Ajker Patrika

আশঙ্কামুক্ত নন কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনি, রাখা হয়েছে পর্যবেক্ষণে

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭: ৩৩
আশঙ্কামুক্ত নন কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনি, রাখা হয়েছে পর্যবেক্ষণে

গাজীপুর মেট্রোপলিটনের চার বছর বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিস্ফোরণে দগ্ধ আবু হেনা রনিসহ পুলিশ সদস্যদের অবস্থা একেবারে আশঙ্কামুক্ত নয়। তাঁদের দুজনেই শ্বাসনালী সামান্য দগ্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছেন বার্ন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।

আজ শনিবার বার্ন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘সকালে দগ্ধ দুজনের শরীরে ড্রেসিং করা হয়েছে। দুজনেরই শ্বাষনালী বার্ন রয়েছে।’

ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, ‘আবু হেনা রনির দুই হাত, কান ও মুখমন্ডলের কিছু অংশ সহ শরীরের ২৫ শতাংশ হয়েছে। আর পুলিশ সদস্য জিল্লুর রহমানের দগ্ধ হয়েছে ১৯ শতাংশ।’

ডা. সেন জানান, তাঁদের দুজনকে সকালে পঞ্চম তলায় অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে ক্ষতস্থানে ড্রেসিং করা হয়েছে। এরপর তাঁদের ৬ তলার হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রাখা হয়েছে। তাঁদের দুজনেরই শ্বাসনালী সামান্য দগ্ধ হয়েছে। সেটি একেবারে গুরুতর নয়। তাঁদের গভীর পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে তাঁদের শঙ্কামুক্ত বলা যাবে না।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বার্ন ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানান, আবু হেনা রনি শঙ্কামুক্ত নন। তাঁর শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। 

 জিএমপির চার বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে গ্যাস বেলুনের বিস্ফোরণে দগ্ধ অভিনেতা আবু হেনা রনিগত শুক্রবার গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) চার বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ওড়ানোর জন্য আনা গ্যাসবেলুন বিস্ফোরণে আবু হেনা রনি ও পুলিশের সদস্যসহ পাঁচজন দগ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে রনিসহ তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। রনি ও জিল্লুর ছাড়া চিকিৎসাধীন অপরজনের নাম মোশাররফ হোসেন। 

পুলিশ জানায়, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার গাজীপুর পুলিশ লাইনস মাঠে নাগরিক সম্মেলন ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থলের পাশেই মঞ্চে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। গাজীপুর পুলিশ লাইনসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন—যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ আখতার হোসেন। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ। এ ছাড়া পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গাজীপুর সিটির ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমানসহ বিপুলসংখ্যক অতিথি উপস্থিত ছিলেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আয়োজিত অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চের বাইরে উদ্বোধন মঞ্চ স্থাপন করা হয়। শুক্রবার বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অন্যান্য অতিথি সঙ্গে নিয়ে উদ্বোধন মঞ্চ উঠে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এ সময় মূল মঞ্চের পশ্চিম পাশে অনেকগুলো আতশবাজি ফোটানো হয়। আতশবাজি ফোটানোর সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা পায়রা উড়িয়ে দেন। তারপর জিএমপি চার বছর পূর্তি লেখা একটি প্ল্যাকার্ডসহ অনেকগুলো গ্যাসবেলুন একসঙ্গে ওড়ানোর চেষ্টা করলে বেলুনগুলো আকাশে ওড়েনি। পরে অতিথিরা বেলুন না উড়িয়েই সেখান থেকে মূল মঞ্চের সামনে নির্ধারিত আসন গ্রহণ করেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, পরে কয়েকজন পুলিশ সদস্য বেলুন বিক্রেতাকে ডেকে এনে বেলুন না ওড়ার জন্য ধমক দেন। সেখানে বেলুন বিক্রেতা নিজেই বেলুনগুলো ওড়ানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তিনিসহ অন্যরা বেলুনগুলোর বাঁধন খুলে আলাদা করতে চান। তখন কেউ একজন বেলুনের সুতা পোড়ানোর জন্য গ্যাসলাইট দিয়ে আগুন জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। কিন্তু আতশবাজির শব্দের কারণে অনেকই বেলুন বিস্ফোরণের ঘটনাটি বুঝতে পারেননি। বেলুন বিস্ফোরণের সময় পাশে থাকা কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনিসহ পাঁচজন দগ্ধ হন। তাৎক্ষণিকভাবে অন্য পুলিশ সদস্যরা তাঁদের গায়ে পানি ঢেলে আগুন নিভিয়ে দ্রুত তাঁদের গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাগুরা-২: রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হকের

মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ০০
সাবেক সংসদ সদস্য ও মাগুরা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী সালিমুল হক কামাল। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক সংসদ সদস্য ও মাগুরা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী সালিমুল হক কামাল। ছবি: সংগৃহীত

মাগুরা-২ (মহম্মদপুর-শালিখা-সদরের চার ইউনিয়ন) সংসদীয় আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী সালিমুল হক কামাল রাজনীতি ও ভবিষ্যতে সব ধরনের নির্বাচন থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ ঘোষণা দেন তিনি।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে কাজী সালিমুল হক কামাল জানান, দীর্ঘ সাত বছর কারাবাস, রাজনৈতিক অবহেলা এবং পরিবারের চরম ভোগান্তির কারণে তিনি আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবেন না এবং সক্রিয় রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন। জীবনের বাকি সময় পরিবার নিয়ে শান্তিতে কাটাতে চান বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

কাজী সালিমুল হক কামাল তাঁর স্ট্যাটাসে স্মৃতিচারণা করেন, ২০০৮ সালের পর তিনি রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন। ২০১৭ সালে একটি মিথ্যা মামলায় কারাবরণ করতে হয় তাঁকে। দীর্ঘ কারাবাস শেষে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর অসুস্থ শরীরে তিনি ২২ আগস্ট কারাগার থেকে মুক্তি পান। মুক্তির দিন নেতা-কর্মীদের ভালোবাসা ও আবেগ তাঁকে গভীরভাবে স্পর্শ করে।

সালিমুল হক কামাল জানান, মুক্তির পর গত ১৬ মাসে মাত্র চারবার মাগুরায় আসেন এবং প্রতিবারই নেতা-কর্মীদের চোখে ভালোবাসার পাশাপাশি দীর্ঘদিনের কষ্ট ও বেদনা দেখেছেন। ১৬ বছর ধরে মাগুরার ত্যাগী নেতা-কর্মীরা মামলা, হামলা, জেল ও নির্যাতন সহ্য করেও বিএনপির পতাকা আঁকড়ে ধরে রেখেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

স্ট্যাটাসে দলীয় হাইকমান্ডের প্রতি প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, তৃণমূল নেতা-কর্মীদের আবেগ ও অনুভূতির কোনো মূল্য দেওয়া হচ্ছে না। ফেব্রুয়ারি ২০২৬ সালের নির্বাচনের জন্য মাগুরা-২ আসনে প্রাথমিক প্রার্থী ঘোষণার পর তৃণমূলে যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে, তা দীর্ঘদিনের অবহেলা ও বঞ্চনার ফল।

সালিমুল হক কামাল দাবি করেন, মাগুরা-২ আসনের ৫১৩ জন দায়িত্বশীল নেতার মধ্যে ৫০১ জন, ১৯টি ইউনিয়নের ১৮ জন সাবেক চেয়ারম্যান এবং দুজন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান লিখিতভাবে ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। তবে তৃণমূলের সেই মতামতকে কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।

কাজী সালিমুল হক কামাল আরও বলেন, ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে বিতর্কিতদের পুনর্বাসনের চেষ্টা দলকে আদর্শিকভাবে দুর্বল করছে। এতে ভবিষ্যতে দলের ভিত্তি নড়বড়ে হয়ে পড়তে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

আড়পাড়ার এক প্রতিবাদ সভার প্রসঙ্গ টেনে কাজী সালিমুল হক কামাল বলেন, তিনি কখনো নিজের জন্য মনোনয়ন চাননি। তৃণমূলের পছন্দ অনুযায়ী অন্য কোনো যোগ্য প্রার্থী দিলেও নেতা-কর্মীরা মেনে নিতেন। তবে দলের বর্তমান অনড় অবস্থান দেখে তিনি উপলব্ধি করেছেন, এখানে তৃণমূলের যুক্তি বা আবেগের কোনো মূল্য নেই।

স্ট্যাটাসের শেষাংশে তিনি নেতা-কর্মীদের সংযত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ক্ষোভ থাকলেও এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়, যাতে ব্যক্তিগত রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তরুণদের সামনে রাজনীতিতে এগিয়ে যাওয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের ইতি টেনে সালিমুল হক কামাল লেখেন, তারুণ্যের জয় হোক। তবে মনে রাখবেন, কর্মীদের চোখের পানি কখনো দলের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে না।

উল্লেখ্য, কাজী সালিমুল হক কামাল ১৯৯৪ সালের বহুল আলোচিত উপনির্বাচনে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিকুজ্জামান বাচ্চুকে পরাজিত করে নিজের রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করেন। ওয়ান-ইলেভেন সময়ে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় তিনি ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাভোগ করেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ২০২৪ সালের ২৩ আগস্ট তিনি কারামুক্ত হন।

সালিমুল হক কামালের অবসর ঘোষণাকে কেন্দ্র করে মাগুরা-২ আসনে বিএনপির রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনা ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুবকের হাত-পা কেটে দেওয়ার অভিযোগ জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৬
যুবকের হাত-পা কেটে দেওয়ার অভিযোগ জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের বিরুদ্ধে

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে এক যুবকের দুই হাত ও এক পা জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা কেটে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় এই যুবক ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। পুলিশ জামায়াতে ইসলামীর দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।

আহত যুবকের নাম আবু সুফিয়ান সিজু (২২)। বাবার নাম রবিউল ইসলাম। শিবগঞ্জ উপজেলার বাজিতপুর বাহাদুর মোড়লের টোলা গ্রামে তাঁর বাড়ি। আবু সুফিয়ানের ওপর হামলার ঘটনাটি ঘটে ২৪ ডিসেম্বর শিবগঞ্জ উপজেলার উমরপুর ঘাট এলাকায়। সেদিন আবু সুফিয়ানকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ফেলা হয়েছিল। এরপর দুই হাত ও এক পা কেটে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে স্বজনেরা জানান, সুফিয়ানের বাঁ হাতের রগ কেটে গেছে। এই হাত কেটে ফেলতে হবে। ডান হাতটি রক্ষার চেষ্টা করছেন চিকিৎসকেরা। মাথা ও দুই পায়েও গুরুতর জখম আছে। চোখের ওপর হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। কালশিরা পড়ে চোখ এখনো ফুলে আছে।

এই ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজন হলেন শাহ আলম ও তাঁর ভাই আব্দুর রাজ্জাক। তাঁদের বাড়ি উপজেলার শ্যামপুর খোঁচপাড়া গ্রামে। তাঁরা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী। তাঁদের মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। উমরপুর ঘাটে তাঁর ওষুধের দোকান আছে। সেই দোকানের সামনেই ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ এজাহারভুক্ত এই দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র ও জরুরি বিভাগের ইনচার্জ শংকর কে বিশ্বাস বলেন, ভর্তির পর রাতেই আবু সুফিয়ানকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

আহত আবু সুফিয়ানের মা সুফিয়া খাতুন জানান, সুফিয়ানের এক নাবালিকা ভাতিজিকে কিছুদিন আগে এক যুবক অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ নিয়ে মামলা করলে পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে। ছেলেটিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কিন্তু জামিনে আসার পর থেকে ছেলেটি আবার মেয়েটিকে বিরক্ত করছিল।

এ জন্য ২৪ ডিসেম্বর বিকেলে আবু সুফিয়ান উমরপুর ঘাটে ওই ছেলেটিকে ডেকে তাঁর ভাতিজিকে বিরক্ত না করার জন্য শাসাচ্ছিলেন। তখন বদিউর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক, শাহ আলমসহ জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা ওই ছেলেটির পক্ষ নেন এবং আবু সুফিয়ানকে মারতে শুরু করেন। একপর্যায়ে যোগ দেন শিবিরের কর্মী আনোয়ার হোসেন ও নুর আলী। তাঁরা রাজ্জাকের দোকানের সামনে বিদ্যুতের খুঁটিতে সুফিয়ানকে বেঁধে ফেলেন। এরপর লাঠি ও হাতুড়ি দিয়ে তাঁকে পেটানো হয়। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর দুই হাত ও পা কেটে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে দেন। খবর পেয়ে আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের সদস্যরা সুফিয়ানকে উদ্ধার করে প্রথমে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। সেখান থেকে চিকিৎসকেরা তাঁকে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। পরে রাতেই তাঁকে ঢাকায় নেওয়া হয়।

সুফিয়া খাতুন বলেন, তাঁর ছেলেকে জামায়াতের মিছিলে ডাকা হয়েছিল। সুফিয়ান তাদের মিছিলে না গিয়ে বিএনপির মিছিলে যেত। এই রাগে তার হাত-পা এভাবে কেটে দেওয়া হতে পারে। তিনি জানান, ঘটনার পর তার ছেলে মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে থাকলেও জামায়াত-শিবিরের ভয়ে কেউ হাসপাতালে নিয়ে যাননি। এমনকি কোনো গাড়িও তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিল না। পরে তারা অ্যাম্বুলেন্স ডেকে সুফিয়ানকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

আহত আবু সুফিয়ান বলেন, জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের তিনি বোঝাতে চেষ্টা করেছিলেন, ওই ছেলেটি তাঁর ভাতিজিকে বিরক্ত করছে। কিন্তু কোনো কথা না শুনে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা তাঁকেই বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে হাত-পা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে দেন।

জামায়াতের কর্মী শাহ আলম ও আব্দুর রাজ্জাক গ্রেপ্তার হওয়ায় তাঁদের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। আর অভিযুক্ত শিবিরের কর্মী নূর আলীর মোবাইলে সংযোগ পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় দুজন কর্মী গ্রেপ্তার হলেও জামায়াত-শিবির এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকে না বলে দাবি করেছেন উপজেলা জামায়াতের আমির সাদিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার শাহ আলম ও আব্দুর রাজ্জাক আমাদের কর্মী। তবে জামায়াত-শিবির হাত-পা কাটার রাজনীতি করে না। এই ঘটনায় তাঁরা জড়িত বলেও আমরা মনে করি না। তাই সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

এ বিষয়ে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ঘটনার পর রাতেই তিনজনের নামে মামলা করেন আবু সুফিয়ানের বাবা। এরপর আমরা দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় কিশোরগঞ্জের এক যুবক নিহত

হোসেনপুর সংবাদদাতাকিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
নিহত আনোয়ার। ছবি: সংগৃহীত
নিহত আনোয়ার। ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় আনোয়ার হোসেন নামে কিশোরগঞ্জের এক যুবক নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার দিকে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে স্কুটি চালিয়ে যাওয়ার সময় পেছন দিক থেকে একটি গাড়ি ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।/

নিহত আনোয়ার জেলার হোসেনপুর উপজেলার উত্তর গোবিন্দপুর গ্রামের আলমাস খানের বড় ছেলে। নিহত ব্যক্তির প্রতিবেশী প্রবাসী শফিক জানান, দুই মাস পর আনোয়ারের দেশে ফিরে বিয়ে করার কথা ছিল।

গোবিন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. চান মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পরিবারের বরাত দিয়ে তিনি জানান, নিহত আনোয়ার ১০-১২ বছর আগে সৌদি আরবে গেছেন। সেখানে ফ্রি ভিসায় কাজ করতেন তিনি। গতকাল রাতে তাঁর পরিবার মৃত্যুর খবর পায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাক-অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষ: স্ট্রোক করা মিজানকে নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিলেন স্ত্রী ও শ্যালক, মারা গেলেন সবাই

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৯
নিহত ব্যক্তিদের বাড়িতে বিলাপ করছেন স্বজনেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিহত ব্যক্তিদের বাড়িতে বিলাপ করছেন স্বজনেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোর থেকে অ্যাম্বুলেন্সে রোগী নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মনিরামপুরের একই পরিবারের তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহত তিনজন সম্পর্কে ভাই-বোন ও ভগ্নিপতি। তাঁদের বাড়ি ঝাঁপা ইউনিয়ন পরিষদের পেছনে রাজগঞ্জ বাজার এলাকায়। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ভাঙ্গা-খুলনা মহাসড়কের মনসুরাবাদ এলাকায় ট্রাক ও রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষে তাঁরা নিহত হন।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন রাজগঞ্জ বাজার এলাকার রহমতউল্লাহর ছেলে নিশান (২৩), মেয়ে নীলা (২৫) ও মেয়ের স্বামী মিজানুর রহমান (৩৫)।

নিহত মিজানুর রহমান একটি বেসরকারি ঋণদান সংস্থার শাখা ব্যবস্থাপক ছিলেন। তাঁর বাড়ি কেশবপুর উপজেলার ভাল্লুকঘর এলাকায়। আর নিশান রাজগঞ্জ বাজারে একটি কিন্ডারগার্টেনের সহকারী শিক্ষক ও তাঁর বোন নীলা গৃহিণী ছিলেন।

নিহত নীলা-মিজানুর রহমান দম্পতির ছয় ও চার বছর বয়সী দুটি ছেলে রয়েছে। এই ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের বাড়িতে মাতম চলছে। শোক নেমে এসেছে গ্রামজুড়ে।

নিহত ব্যক্তিদের প্রতিবেশী হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘মিজানুর রহমান স্ট্রোক করে এক মাস ধরে অসুস্থ হয়ে যশোরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় আজ সকালে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন স্ত্রী নীলা ও শ্যালক নিশান। তাঁরা ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পৌঁছালে একটি ট্রাকের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে মিজানুর রহমান, নিশান ও তাঁর বোন নীলা নিহত হন।’

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রজিউল্লাহ খান বলেন, ‘ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় মনিরামপুরের একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুর খবর আমাদের কেউ জানায়নি। নিহত ব্যক্তিদের পরিবার কোনো আইনি সহায়তা চাইলে সহযোগিতা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত