Ajker Patrika

আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস আজ

মিয়ানমার সীমান্তের ৩৩ স্থান দিয়ে ঢুকছে ইয়াবা-আইস

টেকনাফ (কক্সবাজার) সংবাদদাতাকক্সবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ জুন ২০২৫, ০৭: ৩৯
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সে দেশে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির চলমান সংঘাতের মধ্যেও সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে ইয়াবা বড়ি, ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়া ও কক্সবাজার লাগোয়া বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের অন্তত ৩৩টি পয়েন্ট দিয়ে এসব ইয়াবা ও আইস ঢুকছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের এক প্রতিবেদন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতের জন্য মিয়ানমারে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর অস্ত্র কেনার জন্য টাকা দরকার। সেই টাকা জোগাড় করতে এপারে বাংলাদেশ সীমান্তে থাকা রোহিঙ্গা ও দেশি মাদক কারবারিদের কাছে অল্প দামে বিভিন্ন ধরনের মাদক বিক্রি করছে তারা। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা বাড়ার সঙ্গে দেশে মাদকের চালান পাচারও বাড়ছে। পাশাপাশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে টেকনাফ-উখিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকাকেন্দ্রিক মাদকের শীর্ষ কারবারিরা।

মাদক কারবারিদের নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে তালিকা করেছে, তাতে কক্সবাজার জেলার ১ হাজার ১৫১ জনের নাম রয়েছে। তার মধ্যে ৯১২ জনই টেকনাফের বাসিন্দা এবং দুই দফায় আত্মসমর্পণকারী মাদক কারবারির সংখ্যা ১২৩ জন। তালিকার শীর্ষ ৭৩ জন ইয়াবা কারবারির ৬৫ জনই টেকনাফের। এই তালিকার হালনাগাদ করা হচ্ছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

স্বাভাবিক জীবনে ফেরার কথা বলে অনেকেই আত্মসমর্পণ করেছিলেন। কারাগার থেকে বের হয়ে আবার জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ার জনশ্রুতি রয়েছে।  

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নাফ নদীতে মাছ শিকার বন্ধ ৭ বছর ৯ মাস ধরে। এতে করে প্রায় ১০ হাজার জেলে পরিবার, পাঁচ শতাধিক নৌকা ও জাল নষ্ট হয়ে পড়েছে।

২০১৭ সালের এপ্রিলে নাফ নদীতে মাছ ধরা বন্ধ করে সরকার। অভিযোগ ছিল, পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে মাদক ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধ করতে এই সিদ্ধান্ত। এর মধ্যে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর নাফ নদী ও বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে অবৈধভাবে সাড়ে ৮ লাখ রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত নাফ নদী দিয়ে বড় বড় ইয়াবা, আইসের চালান পাচার হয়ে আসছিল।

এরপর চলতি বছরে ১৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের এক আদেশে নাফ নদীর টেকনাফ থেকে শাহপরীর দ্বীপ জেটি পর্যন্ত মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া হয়। দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর ৯ মাস পরে জেলেরা নাফ নদীতে মাছ ধরা শুরু করেন। এই সুযোগে আবার মাদক কারবারিরা নাফ নদীর বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে মাদকের বড় বড় চালান পাচারের সময় বিজিবি ও কোস্টগার্ডের হাতে ধরা পড়ছেন।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতের মধ্যেও নাফ নদীর বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে চোরাই পথে বাংলাদেশে ইয়াবা, আইসসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক পাচার হচ্ছে।  

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, নাফ নদের খুরের মুখ, ঘোলারপাড়া, দক্ষিণপাড়া, মাঝেরপাড়া সৈকত, সাবরাং কচুবনিয়া, হারিয়াখালী, কাটাবনিয়া, আলীরডেইল, মুণ্ডারডেইল, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেষখালীয়াপাড়া সৈকত, নোয়াখালীয়াপাড়া, খোনকারপাড়া, বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর, শীলখালী, মাথাভাঙ্গা, বড়ডেইল, উখিয়ার ইনানী, হিমছড়ি, দরিয়ানগর পয়েন্ট দিয়ে আসছে ইয়াবা ও আইসের চালান। এ ছাড়া নাফ নদীতে ইয়াবা খালাসের পয়েন্টগুলোর মধ্যে রয়েছে শাহপরীর দ্বীপের মিস্ত্রিপাড়া, জেটিঘাট, জালিয়াপাড়া, নোয়াপাড়া, সাবরাং; টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়া, মৌলভীপাড়া, টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া, কায়ুকখালীয়াপাড়া, নাইট্যংপাড়া ঘাট, বরইতলী, কেরুনতলী, হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা, জাদিমোরা, আলীখালী, দমদমিয়া, চৌধুরীপাড়া, হ্নীলা, মৌলভীবাজার; হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাংখালী, কাঞ্চনপাড়া, লম্বাবিল, উনচিপ্রাং; উখিয়ার থাইংখালী, পালংখালী, বালুখালী, ঘুমধুম, রেজুপাড়া, তমব্রু, আছাড়তলী ও ঢালারমুখ।

জানা গেছে,  মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর টেকনাফ বিশেষ জোন চলতি বছরে ১ জানুয়ারি থেকে  ২৫ জুন পর্যন্ত ২ লাখ ২১ হাজার ১৪০ ইয়াবা ও ১ কেজি ২০ গ্রাম আইস জব্দ করে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের মাদক জব্দ করা হয়। এই সময় র‍্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন ২৮ লাখ ৫৪ হাজার ৬৯৫ ইয়াবা ও ১ কেজি ৫৫৭ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস জব্দ করে।

উখিয়া-৬৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, ‘নতুন এই ব্যাটালিয়ন চালু করা হয়েছে। এর মধ্যেই সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মাদক পাচারের সময় সফলতা পেতে শুরু করেছে।’

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত টেকনাফ মডেল থানায় মাদক জব্দসংক্রান্ত ১৭৫টি মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২১৯ জন আসামিকে। উদ্ধার হয়েছে ৪৯ লাখ ১৮ হাজার ইয়াবা ও ২ কেজি ১৩৮ গ্রাম আইস।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজার বিশেষ জোনের সহকারী পরিচালক মো. সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ‘মিয়ানমারের অভ্যন্তরের সংঘাতের কারণে সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচার অনেক বেড়ে গেছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠী মাদক পাচার করে অর্থ সংগ্রহ করছে।’

কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের সভাপতি আ ন ম হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘মাদক ও চোরাচালান ঠেকাতে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া জরুরি।’

উখিয়া ও টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য এবং কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, কক্সবাজারে মাদকের ভয়ংকর বিস্তার ঘটেছে। এ জন্য সীমান্তে আরও নজরদারি বাড়াতে বিভিন্ন সভায় সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হয়েছে।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. সাইফউদ্দিন শাহীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২২-২৩টি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে মাদক পাচারের ঘটনা ঘটছে। এসব সীমান্ত পয়েন্টে সিসিটিভি বসিয়ে পাচারকারী শনাক্তের চিন্তা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে মাদক ও চোরাচালানে জড়িত হোতাদের চিহ্নিত করতে ডেটাবেইস করা হচ্ছে।

বিজিবি কক্সবাজার অঞ্চলের (রিজিয়ন) কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম এম ইমরুল হাসান বলেন, সীমান্তে মাদক চোরাচালান ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধের পাশাপাশি মিয়ানমার পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বিজিবি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে পাইলিংয়ের সময় ধসে পড়ল পাশের ভবন

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ১০
একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা
একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়েছে। এতে ভবনটিসহ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবনে অবস্থিত আরএফএল কোম্পানির বেস্ট বাই শোরুম। তবে প্রাণে বেঁচে গেছেন সেখানে কর্মরতরা। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনমালিকের অভিযোগ, নিরাপত্তাব্যবস্থার জন্য নির্মাণাধীন ভবনমালিকদের বলা হলেও কর্ণপাত না করে নিয়মবহির্ভূতভাবে কাজ করে যাচ্ছিলেন। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট পৌর কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।

আজ শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শহরের প্রাণকেন্দ্র নিলটুলি স্বর্ণকারপট্টির মুজিব সড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের একাধিক টিম।

সরেজমিন দেখা গেছে, একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ চলছিল। নির্মাণাধীন এই ভবনের মালিক স্থানীয় সঞ্জয় কর্মকার, অজয় কর্মকার ও সেলিম নামে আরেক ব্যক্তি। পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পার্শ্ববর্তী ভবনসংলগ্ন কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা বা প্যারাসাইলিং ব্যবস্থা ছিল না। এই অবস্থায় পাইলিংয়ের (নিচের অংশ) কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন নির্মাণশ্রমিকেরা। হঠাৎ করেই ভবনটির একাংশ ধসে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে সেখান থেকে দৌড়ে সরে পড়েন নির্মাণশ্রমিক ও শোরুমটির কর্মচারীরা।

বেস্ট বাইয়ের কর্মীরা জানান, তারা সকালে এসে ফ্লোরের টাইলসে ফাটল দেখতে পান। ফাটল ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলে ক্যাশ কাউন্টার টেবিলটা সরিয়ে ফেলেন, এর মধ্যেই ধসে পড়ে ভবনের এক পাশ।

ধসে পড়া ভবন ও বেস্ট বাই ফ্রাঞ্চাইজের মালিক মনিরা খাতুনের দাবি, এ ঘটনায় তাঁর ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং তিনি এর বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘বারবার নির্মাণাধীন ভবনমালিকদের সতর্ক করা হয়েছে এবং নিয়ম মেনে কাজ করতে বলেছি। কিন্তু তাঁরা রাতের আঁধারে আমার ভবনের নিচের মাটি সরিয়ে ফেলেছে, যার কারণে আজকের এই দুর্ঘটনা। পৌরসভার নিয়ম অনুযায়ী ৩ ফুট দূরত্ব রেখে কাজ করার কথা থাকলেও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। আজ সকালে উল্টো আমার কর্মচারীদের হুমকি-ধমকিও দেওয়া হয়।’

একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা
একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঘটনাস্থলে ছুটে আসা শহরের বাসিন্দা ও জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মোজাফফর আলী মুসা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘ভবন নির্মাণ করতে হলে পৌরসভার অনুমোদনের প্রয়োজন হয় এবং তা সঠিকভাবে তদারকির দায়িত্ব তাদের। যদি সঠিকভাবে তদারকি হতো তাহলে এমন দুর্ঘটনা না-ও ঘটতে পারত।’

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ভবনমালিকদের একজন সঞ্জয় সাহার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঘটনাস্থলে আসা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মাসুদ আলম জানান, খবর পেয়ে তাঁরা এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। তবে কোনো অভিযোগ পায়নি পুলিশ। অভিযোগ পেলে সেটা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে পৌরসভার প্রশাসক ও ফরিদপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. সোহরাব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমার জানা নেই, খোঁজ নিয়ে বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাবিতে শেখ পরিবারের নামে থাকা ৪ হলের নাম পরিবর্তন

জাবি প্রতিনিধি 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শেখ হাসিনা ও তাঁর স্বজনদের নামে থাকা চারটি আবাসিক হলের নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আজ শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ বি এম আজিজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আজিজুর রহমান বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় শেখ পরিবারের নামে থাকা চারটি হলের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

এসব হলের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে রাখ হয়েছে ‘শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক হল’, শেখ রাসেল হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘নবাব সলিমুল্লাহ হল’। এ ছাড়া শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে ‘জুলাই চব্বিশ জাগরণী হল’ এবং বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম পরিবর্তন করে ‘শহীদ ফেলানী খাতুন হল’ নাম রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হবিগঞ্জে রত্না বেইলি সেতু ভেঙে ট্রাক আটকা, দুর্ভোগে যাত্রীরা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক সড়কের রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ওই পথে সব ধরনের যান চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শতাধিক যাত্রী ও ওই পথে চলাচলকারীরা। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জাফলং থেকে ছেড়ে আসা বানিয়াচংগামী পাথরবোঝাই একটি ট্রাক ব্রিজের ওপর ওঠামাত্রই ব্রিজের দুটি পাটাতন ভেঙে যায়। মুহূর্তেই ট্রাকের পেছনের দুটি চাকা ধসে পড়ে এবং পুরো ট্রাকটি ব্রিজে আটকে যায়।

এতে দীর্ঘ লাইনে আটকা পড়ে যাত্রীবাহী বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টমটম, প্রাইভেট কারসহ অসংখ্য যানবাহন। বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ব্যবসায়ীরা।

দুর্ঘটনার পর ব্রিজের একপাশ থেকে অন্যপাশে যাওয়ার জন্য যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে ভাঙা অংশ অতিক্রম করছে। এতে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ট্রাকটি ব্রিজে উঠতেই জোরে শব্দ হয়। একটু পরই দেখি পাটাতন নিচে ধসে গেছে। ভাগ্য ভালো যে ট্রাকটি পুরোপুরি নিচে পড়ে যায়নি। তবে এখন তো ও পথে চলাচলকারীরা আটকা পড়ে আছে।’

যাত্রীরা জানান, রত্না বেইলি ব্রিজটি বহুদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভারী যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে—এমন আশঙ্কা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। এদিকে যাত্রীদের দাবি, এখানে যেন বেইলি ব্রিজের পরিবর্তে দ্রুত স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়, যাতে প্রতিদিনের এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘ব্রিজটি দ্রুত মেরামত করার কাজ চলছে। পাথরবোঝাই ট্রাকটিতে বেশি লোড থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত