Ajker Patrika

বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যা: ঘাতকদের জবানবন্দিতে নৃশংসতার বর্ণনা

আশরাফ-উল-আলম, ঢাকা 
আপডেট : ১৬ মার্চ ২০২৫, ১৪: ১৫
বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যা: ঘাতকদের জবানবন্দিতে নৃশংসতার বর্ণনা

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হল থেকে উদ্ধার হয় তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের মরদেহ। অমানবিক, নিষ্ঠুর ও পৈশাচিক কায়দায় নির্যাতন করে হত্যা করা হয় আবরারকে। ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারদের জবানবন্দিতে উঠে এসেছে নৃশংসতার চিত্র।

মামলার আসামি অনিক সরকার, মুজাহিদুর রহমান, মেহেদী হাসান রবিন, ইফতি মোশারফ, মেফতাউল ইসলাম জিয়ন, মনিরুজ্জামান মনির, এ এস এম নাজমুস সাদাত ও খন্দকার তাবাখ্খারুল ইসলাম তানভীরের জবানবন্দি থেকে জানা যায়, ছাত্র শিবির সন্দেহে আবরারকে শায়েস্তা করার জন্য বুয়েট ছাত্রলীগের সদস্যরা সভা করে সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর ৬ অক্টোবর রাতে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে নির্মম নির্যাতন করা হয়। ওই কক্ষে আবরারকে আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের নামে দফায় দফায় ক্রিকেট স্টাম্প ও স্কিপিং রোপ দিয়ে আঘাত করেন আসামিরা।

শিবির সন্দেহে সভা, তারপর জিজ্ঞাসাবাদ:

শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন আবরার। আসামিদের দেওয়া ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তির তথ্য অনুযায়ী, আবরার হত্যার মূল হোতা বা সূচনাকারী হিসেবে তাঁর রুমমেট মিজানুর রহমানকে চিহ্নিত করে পুলিশ। বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রবিনকে মিজানুরই বলেছিলেন, আবরারকে তাঁর শিবির বলে সন্দেহ হয়।

পরে রবিন বুয়েটের শেরে বাংলা হল ছাত্রলীগের ১৫ ও ১৬তম ব্যাচের ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপে এ কথা জানান। পরদিন ৫ অক্টোবর হলের গেস্টরুমে কয়েকজন মিলে সভা করেন। এরপর ৬ অক্টোবর রাতে আবরারকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তাঁরা।

একজনই ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে শতবার আঘাত করেন:

অনিক সরকার। বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৫তম ব্যাচের ছাত্র। শেরেবাংলা হল শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ছিলেন তিনি।

১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে অনিক বলেন, ‘সেদিন হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ইফতি মোশাররফ আবরারকে একটা ভাঙা ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে পেটাচ্ছিল। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আমিও আবরারের হাতে ও পায়ে ৪০ থেকে ৫০ বার করে ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে শতাধিকবার আঘাত করি। রাত ১টা ২০ মিনিটে রবিন আমাকে জানায়, আবরার বমি করছে।’

স্কিপিং রোপ দিয়েও মারা হয়:

ইফতি মোশাররফ নিহত আবরারের কক্ষেরই আবাসিক ছাত্র। তিনি বুয়েটের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। ইফতি আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, আবরার শিবির করে কিনা তা নিয়ে সবাই প্রশ্ন করতে থাকেন। তার কাছ থেকে কথা বের করার জন্য ইফতি ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে ৪ থেকে ৫টি বাড়ি মারেন। স্টাম্পটি ভেঙে যায়। পরে ভাঙা স্টাম্প দিয়ে অনিক সরকার ও অন্যরা দফায় দফায় পেটাতে থাকেন। স্কিপিং রোপ দিয়ে মুজাহিদ মারা শুরু করেন। অন্যরাও স্কিপিং রোপ দিয়ে মারতে থাকেন।

সর্বশক্তি দিয়ে পেটানো হয় আবরারকে:

বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়তেন মেহেদী হাসান রবিন। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে মেহেদী বলেন, আবরারকে কিল, ঘুষি, চড়, থাপ্পড়, ক্রিকেট স্টাম্প ও স্কিপিং রোপ দিয়ে মারা হয়। সর্বশক্তি দিয়ে পিটিয়ে আবরারের হাত, কনুই, পায়ের পাতা, হাঁটু, পিঠ, পাঁজর ও বুকে আঘাত করে সবাই।

বাঁচার জন্য কাকুতি মিনতি করেন আবরার:

মেহেদী হাসান রবিন ও অন্যরা জবানবন্দিতে বলেন, আবরারকে দফায় দফায় নিষ্ঠুর নির্যাতন করার সময় তিনি বাঁচার জন্য চিৎকার করে কাকুতি-মিনতি করেছিলেন। কিন্তু তার দিকে কেউ ভ্রুক্ষেপ করেননি। কাকুতি-মিনতি করার পর নির্যাতনের হার আরও বেড়ে যায়। তাকে মোশাররফ লাথি মারতে থাকেন।

পানি চেয়েও পাননি আবরার:

মুজাহিদুর রহমান বুয়েটের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। তিনি তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র ছিলেন। মুজাহিদ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, অনবরত পিটুনির একপর্যায়ে আবরার মাটিতে শুয়ে পড়েন। তখনো অনিক আবরারকে মারতে থাকেন। একপর্যায়ে আবরার প্রস্রাব করে দেন। বমিও করেন। আবরার পানি চাইলে মোর্শেদ তখন পানি দিতে যান। তখন অনিক বলেন, ‘তুই পানি দিতে গেলে তোকেও মারব।’ অনিক আবরারকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে আবরার নিস্তেজ হয়ে পড়েন। মুজাহিদ তাঁর জবানবন্দিতে নিজেও ক্রিকেট স্টাম্প ও স্কিপিং রোপ দিয়ে পেটানোর কথা স্বীকার করেন।

রাত ৮টা থেকে ১টা পর্যন্ত চলে নির্যাতন:

মেফতাউল ইসলাম জিয়ন জবানবন্দিতে বলেন, সেদিন রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে রবিন তাঁকে ফোন দিয়ে জানান, শিবিরের এক ছেলেকে আটক করা হয়েছে। তিনি যেন হলের নিচে নামেন। পরে তিনি হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে যান। ওই কক্ষে গিয়ে প্রায় ১৫ জন ছাত্রকে দেখেন। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে রবিন আবরারের গালে চড় মেরে মারধর শুরু করেন। এরপর একে একে ক্রিকেট স্টাম্প, স্কিপিং রোপ দিয়ে মারতে থাকে। যে যেভাবে পারে কিল, ঘুষি, লাথি, চড়-থাপ্পড় মেরেও মারতে থাকে আবরারকে।

জবানবন্দিতে জিয়ন আরও বলেন, আবরারকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয় ছিল, তিনি শিবির করেন কিনা এবং হলে আর কে কে শিবির করেন। এসব বিষয়ে আবরার চুপ ছিলেন। প্রথমদিকে তিনি চুপ ছিলেন। পরে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে চিৎকার করে কাকুতি-মিনতি করতে থাকেন।

এছাড়া বুয়েট ছাত্র মনিরুজ্জামান মনির, এ এস এম নাজমুস সাদাত এবং খন্দকার তাবাখ্খারুল ইসলাম তানভীরও জবানবন্দিতে একই ধরনের কথা বলেন।

আবরার খুন হওয়ার পর দিন তাঁর বাবা বরকত উল্লাহ চকবাজার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দেওয়ার পর বিচার শেষে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। হাইকোর্টের রায় বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬৭ বছর পর রামেক হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অবশেষে ৬৮ বছরে পা দিতে চলা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে এলেও ভর্তির সুযোগ ছিল না। গুরুতর রোগীদের কিছু ক্ষেত্রে মেডিসিন বিভাগে রাখা হলেও, পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ডের অভাবে এতদিন অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হতো।

হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর এই প্রথম ২৫ শয্যার একটি সুসজ্জিত মনোরোগ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই নতুন ওয়ার্ডটি গড়ে তোলা হয়েছে।

এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট বিন্যাস রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য ৭ টি, শিশু-কিশোরদের জন্য ৫টি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য ৩টি শয্যা সংরক্ষিত রয়েছে। এ ছাড়া রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার জন্য থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

এই ওয়ার্ডটি চালুর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল কলেজের স্বীকৃতি বজায় রাখা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চ মাসেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। পরিদর্শনকালে মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমে যাওয়ার এবং অ্যাক্রিডিটেশনে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এতে করে এই কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা বা পড়াশোনা করার সুযোগ কমে যেত। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এমন একটি ওয়ার্ড জরুরি ছিল।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধ শুনে সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ দ্রুত এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন এবং গত বুধবার এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটি সত্যিই অবাক হওয়ার মতো বিষয়। আমরা প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগেগত ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে একজনও সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয়নি, যেখানে আগে প্রায় প্রতিদিনই এই রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদপুরে নতুন ভোটারদের নিয়ে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণ’ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চাঁদপুরে শতাধিক নতুন ভোটারের অংশগ্রহণে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের আয়োজনে এবং সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চাঁদপুর জেলা কমিটির সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি হয়।

আজ সকাল সাড়ে ৯টায় চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও বেলুন উড়িয়ে নির্বাচনী অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান মিয়া। নতুন ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি, গণতন্ত্রের মূল্যবোধ, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, সুশাসন ইত্যাদি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ হয়েছে। সুজনের সহযোগিতায় এই আয়োজন অবশ্যই অংশগ্রহণকারীদের অনেক সমৃদ্ধ করবে এবং সচেতন নাগরিক তৈরি হবে।’

পরে কলেজের অডিটরিয়ামে ৫০টি এমসিকিউ পদ্ধতির প্রশ্নের মাধ্যমে ৩০ মিনিটের পরীক্ষা হয়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত ১০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তাঁদের মধ্য থেকে প্রথম থেকে তৃতীয় স্থান অর্জনকারী তিনজন জাতীয় নির্বাচনী অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবেন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের সনদ দেওয়া হয়।

পরীক্ষা শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য ও বিজয়ীদের হাতে সনদ তুলে দেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম সরকার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুজন চাঁদপুরের সভাপতি অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন। সঞ্চালনায় ছিলেন সুজনের আঞ্চলিক সমন্বয়ক নাছির উদ্দিন।

সুজন চাঁদপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রহিব বাদশা, শিক্ষক ওমর ফারুক, সংগঠক সালাউদ্দিন, কর আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল ফারুক, সাংবাদিক আলম পলাশ, জাকির হোসেন, শোভন আল-ইমরান, মোরশেদ আলম রোকন, মো. মাসুদ আলম, শরীফুল ইসলামসহ সুজন জেলা কমিটির সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত