Ajker Patrika

গাড়িচাপায় নারীর মৃত্যু: ‘একাকী জীবন অসুস্থ আজহার জাফরের, বাসায় স্বজনরা কেউ যেত না’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২২, ২০: ১৬
গাড়িচাপায় নারীর মৃত্যু: ‘একাকী জীবন অসুস্থ আজহার জাফরের, বাসায় স্বজনরা কেউ যেত না’

এক নারীকে গাড়ির নিচে চাপা দিয়ে হত্যার ঘটনায় আলোচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক শিক্ষক আজহার জাফর শাহ ছাত্রদের সঙ্গে অপেশাদার আচরণের দায়ে বহিষ্কার হওয়ার পর একরকম নিঃসঙ্গ জীবন-যাপন করতেন। এমনিতেও সহকর্মীদের সঙ্গে তার মেলামেশা ছিল খুবই কম। শিক্ষকদের কেউ কেউ তাঁকে অহংকারী বলছেন।   

গত ২ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের (আইআর) সাবেক এই সহকারী অধ্যাপক বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় রুবিনা আক্তার রুবি নামে এক নারীকে প্রাইভেট কারের নিচে চাপা দেন। ওই নারী গাড়ির নিচে আটকে যান। ওই অবস্থায় তাকে ছেঁচড়ে নিয়ে তার গাড়ি নীলক্ষেত পর্যন্ত যায়। সেখানে জনতা তাঁর গাড়ি আটকে দিয়ে তাঁকে মারধর করেন। আর ওই নারী ততক্ষণে মারা যান। মারধরে আহত শিক্ষক গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন।

ঘটনার দিন শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর আজিমপুরে মায়ের কবর জিয়ারতে যাচ্ছিলেন বলে ওই শিক্ষকের গৃহকর্মী মাহমুদা আক্তার মণির ভাষ্য।

আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান ছিলেন জাফর শাহ। ব্যক্তিগত জীবনে নিঃসঙ্গ ছিলেন। ৪০ বছর আগে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে যায় তাঁর। পরে তাঁর স্ত্রী অন্যত্র বিয়ে করেছেন। ১৩ বছর আগে তাঁর মা মারা যান এবং তারও আগে বাবা মারা যায়। তবে গত আট বছরে তিনি তাঁর বাসায় কোনো আত্মীয়-স্বজনকেও আসতে দেখেননি।’ 

ওই শিক্ষকের বাসায় দীর্ঘদিন কাজ করে আসা মনি বলেন, ‘জাফর শাহ শুক্রবার সকালে তাকে বলেছেন, তাঁর মাকে স্বপ্নে দেখেছেন। দুপুর দুইটার মধ্যেই তাকে খাবার দিতে বলেন। কারণ খাবার খেয়ে তিনি আজিমপুর মায়ের কবর জিয়ারত করতে যাবেন।’ 

মনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরি যাওয়ার পরে যে টাকা পেয়েছেন তা বিভিন্ন ব্যবসায় লাগিয়েছেন। সেখান থেকে আয়ের টাকায় তিনি চলতেন। গত বছর তাঁর হার্টের অপারেশন করে রিং বসানো হয়। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তাঁর সহায়-সম্পত্তি বিভিন্ন সময় বেদখল হয়ে যাওয়ায় এখন শুধু বাড়িটাই আছে।’ 

গণমাধ্যমে খবর দেখে জাফর শাহকে দেখতে আসেন গুলশান আজাদ মসজিদের খাদেম আইয়ুব আলী। তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী জাফর শাহের মায়ের মৃত্যুর পর গোসল করিয়েছেন। তারপর থেকে তাঁর (জাফর শাহ) সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তিনি বাসা থেকে তেমন বের হতেন না। অসুস্থ ছিলেন তিনি। গত তিন মাস আগে তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল।’ 

আজহার জাফর শাহ যখন সহকারী অধ্যাপক ছিলেন সেই সময়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান ছিলেন অধ্যাপক রুকসানা কিবরিয়া। তিনি বলেন, ‘জাফর শাহকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে কিছু বলতে পারব না। প্রফেশনাল ছাড়া তাঁর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত আলাপ ছিল না।’ 

আপনার সময়ে শিক্ষার্থীদের শূন্য নাম্বার দেওয়ার অভিযোগে চাকরি যায় কি-না? জানতে চাইলে রুকসানা বলেন, ‘আমি ২০০৬ সালের নভেম্বর থেকে ২০০৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত আইআর বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। যতদূর মনে পরে, ২০০৭ সালের দিকে এই ঘটনা ঘটে। তবে আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কাউন্সিল কমিটিতে অভিযোগ দেয়। তারপর থেকে তাকে (জাফর শাহ) ক্লাস ও পরীক্ষা নিতে দেওয়া হতো না। কিন্তু তখনো তার চাকরি চলে যায়নি। এরপর আর তাঁর বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। পরে শুনেছি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁর চাকরি চলে যায়। তবে চাকরি যাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি নিয়মিত বেতন পেতেন বলে জানি।’ 

আজহার জাফর শাহর শিক্ষার্থী ছিলেন ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. লাইলুফার ইয়াসমিন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিনি ভালো পড়াতেন। আমি উনাকে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছি। আমি শিক্ষক হিসেবে যুক্ত হওয়ার কিছুদিন পরে আমি বাইরে পড়তে যাই, বিদেশ থেকে এসেও উনাকে পেয়েছি। তবে প্রফেশনাল সম্পর্কের বাইরে ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল না, উনি একা থাকতেন, তবে মানুষের সঙ্গে খুব বেশি মিশতেন এ রকমও না।’ 

আইআর বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে অশিক্ষকসুলভ এবং অপেশাদারিত্বমূলক আচরণ ও বিভিন্ন পরীক্ষার নম্বর দেওয়ায় পক্ষপাতিত্ব করার অভিযোগ করা হয়। ক্ষোভের জেরে ৮০ জন শিক্ষার্থীকে শূন্য দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেই সময় বিভাগ থেকে আত্মপক্ষ সমর্থন করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি তোয়াক্কা-ই করেননি। তখন তাকে ক্লাস-পরীক্ষা নিতে বারণ করে কর্তৃপক্ষ। তখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ রাখেননি তিনি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম (সিন্ডিকেট) তাকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয়। 

এদিকে আজহার জাফর শাহকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেছেন রুবিনা আক্তার রুবির বড় ভাই জাকির হোসেন মিলন। তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে শাহবাগ থানা-পুলিশ। বর্তমানে পুলিশি পাহারায় চিকিৎসা চলছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর মোহাম্মদ বলেন, তিনি (শিক্ষক) এখনো চিকিৎসাধীন। পুরোপুরি সুস্থ হলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে পুলিশ পাহারায় ঢামেকে ভর্তি আছেন। 

চিকিৎসাধীন অবস্থায় গ্রেপ্তার জাফর শাহ’র শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চাইল ঢামেকের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আহত আজহার জাফর শাহ এর অবস্থা এখনো শঙ্কামুক্ত না। মাথার দুই পাশে থেঁতলানো জখম আছে। তাঁর জ্ঞান আছে, তবে সুস্থ মানুষের চেয়ে কম আছে। আরও তিন চার দিন গেলে তাঁর অবস্থা বোঝা যাবে। তাঁর হার্টেও রিং পড়ানো আছে। 

আরো পড়ৃন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল ঘন কুয়াশার কারণে বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন।

সালাহউদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত সাড়ে ১০টার সময় নদীপথ অস্পষ্ট হয়ে যায়। সে সময় নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় কিছু যানবাহন আটকা পড়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আরও বলেন, কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার: বিএনপিএস

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বসবাস করা ৫৫ শতাংশ নারী ও কন্যা শিশু প্রতিনিয়ত সুরক্ষা, শিক্ষা, পুষ্টি ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয়শিবিরগুলোয় ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি।

বিএনপিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে তারা কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে বসবাস করছে, যা বিশ্বে বৃহত্তম শরণার্থী আশ্রয়স্থলগুলোর একটি। এই জনগোষ্ঠীর ৫২ শতাংশের বেশি নারী ও কন্যা।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে আট বছরেরও বেশি সময়ে কক্সবাজারের প্রায় ৫ লাখ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের প্রভাবে স্থানীয় জনগোষ্ঠী জীবিকা, মজুরি, বন ও জলসম্পদ, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সংহতির ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। ফলে এটি শুধু শরণার্থী সংকট নয়; এটি মানবিকতা, উন্নয়ন এবং শান্তির এক যৌথ চ্যালেঞ্জ।

‘শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার ও দায়িত্ব’ শীর্ষক এ গোল টেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন বিএনপিএসের উপপরিচালক নাসরিন বেগম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ শামসুদ্দৌজা নয়ন। এ ছাড়া শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এম এ সানোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হুমায়রা বেগমসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা কমে এসেছে। এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারীরা।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা, খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষার অধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাঠামোর অধীনে নিশ্চিত করা নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব। একইভাবে, আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়েরও টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, সম্মানজনক কাজ এবং জনসেবায় ন্যায্য প্রবেশাধিকারের জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যবিপ্রবির প্রথম উপাচার্য রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন

­যশোর প্রতিনিধি
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার মারা গেছেন (ইন্না...রাজিউন)। আজ বুধবার সকালে ঢাকার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে একটি বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার যবিপ্রবি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। পরবর্তীতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। সেখানে তিনি কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি কৃষিবিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া তিনি একজন কৃষি বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী হিসেবে দেশের কৃষি খাতের যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়নে দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে কৃতিত্বের সঙ্গে অবদান রেখেছেন।

এদিকে, ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুন, রিজেন্টবোর্ড সদস্যবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

এক শোক বার্তায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, রফিকুল ইসলাম সরকার ছিলেন একজন সৎ, মানবিক, ধর্মভীরু ও দায়িত্বশীল মানুষ। যবিপ্রবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতিতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

তিনি ছিলেন একজন দক্ষ প্রশাসক এবং বরেণ্য কৃষি বিজ্ঞানী। যবিপ্রবির সূচনালগ্নে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শী পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছাতে ভিত গড়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে তিনি শূন্য থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন, তা যবিপ্রবি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৪
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কাঁচপুর সেতু থেকে লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ১০ কিলোমাটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে একটি ট্রাক দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ সময় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এ যানজট তৈরি হয়।

এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, ব্যক্তিগত যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাঙ্গলবন্দ ব্রিজ এলাকায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিংয়ে সজোরে আঘাত করে। ট্রাকটিতে প্রায় ২৭ টন মালামাল বোঝাই ছিল। দুর্ঘটনায় সেতুর রেলিং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও জানান, ট্রাকটিতে অতিরিক্ত মালামাল থাকায় রেকার দিয়ে সরানো সম্ভব হয়নি। ফলে প্রথমে অন্য একটি ট্রাকে মালামাল স্থানান্তরের কাজ শুরু করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি বিকেলের আগে সরানো যায়নি। এর ফলে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

পণ্যবাহী ট্রাকচালক শাহ আলম জানান, দুর্ঘটনার কারণে রাস্তা বন্ধ ছিল বুঝতে পারছি। কিন্তু এত সময় লাগবে ভাবিনি। মালামাল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।

আরেক যাত্রী আক্তার হোসেন বলেন, আমি চট্টগ্রামে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তিন ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় আটকে আছি। ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে। বিকেল নাগাদ মালামাল সরিয়ে ট্রাকটি সড়ক থেকে অপসারণ করা হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। টানা তিন দিনের ছুটি থাকায় মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত