Ajker Patrika

পুরান ঢাকার কেমিক্যালের গুদাম সরছে না, আরও সময় চায় বিসিক

আয়নাল হোসেন, ঢাকা
পুরান ঢাকার কেমিক্যালের গুদাম সরছে না, আরও সময় চায় বিসিক

২০১০ সালের জুনে পুরান ঢাকার নিমতলীতে কেমিক্যাল গুদামে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় ১২০ জনের বেশি মানুষ মারা যায়। তখনই পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গুদাম সরানোর দাবিতে সোচ্চার হয় স্থানীয়রাসহ বিভিন্ন-শ্রেণি পেশার মানুষ। এরপর ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আগুনে ৭০ জনের বেশি মানুষ মারা গেলে কেমিক্যাল গুদাম সরানোর দাবি আরও জোরালো হয়।

সরকারও উদ্যোগ নেয় নিরাপদ স্থানে তা সরিয়ে নেওয়ার। সে অনুযায়ী মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) নির্মিত কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি পল্লির প্লট চলতি বছরের জুনের মধ্যে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু বিসিক এখনো সেখানে নির্মাণকাজ করতে পারেনি। এ জন্য দেড় বছর সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে সংস্থাটি। অর্থাৎ ২০২৬ সালের আগে এই শিল্পপার্কের নির্মাণকাজ শেষ হচ্ছে না। ফলে পুরান ঢাকা থেকে সরছে না কেমিক্যাল গুদামও।

বিসিক সূত্রে জানা গেছে, কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি পল্লি নির্মাণের জন্য সিরাজদিখানে ধলেশ্বরী নদীর পারে ৩০৮ দশমিক ৩৩ একর জমি অধিগ্রহণ করে সরকার। এ প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪৫৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা। পরে প্রকল্প সংশোধন করে ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। বর্ধিত মেয়াদ শেষ হতে চললেও এখনো সেখানে চলছে মাটি ভরাটের কাজ। কিছু জায়গায় চলছে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ। পুরো শিল্পনগরী গড়ে তুলতে আরও কয়েক বছর সময় লাগবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বিসিক বলছে, ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হবে।

এদিকে কেমিক্যাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাঁরা কেমিক্যালের গুদাম সরাতে প্রস্তুত আছেন। প্রয়োজনে তাঁরা বিসিককে অগ্রিম টাকা দেওয়ার জন্যও প্রস্তুত রয়েছেন। প্লটের জমি বুঝিয়ে দেওয়া হলেই তাঁরা গুদাম সরিয়ে নেবেন। 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কেমিক্যাল অ্যান্ড পারফিউমারি মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এনায়েত হোসেন মারুফ বলেন, বিসিক তাঁদের প্লটের সীমানা বুঝিয়ে দিলেই তাঁরা সেখানে নিজস্ব খরচে অবকাঠামো নির্মাণ করতে চান। ভূমি উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনে তাঁরা অগ্রিম টাকা দিতে প্রস্তুত রয়েছেন।

বিসিক কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি পল্লির প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা বলেন, ভূমি উন্নয়নকাজ শেষে চলতি বছরেই প্লট শিল্পমালিকদের কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হবে। ২০২০ এবং ২০২১ সালের করোনা মহামারি, নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি, প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনীর কারণে কাজের গতি থেমে যায়। নির্মাণকাজে আইনগত কোনো জটিলতা নেই।

প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রকল্পের ভূমি বরাদ্দ এই জুলাইয়ে করার নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। আমরা প্রকল্পের উন্নয়নকাজও করব, প্লট বরাদ্দের কাজও চলবে। দুটি কাজ একই সঙ্গে চলবে। শিল্পমালিকেরা তাঁদের শিল্প গড়ে তুলবেন। আমাদের কিছু অসমাপ্ত কাজও চলমান থাকবে।’

জানা যায়, কেমিক্যাল পল্লি অনাবাসিক ভবন, ডাম্পিং ইয়ার্ড, রাস্তা, ড্রেন, ফায়ার সার্ভিস স্ট্রেশনসহ অন্যান্য কাজ করতে হবে। অথচ প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাটি ভরাটের কাজ শেষ হতেই আরও এক থেকে দেড় বছর সময় লাগবে।

বিসিকের চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার ভৌমিক বলেন, কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি পল্লির নির্মাণকাজের জন্য ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। এখানে ৯ তলাবিশিষ্ট অফিস ভবন হবে। বিদ্যুৎ ও গ্যাস-সংযোগের জন্য টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। তবে এখানে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ হবে। সব মিলিয়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে সময় লাগবে। জমি অধিগ্রহণেই সময় বেশি লেগেছে।

এদিকে কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি পল্লি পুরোপুরি প্রস্তুত হওয়ার পরও ব্যবসায়ীরা পুরান ঢাকা ছাড়বেন কি না, তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ। তাঁরা বলছেন, পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে কয়েক হাজার কেমিক্যাল গুদাম। বড় ও মাঝারি ব্যবসায়ীরাও হয়তো দৌড়ঝাঁপ করে প্লট নেবেন। কিন্তু ক্ষুদ্র অনেক ব্যবসায়ীর পক্ষে প্লট নেওয়া সম্ভব হবে না। তাঁদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও সরবে না।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সহসভাপতি স্থপতি ইকবাল হাবীব বলেন, ব্যবসায়ীরা মুখে বললেও তাঁরা সহজে সরবেন না। চামড়াশিল্প সরানোর সময় ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা করেননি। এখানেও ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাত খুঁজবেন। এটি যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

বাংলাদেশ কেমিক্যাল অ্যান্ড পারফিউমারি মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিলন বলেন, কেমিক্যাল গুদামঘর সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রায় ১০ বছর আগে বাংলাদেশ কেমিক্যাল অ্যান্ড পারফিউমারি মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ অ্যাসিড মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ও পেইন্ট অ্যান্ড ড্রাই কেমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বিসিকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। কিন্তু প্লট নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় তাঁরা স্থানান্তর হতে পারছেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চবি প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।

দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত