Ajker Patrika

সড়কে নিয়ম ভাঙার মহোৎসব

  • রিকশাচালক ও মোটরসাইকেলের চালকদের আইন ভাঙার প্রবণতা বেশি
  • উল্টো পথে চলার প্রবণতাও বেশি। বাধা দিলে খারাপ আচরণ করেন কেউ কেউ
  • পদচারী-সেতু ব্যবহার না করে সরাসরি সড়ক পার হন পথচারীরা
আব্দুল্লাহ আল গালিব, ঢাকা
নিরাপত্তার স্বার্থে দেশের সব মহাসড়কে তিন চাকার যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হলেও অনেকেই তা মানছেন না। আইন অমান্য করে মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এসব যানবাহন। এতে বেড়েছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। গতকাল দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিরাপত্তার স্বার্থে দেশের সব মহাসড়কে তিন চাকার যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হলেও অনেকেই তা মানছেন না। আইন অমান্য করে মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এসব যানবাহন। এতে বেড়েছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। গতকাল দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর ব্যস্ততম সড়কগুলোয় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে পায়েচালিত রিকশা ও অটোরিকশাচালকদের মধ্যে নিয়ম না মানার প্রবণতা বেশি। নির্দিষ্ট প্রধান সড়কগুলোয় রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও বাস্তবে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। নিয়মের তোয়াক্কা না করেই এসব সড়কে নির্বিঘ্নে চলছে রিকশা।

মোটরসাইকেল চালকেরাও আইন ভাঙছেন। ফুটপাতে উঠে পড়ার প্রবণতা মোটরসাইকেল চালকদের মধ্যে আগে থেকেই আছে। সম্প্রতি সে প্রবণতা আরও বেড়ে গেছে। এ ছাড়া সিগন্যাল অমান্য করে যানজটের সৃষ্টি করা, উল্টো পথে ঢুকে পড়া, পথচারীদের পদচারী-সেতু না ব্যবহার করা—এসব অনিয়ম সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে। গত মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার রাজধানীর ব্যস্ততম কিছু সড়ক ও মোড়ে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বুধবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নীলক্ষেত মোড়ে দেখা যায়, একটি সিগন্যাল বন্ধ করে আরেকটি ছাড়ার আগেই অন্যপাশ থেকে গাড়িগুলো চলে আসছে। এতে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। কেউ কাউকে সুযোগ না দিয়ে নিজে আগে যাওয়ার চেষ্টায় মত্ত। এ প্রবণতা রিকশাচালক ও মোটরসাইকেলচালকদের মধ্যে বেশি দেখা গেছে। নীলক্ষেত থেকে আজিমপুর যাওয়ার রাস্তায় কিছু রিকশা উল্টো সড়কে আসতে দেখা গেছে। বাধা দিতে গেলে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করেন কেউ কেউ। পথচারীদের ক্ষেত্রেও একই চিত্র। পদচারী-সেতু থাকার পরও অনেকে সরাসরি ব্যস্ত সড়ক পেরিয়ে যান।

আইন ভাঙার কারণ জানতে চাইলে অনেকেই জরুরি কাজের অজুহাত দেন। কেউ কেউ আবার পুলিশের ব্যর্থতাকেই দোষারোপ করেন। এমনই একজন রিকশাচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একটা-দুটা গাড়ি এমন যায়-ই। এর কারণে তো আর জ্যাম হয় না। যখন জ্যাম থাকে তখন এ রকম করি না। প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল তো পুলিশের সামনে দিয়েই যায়, তাদের বেলায় তো পুলিশ কিছু বলে না।’

নিউমার্কেটে পদচারী-সেতু ব্যবহার না করার বিষয়ে কাওসার হোসেন নামের এক পথচারী বলেন, ‘নীলক্ষেত মোড়ে একটা আর সায়েন্স ল্যাব মোড়ে একটা পদচারী-সেতু। এর মধ্যে কিছু নেই। নিউমার্কেটের সামনের পদচারী-সেতুর কাজ তো চলছে কয়েক বছর ধরে! আর যে পদচারী-সেতু আছে, তার নিচে দোকানপাট বসে এমন অবস্থা করেছে, যে এর চেয়ে রাস্তা দিয়ে পার হওয়াই ভালো।’

নীলক্ষেত এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক রাশেদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মোটরচালিত রিকশাচালকদের মধ্যে আইন অমান্য করার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। মোটরসাইকেলচালকদের মধ্যেও এ প্রবণতা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাধা দিতে গেলে আমাদের কনস্টেবলদের সঙ্গে অনেকেই খারাপ আচরণ করেন। এ ছাড়া নিউমার্কেট ও নীলক্ষেতের সড়কে মাঝের ডিভাইডারে রেলিং নেই। পথচারীরা যেখানে-সেখানে রাস্তা পার হচ্ছেন। এটি যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। আমরা বারবার সিটি করপোরেশনকে জানিয়েছি; কিন্তু রেলিংগুলো ঠিক করা হয়নি। রাস্তায় ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকে, যা চলাফেরায় সমস্যার সৃষ্টি করছে।’

রাশেদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘নিউমার্কেটে একটি পদচারী-সেতুর কাজ তিন বছরেও শেষ হয়নি। মানুষ বাধ্য হয়ে রাস্তা দিয়ে পার হচ্ছেন। এখন যাঁরা রাস্তা পার হয়ে যানজট সৃষ্টি করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তো আর মামলা দেওয়া যায় না।’

রামপুরা টিভি সেন্টারসংলগ্ন রাস্তায় একমুখী সড়কে উল্টো পথে আসা এক মোটরসাইকেলচালক বলেন, ‘এদিক দিয়ে সব গাড়িই উল্টো পথে আসে। মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, এমনকি ট্রাকও। টিভি রোডে ঢোকার জন্য ওই বরাবর কোনো ইউটার্ন নেই। তাহলে উল্টো আসবে না তো কী করবে?’

মূল সড়কে রিকশার চলাচল প্রসঙ্গে শাহবাগ জোনের ট্রাফিক পরিদর্শক এ কে মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ট্রাফিক সহায়তাকারী ছাত্ররা থাকেন, তখন লোকবল বেশি থাকায় আমরা রিকশা প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি। কিন্তু ১২টার পর তাঁরা চলে গেলে রিকশাগুলো অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়। প্রয়োজন অনুযায়ী আমাদের জনবল নেই, তাই সমস্যাগুলো বাড়ছে।’

এসব বিষয়ে নিয়ে কথা বলার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ারকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হবিগঞ্জে রত্না বেইলি সেতু ভেঙে ট্রাক আটকা, দুর্ভোগে যাত্রীরা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক সড়কের রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ওই পথে সব ধরনের যান চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শতাধিক যাত্রী ও ওই পথে চলাচলকারীরা। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জাফলং থেকে ছেড়ে আসা বানিয়াচংগামী পাথরবোঝাই একটি ট্রাক ব্রিজের ওপর ওঠামাত্রই ব্রিজের দুটি পাটাতন ভেঙে যায়। মুহূর্তেই ট্রাকের পেছনের দুটি চাকা ধসে পড়ে এবং পুরো ট্রাকটি ব্রিজে আটকে যায়।

এতে দীর্ঘ লাইনে আটকা পড়ে যাত্রীবাহী বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টমটম, প্রাইভেট কারসহ অসংখ্য যানবাহন। বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ব্যবসায়ীরা।

দুর্ঘটনার পর ব্রিজের একপাশ থেকে অন্যপাশে যাওয়ার জন্য যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে ভাঙা অংশ অতিক্রম করছে। এতে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ট্রাকটি ব্রিজে উঠতেই জোরে শব্দ হয়। একটু পরই দেখি পাটাতন নিচে ধসে গেছে। ভাগ্য ভালো যে ট্রাকটি পুরোপুরি নিচে পড়ে যায়নি। তবে এখন তো ও পথে চলাচলকারীরা আটকা পড়ে আছে।’

যাত্রীরা জানান, রত্না বেইলি ব্রিজটি বহুদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভারী যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে—এমন আশঙ্কা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। এদিকে যাত্রীদের দাবি, এখানে যেন বেইলি ব্রিজের পরিবর্তে দ্রুত স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়, যাতে প্রতিদিনের এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘ব্রিজটি দ্রুত মেরামত করার কাজ চলছে। পাথরবোঝাই ট্রাকটিতে বেশি লোড থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬৭ বছর পর রামেক হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অবশেষে ৬৮ বছরে পা দিতে চলা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে এলেও ভর্তির সুযোগ ছিল না। গুরুতর রোগীদের কিছু ক্ষেত্রে মেডিসিন বিভাগে রাখা হলেও, পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ডের অভাবে এতদিন অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হতো।

হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর এই প্রথম ২৫ শয্যার একটি সুসজ্জিত মনোরোগ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই নতুন ওয়ার্ডটি গড়ে তোলা হয়েছে।

এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট বিন্যাস রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য ৭ টি, শিশু-কিশোরদের জন্য ৫টি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য ৩টি শয্যা সংরক্ষিত রয়েছে। এ ছাড়া রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার জন্য থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

এই ওয়ার্ডটি চালুর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল কলেজের স্বীকৃতি বজায় রাখা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চ মাসেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। পরিদর্শনকালে মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমে যাওয়ার এবং অ্যাক্রিডিটেশনে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এতে করে এই কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা বা পড়াশোনা করার সুযোগ কমে যেত। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এমন একটি ওয়ার্ড জরুরি ছিল।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধ শুনে সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ দ্রুত এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন এবং গত বুধবার এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটি সত্যিই অবাক হওয়ার মতো বিষয়। আমরা প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগেগত ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে একজনও সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয়নি, যেখানে আগে প্রায় প্রতিদিনই এই রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত