Ajker Patrika

লিবিয়ায় মাফিয়া-দালাল চক্রের দ্বন্দ্ব, ফরিদপুরের দুই যুবককে ‘গুলি করে হত্যা’

ফরিদপুর প্রতিনিধি
নিহত হৃদয়ের ছবি হাতে মা বিলকিস বেগমের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিহত হৃদয়ের ছবি হাতে মা বিলকিস বেগমের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা

অবৈধপথে ইতালি যাওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে গিয়ে ফরিদপুরের দুই যুবককে হত্যার ঘটনায় বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পরিবারের অভিযোগ, ইতালি যাওয়ার জন্য প্রত্যেক পরিবার দালাল চক্রকে ১৬ লাখ টাকা দেয়। কিন্তু সেই টাকা লিবিয়ার মাফিয়াদের দেওয়া হয়নি বলে তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে হত্যা করে। হত্যার বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বাংলাদেশি দালাল চক্র গত ৫ দিন যাবৎ বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয় এ দুই যুবকের পরিবারের কাছে। পরবর্তীতে গতকাল শুক্রবার মারা যাওয়ার বিষয়টি হয় পরিবার।

নিহত দুই যুবকের মধ্যে হৃদয় হাওলাদার (২৬) নামে একজনের গুলিবিদ্ধ লাশের ছবি দেখে শনাক্ত করেছেন তাঁর বাবা মিজানুর রহমান মিন্টু হাওলাদার। অপর যুবক আকাশ হাওলাদার ওরফে রাসেলের (২২) মৃত্যুর খবর তাঁর বাবা মজিবর হাওলাদারকে জানায় দালাল চক্র। কিন্তু রাসেলের লাশ কোথায় আছে সেটি জানায়নি দালাল চক্র। নিহত দুই যুবক ফরিদপুরের ভাঙা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের কুমারখালী গ্রামের বাসিন্দা।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ নভেম্বর ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি ছাড়েন হৃদয় ও ব্যাসেল। ওই দিন রাত ৮ টার ফ্লাইটে ঢাকা থেকে দুবাই পৌঁছান। এরপর সেখান থেকে পৌঁছান মিশরে। তারপর নিয়ে যাওয়া হয় লিবিয়ায়। সর্বশেষ গত ২২ জানুয়ারি রাতে পরিবারের সঙ্গে কথা হয় তাঁদের। এরপর আর যোগাযোগ হয়নি। গতকাল তাঁদের মৃত্যুর খবর পায় পরিবার।

স্থানীয় ও নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনটি দালাল চক্রের মাধ্যমে লিবিয়ায় পৌঁছান তাঁরা। প্রথমে ওই এলাকার দালাল চক্রের সদস্য আনোয়ার মাতুব্বরের মাধ্যমে তাঁদের ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকায় এনে আনোয়ার মাতুব্বর তাঁর দূরসম্পর্কের শ্বশুর মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার মোল্লাদি গ্রামের শহীদ শেখের হাতে তুলে দেন। এরপর শহীদ শেখ লিবিয়ার বাসিন্দা হামেদ আল গাম্বী নামে এক দালালের হাতে তুলে দেন। কিন্তু হামেদ আল গাম্বীকে টাকা না দেওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে একাধিক বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করে নিহতের পরিবার।

আজ শনিবার দুপুরে নিহতের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, পাড়া প্রতিবেশী ও স্বজনরা ভিড় করছেন। নিহত হৃদয় হাওলাদারের মা বিলকিস বেগম ছেলের ছবি বুকে জড়িয়ে বিলাপ করছেন। পাশে বসে আছেন ছোট বোন ও বাবা। ছেলেকে হারিয়ে শোকে কাতর, অঝোরে ঝরছে তাঁদের চোখের পানি।

তিন ভাই বোনের মধ্যে হৃদয় ছিলেন মেজ। তিনি স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে এসএসসির গণ্ডি না পেরোতেই বাবার কাছে বায়না ধরেন ইতালি যাবেন। হৃদয়ের বাবা মিন্টু হাওলাদার জানান, ছেলেকে কোনোভাবেই বোঝানো যায়নি। পরে বাধ্য হয়ে ওই এলাকার রাজ্জাক মাতুব্বরের ছেলে আনোয়ার মাতুব্বরের মাধ্যমে তাঁকে ইতালি পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

মিন্টু হাওলাদার জানান, ছেলের সঙ্গে গত ২২ জানুয়ারি তাঁর শেষ কথা হয়। এরপর আর কোনো যোগাযোগ করা যায়নি। তখন আনোয়ারের বাড়িতে গিয়ে জানালে সে বলে, ‘বোট (নৌকা) ডুবে গেছে।’ পরে তিনি বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, লিবিয়া থেকে কোনো নৌকা ছাড়েনি। সেখানকার একটি সাগর পাড়ে নিয়ে অনেক বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ‘একটি ফেসবুক পেজে কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়। সেখানে আমার ছেলের একটি ছবি পাই। ছবিতে দেখা যায়— আমার ছেলের বুকের ভেতর দিয়ে গুলি বের হওয়ার চিহ্ন রয়েছে। ওরা আমার ছেলের পিঠের দিকে গুলি করে।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী আমরা দালালদের ১৬ লক্ষ টাকা দেই। কিন্তু সেই টাকা মাফিয়াদের দেয়নি ওরা। এ নিয়ে দালালদের সঙ্গে ওই দেশের মাফিয়াদের গন্ডগোল হয়। পরে অনেককে ধরে নিয়ে গুলি করে মাইর‌্যা ফেলে।’

এদিকে ‘লিবিয়ার গেম খবর’ নামে ওই ফেসবুক পেজে দেখা যায়, ভূমধ্যসাগরের পাড়ে একাধিক লাশ পড়ে আছে। কারও লাশ বালুর নিচে অর্ধেক চাপা, কারও লাশ আবার সাগরে ভাসছে। ওই নৌকা ডুবির ঘটনা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, লিবিয়ার বেনগাজি আল আকিলা এলাকায় (ব্রেগার পশ্চিমে) ১৮ জন বাংলাদেশির মৃতদেহ পাওয়া গেছে।

নিহত হৃদয় হাওলাদারের বাড়ি থেকে একটু দূরেই আকাশ হাওলাদার ওরফে রাসেলদের বাড়ি। সেখানে গিয়ে দেখা যায় একই দৃশ্য। শোকে স্তব্ধ পরিবারের সদস্যরা। বসবাসের একমাত্র সম্বল ভিটেমাটি ও কিছু চাষের জমিসহ গয়না ও ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ১৬ লাখ টাকায় ছেলের বায়নায় তাঁকে ইতালি পাঠান বাবা মজিবুর হাওলাদার।

তিনি বলেন, ‘এলাকার অনেকেই লিবিয়ায় গেছে। এসব দেখে আমার ছেলে বায়না ধরে সে লিবিয়া হয়ে ইতালি যাবে। পরে স্থানীয় আনোয়ার মাতুব্বরের মাধ্যমে জমিজমা বিক্রি করে ১৬ লাখ টাকা দিয়ে পাঠিয়ে দেই। পরে গত ২৪ জানুয়ারি দালালেরা ফোন করে বলে, ওদের নৌকা ছেড়ে দিয়েছে। ৪ থেকে ৫ ঘণ্টার মধ্যে ইতালি পৌঁছাবে। কিন্তু দুই দিন পার হয়ে গেলেও ছেলের কোনো খোঁজ পাইনি। পরে দালাল বলে, দুই-তিন ঘণ্টা নৌকা চলার পরে নৌকায় বিস্ফোরণ হয়। কোস্টগার্ড উদ্ধার করে ওদের হাসপাতালে নিয়ে গেছে। তখন আমি বলি, হাসপাতালে গিয়ে আমার ছেলেকে দেখান। কিন্তু ৫ দিন হয়ে গেলেও তারা আমার ছেলের খোঁজ দিতে পারেনি। এরপর জানতে পারি, রাসেল মারা গেছে।’

সন্তানদের লাশ ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের কাছে আকুতি জানান নিহত দুই পরিবারের সদস্যরা। তারা স্থানীয়দের সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান এবং দালাল চক্রের বিচার দাবি করেন।

এ বিষয়ে জানতে আনোয়ার মাতুব্বরদের বাড়িতে গেলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তিনি কোথায় আছেন জানতে চাইলে পরিবার সে তথ্য দেয়নি। এ সময় আনোয়ার মাতুব্বরের ভাই আবু তারা মাতুব্বর দাবি করেন, আনোয়ার নয়, শহীদ শেখের মাধ্যমে তাঁদের ইতালি পাঠানো হয়েছে। তাঁর ছেলে সোহেল মাতুব্বরও ওদের ইতালি যাচ্ছিলেন বলে জানান আবু তারা মাতুব্বর। কিন্তু সেদিনের পর থেকে তাঁর ছেলেও নিখোঁজ রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

ভাঙা থানার ওসি মো. মোকছেদুর রহমান বলেন, ‘লিবিয়ায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনো কোন লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ দিলে দালালচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম। ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ–সাতকানিয়া আংশিক) আসনে চন্দনাইশ উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন আহমেদের ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়ন পাওয়ার খবরে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তাঁর মনোনয়নের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

অনেকেই আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে জসিম উদ্দিনের ছবি শেয়ার করে প্রশ্ন তুলছেন তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় ও অবস্থান নিয়ে।

যদিও সন্ধ্যা পর্যন্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কিছু জানা না গেলেও চট্টগ্রামের রিটার্নিং কর্মকর্তার পাঠানো তথ্যে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম রয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া জসিম উদ্দিন আহমেদ মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে তাঁর মনোনয়নের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্যমতে, জসিম উদ্দিন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সহযোগী। তাঁর মালিকানায় কক্সবাজারে ‘রামাদা কক্সবাজার’ এবং দুবাইয়ে ‘রামাদা দুবাই’ হোটেল রয়েছে। চট্টগ্রাম নগরীর লালদীঘি এলাকায় ‘মহল মার্কেট’, খুলশীতে ‘জসিম হিল পার্ক’সহ একাধিক বাণিজ্যিক ও আবাসিক স্থাপনার মালিক তিনি। এ ছাড়া তাঁর সম্পদের উৎস ও দ্রুত উত্থান ঘিরে রয়েছে নানা অভিযোগ।

অভিযোগ উঠেছে, জসিম উদ্দিন সাবেক দুই আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও শহিদুল হকের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন এবং আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী একাধিক নেতার সান্নিধ্য পেয়েছিলেন। এ ছাড়া ২০২৪ সালে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি চন্দনাইশ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

চন্দনাইশ উপজেলা বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে যিনি সুবিধাভোগী ছিলেন, তাঁর হাতে ধানের শীষ দেওয়া আমাদের জন্য লজ্জাজনক। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।’

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জসিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি একজন ব্যবসায়ী। বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে আমার ছবি থাকতেই পারে। এসব বিষয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে বিস্তারিত বলব।’ এ কথা বলেই তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতীয়দের ওয়ার্ক পারমিট বাতিলসহ ৪ দফা দাবি ঘোষণা করল ইনকিলাব মঞ্চ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে এবার চার দফা দাবি ঘোষণা করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। রোববার রাতে সংগঠনটি ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এই দাবিগুলো তুলে ধরে।

ইনকিলাব মঞ্চের ৪ দফা—

১. খুনি, খুনের পরিকল্পনাকারী, খুনের সহায়তাকারী, পলায়নে সহযোগী, আশ্রয়দাতাসহ পুরো খুনি চক্রের আগামী ২৪ দিনের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন করতে হবে।

২. বাংলাদেশে অবস্থানরত সকল ভারতীয়দের ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করতে হবে।

৩. ভারত তার অভ্যন্তরে আশ্রয় নেওয়া সকল খুনিদের ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানালে ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে।

৪. সিভিল মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সের মধ্যে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকা ফ্যাসিস্টের দোসরদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাকস্থলীতে হাজারখানেক ইয়াবাসহ বিমানযাত্রী গ্রেপ্তার

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
আটক ব্যক্তি কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দা। ছবি: সংগৃহীত
আটক ব্যক্তি কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দা। ছবি: সংগৃহীত

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাকস্থলীতে প্রায় এক হাজার ইয়াবাসহ এক বিমানযাত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। আজ রোববার দুপুরের দিকে তাঁকে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের কার পার্কিং এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ৯৬৯টি ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে।

আজ রাতে এপিবিএন থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এপিবিএন জানায়, আটক ব্যক্তির নাম মো. নবী হোসেন (৪৫)। তিনি কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দা। তিনি আজ রোববার দুপুরে নভোএয়ারের অভ্যন্তরীণ ভিকিইউ-৯২২ ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন।

পরবর্তী সময়ে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের কার পার্কিং এলাকা থেকে তাঁকে আটক করে এপিবিএন অফিসে নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, সুকৌশলে পায়ুপথে ইয়াবা পরিবহন করছেন।

বিমানবন্দরের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে এক্স-রে করা হলে পায়ুপথে তিনটি ডিম্বাকৃতির বস্তু দেখা যায়। পরে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে তাঁর পেট থেকে ডিম্বাকৃতির তিনটি পোঁটলা থেকে ৯৬৯টি ইয়াবা পাওয়া যায়।

জানা গেছে, ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রি ও পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আজকের ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অপারেশনাল কমান্ডার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা বিমানবন্দর ঘিরে মাদক চোরাচালানসহ যেকোনো অবৈধ কার্যক্রম রোধে সচেষ্ট আছি। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করে যেকোনো অপরাধ প্রতিরোধে আমরা নিয়মিত ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন, শতাধিক ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি 
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লেগে শতাধিক ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে। রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা ২৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস।

টেকনাফের লেদা ডেভেলপমেন্ট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলম জানান, ক্যাম্পের এক বাসিন্দার ঘরে ফোনের চার্জার থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি ক্যাম্পের বাসিন্দারা আগুন নেভাতে কাজ করছে।

১৬-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মুহাম্মদ কাউছার সিকদার বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সংশ্লিষ্ট সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত