Ajker Patrika

দিয়াবাড়িতে পাশাপাশি দুই গরুর হাটের কার্যক্রম, সংঘর্ষের আশঙ্কা

নুরুল আমিন হাসান, উত্তরা (ঢাকা) 
আপডেট : ০৯ জুন ২০২৪, ২৩: ৪৮
দিয়াবাড়িতে পাশাপাশি দুই গরুর হাটের কার্যক্রম, সংঘর্ষের আশঙ্কা

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে কোরবানির পশুহাটের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। কিন্তু তাঁর পাশেই অনুমতি ছাড়া আরেকটি গরুর হাট বসানো হচ্ছে। এ নিয়ে উত্তরায় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 

সরেজমিনে আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া মহাসড়কের তুরাগের সাহেব আলী মাদ্রাসা থেকে উত্তরার স্লুইসগেট এলাকা পর্যন্ত কোরবানির পশুহাট বসানোর জন্য খুঁটি বসানো হচ্ছে। ঘুরতে ঘুরতে গিয়ে আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে বাস পার্কিংয়ের জায়গায় গিয়ে দেখা যায়, হাটের মাঠের জন্য বাঁশের খুঁটি গাড়া হয়েছে। সেই সঙ্গে গেটও সাজানো হচ্ছে। আলোকসজ্জারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 

সেখানকার মাঠের কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার। তারা জানান, ডিএনসিসির ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফসার উদ্দিন খান এবং ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন যুবরাজ এই হাটটি বসাচ্ছেন। অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, এটা ওনারা (কাউন্সিলররা) বলতে পারবেন। আবার তাঁদের কেউ কেউ বলছেন, এখানে গরুর ফার্ম করা হবে। তাই খুঁটি লাগানো হচ্ছে। এদিকে শতাধিক যুবক হাটের কার্যক্রম পাহারা দিচ্ছেন। 

হাটের মাঠের পাশেই রয়েছে একটি বাস পার্কিং স্টপেজ। সেখানকার আকাশ পরিবহনের চালক মো. রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা এখানে নাইট কোচের বাস, ভিক্টর বাস ও আকাশ পরিবহনের বাস রাখতাম। আমাদের সরিয়ে দিয়ে এখানে গরুর হাট বসানো হচ্ছে। এখন আমাদের মালিক যেখানে গাড়ি রাখার জায়গা করে দেবে, আমরা সেখানে রাখব।’ 

অপরদিকে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কর্তব্যরত ইঞ্জিনিয়ার জুয়েল রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাসস্ট্যান্ড সরিয়ে গরুর হাট বসানো হচ্ছে। হাট বসানোর জন্য আজ থেকে কাজ শুরু হয়েছে।’ 

এদিকে আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া সড়কে অবৈধভাবে গরুর হাট বসানোর পাঁয়তারার বিরুদ্ধে শনিবার (৮ জুন) দুপুরের উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের খালপার এলাকায় মানববন্ধন করেছেন তুরাগের দিয়াবাড়ির গরুর হাটের লোকজন। এ সময় তাঁর সঙ্গে আরও অর্ধশতাধিক এলাকার স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন। 

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘আমরা সিটি করপোরেশন থেকে সর্বোচ্চ দর দিয়ে গরুর হাট নিয়েছি। কিন্তু আমাদের পাশের আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া মহাসড়কের দুই পাশে আরেকটি পশুর হাট বসানোর পাঁয়তারা চালাচ্ছে একটি চক্র। এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষ বেঁধে যেতে পারে দুই হাটের লোকজনের মাঝে।’ 

দিয়াবাড়ি হাটের ইজারাদার কফিল উদ্দিন মেম্বার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি ও আওয়ামী লীগের দেড় শতাধিক নেতা-কর্মী মিলে গরুর হাটটি ইজারায় নিয়েছি। কিন্তু ডিএনসিসির ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আফসার উদ্দিন খান ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন যুবরাজ এবং তাঁদের লোকজন মিলে অনুমতি না নিয়েই আরেকটি হাট বসার পাঁয়তারা করছেন।’ 

তিনি বলেন, ‘হাট বন্ধের জন্য আমরা ডিএনসিসির মেয়র বরাবর লিখিতভাবে গত ২ জন জানিয়েছি। সেই সঙ্গে থানা-পুলিশ ও উত্তরার উপ-পুলিশ কমিশনারকেও মৌখিকভাবে জানিয়েছি। কেউ হাট হাট বন্ধের জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।’ 

কফিল উদ্দিন বলেন, ‘উত্তরা পশ্চিম ও তুরাগ থানা এলাকার মধ্যে শুধু দিয়াবাড়িতেই সব সময় গরুর হাট বসে আসছে। সেটি আমরা নিয়েছি। এখন যদি পাশাপাশি আরেকটি হাট বসানো হয়, তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব।’ 

আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া মহাসড়কের পাশে অনুমতিহীন কোরবানির পশুহাট। ছবি: আজকের পত্রিকাহাটের বিষয়ে জানতে ডিএনসিসির ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফসার উদ্দিন খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আপনি ফিল্ডে গিয়ে দেখে সিটি করপোরেশনে যোগাযোগ করেন।’ অপরদিকে দুই দিন ডিএনসিসির ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোন ও খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। 

হাটের বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিও) মীর খায়রুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা উত্তরার দিয়াবাড়িতে একটি হাটের অনুমতি দিয়েছি। আর কোনো হাটের অনুমতি দেওয়া হয়নি। উত্তরার কামাড়পাড়া এলাকায় হাট বসানোর প্রশ্নই আসে না। যদি কেউ চেষ্টা করে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা যদি কোথাও হাট বসাই তাহলে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রপার রুলস অনুযায়ী বসাব। আর সেটি নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে প্রশাসন।’ 

এদিকে উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. শাহজাহান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী চার কিলোমিটারের বাইরে হলে আরেকটি গুরুর হাট বসানো যায়। দিয়াবাড়ি থেকে কামারপাড়ার গরুর হাটের দূরত্ব ৪ কিলোমিটারের বেশি, প্রায় ৬ কিলোমিটার। ওই হাটের লোকজনের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি, জানতে পেরেছি তাঁরা গরুর হাটের অনুমতি পেয়েছে বা পাবে।’ 

সংঘর্ষের আশঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিসি শাহজাহান বলেন, ‘সরকারি নিয়ম নেমে যদি তাঁরা গরুর হাট করতে পারে, তাহলে করবে। তবে এমন কোনো আশঙ্কা আমরা করছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হবিগঞ্জে রত্না বেইলি সেতু ভেঙে ট্রাক আটকা, দুর্ভোগে যাত্রীরা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক সড়কের রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ওই পথে সব ধরনের যান চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শতাধিক যাত্রী ও ওই পথে চলাচলকারীরা। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জাফলং থেকে ছেড়ে আসা বানিয়াচংগামী পাথরবোঝাই একটি ট্রাক ব্রিজের ওপর ওঠামাত্রই ব্রিজের দুটি পাটাতন ভেঙে যায়। মুহূর্তেই ট্রাকের পেছনের দুটি চাকা ধসে পড়ে এবং পুরো ট্রাকটি ব্রিজে আটকে যায়।

এতে দীর্ঘ লাইনে আটকা পড়ে যাত্রীবাহী বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টমটম, প্রাইভেট কারসহ অসংখ্য যানবাহন। বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ব্যবসায়ীরা।

দুর্ঘটনার পর ব্রিজের একপাশ থেকে অন্যপাশে যাওয়ার জন্য যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে ভাঙা অংশ অতিক্রম করছে। এতে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ট্রাকটি ব্রিজে উঠতেই জোরে শব্দ হয়। একটু পরই দেখি পাটাতন নিচে ধসে গেছে। ভাগ্য ভালো যে ট্রাকটি পুরোপুরি নিচে পড়ে যায়নি। তবে এখন তো ও পথে চলাচলকারীরা আটকা পড়ে আছে।’

যাত্রীরা জানান, রত্না বেইলি ব্রিজটি বহুদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভারী যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে—এমন আশঙ্কা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। এদিকে যাত্রীদের দাবি, এখানে যেন বেইলি ব্রিজের পরিবর্তে দ্রুত স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়, যাতে প্রতিদিনের এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘ব্রিজটি দ্রুত মেরামত করার কাজ চলছে। পাথরবোঝাই ট্রাকটিতে বেশি লোড থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬৭ বছর পর রামেক হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অবশেষে ৬৮ বছরে পা দিতে চলা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে এলেও ভর্তির সুযোগ ছিল না। গুরুতর রোগীদের কিছু ক্ষেত্রে মেডিসিন বিভাগে রাখা হলেও, পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ডের অভাবে এতদিন অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হতো।

হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর এই প্রথম ২৫ শয্যার একটি সুসজ্জিত মনোরোগ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই নতুন ওয়ার্ডটি গড়ে তোলা হয়েছে।

এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট বিন্যাস রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য ৭ টি, শিশু-কিশোরদের জন্য ৫টি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য ৩টি শয্যা সংরক্ষিত রয়েছে। এ ছাড়া রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার জন্য থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

এই ওয়ার্ডটি চালুর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল কলেজের স্বীকৃতি বজায় রাখা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চ মাসেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। পরিদর্শনকালে মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমে যাওয়ার এবং অ্যাক্রিডিটেশনে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এতে করে এই কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা বা পড়াশোনা করার সুযোগ কমে যেত। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এমন একটি ওয়ার্ড জরুরি ছিল।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধ শুনে সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ দ্রুত এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন এবং গত বুধবার এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটি সত্যিই অবাক হওয়ার মতো বিষয়। আমরা প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগেগত ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে একজনও সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয়নি, যেখানে আগে প্রায় প্রতিদিনই এই রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত