Ajker Patrika

জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত কুমিল্লায় ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান, থাকবেন ২ উপদেষ্টা

দেলোয়ার হোসাইন আকাইদ, কুমিল্লা 
জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত কুমিল্লায় ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান, থাকবেন ২ উপদেষ্টা

‘আমি চিরতরে দূরে চলে যাবো/তবু আমারে দেবোনা ভুলিতে...।’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই চয়নটুকু চিরভাস্বর হয়ে আছে কুমিল্লাবাসীর হৃদয়ে। আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী। ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান: কাজী নজরুলের উত্তরাধিকার’। এই প্রতিপাদ্য নিয়ে কবির স্মৃতিবিজড়িত কুমিল্লায় এবার জাতীয় পর্যায়ে নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে তিন দিনব্যাপী ১২৬তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান। সম্পন্ন হয়েছে সব প্রস্তুতি। এ নিয়ে উৎসবের আমেজ কুমিল্লায়।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্যকর্মের বিরাট অংশজুড়ে রয়েছে কুমিল্লা। কুমিল্লায় বিচরণের মধ্য দিয়ে নজরুল হয়ে উঠেছিলেন বিদ্রোহী কবি। কবির প্রেম, বিয়ে, সুরকার-গায়ক, অভিনয়শিল্পী হয়ে ওঠার অনেক কিছুর প্রথম এই কুমিল্লা। দ্রোহ ও প্রেমের কবি নজরুল ১৯২১ সালের এপ্রিল থেকে ১৯২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ দফায় ১১ মাস কুমিল্লায় অবস্থান করেছিলেন। এই দীর্ঘ অবস্থান ঘিরে নজরুলের জীবনের মোড় ঘোরার প্রেক্ষাপট এই কুমিল্লাতেই সৃষ্টি হয়েছিল। কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড়ের ইন্দ্রকুমার সেনের বাড়ি, ধর্মসাগর পাড়, রাণীর দীঘির পাড়, মহেশাঙ্গন, দারোগাবাড়ি, টাউন হল ময়দান, উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ শচীনদেব বর্মনের চর্থার রাজবাড়ি, নবাববাড়িসহ কুমিল্লার আনাচে-কানাচে এবং কুমিল্লার মুরাদনগরের দৌলতপুরে তাঁর সদর্প পদচারণার অসংখ্য স্মৃতি কুমিল্লাবাসীর হৃদয়ে জেগে আছে। ১৯২১ সালের ২১ নভেম্বর ব্রিটিশ নেতা প্রিন্স অব ওয়েলসের কলকাতায় আগমন উপলক্ষে ভারতীয় কংগ্রেস হরতাল ডাকে। ওই হরতালে কবি নজরুল গলায় হারমোনিয়াম ঝুলিয়ে প্রতিবাদী গানে মিছিল করেন। এই অপরাধে রাজগঞ্জ থেকে তাঁকে আটক করা হয়। এ ঘটনাই কবির বিদ্রোহী কবিতার প্রেক্ষাপটের অনেক অনুষঙ্গের একটি বলে মনে করেন গবেষকেরা।

এ ছাড়া কবির জীবনে কুমিল্লার মুরাদনগরের খাঁ-বাড়ির নার্গিস আসার খানম আর এই শহরের পশ্চিম কান্দিরপাড়ের আশালতা সেন গুপ্তা ওরফে প্রমীলা নামের দুই নারী এসেছিলেন জীবনসঙ্গিনী হয়ে। নার্গিস ও প্রমীলা কবির জীবনে দারুণভাবে প্রভাব বিস্তার করেছিল। এ সময় তিনি কুমিল্লায় বসে অজস্র কবিতা ও গান রচনা করেছেন।

আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে কবির জন্ম হলেও নজরুলের প্রেম, বিয়ে, গ্রেপ্তার, সমাবেশ এবং কাব্য ও সংস্কৃতিচর্চাসহ বহু ঘটনার নীরব সাক্ষী কুমিল্লা। তিনি অমর হয়ে আছেন কুমিল্লাবাসীর হৃদয়ে।

কুমিল্লায় কবি নজরুলের অসংখ্য স্মৃতি রয়েছে। এসব স্মৃতি জাগরুক করে রাখার জন্য কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রি শাখায় ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কবি নজরুল ছাত্রাবাস। ১৯৬২ সালে কান্দিরপাড় থেকে ফরিদা বিদ্যায়তন পর্যন্ত সড়কটির নামকরণ করা হয় নজরুল অ্যাভিনিউ। ১৯৭০ সালে কুমিল্লায় নজরুল সাহিত্যচর্চার লক্ষ্যে গঠিত হয় নজরুল ললিতকলা পরিষদ, যা পরবর্তীতে নজরুল পরিষদ নামে রূপান্তরিত হয়। ১৯৮৩ সালে কুমিল্লা শহরের যেসব স্থানে নজরুল বিচরণ ও অবস্থান করেছিলেন, সেসব স্থানে টিনের স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়। ১৯৯২ সালে ওই সব স্থানে কবি নজরুলের অবস্থান ও ঘটে যাওয়া ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে পাকা স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়। কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমির সামনে নির্মিত হয় ‘চেতনায় নজরুল’ স্মৃতিস্তম্ভ। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে গবেষণা ও চর্চার করতে প্রতিষ্ঠিত হয় কবি নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্র, কুমিল্লা। এ ছাড়া মুরাদনগরের দৌলতপুরে খাঁ-বাড়ির কিছু স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করা হয়।

ব্যবহৃত হচ্ছে কবির বাসর ঘরের খাট
ব্যবহৃত হচ্ছে কবির বাসর ঘরের খাট

কুমিল্লা নগরী ও মুরাদনগর উপজেলার দৌলতপুরে জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত অনেক নিদর্শন রয়েছে। তবে সংরক্ষণের অভাবে সেগুলো বিলীন হতে শুরু করেছে। এগুলো সংরক্ষণের দাবি স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মীদের।

সাংস্কৃতিক কর্মী আল মামুন বলেন, ‘শুধু জন্মবার্ষিকী বা মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা ব্যাপক আয়োজন করি, কবির স্মৃতিচিহ্নগুলো ধুয়ে-মুছে সাজাই। পরে সারা বছরই এগুলো বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকে। আমরা কবির সব স্মৃতিচিহ্ন স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের পাশাপাশি নিয়মিত পরিচর্যার দাবি জানাই।’

ঐতিহ্য কুমিল্লার পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল জানান, ‘কুমিল্লার দৌলতপুরে কবি যে আমগাছের নিচে বসে গান-কবিতা রচনা করতেন, সেটি পরিচর্যার অভাবে মারা যায়; যে পুকুরঘাটে বসতেন, সেটি ভেঙে গেছে। যে খাটে বাসররাত করেছেন, সেই খাট অরক্ষিত, সেই খাট এখন মানুষ ব্যবহার করছে। এমন অনেক স্মৃতিচিহ্ন অরক্ষিত। এগুলো সংরক্ষণ না করা গেলে একসময় হারিয়ে যাবে। ফলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে অনেক কিছু অজানা থেকে যাবে। দৌলতপুরে একটি অতিথিশালা, পাঠাগারসহ খাঁ-বাড়ির আঙিনাকে ঢেলে সাজানোর দাবি জানাচ্ছি।’

কুমিল্লায় জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত পুকুরঘাটের বর্তমান চিত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লায় জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত পুকুরঘাটের বর্তমান চিত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ বিষয়ে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্র কুমিল্লার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আল আমিন বলেন, ‘কবির স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করতে আমাদের মন্ত্রণালয়সহ আমরা চেষ্টা করছি। কবি নজরুলকে নিয়ে চর্চা ও গবেষণার জন্য কুমিল্লায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্র। এখানে রয়েছে নজরুল জাদুঘর, পাঠাগার।’

জানা যায়, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় এবং কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ২৫, ২৬ ও ২৭ মে কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে তিন দিনব্যাপী জাতীয় অনুষ্ঠান।

২৫ মে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বেলা ৩টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করবেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মো. লতিফুল ইসলাম শিবলী এবং কবিপৌত্রী ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউট ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান খিলখিল কাজী। স্মারক বক্তৃতা করবেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এবং স্বাগত বক্তৃতা করবেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার।

২৬ মে দ্বিতীয় দিন অনুষ্ঠান হবে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দৌলতপুরে এবং ২৭ মে সমাপনী অনুষ্ঠান কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।

আবৃত্তিশিল্পী ও নজরুল গবেষক কাজী মাহতাব সুমন বলেন, আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে কবির জন্ম হলেও নজরুলের প্রেম, বিয়ে, গ্রেপ্তার, সমাবেশ এবং কাব্য, সংস্কৃতিচর্চাসহ বহু ঘটনার নীরব সাক্ষী কুমিল্লা। তিনি অমর হয়ে আছেন কুমিল্লাবাসীর হৃদয়ে। বাংলাদেশের মধ্যে কুমিল্লায় নজরুলের সৃষ্টিকর্ম বেশি। কুমিল্লা ও দৌলতপুরে কবি অজস্র গান ও কবিতা রচনা করেছেন। তাই নজরুলচর্চা ও গবেষণায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন স্থানীয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। এবার নজরুল জন্মবার্ষিকীর জাতীয় অনুষ্ঠান কুমিল্লায় হওয়ায় খুশি জেলাবাসী।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়ছার বলেন, ‘জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে ২৫ থেকে কুমিল্লায় শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। এ নিয়ে সব প্রস্তুতি আমরা সম্পন্ন করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল তিনজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিশুসহ আরও চারজন আহত হয়। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।  

হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এই ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি ভারত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রংপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৫৪
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’

আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাঁকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাঁকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে এক দিনে, সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কী আসছে রিঅ্যাকশন।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এ রকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘তারেক সাহেব কখন আসবেন, এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্র্যাফট নিয়ে। সে ক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে।’

আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি, সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

এ ছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সব ক্ষেত্রে নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।

এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবার রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এ ছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তাঁর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত