Ajker Patrika

তৃতীয় ঢেউয়ের শঙ্কায় বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
তৃতীয় ঢেউয়ের শঙ্কায় বাংলাদেশ

ঢাকা: করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ। সংক্রমণের লাগাম টানতে তিন সপ্তাহ ধরে চলছে লকডাউন। যদিও কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও চলছে গণপরিবহন। ঈদ সামনে রেখে দোকানপাট ও শপিং মলে লেগেই আছে উপচে পড়া ভিড়। সেখানে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। যেভাবে মানুষ চলাফেরা করছে তাতে শিগগিরই করোনার তৃতীয় ঢেউ আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তৃতীয় ঢেউ এড়াতে বারবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ করে যাচ্ছে করোনা মোকাবিলা–সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। কিন্তু তা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হচ্ছে সরকার। কখনো দোকান মালিক, আবার কখনো পরিবহন মালিকদের চাপে বাস্তবায়ন করা যায়নি সরকার–ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউন। স্থল ও আকাশপথে প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা হলেও বিশেষ ব্যবস্থায় ফিরতে পারছেন দেশটিতে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা। ফিরে আসা এসব বাংলাদেশির অনেকের শরীরে করোনার উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এদের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের নতুন ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট দেশে প্রবেশ করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। প্রাণহানিও অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।

জানতে চাইলে রিউমাটোলজি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমরা যে ভয়ংকর অবস্থা পার করছি, তাতে তৃতীয় ঢেউয়ের শঙ্কা প্রবলভাবেই আছে। বলা যেতে পারে, এটা হবে মহাতরঙ্গ, যার শুরুটা হবে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট দিয়ে। এটি অনেক বেশি সংক্রমণশীল। টিকা নিয়েও তা থেকে মুক্তি পাওয়া দুষ্কর। এই মুহূর্তে ভারত থেকে কেউ যাতে দেশে ঢুকতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। অন্তত যত দিন ভারতের করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তত দিন এটি আমাদের মানতেই হবে।

শপিং মলগুলোতে যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হয়, সে বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ডা. আতিকুল হক। তিনি বলেন, সরকারকে এসব বিষয় কঠোরভাবে দেখভাল করতে হবে। গার্মেন্টসগুলো আপাতত খোলা রাখাই ভালো। বলপ্রয়োগ করে হলেও অধিক সংক্রমিত এলাকাগুলো লকডাউন করে দেওয়া উচিত। জেলা ও বিভাগীয় শহরের হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ডেলিভারি দেওয়া জরুরি।

ঈদ সামনে রেখে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে গত ২৫ এপ্রিল খুলে দেওয়া হয় শপিং মল। শর্ত ছিল, সেখানে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। কিন্তু বাস্তবে সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে রাজধানীর প্রতিটি শপিং মলে। বিশেষ করে কাপড়ের দোকানগুলোয় তিলধারণের ঠাঁই নেই। দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে, জরিমানা ও শাস্তি দিয়েও ক্রেতা-বিক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মানানো যাচ্ছে না। এতে করে ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে করোনা। কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে এসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের চিত্র দেখলে বোঝার উপায় নেই যে দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে।

এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার থেকে চালু হয়েছে গণপরিবহনও। শুধু অপেক্ষা দূরপাল্লার যান চলাচল শুরুর। সে ঈঙ্গিতও মিলেছে সরকারি কর্তাব্যক্তিদের কথায়।
গত বছরের জুলাই মাসে ঈদে ঘরমুখী মানুষের স্রোত ঠেকাতে না পারায় চরম বেপরোয়া রূপ নিয়েছিল করোনা। এবারও সেই শঙ্কা রয়েছে। এতে করে দেশে তৃতীয় ঢেউ প্রবেশ করতে পারে বলে মনে করছেন করোনা–সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. শহিদুল্লাহ।
আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেই আছি। তবে যেকোনো মুহূর্তে তৃতীয় ঢেউ প্রবেশ করতে পারে। বিধিনিষেধ জারি থাকলেও ধীরে ধীরে দোকান, শপিং মলসহ সবকিছু খোলা রয়েছে। এর ফল আমরা দেখতে পারব ঈদের পর। গণপরিবহনের ক্ষেত্রেও বলা হয়েছে, ইন্টার ডিস্ট্রিক্ট চালাতে পারবে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে। কিন্তু বাস্তবে কতটা এটি পালন হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তারপরও যদি এটাকে ভালোভাবে বাস্তবায়ন করা যেত, তাহলেও সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হতো।

তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারতে ইতিমধ্যে তৃতীয় ঢেউ প্রবেশ করার মুখে। তার মানে, আমরা সবচেয়ে ঝুঁকিতে এখন। দ্রুতই হয়তো বাংলাদেশে সেটি প্রবেশ করবে। এ জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য সীমান্তপথে প্রবেশ বন্ধ করে দিতে হবে। নতুবা এর ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বাঁচা সম্ভব হবে না।’

৩৬ দিন পর দিনে পঞ্চাশের কম মৃত্যু: দেশে এক দিনে করোনাভাইরাস শনাক্ত এপ্রিলের চেয়ে কমার পর এবার কমল মৃত্যুও। এর মধ্য দিয়ে টানা ৩৬ দিন করোনায় এক দিনে মৃত্যু পঞ্চাশের বেশি থাকার পর গতকাল তা পঞ্চাশের নিচে নেমে এল। শনাক্তের সংখ্যাও ছিল দুই হাজারের কম।

গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার করোনা আপডেট জানানো হয়।

নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৮২২ জনের। এর মধ্য দিয়ে টানা ৬ দিন এক দিনে দুই হাজারের কম শনাক্ত হলো। এপ্রিলের চিত্রের ভয়াবহতা কাটিয়ে মে মাস আশার বার্তা দিচ্ছে। চলতি মাসে এ পর্যন্ত কখনো করোনায় এক দিনে শনাক্ত দুই হাজার পেরোয়নি।

করোনায় এক দিনে মৃত্যুতেও ছিল নিম্নমুখী প্রবণতা। নতুন করে ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪১ জন। এর মধ্য দিয়ে টানা ৩৬ দিন এক দিনে মৃত্যুর সংখ্যা পঞ্চাশের বেশি থাকার পর গতকাল তা কমল। এর আগে গত ৩০ মার্চ এক দিনে ৪৫ জনের মৃত্যু হয়।

এক দিনের হিসাবে গতকালের চেয়ে কম মৃত্যুর খবর এসেছিল গত ২৮ মার্চ। সেদিন ৩৫ জনের মৃত্যুর তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর গত ৩৭ দিনে তা এর নিচে নামেনি।

করোনা থেকেই মুক্তি লাভ করার সংখ্যা পেরিয়েছে ৭ লাখ। গতকাল নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হারও ছিল কম। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাতকানিয়ায় খালের পাড় কেটে মাটি বিক্রি

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা
খাল পাড় কেটে মাটি নিয়ে যাওয়ার কারণে পাশের ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাল পাড় কেটে মাটি নিয়ে যাওয়ার কারণে পাশের ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় খালের পাড় কেটে মাটি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক যুবকের বিরুদ্ধে। উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় মাদার্শা খালের পাড় থেকে এ মাটি কাটা হচ্ছে। এতে খালের পার্শ্ববর্তী ফসলি জমি ভেঙে খালে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে মাদার্শা খালের একপাশের পাড় থেকে মাটি কেটে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রামে ঘরের ভিটা ভরাটের জন্য বিক্রি করা হচ্ছে। রাতের আঁধারে ভেকু (এক্সকাভেটর) দিয়ে খালের পাড়ের এ মাটি কাটা হচ্ছে। খাল পাড় কেটে মাটি নিয়ে যাওয়ার কারণে পাশের ফসলি জমি ভেঙে খালে বিলীন হওয়ার পাশাপাশি খালের স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, নাদিমুল হাসান চৌধুরী নামের পার্শ্ববর্তী এলাকার এক ব্যক্তি তাঁর সহযোগীদের মাধ্যমে খালের পাড় কেটে মাটি বিক্রি করে চলেছেন। এতে আলী হোসেন নামের একজন কৃষকের বাদামখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে ক্ষতিপূরণ হিসেবে কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেন বলেন, অবিলম্বে খালের পাড় কাটা বন্ধ করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। আর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ কেটে নেওয়া খালপাড় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় আগামী বর্ষা মৌসুমে খালটির গতিপথ পরিবর্তন হয়ে আশপাশের এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আলী হোসেন বলেন, ‘ওই খালের পাড়ঘেঁষে বাদামের চাষ করেছিলাম। খাল পাড় থেকে মাটি কেটে বিক্রি করার কারণে আমার বাদামখেতটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় আমি তাঁদের বাধা দিয়েছিলাম। পরে তাঁরা আমাকে ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিয়েছেন।’

মাটি বিক্রির সঙ্গে জড়িত নাদিমুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘খালের দুই পাড়েই আমাদের জমি রয়েছে। গত বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে খালের একপাশে পলি জমে বিশাল মাটির স্তূপ তৈরি হয়েছিল। এ কারণে খালের অন্যপাশের জমি ভেঙে বিলীন হয়ে যাচ্ছিল। তাই জমির ভাঙন রোধে স্তূপ হয়ে থাকা পাশের কিছু মাটি কেটে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়েছি।’

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ইতিমধ্যে বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত হয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পর খালের পাড়ের মাটি কাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাতকানিয়ায় বন্দুকসহ এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার

সাতকানিয়া ( চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা
অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারকৃত যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা
অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারকৃত যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে একটি দেশীয় তৈরি একনলা বন্দুক, ২০টি কার্তুজ ও দুটি দাসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম মোহাম্মদ সেলিম (৪১)। গতকাল রোববার বিকেলে উপজেলার পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের দৌলতপাড়ার ইছামতি আলীনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত মোহাম্মদ সেলিম পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দৌলতপাড়ার ইছামতি আলীনগর এলাকার মৃত মোহাম্মদ ইসহাকের ছেলে।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল হক বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে দেশীয় তৈরি একনলা বন্দুক, ২০টি কার্তুজ ও দুটি দাসহ মোহাম্মদ সেলিম নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে কলেজছাত্রকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যায় আটক ৩

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৩৭
সিএনজিচালিত অটোরিকশায় কয়েকজন যুবক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আব্দুর রহমানের ওপর আঘাত করে (ইনসেটে) আব্দুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
সিএনজিচালিত অটোরিকশায় কয়েকজন যুবক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আব্দুর রহমানের ওপর আঘাত করে (ইনসেটে) আব্দুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জ শহরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বসে থাকা অবস্থায় আব্দুর রহমান (২০) নামের এক কলেজছাত্রকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও আটক ব্যক্তিদের নাম-ঠিকানা জানাননি।

এর আগে গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা শহরের ১ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির অদূরে চৌরাস্তার মোড়ে আব্দুর রহমানকে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সন্ধ্যা ৭টার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহত আব্দুর রহমান সিরাজগঞ্জ সদরের সয়াধানগড়া খানপাড়া মহল্লার রেজাউল করিমের ছেলে। তিনি ইসলামিয়া সরকারি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

পুলিশ জানায়, ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেজে দেখা যায়, একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় সামনে ও পেছন দিক থেকে কয়েকজন যুবক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আব্দুর রহমানের ওপর একাধিকবার আঘাত করে। পরে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

নিহতের চাচা সোহাগ জানান, বিকেলে আব্দুর রহমান চৌরাস্তা এলাকায় প্রাইভেট পড়তে গিয়েছিল। সন্ধ্যার দিকে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, কারা বা কী কারণে হামলা চালিয়েছে, সে বিষয়ে তাঁরা কিছু জানেন না।

সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। মরদেহটি এখনো হাসপাতাল মর্গে আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লাউ চাষেই স্বপ্নপূরণ, দম্পতির মুখে সাফল্যের হাসি

রাতুল মণ্ডল, শ্রীপুর (গাজীপুর)  
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৩৯
স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত। ছবি: আজকের পত্রিকা
স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বসতবাড়ির চারপাশে পাঁচ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের লাউ চাষ করে সফলতার নজির গড়েছেন আক্তার-মর্জিনা দম্পতি। বাড়ির আঙিনা ও পুকুরপাড়জুড়ে মাচায় ঝুলছে শীতকালীন সারি সারি লাউ। সমন্বিত কৃষি খামারের মাধ্যমে তাঁরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন।

মো. আক্তারুজ্জামান ও মর্জিনা আক্তার উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেংরা গ্রামের বাসিন্দা। চার মেয়েকে নিয়ে তাঁদের সংসার। কৃষিকাজই এখন তাঁদের আয়ের প্রধান উৎস।

নিজেদের সফলতার গল্প বলতে গিয়ে মর্জিনা আক্তার বলেন, ২০২২ সাল থেকে তিনি বাড়ির আশপাশে লাউসহ বিভিন্ন শাকসবজি চাষ শুরু করেন। ২০২৩ সালে চাষের পরিধি বাড়ান। এতে ভালো ফলন পাওয়ায় চলতি বছর আশপাশের পাঁচ বিঘা জমি লিজ নিয়ে হাইব্রিড জাতের লাউ চাষ করেছেন। ইতিমধ্যে লাউ বিক্রি শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সবকিছু ঠিক থাকলে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার লাউ বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি। এই আয় দিয়েই আমার সন্তানদের পড়াশোনা ও সংসার চলছে।’

মো. আক্তারুজ্জামান জানান, গত বছর চার বিঘা জমিতে লাউ চাষ করে প্রায় ১৮ লাখ টাকা বিক্রি করেছিলেন। চলতি বছর জমির পরিমাণ বাড়িয়ে পাঁচ বিঘা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ বছরও ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা বিক্রির আশা করছি।’

সরেজমিন লাউবাগান ঘুরে দেখা যায়, স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত। কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে আক্রান্ত লাউ ও শুকনো পাতা কেটে ফেলছেন। পাশাপাশি নিয়মিত জৈব সার ব্যবহার করছেন। বসতবাড়ির চারপাশ ও পুকুরের পাশে মাচায় ঝুলে আছে শত শত লাউ।

বিক্রির জন্য মাচা থেকে লাউ তুলছেন আক্তার-মর্জিনা দম্পতি। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিক্রির জন্য মাচা থেকে লাউ তুলছেন আক্তার-মর্জিনা দম্পতি। ছবি: আজকের পত্রিকা

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ২০ শতাংশ জমিতে লাউ চাষের একটি প্রদর্শনী পেয়েছিলেন আক্তার-মর্জিনা দম্পতি। এতে উৎসাহিত হয়ে তাঁরা আরও পাঁচ বিঘা জমিতে লাউ চাষ করেছেন এবং বাম্পার ফলন পেয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘এই দম্পতি এরই মধ্যে স্বাবলম্বী হয়েছেন। ভবিষ্যতেও যাতে এই চাষাবাদ ধরে রাখতে পারেন, সে জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত