাঁকে উদ্ধার করে। পরে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

দুর্ঘটনায় আহত চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পটিয়া হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

পটিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রাজেশ বড়ুয়া জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রাত আড়াইটায় তাঁদের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে। পরে হাইওয়ে পুলিশ দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও ট্রাক উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাতকানিয়ায় খালের পাড় কেটে মাটি বিক্রি

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৭
খাল পাড় কেটে মাটি নিয়ে যাওয়ার কারণে পাশের ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাল পাড় কেটে মাটি নিয়ে যাওয়ার কারণে পাশের ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় খালের পাড় কেটে মাটি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক যুবকের বিরুদ্ধে। উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় মাদার্শা খালের পাড় থেকে এ মাটি কাটা হচ্ছে। এতে খালের পার্শ্ববর্তী ফসলি জমি ভেঙে খালে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে মাদার্শা খালের একপাশের পাড় থেকে মাটি কেটে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রামে ঘরের ভিটা ভরাটের জন্য বিক্রি করা হচ্ছে। রাতের আঁধারে ভেকু (এক্সকাভেটর) দিয়ে খালের পাড়ের এ মাটি কাটা হচ্ছে। খাল পাড় কেটে মাটি নিয়ে যাওয়ার কারণে পাশের ফসলি জমি ভেঙে খালে বিলীন হওয়ার পাশাপাশি খালের স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, নাদিমুল হাসান চৌধুরী নামের পার্শ্ববর্তী এলাকার এক ব্যক্তি তাঁর সহযোগীদের মাধ্যমে খালের পাড় কেটে মাটি বিক্রি করে চলেছেন। এতে আলী হোসেন নামের একজন কৃষকের বাদামখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে ক্ষতিপূরণ হিসেবে কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেন বলেন, অবিলম্বে খালের পাড় কাটা বন্ধ করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। আর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ কেটে নেওয়া খালপাড় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় আগামী বর্ষা মৌসুমে খালটির গতিপথ পরিবর্তন হয়ে আশপাশের এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আলী হোসেন বলেন, ‘ওই খালের পাড়ঘেঁষে বাদামের চাষ করেছিলাম। খাল পাড় থেকে মাটি কেটে বিক্রি করার কারণে আমার বাদামখেতটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় আমি তাঁদের বাধা দিয়েছিলাম। পরে তাঁরা আমাকে ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিয়েছেন।’

মাটি বিক্রির সঙ্গে জড়িত নাদিমুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘খালের দুই পাড়েই আমাদের জমি রয়েছে। গত বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে খালের একপাশে পলি জমে বিশাল মাটির স্তূপ তৈরি হয়েছিল। এ কারণে খালের অন্যপাশের জমি ভেঙে বিলীন হয়ে যাচ্ছিল। তাই জমির ভাঙন রোধে স্তূপ হয়ে থাকা পাশের কিছু মাটি কেটে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়েছি।’

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ইতিমধ্যে বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত হয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পর খালের পাড়ের মাটি কাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত