Ajker Patrika

বিজিবি স্কুলে মিয়ানমারের ১৭৯ সেনা সদস্যের আশ্রয়, ৪ শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান অনিশ্চিত

মাঈনুদ্দিন খালেদ, নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান)
বিজিবি স্কুলে মিয়ানমারের ১৭৯ সেনা সদস্যের আশ্রয়, ৪ শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান অনিশ্চিত

রাখাইনের মন্ডু জেলা শহর থেকে টহলে বের হওয়া জান্তা বাহিনীর ২ শতাধিক সদস্যের ওপর কমান্ডো হামলার পর পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া ১৭৯ সদস্যকে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরস্থ ১১ বিজিবির প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেল থেকে তাঁদের সব ধরনের সেবা দেওয়া হচ্ছে। এ স্কুলে অবস্থানের কারণে স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল আজ মঙ্গলবার। আশ্রিত স্থানান্তরে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় পাঠদান নিয়েই এখন অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। স্কুলটিতে ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। 

এদিকে সোমবার বিকেলে মিয়ানমার অংশ থেকে বাংলাদেশের অত্যন্তরে ছুটে আসা গুলিতে আহত ইউপি সদস্য সাবের আহমদের কোমরের পেছনের অংশ থেকে একটি বুলেট অপসারণ করা হয়েছে। সোমবার গভীর রাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করা হয়। বিষয়টি আজ সন্ধ্যায় নিশ্চিত করেন ভুক্তভোগী নিজেই। ইউপি সদস্য সাবের আহমদ বলেন, বুলেটটি বের করার পর প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছে। অর্থ সংকটে ওষুধও কিনতে পারছেন না। 

জামছড়ি সীমান্তের অধিবাসী আবদুচ্ছবি, জহির আলম ও কালাম বকসু আজ বিকেলে এ প্রতিবেদককে বলেন, সকালেও জামছড়ি ও আশারতলী গ্রাম থেকে ওপারের রানী এলাকায় গোলাগুলির ব্যাপক আওয়াজ পাওয়া গেছে। তাঁরা কাঠ কাটতে যাওয়ার পথে সকাল ৭টার দিকে গুলির আওয়াজ পান। পরে ভয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। 

পালিয়ে আসা জান্তা সদস্য টুয়ো মং (৪২) সাংবাদিকদের জানান, তাঁরা ২ শতাধিক সেনা সদস্য বিদ্রোহী দমনে টহলে বের হন গত ১০ মার্চ বিকেলে। বলিবাজার সেনা ব্যাটালিয়নে ১১ মার্চ রাত্রিযাপন করার কথা ছিল। কিন্তু পথিমধ্যে আরকান আর্মির কমান্ডোরা অতর্কিত হামলা করে। রানী ও অংচাপ্রে নামক স্থানের দক্ষিণ–পশ্চিমে ২০ কিলোমিটার গহিন বনে তাঁরা আক্রমণের শিকার হন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে ওপরের নির্দেশে তাঁরা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। ২০০ সদস্যের ১৭৯ জন বাংলাদেশে আসতে পেরেছেন। বাকি ২১ সদস্য সীমান্ত এলাকায় লুকিয়ে আছেন বলে জানান তিনি। 

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের ১৭৯ সেনা সদস্যকে ১১ বর্ডার গার্ড বিজিবির ব্যাটালিয়ন সংলগ্ন বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে তাঁদের বিদ্যালয়ে আনা হয়। বেঞ্চ সরিয়ে বিছানা পেতে তাঁদের রাখা হয়েছে। অসুস্থদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। একটি সূত্র জানায়, আজ দুপুরে তাঁদের বিরিয়ানি ও মুরগি মাংস খাওয়ানো হয়েছে। 

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গতকাল সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মিয়ানমার বাহিনীর ১৭৯ সদস্য নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের আশারতলী গ্রামের জারুলিয়াছড়ির আগা ও জামছড়ি সীমান্ত দিয়ে তিন দফায় বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। পরে তাঁদের নিরস্ত্র করে বিকেলে ২৯ জনকে এবং রাতে ১৫০ জনকে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন বিজিবি স্কুলে নিয়ে আসা হয়। তাঁদের মধ্যে আহত চারজনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানিয়েছেন। 

এদিকে সীমান্তের ওপারে আটকে পড়েছেন ২১ সদস্য। রাখাইনের উত্তরাংশের রানী অংচেপ্রে নামক স্থানের দক্ষিণ–পশ্চিমে ডেইংগ্যার পাহাড় নামক জান্তার পরিত্যক্ত ঘাঁটি ঘিরে রেখেছে আরকান আর্মি কমান্ডোরা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এ অবস্থা ছিল বলে সূত্রে জানা গেছে। 

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বান্দরবান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মুজাহিদ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, মিয়ানমার বাহিনীর ১৭৯ সদস্যকে নাইক্ষ্যংছড়ির বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। তাঁদের বিষয়ে আন্তমন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত মোতাবেক কার্যক্রম চালানো হবে। 

প্রশাসনের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন, সম্প্রতি রমজানে স্কুল বন্ধ রাখা নিয়ে রিটের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ স্কুল খোলার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পক্ষে রায় দিয়েছেন। ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয় রমজানের প্রথম ১০ দিন খোলা থাকবে। 

ওই কর্মকর্তা বলেন, বিজিবি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মিয়ানমারের ১৭৯ সেনাকে অন্যত্র সরানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে সরকার। তা না হলে স্কুলের ৪ শতাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহত হবে। 

এ ব্যাপারে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতণ চাকমা বলেন, ‘১১ বিজিবি অধিনায়কের প্রস্তাবেই তাঁদের (সেনা সদস্য) বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। কারণে আজ স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। তাঁরা এখানে যে কয়দিন তাঁরা থাকবেন সে পর্যন্ত হয়তো এভাবেই থাকবে। আগামী ১০ রমজানের পর স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে।’ 

উল্লেখ্য, এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের আক্রমণের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সদস্যসহ ৩৩০ জন সেনা। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার উখিয়ার ইনানী নৌ–বাহিনীর জেটিঘাট দিয়ে তাঁদের মিয়ানমারে পাঠানো হয়। আর ১১ মার্চ বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন আরও ১৭৯ জন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: শোকে স্তব্ধ বগুড়াবাসী

বগুড়া প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ১৬
খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবরে বগুড়া জেলা বিএনপির কার্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকায় নেতা-কর্মীদের কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবরে বগুড়া জেলা বিএনপির কার্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকায় নেতা-কর্মীদের কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বগুড়ায় নেমে এসেছে গভীর শোক। জেলা বিএনপির কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের কান্নার রোল দেখা গেছে। শহরের অলিগলি, চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যেও বিরাজ করছে নীরবতা। কোথাও নেই স্লোগান বা রাজনৈতিক আলোচনা—শুধু স্মৃতিচারণা, দীর্ঘশ্বাস আর স্তব্ধতা।

যে শহর বারবার ভোটের মাধ্যমে ভালোবাসা প্রকাশ করেছে, সেই বগুড়াই আজ হারাল তার বধূকে, তার নেত্রীকে, তার রাজনৈতিক ইতিহাসের এক অনিবার্য অধ্যায়কে।

খালেদা জিয়ার শ্বশুরবাড়ি বগুড়ার গাবতলী উপজেলায়। সময়ের সঙ্গে এই সম্পর্ক কেবল আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ থাকেনি, হয়ে উঠেছিল আবেগের জায়গা। বগুড়ার মানুষ তাঁকে দেখেছে ঘরের বধূ হিসেবে, আবার দেখেছে দেশের নেতৃত্বে থাকা এক দৃঢ়চেতা রাজনীতিক হিসেবে।

তিনি বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসন থেকে একাধিকবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে রেকর্ড ভোটে জয়লাভ করেন। প্রতিবারই ভোটের ব্যবধান ছিল উল্লেখযোগ্য। নির্বাচনী রাজনীতিতে এমন ধারাবাহিক সাফল্য খুব কম নেতার ক্ষেত্রেই দেখা গেছে।

১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর একসময় নিভৃতচারী গৃহবধূ খালেদা জিয়াকে নিতে হয় একটি ভঙ্গুর রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব। সেখান থেকেই শুরু হয় তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক পথচলা। সামরিক শাসক এরশাদের বিরুদ্ধে টানা আন্দোলন, রাজপথের সংগ্রাম ও দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার কঠিন দায়িত্ব সামলে তিনি হয়ে ওঠেন শক্তিশালী এক রাজনৈতিক প্রতীক। আপসহীন অবস্থানের কারণেই তিনি পরিচিত হন ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে। দীর্ঘ এই পথচলায় বগুড়া ছিল তাঁর নির্ভরতার জায়গা, একটি নিরাপদ ভোটব্যাংক।

খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবরে বগুড়ায় বিএনপির সব কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কালো পতাকা উত্তোলন, কোরআনখানি ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, এটি শুধু একজন নেত্রীর বিদায় নয়, এটি একটি যুগের সমাপ্তি। তবে শোক শুধু দলীয় গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নেই; রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন—এমন অনেক মানুষও এই মৃত্যুতে আবেগাপ্লুত।

খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবরে বগুড়া জেলা বিএনপির কার্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকায় নেতা-কর্মীদের কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবরে বগুড়া জেলা বিএনপির কার্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকায় নেতা-কর্মীদের কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

অনেকের স্মৃতিতে ভেসে উঠছে নির্বাচনী দিনের চিত্র। ভোটের আগে মিছিল, সভা আর মানুষের ঢল। খালেদা জিয়া যখন নির্বাচনী প্রচারে বগুড়ায় আসতেন, শহরের চেহারাই বদলে যেত। রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকত লাখো মানুষ, এক ঝলক দেখার আশায়।

রাজনৈতিক জীবনে বিতর্ক, সংঘাত ও মামলার মধ্য দিয়েও যেতে হয়েছে তাঁকে। ক্ষমতায় থাকা ও না থাকার দুই সময়েই কারাবরণ, অবরুদ্ধ জীবন ও যোগাযোগহীনতা ছিল তাঁর বাস্তবতা। তবু বগুড়ার মানুষের কাছে তিনি ছিলেন সেই নারী, যিনি সব প্রতিকূলতার মধ্যেও মাথা নত করেননি।

মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে জেলা বিএনপির কার্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকায় নেতা-কর্মীদের কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশা এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন।

রেজাউল করিম বাদশা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কেবল আমাদের নেত্রী ছিলেন না, তিনি ছিলেন মায়ের মতো। বগুড়ার মানুষের সঙ্গে তাঁর আত্মিক সম্পর্ক ছিল। তাঁর মৃত্যুতে আমরা সত্যিকার অর্থেই এতিম হয়ে গেলাম।’

ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন বলেন, ‘অসুস্থ অবস্থাতেও ম্যাডাম দলের ও দেশের মানুষের খোঁজ নিতেন। এই ক্ষতি কোনো দিন পূরণ হওয়ার নয়।’

মঙ্গলবার সকাল থেকেই শহরের নওয়াববাড়ি রোডে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের ভিড় বাড়তে থাকে। জেলা বিএনপির উদ্যোগে মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় শহরের বায়তুর রহমান সেন্ট্রাল মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জীবননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চুরি

জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি 
জীবননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি: আজকের পত্রিকা
জীবননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি: আজকের পত্রিকা

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চুরির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার রাতে হাসপাতালের অফিসের দুটি রুমের জানালার গ্রিল ভেঙে এই চুরির ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক আব্দুর রউফ জানান, প্রতিদিনের ন্যায় গতকাল অফিস শেষ করে অফিসকক্ষে তালা দিয়ে বাসায় চলে যান। সকালে অফিস খুলে দেখেন, জালানার রড ভাঙা এবং অফিসের চারটি ও পাশের রুমের পাঁচটি আলমারি ভাঙা। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এলোমেলোভাবে পড়ে রয়েছে। পুলিশ এসেছিল। কী কী চুরি হয়েছে, তা দেখা হচ্ছে।

নৈশপ্রহরী বিদ্যুৎ বলেন, ‘আমি রাত ১টা পর্যন্ত জেগেছিলাম। পরে প্রচণ্ড শীত ও অসুস্থতার কারণে ঘুমিয়ে পড়ি। সকালবেলা জানতে পারলাম চুরি হয়েছে। পেছনের জানালার গ্রিল ভেঙে চুরি হয়েছে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মকবুল হাসান বলেন, ‘আমি অফিসের কাজে জীবননগরের বাইরে রয়েছি। চুরির বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করা হবে।’

জীবননগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রিপন কুমার দাস বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করতে বলা হয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খামারে ডাকাতের হানা, অস্ত্র ঠেকিয়ে ১২ গরু লুট

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ০২
অস্ত্রের মুখে খামারমালিককে বেঁধে রেখে ডাকাত দল এই খামার থেকে ১২টি গরু লুট করে নিয়ে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
অস্ত্রের মুখে খামারমালিককে বেঁধে রেখে ডাকাত দল এই খামার থেকে ১২টি গরু লুট করে নিয়ে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি গরুর খামারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। অস্ত্রের মুখে খামারমালিককে বেঁধে রেখে ডাকাত দল ১২টি গরু লুট করে নিয়ে গেছে।

গতকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয়সংলগ্ন উত্তর বাঁশবাড়িয়া এলাকায় ইসমাইল হোসেনের মালিকানাধীন ‘এন আই এগ্রো ফার্মে’ এ ঘটনা ঘটে।

খামারমালিক ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘গভীর রাতে ১২–১৫ জন মুখোশধারী ডাকাত খামারের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। এ সময় আমি খামারের পাশের একটি কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলাম। দরজা ভাঙার শব্দ পেয়ে ছুটে গেলে ডাকাতরা আমাকে অস্ত্র ঠেকিয়ে খামারের ভেতর রশি দিয়ে বেঁধে রাখে। পরে খামারে থাকা ১২টি গরু লুট করে নিয়ে যায়।’

ইসমাইল হোসেন জানান, তাঁর ভাতিজা নজরুলকে সঙ্গে নিয়ে খামারটি চালু করেন তিনি। গরু কেনার জন্য স্থানীয় একটি এনজিও থেকে বড় অঙ্কের ঋণও নেওয়া হয়েছে। গরু বিক্রি করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ছিল তাঁদের। কিন্তু ডাকাতির ঘটনায় তাঁরা সর্বস্বান্ত হয়েছেন। এখন পুঁজি তো নেইই, ঋণ কীভাবে পরিশোধ করবেন—তা ভেবেই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সকালে অজ্ঞাতনামা ডাকাতদের বিরুদ্ধে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা করেছেন ইসমাইল হোসেন।

ডাকাতদের হামলায় আহত হয়েছেন খামারের পাশের একটি চায়ের দোকানের মালিক আমিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘গভীর রাতে চিৎকার ও দরজা ভাঙার শব্দ পেয়ে দোকান থেকে বের হয়ে খামারের দিকে যাই। ডাকাতদের গরু লুট করে নিয়ে যেতে দেখে বাধা দিতে গেলে আমাকে মারধর করে রাস্তার পাশের একটি পুকুরে ফেলে দেয় ডাকাতরা।’

সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলমগীর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গভীর রাতে বাঁশবাড়িয়া এলাকার একটি খামার থেকে ১২টি গরু লুটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। লুট হওয়া গরু উদ্ধারে ও জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ছাত্রদল কর্মীকে হত্যা

নরসিংদী সংবাদদাতা
জাহিদুল ইসলাম পলাশ। ছবি: সংগৃহীত
জাহিদুল ইসলাম পলাশ। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর মাধবদীতে জাহিদুল ইসলাম পলাশ (২৫) নামে এক ছাত্রদল নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার রাতে সদর উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত জাহিদুল উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের গয়েশপুরের মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়নের ছাত্রদলের কর্মী ছিলেন। তিনি সেখেরচর হাটে ব্যবসা করতেন।

পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, কেউ জাহিদুলকে রাতে ফোন দিয়ে মাধবদীর নোয়াপাড়ায় ডেকে নেয়। সেখানে আগে থেকে ওত পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাঁকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাঁকে দ্রুত নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ এন এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘তার বুকে ছুরির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।’

মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং দায়ীদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। নিহতের পরিবার জানাজা ও দাফন শেষে থানায় মামলা করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত