Ajker Patrika

বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করলেন গৃহশিক্ষক

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ মে ২০২৩, ২০: ১৭
বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করলেন গৃহশিক্ষক

গাজীপুর মহানগরীর সালনায় বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বাসায় ঢুকে এক কলেজশিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন গৃহশিক্ষক। এ সময় বাধা দিতে গিয়ে ওই শিক্ষার্থীর মা মুমূর্ষু অবস্থায় আইসিইউতে আছেন। অপর তিন বোনও গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

গত সোমবার দিবাগত রাতে গাজীপুর মহানগরীর সালনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিক্ষার্থীর নাম রাবেয়া আক্তার (২১)। তিনি গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফের মেয়ে। নিহত রাবেয়া ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

রাবেয়া আক্তার ২০২০ সালে জয়দেবপুর সরকারি মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ছুরিকাঘাতে আহতরা হলেন রাবেয়ার মা ইনসুরেত নেছা (৫০), বোন হাবিবা (১৮), খাদিজা (১৫) ও জান্নাত (১৩)।

ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক সাইদুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন। তিনি টেকিবাড়ী সাকিনের টেকিবাড়ী জামে মসজিদের ইমাম ও স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। তিনি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থানার মহেশতারা গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার হোমনার শ্রীমতী এলাকার বাসিন্দা আবদুর রউফ গাজীপুর মহানগরীর সালনা বাজারে আরএফএল প্লাস্টিক শোরুমে চাকরি করেন। চাকরির কারণে তিনি পরিবার নিয়ে মহানগরীর সালনা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

তাঁর ছোট দুই মেয়ে খাদিজা (১৫) ও জান্নাতকে (১৩) কোরআন শিক্ষার জন্য স্থানীয় মাদ্রাসার শিক্ষক সাইদুল ইসলামকে গৃহশিক্ষক নিয়োগ দেন। ওই শিক্ষক তাদের বাসায় গিয়ে ছোট দুই মেয়েকে পড়াতেন। এ ছাড়া সাইদুল পাশের টেকিবাড়ী সাকিনের টেকিবাড়ী জামে মসজিদে ইমামতি করতেন এবং সেখানে ছোট ছেলেমেয়েদের পবিত্র কোরআন শরিফ পড়াতেন।

সূত্রে আরও জানা গেছে, সাইদুল ইসলাম রাবেয়ার ছোট দুই বোনকে পড়ানোর জন্য বাসায় যাওয়া-আসার সুবাদে রাবেয়া আক্তারের দিকে তাঁর কুনজর পড়ে। কিছুদিন পরে সাইদুল ইসলাম রাবেয়া আক্তারকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তাব দিলে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। এতে সাইদুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে বড় মেয়ে রাবেয়া আক্তারকে বিয়ে করার জন্য বিভিন্নভাবে প্ররোচনা দিতে থাকেন।

তাঁর খারাপ উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে বাড়ির লোকজন তাঁকে বাসায় এসে পড়াতে নিষেধ করেন। এরপর রাবেয়া কলেজে এবং বিভিন্ন প্রয়োজনে বাসার বাইরে যাওয়া-আসার পথে সাইদুল তাঁকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু তাতেও রাজি না হওয়ায় সাইদুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হন।

এরপর গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাবেয়াদের বাসায় ঢুকে ধারালো ছুরি দিয়ে রাবেয়ার মাথায়, গলায়, হাতে, পায়ে এলোপাতাড়িভাবে কোপাতে থাকেন। এ সময় তাঁর চিৎকারে রাবেয়ার মা ও বোন হাবিবা, খাদিজা দৌড়ে রাবেয়া আক্তারের ঘরে গিয়ে বাধা দিলে সাইদুল ছুরি দিয়ে অন্যদেরও আঘাত করে পালিয়ে যান।

পরে স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে গুরুতর অবস্থায় রাবেয়াকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে রাতেই চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন রাবেয়ার মা। আহত হয়েছে রাবেয়ার ছোট দুই বোন।

গাজীপুর সদর মেট্রো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সকালে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তাক্ত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। আসামি সাইদুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

ফলের দোকানদার ও বেকার ছেলে: অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে হামলাকারী সম্পর্কে যা জানা গেল

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি: পাহাড়-টিলা সাবাড়, ভরাট হচ্ছে পুকুর

  • সন্ধ্যা নামলেই মাটি কাটা শুরু হয়; চলে ভোর পর্যন্ত।
  • ধ্বংস হচ্ছে পাহাড়-টিলা, এমনকি কৃষিজমির উর্বর মাটিও।
ফটিকছড়ি সংবাদদাতা
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় টিলা কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় টিলা কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় পরিবেশ ধ্বংসের হিড়িক পড়েছে। চক্রের থাবা থেকে রেহাই পাচ্ছে না বনাঞ্চলের পাহাড়-টিলা, এমনকি কৃষিজমির উর্বর মাটিও। স্থানীয় প্রশাসনের অভিযান এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলার পরও কোনো কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না মাটিখেকোদের দৌরাত্ম্য।

জানা গেছে, উপজেলার পাইন্দং, ভূজপুর, নারায়ণহাট, দাঁতমারা, বাগানবাজার, সুয়াবিল, হারুয়ালছড়ি ও কাঞ্চননগর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় এসব মাটি কাটার ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের নেতৃত্বে চলছে এই কর্মকাণ্ড।

স্থানীয়রা বলেন, কৃষিজমি থেকে মাটি কাটা রোধে অভিযান চালাচ্ছে প্রশাসন। তবে কৌশল বদলে দিনের বেলার পরিবর্তে রাতে কাটা হচ্ছে মাটি। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত চলে মাটি কাটা।

জানা গেছে, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে উপজেলার ফসলি জমি ও টিলা থেকে মাটি কাটছে অর্ধশতাধিক চক্র। এক্সকাভেটর দিয়ে ফসলি জমির টপসয়েল কেটে ডাম্পট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে করে ইটভাটা, পুকুর, ডোবা ও নতুন বাড়ির জায়গায় মাটি ভরাট করছে তাঁরা।

সরেজমিনে গত শনি ও রোববার দুই দিন উপজেলার পাইন্দং, ভূজপুর, বাগানবাজার ইউনিয়নের একাধিক এলাকা ঘুরে দেখা মেলে পরিবেশ ধ্বংসের এমন ভয়াবহতার চিত্র।

অনুসন্ধানে জানা যায়, পাইন্দংয়ের ফকিরাচাঁন আমতল এলাকায় রাতের আঁধারে কয়েকটি এক্সকাভেটর দিয়ে কাটা হচ্ছে কৃষিজমির মাটি। ভূজপুর ইউনিয়নের আন্ধারমানিক গলাচিপা এলাকায় স্থানীয় মো. রাশেদের নেতৃত্বে চার-পাঁচজনের একটি চক্র রাতের আঁধারে কেটে নিয়েছে বিশালাকার টিলার মাটি। এসব মাটি ডাম্পট্রাকে করে যাচ্ছে কাজীরহাট বাজারের একাধিক কৃষিজমি ভরাট কাজে। একই কায়দায় হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের আপন ব্রিকস ফিল্ডসংলগ্ন বাংলাবাজার সরকার বাড়ি এলাকায় কাটা হয়েছে টিলা। ভূজপুর ইউনিয়নের আছিয়া চা-বাগানসংলগ্ন মা আমেনা লেয়ার ফার্মের পাশে মো. আরিফ নামে এক ব্যক্তির মুরগির ফার্ম তৈরির জন্য কাটা হয়েছে বিশালাকার টিলা। একই দৃশ্য বাগানবাজার ইউনিয়নের লালমাই এলাকায়। যেখানে ভবন নির্মাণের জন্য দিনদুপুরে কাটা হচ্ছে উঁচু পাহাড়-টিলা। লালমাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে স্থানীয় মনির ও মফিজের নেতৃত্বে পেলোডার দিয়ে কেটে সাবাড় করা হয়েছে ব্যবসায়ী মো. হাসেমের টিলা।

মাটি কাটার বিষয়টি স্বীকার করেন হাসেমের ছেলে মাহবুব। তিনি বলেন, ‘আমরা যাদের দিয়ে মাটি কাটিয়েছি তারা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছে বলে আমাদের জানিয়েছে।’ তবে কাদের দিয়ে মাটি কাটিয়েছেন তাদের নাম বলেননি মাহবুব। একই ইউনিয়নের বাগমারা এলাকায় মাহবুবুল হকের বসত টিলা, গার্ডের দোকানে নবী মাস্টারের টিলা, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান একরামুল হক বাবুলের ভাই লায়েসের নেতৃত্বে কাটা হচ্ছে কৃষিজমি। তবে মাটি কাটার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন মো. লায়েস।

লালমাই এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ‘যখন যে দল ক্ষমতায় আসে, সে দলের লোকেরাই পাহাড়-টিলা কর্তন করে। প্রভাবশালী হওয়ার ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে না, প্রতিবাদ করে না।’

চট্টগ্রাম জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের রিসার্স অফিসার মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, কর্তনকৃত এসব স্থান পরিদর্শন করে শিগগিরই জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মাটি কাটার সংবাদ পেলে যত রাতই হোক অভিযান পরিচালনা করছি।’ তিনি বলেন, টিলা-পাহাড় ও কৃষিজমির টপসয়েল কাটা আমলযোগ্য অপরাধ। পুলিশ প্রশাসন চাইলে স্বপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নিতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

ফলের দোকানদার ও বেকার ছেলে: অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে হামলাকারী সম্পর্কে যা জানা গেল

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শরীয়তপুরের ৩ আসন: আওয়ামী লীগের ঘাঁটি দখলে মরিয়া বিএনপি-জামায়াত

  • শরীয়তপুর-১ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর বিরুদ্ধে সরব সাবেক এমপির অনুসারীরা।
  • নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
শরীয়তপুর প্রতিনিধি
শরীয়তপুরের ৩ আসন: আওয়ামী লীগের ঘাঁটি দখলে মরিয়া বিএনপি-জামায়াত

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত শরীয়তপুরে এবার বদলে গেছে নির্বাচনী সমীকরণ। জুলাই অভ্যুত্থানের পর বিদ্যমান বাস্তবতায় জেলার তিনটি আসনই নিশ্চিত করতে চায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। শরীয়তপুর-১ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সাঈদ আহমেদ আসলামের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে দফায় দফায় সড়ক অবরোধ করেছে দলের অপর অংশ। তবে অন্য দুই আসনে এমন বিরোধ নেই। সবকটি আসনেই নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন বিএনপি ও জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

শরীয়তপুর-১: স্বাধীনতার পর একবারই এখানে জয় পায় বিএনপি। সেটি ছিল ১৯৭৯ সালে। এর বাইরে বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর দখলে ছিল এটি। শরীয়তপুর সদর ও জাজিরা নিয়ে গঠিত আসনটিতে এবার বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সাঈদ আহমেদ আসলাম। তিনি জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং শরীয়তপুর-৩ আসনের বাসিন্দা। তবে তাঁর প্রাথমিক মনোনয়ন মেনে নিতে নারাজ আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি সরদার এ কে এম নাসির উদ্দীন কালুর অনুসারীরা। সাঈদ আহমেদ আসলামের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে দফায় দফায় সড়ক অবরোধ করেছেন তাঁরা। দলীয়ভাবে মীমাংসা না হলে শেষ পর্যন্ত নাসির উদ্দীন কালু স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন।

জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি ড. মোশারফ হোসেন মাসুদ। সাঈদ আহমেদ আসলাম ও মোশারফ হোসেন মাসুদ দুজনই নেতা-কর্মীদের নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস থেকে জালালুদ্দীন আহমদ, এনসিপি থেকে মো. আব্দুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন থেকে মুফতি তোফায়েল আহমেদ কাসেমী, গণঅধিকার পরিষদ থেকে অ্যাডভোকেট খবির উদ্দিন মনোনয়ন পেতে পারেন।

শরীয়তপুর-২: নড়িয়া ও সখিপুর থানা নিয়ে গঠিত আসনটি বরাবরই আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। শুধু ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে দুবার বিজয়ী হন জাতীয় পার্টির প্রার্থী। এবার এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের জেলা সভাপতি ও সাবেক এমপি শফিকুর রহমান কিরণ। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের (এনডিএফ) সেক্রেটারি ডা. মাহমুদ হোসেন বকাউল। দুজনই এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভাসহ নানাভাবে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস থেকে মো. দবির হোসেন শেখ, ইসলামী আন্দোলন থেকে মুফতি মো. ইমরান হোসাইন এবং গণঅধিকার পরিষদ থেকে আক্তারুজ্জামান সম্রাট মাঝি মনোনয়ন পেতে পারেন।

শরীয়তপুর-৩: স্বাধীনতার পর বেশির ভাগ সময়েই এখানে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। শুধু ১৯৭৯ সালে একবার মুসলিম লীগ, ১৯৮৬ সালে একবার জাতীয় পার্টির প্রার্থী বিজয়ী হন। গোসাইরহাট, ডামুড্যা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার একাংশ নিয়ে গঠিত আসনটিতে এবার বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তারেক রহমানের সাবেক একান্ত সচিব মিয়া নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপু। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম। দুজনই নেতা-কর্মীদের নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। খেলাফত মজলিস থেকে মুফতি খবির উদ্দিন এবং ইসলামী আন্দোলন থেকে অ্যাডভোকেট মো. হানিফ মিয়া মনোনয়ন পেতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

ফলের দোকানদার ও বেকার ছেলে: অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে হামলাকারী সম্পর্কে যা জানা গেল

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কক্সবাজারের চকরিয়া: মাতামুহুরীতে বেড়া দিয়ে মাছ চাষ বিএনপি নেতার

  • দলীয় পরিচয়ে নয়, এলাকার মুরব্বিরাসহ মিলেমিশে ৩২ জন মাছ চাষ করতে নদীতে বেড়া দিয়েছি।
  • রেজাউল করিম সাবেক ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা।
বাপ্পী শাহরিয়ার, চকরিয়া (কক্সবাজার) 
নদীতে বাঁশের বেড়া ও জাল দিয়ে তৈরি ঘেরে এভাবেই চলছে মাছ চাষ। এতে মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় জেলেরা। গত শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নদীতে বাঁশের বেড়া ও জাল দিয়ে তৈরি ঘেরে এভাবেই চলছে মাছ চাষ। এতে মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় জেলেরা। গত শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নদীতে আড়াআড়ি বাঁশ, বেড়া ও জাল দিয়ে ঘের তৈরি করা হয়েছে। সেখানে করা হচ্ছে মাছ চাষ। এমন ঘটনা ঘটছে কক্সবাজারের চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীতে। আর এর পেছনে রয়েছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা। এর ফলে জেলে কিংবা স্থানীয়রা মাছ ধরতে পারছেন না। ব্যাহত হচ্ছে মাছের বংশবিস্তার।

চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের বাটাখালী সেতু এলাকায় ঘের তৈরি করার হয়েছে। এই উপজেলার বিভিন্ন স্থান দিয়ে বয়ে গেছে খরস্রোতা মাতামুহুরী নদী। নদীটি মাছ আহরণের জন্য উন্মুক্ত।

মিয়ানমার সীমান্তের মাইভার পর্বত থেকে মাতামুহুরীর উৎপত্তি। এরপর নদীটি বান্দরবানের আলীকদম, লামা ও কক্সবাজারের চকরিয়া, পেকুয়া হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যানুযায়ী নদীটির দৈর্ঘ্য ১৪৬ কিলোমিটার। চকরিয়া উপজেলায় নদীটির ৪০ কিলোমিটার পড়েছে।

বাটাখালী ও জলদাশপাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাছ চাষ করার জন্য বাঁশের বেড়া দিয়ে নদী দখলে নিয়েছেন মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল করিম। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন আনোয়ারুল হাসান, আবু জাফর, জামাল উদ্দিন, আরিফুল ইসলাম বাবুল, মোহাম্মদ মানিকসহ ৩২ জন। নদী দখলে জড়িত ৩২ জনের বেশির ভাগই বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ের কর্মী ও সমর্থক।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চকরিয়া-বদরখালী কে বি জালাল উদ্দিন সড়কের উপজেলার সাহারবিল এলাকায় মাতামুহুরী নদী দখল করে বাটাখালী সেতুর নিচে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে। এই বেড়ার মধ্যে তাঁরা অবৈধভাবে মাছচাষ করবেন। বেড়া দিয়ে নদী দখলের কারণে স্বাভাবিক পানি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সেখানে একটি খুপরিঘরও বানানো হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নদীর পাশে চকরিয়া পৌরসভা ও সাহারবিল জলদাশপাড়ার প্রায় ৪০০ জেলে পরিবার বাস করে। তারা মাতামুহুরী ও খাল থেকে মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে। এখন রাজনৈতিক আশ্রয়ে নদীতে বেড়া দিয়ে দখল শুরু হয়েছে। তাই ভয়ে অনেকে নদীতে মাছ ধরতে যায় না। বাঁশের বেড়া দেওয়ার কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা নদীতে গোসল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো কাজ করতে পারছে না।

এই বিষয়ে জেলে আলী আকবর বলেন, ‘৮-৯ দিন ধরে নদীর বুকে আড়াআড়িভাবে বাঁশের তৈরি বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করতে একটি প্রভাবশালী চক্র দখল করেছে। এভাবে নদীতে বেড়া দেওয়া শুরু হলে মাতামুহুরীর কোনো অংশই বাদ যাবে না। আমরা জেলেরা মাছ আহরণ করতে পারব না।’

তবে নদী দখলকারীদের একজন আবু জাফর বলেন, ‘আমরা এলাকার বেকার যুবকদের নিয়ে মাছ চাষ করতে নদীর একপাশে বাঁশের বেড়া দিয়েছি। এখানে নদীর কোনো ক্ষতি হচ্ছে না, বাঁধও দিচ্ছি না। এ ব্যাপারে উপজেলার একজন কর্মচারী আমাদের মৌখিক অনুমতি দেন।’

আর দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল করিম বলেন, ‘আগামী তিন মাসের জন্য মাতামুহুরী নদীতে রাবার ড্যাম ফোলানো হলে পানি বাড়বে। দলীয় পরিচয়ে নয়, এলাকার মুরব্বিরাসহ মিলেমিশে ৩২ জন মাছ চাষ করতে নদীতে বেড়া দিয়েছি। আমরা নদীও দখল করছি না, ব্যবসাও করছি না।’

চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারুল আমিন বলেন, ‘নদীতে বাঁশের বেড়া দিয়ে দখল করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীন দেলোয়ার বলেন, ‘এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসন থেকে লোক পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

ফলের দোকানদার ও বেকার ছেলে: অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে হামলাকারী সম্পর্কে যা জানা গেল

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সেলিম ওসমানকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
এ কে এম সেলিম ওসমান। ছবি: সংগৃহীত
এ কে এম সেলিম ওসমান। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই আন্দোলনে একাধিক হত্যা মামলার আসামি জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি এ কে এম সেলিম ওসমানকে গ্রেপ্তারে তাঁর কারখানায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে ফতুল্লার উইজডম অ্যাটায়ার্স লিমিটেড কারখানায় অভিযান চালায় ফতুল্লা মডেল থানা-পুলিশের একটি টিম। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী। তবে সেখানে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্যকে পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।

এর আগে, গত রোববার জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক নেতারা সেলিম ওসমানের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। প্রায়ই তিনি গার্মেন্টসে অফিস করছেন, এমন গুঞ্জনের জবাবে তারেক আল মেহেদী জানান, সেলিম ওসমানকে গ্রেপ্তারে তাঁদের নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।

সেই বৈঠকের পরদিন উইজডম অ্যাটায়ার্সে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি ও আলোচিত আওয়ামী লীগের এমপি শামীম ওসমানের বড় ভাই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

ফলের দোকানদার ও বেকার ছেলে: অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে হামলাকারী সম্পর্কে যা জানা গেল

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত