Ajker Patrika

চট্টগ্রাম থেকে পাইপে তেল নারায়ণগঞ্জে

  • ২৯ জানুয়ারি চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল আসবে
  • ২৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপনে সময় লাগল ৮ বছর
  • প্রতিবছর জ্বালানি পরিবহনে প্রায় ২০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে
 আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

২৯ জানুয়ারি পাইপলাইনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল আনার কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত ২৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপনের কার্যক্রম ৯৮ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী মার্চের মধ্যে প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ হবে। প্রকল্পের পরিচালকের দপ্তর থেকে ১১ জানুয়ারি এক চিঠিতে জানানো হয়, রাষ্ট্রায়ত্ত পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড ১২ জানুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২১টি ট্যাংক হস্তান্তর করবে। এর মধ্যে ২৯ জানুয়ারি থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ফতুল্লা ও গোদনাইলে ১২টি ট্যাংকে ডিজেল পৌঁছাবে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) ‘চট্টগ্রাম হতে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন’ (সিডিপিএল) প্রকল্পের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ আব্দুর রশিদ বলেন, ‘এই প্রকল্প বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জিং ছিল এবং দেশ নতুন একটি মাইলফলক স্পর্শ করবে। বিপিসির অর্থায়নে এই প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪তম ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।’

বিপিসি সূত্র জানায়, পরীক্ষামূলকভাবে পাইপলাইনের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সফলভাবে পানি পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পের সুপারভাইজরি কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেটা একুইজিশন স্থাপনের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা থেকে রাজধানীর উপকণ্ঠে ফতুল্লা পর্যন্ত দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ এই পাইপলাইন চালু হলে প্রতিবছর জ্বালানি পরিবহনে প্রায় ২০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।

জানা যায়, বর্তমানে চট্টগ্রাম থেকে রেল, সড়ক ও নৌপথে দেশের অন্যান্য স্থানে ডিজেল পরিবহন করা হয়। পরিবহনের সময় প্রায়ই তেল চুরির ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া শুষ্ক মৌসুমে নৌপথে নাব্যতা-সংকটের কারণে জ্বালানি পরিবহনে সমস্যা দেখা দেয়। এতে প্রায়ই জ্বালানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। এরপর বিপিসি পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল পরিবহনের এই প্রকল্পটি হাতে নেয়। প্রকল্প সূত্র জানায়, এতে খরচ হচ্ছে ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এই পাইপলাইন দিয়ে বছরে ২ দশমিক ৭ থেকে ৩ মিলিয়ন টন ডিজেল পরিবহন করা যাবে। ধাপে ধাপে এর সক্ষমতা ৫ মিলিয়ন টনে উন্নীত করা যেতে পারে।

প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, এই পাইপলাইনে বছরে ২৭ লাখ টন জ্বালানি তেল পরিবহনের সক্ষমতা রয়েছে। তবে ঢাকায় প্রায় ২০ লাখ টন জ্বালানি তেল পরিবহন হয়ে থাকে।

বিপিসির তথ্য অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সারা দেশে নৌপথে ৫ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন জ্বালানি পরিবহন করা হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোতে ২ দশমিক ৭ মিলিয়ন টন তেল পরিবহন করা হয়। বর্তমানে এ রুটে প্রতি মাসে ১১০টি জাহাজে জ্বালানি পরিবহন করা হয়।

দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই পাইপলাইনের দুটি অংশ রয়েছে; একটি ২৪১ দশমিক ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১৬-ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইন। এটি পতেঙ্গা থেকে ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর ও মুন্সিগঞ্জ হয়ে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ডিপো পর্যন্ত তেল পৌঁছাবে। অন্য অংশটি ৮ দশমিক ২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ। এই অংশে ১০-ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইন দিয়ে গোদনাইল থেকে ফতুল্লা পর্যন্ত তেল পরিবহন করা হবে। পাইপলাইনে ৯টি পাম্পিং স্টেশন রয়েছে। পতেঙ্গা থেকে গোদনাইল পর্যন্ত ২২টি নদী ও খালের নিচ দিয়ে এই পাইপলাইন গেছে। ২০১৮ সালের অক্টোবরে ২ হাজার ৮৬১ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক।

খরচ ও মেয়াদ দুই-ই বেড়েছে

২০১৮ সালে হাতে নেওয়া এই প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। তবে এই সময়ে কাজ শেষ হয়নি। দুই দফায় মেয়াদ বাড়ায় প্রায় ৮০০ কোটি টাকা খরচ বেড়েছে। ফলে মোট ৩ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। একই সঙ্গে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং দেশে ডলার-সংকটের কারণে প্রকল্পের খরচ প্রায় ৮০০ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। আর ভূমি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতায় নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।

গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’

একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’

স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’

জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গলায় রশি পেঁচানো নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।

বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত