Ajker Patrika

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ট্রলার ডুবির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১

প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২১, ০১: ০০
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ট্রলার ডুবির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় যাত্রীবোঝাই ট্রলারের সঙ্গে বালুবোঝাই ট্রলারের সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২১ জনে দাঁড়িয়েছে। এরমধ্যে ১৭জনের নাম-পরিচয় শনাক্ত করেছে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি ১৭টি মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরও করা হয়েছে। নিহত ১৭জনের মধ্যে একজন যুবক ছাড়া বাকি সবাই নারী ও শিশু 

নিহতরা হলেন-ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরশহরের পৈরতলা এলাকার আবু সাঈদের স্ত্রী মোমেনা বেগম (৫৫) ও ফারুক মিয়ার স্ত্রী কাজলা বেগম, দাতিয়ারা এলাকার মোবারক মিয়ার মেয়ে তাসফিয়া মিম (১২), সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের সাদেরকপুর গ্রামের মুরাদ হোসেনের ছেলে তানভীর (৮) ও চিলোকুট গ্রামের আব্দুল্লাহ মিয়ার শিশু কন্যা তাকুয়া (৮), নরসিংসার গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে সাজিম (৭), ভাটপাড়া গ্রামের ঝারু মিয়ার মেয়ে শারমিন (১৮), বিজয়গর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের জহিরুল হকের ছেলে আরিফ বিল্লাহ (২০), বেড়াগাঁও গ্রামের মৃত মালু মিয়ার স্ত্রী মঞ্জু বেগম (৬০), জজ মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪৭) এবং তার মেয়ে মুন্নি (১০) ও আব্দুল হাসিমের স্ত্রী কমলা বেগম (৫২), নূরপুর গ্রামের মৃত রাজ্জাক মিয়ার স্ত্রী মিনারা বেগম (৫০), আদমপুর গ্রামের অখিল বিশ্বাসের স্ত্রী অঞ্জনী বিশ্বাস (৩০) ও পরিমল বিশ্বাসের মেয়ে তিথিবা বিশ্বাস (২) এবং ময়মনসিংহের খোকন মিয়ার স্ত্রী ঝর্ণা বেগমের (৪৫)। বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়ন বাদেহাড়িয়া কামাল মিয়ার শিশু মেয়ে মাহিদা আক্তার (৬), একই উপজেলার মনিপুরের মৃত আব্দুল বারীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৫৮)।

বিজয়নগর থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মির্জা মোহাম্মদ হাছান ও সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম ২১ জনের মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এর আগে শুক্রবার (২৭ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে উপজেলার লইছকা বিলে এই ঘটনায় যাত্রীবাহী ট্রলারটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ট্রলারের যাত্রী আঁখি আখতার জানান, ট্রলারটি বিজয়নগরের চম্পকনগর থেকে বিকেল সাড়ে ৪টায় অন্তত ৭০ জন যাত্রী নিয়ে ছেড়ে আসে। তিনি বলেন, এই নৌকায় আমি, আমার ছেলে, ভাশুরের ছেলে ও শাশুড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসছিলাম। পথে একটি বালু বোঝাই ট্রলারের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে যাত্রীবাহী ট্রলারটি ডুবে যায়। আমি সাঁতরে উঠতে পারলেও আমার ছেলে, ভাশুরের ছেলে ও শাশুড়ির এখনও সন্ধান পাইনি।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন জানান, 'জেলা সদর হাসপাতালে মরদেহ গুলো নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের স্বজনরা মরদেহ শনাক্ত করতে এখানে এসেছেন। শনাক্তের পর মরদেহ হস্তান্তর করা হচ্ছে'
 
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম জানান, 'নৌকা ডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ নারী ও শিশুর মরদেহ রয়েছে। উদ্ধার অভিযান চলমান আছে। রাতে উদ্ধার কাজে কিশোরগঞ্জ থেকে ডুবুরি দল উদ্ধার কাজে যোগ দিয়েছে'। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান জানিয়েছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নৌকা ডুবির ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া নিহত প্রত্যেক পরিবারকে লাশ দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। 

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪০
হাদির ওপর গুলির ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার করেছে সিটিটিসি। ছবি: ডিএমপি
হাদির ওপর গুলির ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার করেছে সিটিটিসি। ছবি: ডিএমপি

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। সে সঙ্গে ওই সময় ব্যবহৃত হামলাকারীদের হেলমেট ও মোটরসাইকেলটির ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিটিটিসি।

আজ বুধবার ডিএমপির উপকমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মুহাম্মদ তালেবুর রহমানের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বনলতা আবাসিক এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় এসব উদ্ধার করা হয়।

হাদির ওপর গুলির ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার করেছে সিটিটিসি। ছবি: ডিএমপি
হাদির ওপর গুলির ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার করেছে সিটিটিসি। ছবি: ডিএমপি

সিটিটিসি সূত্র জানা যায়, সিটিটিসির একটি দল সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির নম্বরপ্লেট পরিবর্তনের বিষয়টি উদ্‌ঘাটন করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শেরেবাংলা নগরের পশ্চিম আগারগাঁও বনলতা আবাসিক এলাকায় একটি বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশিকালে ওই ভবনের নিচতলার পার্কিং থেকে মোটরসাইকেল ও হেলমেটটি উদ্ধার করা হয়। পরে ভুয়া নম্বরপ্লেট পরিত্যক্ত অবস্থায় ম্যানহোলের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়।

উল্লেখ্য, দুই দুর্বৃত্ত যে মোটরসাইকেল থেকে হাদিকে গুলি করে, সেটির নম্বরপ্লেটটিতে ইংরেজিতে লেখা ছিল— DHAKA METRO-LA 54-6376। তবে সিটিটিসির উদ্ধার করা মোটরসাইকেলটির নম্বরপ্লেটে লেখা রয়েছে—ঢাকা মেট্রো- ল ৫৪-৬৫৭৪।

হাদির ওপর গুলির ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার করেছে সিটিটিসি। ছবি: ডিএমপি
হাদির ওপর গুলির ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার করেছে সিটিটিসি। ছবি: ডিএমপি

সিটিটিসি আরও জানায়, মোটরসাইকেলটির মালিকানা শনাক্তে নিবিড়ভাবে তদন্ত করা হয়। হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির প্রথম মালিক ছিলেন আবদুর রহমান নামের এক ব্যক্তি। পরে জনৈক শহিদুল, রাসেল, মার্কেটপ্লেস, ওবায়দুল ইসলাম, আনারুল, আনারুলের কাছ থেকে আবারও ওবায়দুল হয়ে শুভ নামের এক ব্যক্তি মোটরসাইকেলটি কেনেন। মোট আট ব্যক্তির হাতবদল হয়ে হামলার ঘটনায় জড়িত প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সালের সহযোগী মো. কবিরের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার করে মাইনুদ্দিন ইসলামের নামে মোটরসাইকেলটি কেনা হয়। উদ্ধার করা মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেটটি ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওরশের খিচুড়ি নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা, কিলঘুষিতে হোমিও চিকিৎসক নিহত

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
দোকানের সামনে হোমিও চিকিৎসককে আঘাতের পর তিনি লুটিয়ে পড়েন। ছবি: আজকের পত্রিকা
দোকানের সামনে হোমিও চিকিৎসককে আঘাতের পর তিনি লুটিয়ে পড়েন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাইবান্ধায় মাজারের ওরশে পোড়া খিচুড়ি দেওয়া নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে প্রতিপক্ষের কিলঘুষিতে আহমেদ আলী (৫০) নামের এক হোমিও চিকিৎসক নিহত হয়েছেন। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর মাজারসংলগ্ন শখের বাজার ওরশে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত আহমেদ আলী সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের নয়ন সুখ গ্রামের মৃত আপিল উদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মঙ্গলবার রাতে গাইবান্ধা সদর থানার মালীবাড়ী ইউনিয়নের মুর্শিদের বাজারের মাজার থেকে ওরশের খিচুড়ি নেন ওই এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে রেনু আহমেদ ও তাঁর ভাই মনু মিয়া। পরে তাঁরা সেই খিচুড়ি দেন আহমেদ আলীকে (নিহত)। বুধবার সকালে আহমেদ আলী তাঁর দোকানের সামনে রেনু ও মনুকে দেখতে পান। এ সময় আহমেদ আলী জানতে চান তাঁকে কেন খাওয়ার অযোগ্য পোড়া খিচুড়ি দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে রেনু ও মনুর এলোপাতাড়ি ঘুষিতে আহমেদ আলী তাঁর ওষুধের দোকানের সামনেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। অবস্থা বেগতিক দেখে রেনু ও মনু পালিয়ে যান। স্থানীয় বাসিন্দারা আহমেদ আলীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, নিহত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই অভিযোগ আমলে নেন। সেইসঙ্গে আগামী ২১ ডিসেম্বর তাঁকে হাজির করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলায় জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ এনেছে প্রসিকিউশন।

অভিযোগের বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে এককভাবে এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ৫ শর বেশি মানুষকে গুম পূর্বক হত্যাকাণ্ডের তথ্য ইতিমধ্যেই তদন্ত সংস্থার কাছে আছে। তাঁর বিরুদ্ধে আরও নানা প্রমাণ প্রতিনিয়ত আসছে। তিনটি অভিযোগের মধ্যে শতাধিক মানুষকে গুম পূর্বক হত্যা করা এবং হত্যা করার পর তাঁদের মরদেহ কেটে পেটের নাড়ি-ভুঁড়ি বের করে সিমেন্টের ব্লক বেঁধে বলেশ্বর নদী, সুন্দরবন, শীতলক্ষ্যা-বুড়িগঙ্গা নদী এবং কখনো রাস্তার ধারে ব্রিজ থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এগুলো আমরা আজকে দাখিল করেছি।’

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘গুম-খুনের কালচার শেখ হাসিনার আমলে শুরু হয়েছিল। সেটা সরাসরি শেখ হাসিনার নির্দেশে পরবর্তীতে এবং সেই কমান্ডটা আসত তাঁর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকীর মাধ্যমে। এই সবকিছুর বাস্তবায়নের মাস্টারমাইন্ড বা মহানায়ক ছিল জিয়াউল হাসান। তাঁর যে নিষ্ঠুরতা, হত্যাকাণ্ডের ধরন এবং হত্যাকাণ্ডের যে পরিমাণ এটা বাংলাদেশে আর কারও সঙ্গে তুলনীয় নয়। বাংলাদেশে এ রকম বীভৎস, নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালানোর ব্যাপারে তাঁর যে স্পর্ধা, সেজন্য জিয়াউল হাসানকে আলাদাভাবে একক আসামি হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধে আমরা ফরমাল চার্জ দাখিল করেছি।’

গত বছরের ১৫ আগস্ট সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ। তারপর নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও মানবতাবিরোধী অপরাধেরসহ আরও মামলা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘অর্থ লোপাট করে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার স্বপ্ন ভেঙেছেন দীপু মনি ও তাঁর ভাই’

চাঁদপুর প্রতিনিধি
আজ সকালে আল-আমিন একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাবুরহাট ক্যাম্পাসে বক্তব্য দেন পর্ষদের সভাপতি মো. মোবারক হোসাইন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে আল-আমিন একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাবুরহাট ক্যাম্পাসে বক্তব্য দেন পর্ষদের সভাপতি মো. মোবারক হোসাইন। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আল-আমিন একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. মোবারক হোসাইন বলেছেন, ‘ফান্ডে থাকা সকল অর্থ লোপাট করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছেন পতিত সরকারের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও তাঁর ভাই ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু। তাঁদের এ ধরনের অন্যায়ের কারণে অনেক পিছিয়ে গেছে আল-আমিন একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ বাবুরহাট ক্যাম্পাস।’ তিনি বলেন, এক একর জমির ওপর সোসাইটির নিজস্ব অর্থায়নে গড়ে ওঠা এই ক্যাম্পাসটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ও মনোরম পরিবেশের ছিল। কিন্তু অর্থ লোপাটের কারণে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা যায়নি।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে শহরের বাবুরহাট পুলিশ লাইনসের পেছনে আল-আমিন একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাবুরহাট ক্যাম্পাসে নতুন ভবন উদ্বোধন, বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোবারক হোসাইন এসব কথা বলেন।

মোবারক হোসাইন বলেন, ‘৪৮ বছরের দীর্ঘ পথচলায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সবার অক্লান্ত পরিশ্রমে আল-আমিন একাডেমি আজকের অবস্থানে এসেছে। দেশজুড়ে এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম রয়েছে। সরকারি উচ্চপদস্থ অনেক কর্মকর্তা এসে নিজেদের এই প্রতিষ্ঠানের সাবেক শিক্ষার্থী পরিচয় দিলে আমরা গর্ববোধ করি।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য শুধু সার্টিফিকেটধারী শিক্ষার্থী তৈরি করা নয়, বরং নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত সুনাগরিক গড়ে তোলা। শিক্ষার্থীরা যেন পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য দায়বদ্ধ মানুষ হয়ে ওঠে, সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।’

দেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার সমালোচনা করে মোবারক হোসাইন বলেন, ‘সর্বোচ্চ শিক্ষা অর্জন করেও অনেক তরুণ চাকরি পাচ্ছে না। সম্প্রতি একটি সেমিনারে জেনে এসেছি, দেশে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ বেকার যুবক মানসিক রোগে আক্রান্ত। কাজের অভাবে পারিবারিক ও সামাজিক চাপ থেকেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষাব্যবস্থা কেবল মানসিক রোগী তৈরি করবে। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা দক্ষতা ও নৈতিকতায় বলীয়ান হয়ে সমাজে কাজে লাগুক।’

মোবারক হোসাইন আরও বলেন, ‘আমি পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হওয়ার পর এই প্রতিষ্ঠানের নামে আলাদা অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছি; কিন্তু তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ও তাঁর ভাই সাত বছরের মধ্যে সকল অর্থ লোপাট করে নিয়ে গেছেন। যে কারণে আমাদের স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয় আর তৈরি করা হয় না। তবে আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা আবারও শুরু করতে পেরেছি।’

আল-আমিন একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মাওলানা বিল্লাল হোসেন মিয়াজী ও আল-আমিন সোসাইটির সদস্য আব্দুল মালেক পাটোয়ারী।

আল-আমিন একাডেমি গুনরাজদী ক্যাম্পাসের ইনচার্জ নাছির উদ্দিনের সঞ্চালনায় অভিভাকদের মধ্যে বক্তব্য দেন স্থানীয় বাসিন্দা ও গণঅধিকার পরিষদের জেলা সভাপতি কাজী রাসেল।

বক্তব্য শেষে ক্যাম্পাসের ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। পরে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথি এবং শিক্ষকেরা নতুন ভবনের ফলক উন্মোচন করে দোয়া করেন। এরপর নতুন ক্যাম্পাসের কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে গাছের চারা রোপণ করেন সভাপতিসহ শিক্ষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত