Ajker Patrika

ঢাকার রাস্তায় বৈদ্যুতিক রোলস রয়েস, মালিক কে

সৌগত বসু, ঢাকা 
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১১: ৩৪
রোলস রয়েসের বৈদ্যুতিক গাড়ি স্পেক্টার। ছবি: সংগৃহীত
রোলস রয়েসের বৈদ্যুতিক গাড়ি স্পেক্টার। ছবি: সংগৃহীত

অনলাইন ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে একটি গাড়ির ভিডিও রিল ভাইরাল হয়েছে। বিশ্বখ্যাত রোলস রয়েস ব্র্যান্ডের গাড়িটিতে কোনো রেজিস্ট্রেশন নম্বর নেই। নম্বর প্লেটের জায়গায় দেখা যাচ্ছে গাড়ি পরিবেশক প্রতিষ্ঠানের নাম। বিলাসবহুল ও দামি গাড়িটির মালিক কে, তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে তুমুল আলোচনা। কিন্তু নম্বর প্লেট না থাকায় গাড়ি কার নামে নিবন্ধিত, সে তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

দামি গাড়িগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে সচরাচর আমদানি বেশি হয় টয়োটা, মিতসুবিশি ও নিশান। এর বাইরে কোটি টাকার বেশি দামের গাড়ির বাজার মার্সিডিজ বেঞ্জ, বিএমডব্লিউ, অডির মতো ব্র্যান্ডগুলোর দখলে। কয়েক বছর ধরে ঢাকার রাস্তায় মার্সিডিজ, বিএমডব্লিউ ও অডি গাড়ির চলাচল পরিচিত দৃশ্য হয়ে গেছে। রাজধানীর অলিগলিতেও এখন চোখে পড়ে এসব গাড়ি। বিলাসবহুল এসব গাড়ি আমদানির সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তবে রোলস রয়েসের দেখা তেমন মেলে না। ভাইরাল হওয়া রোলস রয়েস গাড়িটির মালিক কে তা জানার চেষ্টা করেছে আজকের পত্রিকা। তবে পরিবেশক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

গত সোমবার একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে ঢাকার বনানীর রাস্তায় চলতে থাকা রোলস রয়েসের ভিডিও রিল হিসেবে আপলোড করা হয়। এটি আজ শুক্রবার পর্যন্ত ১৭ লাখ বার দেখা হয়েছে; মন্তব্য পড়েছে ৪৩৭টি।

ভিডিওতে আপলোডকারী বলেন, তিনি ঢাকায় প্রথম রোলস রয়েস গাড়ি দেখলেন। তিনি বৈদ্যুতিক গাড়িটির ভিডিও ধারণ করেছেন ৩ নভেম্বর। এটি রোলস রয়েস স্পেক্টার মডেল। যুক্তরাষ্ট্রে এই গাড়ির দাম প্রায় ৫ লাখ ডলার। বাংলাদেশে যেটির দাম আসে ৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এখানে ৫০০ শতাংশ ভ্যাট যুক্ত করলে দাম আসবে ৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। গাড়িটি ২০২৫ সাল থেকে বাংলাদেশে পাওয়া যাবে। হয়তো এটি পরীক্ষামূলকভাবে চলছে। গাড়ির ভেতরের চালকের চেহারায় একটা গর্ব গর্ব ভাব ছিল। এটি এক চার্জে ২৯১ মাইল যাবে। যদিও পরে তিনি ভিডিওর ক্যাপশনে ভ্যাটের তথ্য ৮৯ শতাংশ উল্লেখ করেন।

ঢাকার রাস্তায় রোলস রয়েসের বৈদ্যুতিক গাড়ি স্পেক্টার। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার রাস্তায় রোলস রয়েসের বৈদ্যুতিক গাড়ি স্পেক্টার। ছবি: সংগৃহীত

তাঁর এই রিল আপলোডের পর অনেকেই মন্তব্য করেছেন। একজন লিখেছেন, এটি বাংলাদেশের একটি বড় গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রির মালিকের গাড়ি। আরেকজন দাবি করেছেন, গাড়িটি তিনি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) মিরপুর কার্যালয়ে দেখেছেন। আরেকজন লিখেছেন, এমন গাড়ি বাংলাদেশে আরও তিনটা রয়েছে। অনেকে ‘মালিক কে’ জানতে চাইছেন, আবার কেউ গাড়ির দাম জানার চেষ্টা করেছেন।

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

গাড়িটির ছবি ও মডেল অনুসন্ধানের জানা যায়, রোলস রয়েস স্পেক্টার হলো ব্রিটিশ বিলাসবহুল গাড়ি প্রস্তুতকারক রোলস রয়েসের প্রথম সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক গাড়ি। এটি ব্র্যান্ডটির একটি আধুনিক ‘গ্র্যান্ড ট্যুরার’ মডেল, যা বৈদ্যুতিক ড্রাইভ ট্রেনসহ বিলাসিতা ও পারফরম্যান্সের জন্য বিখ্যাত। রোলস রয়েস স্পেক্টার আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২২ সালে উন্মুক্ত করা হয়। প্রথম ডেলিভারি শুরু হয় ২০২৩ সালের শেষের দিকে। ইউএস ডলারে গাড়িটির দাম ৪ লাখ ২২ হাজার ৭৫০ ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় দাঁড়ায় ৫ কোটি ৫ লাখ ৪২ হাজার ৪৮৪ টাকা। তবে বৈদ্যুতিক গাড়ি না হলে (চার হাজার সিসির বেশি ধরে) শুল্ক–কর দিতে হতো ৮২৬ দশমিক ৬০ শতাংশ বা প্রায় ৪১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

২০২৪ সালের এপ্রিলে ঢাকার প্রিয়াঙ্কা ট্রেডিং লিমিটেড চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এই একই মডেলের গাড়ি খালাস করে। গাড়িটির আমদানিমূল্য ছিল ২ লাখ ৭০ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এর শুল্ক, কর এবং অন্যান্য ফি মিলে আমদানি খরচ দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা। বৈদ্যুতিক গাড়ির কারণে শুল্ক-কর কম ছিল, অন্যথায় ৩৪ কোটি টাকার শুল্ক দিতে হতো। তবে ভাইরাল গাড়িটি একই গাড়ি কি না, তা নিশ্চিত হতে পারেনি আজকের পত্রিকা।

আজকের পত্রিকা গাড়িটির নম্বর প্লেটে কন্টিনেন্টাল মোটরসের নাম দেখে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। গত বুধবার কন্টিনেন্টাল মোটরসে কল দিলে তাঁরা লিখিত প্রশ্ন পাঠানোর কথা জানায়। পরবর্তীকালে প্রশ্ন পাঠানো হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁও অঞ্চলে কন্টিনেন্টাল মোটরসের শোরুমে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ভাইরাল গাড়িটি শোরুমে না থাকলেও মার্সিডিজ, বিএমডব্লিউ ও টেসলার গাড়ি ছিল।

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কন্টিনেন্টাল মোটরসের শোরুমে দায়িত্বরত সহকারী ব্যবস্থাপক (সেলস) আব্দুল কাদির অনিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই গাড়িটি এখন তাঁদের শোরুমে নেই। তাদের শোরুমের কাজ চলাতে এখানে বেশি গাড়ি রাখা হচ্ছে না।

ভাইরাল গাড়িটি তাদের কি না এবং এই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি তাদের মার্কেটিং বিভাগ থেকে জানানো হবে। তবে তার দেওয়া নম্বরে মার্কেটিং বিভাগের কর্মকর্তা আহনাফের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। মঙ্গলবার রাতে পাঠানো প্রশ্নের উত্তরের জন্য কন্টিনেন্টাল মোটরসের কর্মকর্তা ইশরাত তৃষার সঙ্গে দেখা করলে তিনি বলেন, তাদের মার্কেটিং বিভাগ যদি মনে করে তবেই তথ্য দেবে। এর বাইরে তাদের কিছু করার নেই।

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে রোলস রয়েস গাড়ি আমদানির প্রথম ঘটনা ২০১৭ সালে ঘটে। উত্তর কোরিয়ার এক কূটনীতিক মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ৩০ কোটি টাকার একটি গাড়ি আমদানি করেন। এর মধ্যে শুল্ক-কর ছিল ২২ কোটি টাকা। ২০২২ সালে চট্টগ্রামে আরেকটি রোলস রয়েস গাড়ি শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা হলেও শুল্ক গোয়েন্দা সেটি জব্দ করে এবং পরে ৮৫ কোটি টাকা শুল্ক-কর ও জরিমানা আদায় করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল ঘন কুয়াশার কারণে বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন।

সালাহউদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত সাড়ে ১০টার সময় নদীপথ অস্পষ্ট হয়ে যায়। সে সময় নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় কিছু যানবাহন আটকা পড়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আরও বলেন, কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার: বিএনপিএস

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বসবাস করা ৫৫ শতাংশ নারী ও কন্যা শিশু প্রতিনিয়ত সুরক্ষা, শিক্ষা, পুষ্টি ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয়শিবিরগুলোয় ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি।

বিএনপিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে তারা কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে বসবাস করছে, যা বিশ্বে বৃহত্তম শরণার্থী আশ্রয়স্থলগুলোর একটি। এই জনগোষ্ঠীর ৫২ শতাংশের বেশি নারী ও কন্যা।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে আট বছরেরও বেশি সময়ে কক্সবাজারের প্রায় ৫ লাখ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের প্রভাবে স্থানীয় জনগোষ্ঠী জীবিকা, মজুরি, বন ও জলসম্পদ, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সংহতির ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। ফলে এটি শুধু শরণার্থী সংকট নয়; এটি মানবিকতা, উন্নয়ন এবং শান্তির এক যৌথ চ্যালেঞ্জ।

‘শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার ও দায়িত্ব’ শীর্ষক এ গোল টেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন বিএনপিএসের উপপরিচালক নাসরিন বেগম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ শামসুদ্দৌজা নয়ন। এ ছাড়া শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এম এ সানোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হুমায়রা বেগমসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা কমে এসেছে। এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারীরা।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা, খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষার অধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাঠামোর অধীনে নিশ্চিত করা নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব। একইভাবে, আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়েরও টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, সম্মানজনক কাজ এবং জনসেবায় ন্যায্য প্রবেশাধিকারের জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যবিপ্রবির প্রথম উপাচার্য রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন

­যশোর প্রতিনিধি
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার মারা গেছেন (ইন্না...রাজিউন)। আজ বুধবার সকালে ঢাকার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে একটি বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার যবিপ্রবি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। পরবর্তীতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। সেখানে তিনি কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি কৃষিবিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া তিনি একজন কৃষি বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী হিসেবে দেশের কৃষি খাতের যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়নে দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে কৃতিত্বের সঙ্গে অবদান রেখেছেন।

এদিকে, ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুন, রিজেন্টবোর্ড সদস্যবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

এক শোক বার্তায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, রফিকুল ইসলাম সরকার ছিলেন একজন সৎ, মানবিক, ধর্মভীরু ও দায়িত্বশীল মানুষ। যবিপ্রবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতিতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

তিনি ছিলেন একজন দক্ষ প্রশাসক এবং বরেণ্য কৃষি বিজ্ঞানী। যবিপ্রবির সূচনালগ্নে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শী পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছাতে ভিত গড়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে তিনি শূন্য থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন, তা যবিপ্রবি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৪
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কাঁচপুর সেতু থেকে লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ১০ কিলোমাটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে একটি ট্রাক দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ সময় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এ যানজট তৈরি হয়।

এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, ব্যক্তিগত যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাঙ্গলবন্দ ব্রিজ এলাকায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিংয়ে সজোরে আঘাত করে। ট্রাকটিতে প্রায় ২৭ টন মালামাল বোঝাই ছিল। দুর্ঘটনায় সেতুর রেলিং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও জানান, ট্রাকটিতে অতিরিক্ত মালামাল থাকায় রেকার দিয়ে সরানো সম্ভব হয়নি। ফলে প্রথমে অন্য একটি ট্রাকে মালামাল স্থানান্তরের কাজ শুরু করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি বিকেলের আগে সরানো যায়নি। এর ফলে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

পণ্যবাহী ট্রাকচালক শাহ আলম জানান, দুর্ঘটনার কারণে রাস্তা বন্ধ ছিল বুঝতে পারছি। কিন্তু এত সময় লাগবে ভাবিনি। মালামাল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।

আরেক যাত্রী আক্তার হোসেন বলেন, আমি চট্টগ্রামে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তিন ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় আটকে আছি। ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে। বিকেল নাগাদ মালামাল সরিয়ে ট্রাকটি সড়ক থেকে অপসারণ করা হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। টানা তিন দিনের ছুটি থাকায় মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত