Ajker Patrika

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল

স্কুল ভবনটা খাঁচার মতো এতেই প্রাণহানি বেড়েছে

  • ছিল না জরুরি বের হওয়ার পথ।
  • আগুন আর ধোঁয়ায় পরিবেশ ছিল দমবন্ধকর।
  • বারান্দাগুলোও লোহার গ্রিল দিয়ে আটকানো।
আমানুর রহমান রনি, ঢাকা 
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২৫, ১২: ২৭
বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনের ওপর আছড়ে পড়ে। ফাইল ছবি
বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনের ওপর আছড়ে পড়ে। ফাইল ছবি

রাজধানীর দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের হায়দার আলী ভবনটির কাঠামোই দৃশ্যত সোমবারের বিপর্যয়কে এতটা প্রাণঘাতী করে তুলেছে। সরেজমিন ঘুরে এবং ভুক্তভোগী অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে এমন ধারণাই পাওয়া গেছে।

মাইলস্টোনের দিয়াবাড়ি শাখার মূল ফটক দিয়ে প্রবেশের পরই দেখা গেছে একটি টেনিস কোর্ট ও ক্যানটিন। এরপরই হায়দার আলী ভবন। পশ্চিমমুখী হায়দার আলী ভবনটি দোতলা। তবে দ্বিতীয় তলার ছাদটি টিনের ছাউনির। দোতলা ভবনটির মাঝ বরাবর সিঁড়ি, দুই পাশে কক্ষ। নিচতলায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি এবং ওপরতলায় পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনের পাঠদান চলে। প্রতিটি ক্লাসে ৩৫-৪৫ জন শিক্ষার্থী। দুটি তলায় মোট ১৬টি শ্রেণিকক্ষ থাকলেও ভবনে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ একটাই। ছিল না অগ্নিকাণ্ডের মতো বিপর্যয়ের সময় বের হওয়ার জরুরি পথ। বারান্দাগুলোও লোহার গ্রিল দিয়ে আটকানো।

একজন শিক্ষক এই প্রতিবেদককে ভবনের শ্রেণিকক্ষগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি জানান, ভবনটির নিচতলার বাঁ দিকে সিঁড়ির পাশেই শিক্ষকদের বিশ্রাম কক্ষ। এরপরই পরপর পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ। সেখানে তৃতীয় থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ইংরেজি ও বাংলা ভার্সনের পাঠদান হয়। এরপর একটি ওয়াশরুম। একটু আগে ছুটি হয়ে যাওয়ায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থী অভিভাবকদের সঙ্গে চলে গিয়েছিল। কিছু শিক্ষার্থী ছিল মা-বাবার অপেক্ষায়। কিছুসংখ্যক রয়ে গিয়েছিল কোচিংয়ের জন্য। নিচতলার ডান দিকে প্রথমে একটি ওয়াশরুম, এরপর ভাইস প্রিন্সিপালের অফিস। তার পাশেই ইংরেজি ভার্সনের সমন্বয়কারী মাহরীন চৌধুরীর কক্ষ। ২০টি শিশুকে বাঁচিয়ে যিনি প্রাণ দিয়েছেন। এরপরই মেয়েদের তিনটি শ্রেণিকক্ষ।

দোতলার বাঁ পাশে যথাক্রমে একটি ল্যাব রুম, চারটি শ্রেণিকক্ষ এবং একটি ওয়াশরুম। সেখানে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠদান হয়। দোতলার ডান পাশে প্রথমে একটি ওয়াশরুমের পর পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ। সেখানে পঞ্চম, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠদান হয়।

বিকল বিমানটি পড়ে বিধ্বস্ত হওয়ার সময় সব ক্লাসের ছুটি হয়ে গিয়েছিল। অর্থাৎ মা-বাবার সঙ্গে বাইরে চলে না যাওয়া অন্য শিক্ষার্থীরা অপেক্ষমাণ ছিল। একাধিক শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

ইংরেজি ভার্সনের সপ্তম শ্রেণিতে পড়া রাহিম তাসকিন আহমেদ সেদিন কিছুটা আহত হয়েছে। আগুনের শিখায় তার দুই কান ঝলসে গেছে। বন্ধু হারানোর বেদনায় কাতর তাসকিন নিজের শারীরিক কষ্ট যেন ভুলেই গেছে। রাহিম গতকাল এসেছিল ঘটনার দিন ফেলে যাওয়া বইয়ের ব্যাগ নিতে। ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সে বলল, ‘আমাদের ছুটি হয়ে গেছিল। ক্লাস ক্যাপ্টেন হওয়ায় সবাইকে বের করে দেওয়ার পর আমি বের হই। ব্যাগ কাঁধে তুলব এমন সময় টিনের চালের ওপর আমরা একটা প্রচণ্ড শব্দ শুনি। পরপর আরও দুইটা বিকট শব্দ হয়। তৃতীয় শব্দটা ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। দ্বিতীয় শব্দের পর মিনিটখানেকের মধ্যে কালো ধোঁয়ায় সব অন্ধকার হয়ে গেল। আর তৃতীয় শব্দের সঙ্গে সঙ্গেই আগুন লেগে যায়। আমি জ্বলন্ত বিমানের পাশ দিয়ে লাফিয়ে বের হই। আমার তিন বন্ধু গায়ে আগুন লেগে মারা গেছে। সেই দৃশ্য আর মনে করতে চাই না!’

ঘটনার সময় স্কুল ছুটি হয়ে গিয়েছিল। তবে কিছু শিক্ষার্থী কোচিং ক্লাস ও অভিভাবকের জন্য অপেক্ষা করছিল। এ ছাড়া শিক্ষক ও স্টাফরাও ছিলেন ভবনের ভেতরে। কয়েকজন শিক্ষক জানান, নিচতলার সিঁড়ির পাশে শিক্ষকদের কক্ষ, যেখানে শিক্ষকেরা অবস্থান করছিলেন।

বাংলা ভার্সনের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী জাহিদ মোল্লা বলল, প্রতিদিন ছুটির পর সে ঠিক যে জায়গায় দাঁড়ায়, সেখানেই যুদ্ধবিমানটি পড়েছে। এক বন্ধু ডেকে ক্যানটিনে নিয়ে না গেলে সে হয়তো ওখানেই থাকত।

কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেছে, আগুন লেগে যাওয়ার পর আটকে গিয়ে তারা জানালা ও বারান্দার গ্রিলের ভেতর থেকে চিৎকার করতে থাকে। সেনাবাহিনীর দল ও ফায়ার সার্ভিস কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে দোতলার টিনের চাল ও নিচতলার গ্রিল কেটে শিক্ষার্থীদের বের করে।

শিক্ষার্থীরা ছাড়াও গতকাল স্কুলের সামনে যাওয়া কয়েকজন অভিভাবক হায়দার আলী ভবনের কাঠামোগত দিক নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। তাঁদের প্রশ্ন, যেখানে কয়েক শ শিক্ষার্থী একসঙ্গে ক্লাস করে, সেখানে কেন একটিমাত্র প্রবেশপথ থাকবে? শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা বলেছেন, ভবনের বারান্দায় গ্রিল না থাকলে অনেকে হয়তো বের হতে পারত।

রফিক নামে একজন অভিভাবক বলেন, ‘ভবনটি একটা খাঁচার মতো। একটিই প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ। ভবনটি খোলামেলা হলে বাচ্চারা বের হতে পারত। বারান্দাও গ্রিল দিয়ে ঘেরা। তাই নিচতলায় থেকেও অনেকে বের হতে পারেনি।’

এদিকে গতকাল মাইলস্টোন স্কুলের মূল ফটকসহ পাঁচটি প্রবেশমুখ বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। ভবনের সামনে মোতায়েন করা হয় নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী। কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, এমনকি অভিভাবকেরাও প্রবেশ করতে পারেননি। শুধু শিক্ষকদের পরিচয়পত্র দেখে জরুরি সভার জন্য প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। সংবাদকর্মীদের প্রবেশেও বাধা দেওয়া হয়। চার-পাঁচজন শ্রমিককে হায়দার আলী ভবনের তিন পাশে টিনের বেড়া দিতে দেখা যায়।

গতকাল ভবনের জানালা দিয়ে দেখা গেছে, এখনো পড়ে আছে পুড়ে যাওয়া বই, টিফিন বক্স, পানির বোতল, ব্যাগ। কিছু ব্যাগ ও বই-খাতা উদ্ধার করে রাখা হয়েছে, যা ধীরে ধীরে অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল ঘন কুয়াশার কারণে বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন।

সালাহউদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত সাড়ে ১০টার সময় নদীপথ অস্পষ্ট হয়ে যায়। সে সময় নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় কিছু যানবাহন আটকা পড়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আরও বলেন, কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার: বিএনপিএস

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বসবাস করা ৫৫ শতাংশ নারী ও কন্যা শিশু প্রতিনিয়ত সুরক্ষা, শিক্ষা, পুষ্টি ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয়শিবিরগুলোয় ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি।

বিএনপিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে তারা কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে বসবাস করছে, যা বিশ্বে বৃহত্তম শরণার্থী আশ্রয়স্থলগুলোর একটি। এই জনগোষ্ঠীর ৫২ শতাংশের বেশি নারী ও কন্যা।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে আট বছরেরও বেশি সময়ে কক্সবাজারের প্রায় ৫ লাখ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের প্রভাবে স্থানীয় জনগোষ্ঠী জীবিকা, মজুরি, বন ও জলসম্পদ, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সংহতির ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। ফলে এটি শুধু শরণার্থী সংকট নয়; এটি মানবিকতা, উন্নয়ন এবং শান্তির এক যৌথ চ্যালেঞ্জ।

‘শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার ও দায়িত্ব’ শীর্ষক এ গোল টেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন বিএনপিএসের উপপরিচালক নাসরিন বেগম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ শামসুদ্দৌজা নয়ন। এ ছাড়া শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এম এ সানোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হুমায়রা বেগমসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা কমে এসেছে। এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারীরা।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা, খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষার অধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাঠামোর অধীনে নিশ্চিত করা নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব। একইভাবে, আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়েরও টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, সম্মানজনক কাজ এবং জনসেবায় ন্যায্য প্রবেশাধিকারের জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যবিপ্রবির প্রথম উপাচার্য রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন

­যশোর প্রতিনিধি
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার মারা গেছেন (ইন্না...রাজিউন)। আজ বুধবার সকালে ঢাকার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে একটি বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার যবিপ্রবি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। পরবর্তীতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। সেখানে তিনি কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি কৃষিবিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া তিনি একজন কৃষি বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী হিসেবে দেশের কৃষি খাতের যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়নে দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে কৃতিত্বের সঙ্গে অবদান রেখেছেন।

এদিকে, ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুন, রিজেন্টবোর্ড সদস্যবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

এক শোক বার্তায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, রফিকুল ইসলাম সরকার ছিলেন একজন সৎ, মানবিক, ধর্মভীরু ও দায়িত্বশীল মানুষ। যবিপ্রবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতিতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

তিনি ছিলেন একজন দক্ষ প্রশাসক এবং বরেণ্য কৃষি বিজ্ঞানী। যবিপ্রবির সূচনালগ্নে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শী পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছাতে ভিত গড়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে তিনি শূন্য থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন, তা যবিপ্রবি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৪
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কাঁচপুর সেতু থেকে লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ১০ কিলোমাটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে একটি ট্রাক দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ সময় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এ যানজট তৈরি হয়।

এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, ব্যক্তিগত যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাঙ্গলবন্দ ব্রিজ এলাকায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিংয়ে সজোরে আঘাত করে। ট্রাকটিতে প্রায় ২৭ টন মালামাল বোঝাই ছিল। দুর্ঘটনায় সেতুর রেলিং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও জানান, ট্রাকটিতে অতিরিক্ত মালামাল থাকায় রেকার দিয়ে সরানো সম্ভব হয়নি। ফলে প্রথমে অন্য একটি ট্রাকে মালামাল স্থানান্তরের কাজ শুরু করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি বিকেলের আগে সরানো যায়নি। এর ফলে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

পণ্যবাহী ট্রাকচালক শাহ আলম জানান, দুর্ঘটনার কারণে রাস্তা বন্ধ ছিল বুঝতে পারছি। কিন্তু এত সময় লাগবে ভাবিনি। মালামাল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।

আরেক যাত্রী আক্তার হোসেন বলেন, আমি চট্টগ্রামে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তিন ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় আটকে আছি। ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে। বিকেল নাগাদ মালামাল সরিয়ে ট্রাকটি সড়ক থেকে অপসারণ করা হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। টানা তিন দিনের ছুটি থাকায় মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত