Ajker Patrika

পাহাড়ে খাবার সংকটে লোকালয়ে হাতি, আক্রমণে নারীসহ নিহত ২

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
পাহাড়ে খাবার সংকটে লোকালয়ে হাতি, আক্রমণে নারীসহ নিহত ২

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় পাহাড় থেকে নেমে আসা হাতির আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন নারীসহ দুজন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও এক নারী। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলা বৈরাগ ইউনিয়নের গুয়াপঞ্চক আশ্রয়ণ প্রকল্পে হাতির আক্রমণে দিনমজুর মো. আবুল কাশেম দুলাল (৫৫)। রাত আড়াইটার দিকে বৈরাগ ইউনিয়নে খোসাল তালুকদারের বাড়িতে হাতির আক্রমণে নিহত হয়েছেন রেহেনা আকতার (৪৮) নামে এক গৃহবধূ। এ সময় আহত হন রেহেনা আকতার দেবর গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী মারজানা আকতার (২৮)।

নিহত দুলাল বৈরাগ ইউনিয়নের উত্তর গুয়াপঞ্চক এলাকার শাহ্ আহমদ বাড়ির মৃত মুজিবুর রহমানের ছেলে এবং রেহেনা একই বৈরাগ খোসাল তালুকদারের বাড়ির মো. আকতার উদ্দিনের স্ত্রী। আহত মারজানা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইশতিয়াক ইমন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘হাতির আক্রমণে আশ্রয়ণ প্রকল্পের এক উপকারভোগীসহ এক নারী নিহত হয়েছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং নিহতদের পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে।’

নিহত মো. আবুল কাশেম দুলালের স্ত্রী রওশন আরা বেগম (৪৫) বলেন, ‘তিনি ঘরে থেকে বের হয়েছিলেন মাত্র। উঠানে অবস্থান করা হাতিটি দৌড়ে এসে শুঁড়ে তুলে আছড়ে ফেলে পা দিয়ে পিষে দেয় তাকে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত দিনমজুর দুলাল বৈরাগ ইউনিয়নের গুয়াপঞ্চক ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর গুয়াপঞ্চক শাহ আহমদ বাড়ির বাসিন্দা। নিজের কোনো জায়গা না থাকায় সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘরে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বসবাস করে আসছেন। গত কয়েক বছর ধরে ওই এলাকায় হাতির আনাগোনা বেড়ে গেছে। খাবারের সন্ধানে আসা একপাল হাতি আশ্রয়ণ প্রকল্পে আক্রমণ করে। স্ত্রী, তিন মেয়ে ও দুই ছেলে নিয়ে সংসার কোনোমতে চলত তাঁর রোজগারেই। তাঁকে হারিয়ে দিশেহারা পরিবারটি।

অপর নিহত রেহেনা আকতারের দেবর মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘গভীর রাতে বাড়ির সামনের পাহাড় থেকে হাতিগুলো নেমে আসে। এতে মানুষ ঘুম থেকে উঠে আতঙ্কে পড়ে যান। আমাদের ঘরের সামনে চলে আসা হাতিগুলো আমার ভাবিদের ওপর আক্রমণ করে এতে ঘটনাস্থলে মারা যান বড়ভাবি এবং আহত হন ছোটভাবি। স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ভাবির একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।’

2-elephantস্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেয়াং পাহাড় ঘেরা ওই এলাকায় আগে থেকেই বিচরণ ছিল বুনো হাতিদের। ২০১২-১৩ সাল থেকেই হাতির আনাগোনা বেশি দেখা দেয়। পাহাড়ে বন-জঙ্গল কমে যাওয়ায় লোকালয়ে আসা বেড়েছে হাতিদের। হাতির পালটি আনোয়ারার বটতলী হাজীগাঁও ও কর্ণফুলীর কেইপিজেডের দেয়াঙ পাহাড়, হ্রদ ও বন ঘেরা জায়গায় বিচরণ করে বেশি। তাদের হামলায় ফসলের ক্ষতি হচ্ছে, যাচ্ছে মানুষের প্রাণ। সম্প্রতি নবনির্মিত টানেল রোড পারাপারের ঘটনায় আবারও আলোচনায় এসেছে সেই হাতির পাল। সোমবার গভীর রাতেও টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে নির্মিত অ্যাপ্রোচ রোডের পশ্চিম বৈরাগ অংশ পার হয় তিনটি হাতি।

স্থানীদের দাবি, ২০১৮ সালের শেষ দিকে ওই হাতির দলটি স্থায়ীভাবে কেইপিজেড এলাকায় বসবাস শুরু করে। ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে হাতির আক্রমণে ওই এলাকায় মানুষের প্রথম মৃত্যু হয়। শুরুতে এই দলে দুটি বড় এবং একটি ছোট হাতি ছিল। মাঝে মাঝে আরও একটি বড় আকারের হাতিকে এ দলের সঙ্গে দেখা যায়। স্থানীয়দের কাছে সেটি ‘লেজ কাটা’ হাতি নামে পরিচিত। এই হাতির দলের কারণে সব সময় আতঙ্কে থাকেন কর্ণফুলীর বড়উঠান ও আনোয়ারার বৈরাগ ইউনিয়নের গুয়াপঞ্চকের মানুষেরা।  গত বুধবার রাতেও কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের এক বৃদ্ধ হাতির আক্রমণে নিহত হন।

3-elephantস্থানীয় বৈরাগ ইউপি চেয়ারম্যান নোয়াব আলী বলেন, কয়েক বছর ধরে কেইপিজেডে অবস্থান নেওয়া হাতির তাণ্ডবে অতিষ্ঠ পুরো আনোয়ারা-কর্ণফুলীবাসী। বিশেষ করে পাহাড়ি অঞ্চল বৈরাগ, গুয়াপঞ্চক এবং বড়উঠানের দৌলতপুরে উপদ্রব বেশি। এক রাতে হাতির আক্রমণে নারীসহ দুজন প্রাণ মারা যাওয়া খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। প্রতিনিয়ত লোকালয়ে ঢুকে ঘরবাড়ি ভাঙচুর, ফসলি জমি নষ্টসহ হতাহতের ঘটনা ঘটলেও বন বিভাগ দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। শুধু ক্ষতিপূরণ দিয়ে দায় সারছেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা মেজবাহ্ উদ্দিন খান বলেন, দিনের বেলা হাতিগুলো কেইপিজেডে অবস্থান আর লেকে ধারে ঘুরতে দেখা যায়। এ সময়ই অনেক দর্শনার্থীকে তাদের বিরক্ত করতে দেখা যায়। মূলত খাবার অভাবেই এরা লোকালয়ে আসে। অনেক সময় হাতিরা বিরক্ত হয়ে এবং নিজেদের রক্ষা করতেও মানুষের ওপর আক্রমণ করে। মানুষকেও সচেতন হতে হবে। আর বনের হাতি বনে ফিরিয়ে নিতে বন বিভাগসহ প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

4-elephantবন বিভাগের চট্টগ্রাম দক্ষিণ রেঞ্জের বন কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ বলেন, পাহাড়, বন ও গাছ কেটে ফেলার কারণে হাতি লোকালয়ে চলে আসছে। হাতির বেঁচে থাকার জন্য প্রচুর পরিমাণ পানি ও খাদ্য দরকার হয়। বর্ষাকালে পাহাড়ে পর্যাপ্ত পানি এবং গাছপালা থাকার কারণে ওই সময় হাতি পাহাড়ে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। কিন্তু শীতকালে যখন বৃষ্টিপাত হয় না, পাহাড়ে জমে থাকা পানি শুকিয়ে যায়, তখন পানি পান করার জন্য হাতিরা নিচে, সমতল ভূমিতে চলে আসে। তখনই মানুষের সঙ্গে হাতিদের সংঘর্ষ বাঁধে। স্থানীয়দের সতর্ক থাকতে হবে এসব বিষয়ে। ক্ষতিগ্রস্তদের বন বিভাগ ক্ষতিপূরণসহ সহায়তা দিয়ে আসছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘আমি সই না করলে ইউএনও সই করবে না’—এলজিইডি প্রকৌশলীর ভিডিও ভাইরাল

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১১
প্রকৌশলী আব্দুল খালেক । ছবি: সংগৃহীত
প্রকৌশলী আব্দুল খালেক । ছবি: সংগৃহীত

‘আমি সই না করলে ইউএনও (ফাইলে) সই করবে না’—ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) প্রকৌশলী আব্দুল খালেকের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে চাহিদামতো ঘুষের টাকা না পেয়ে ওই প্রকৌশলীকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির (ঠিকাদার প্রতিনিধি) সঙ্গে এমন কথা বলতে শোনা গেছে।

৩১ সেকেন্ডের ভিডিওটি গোপনে তাঁর কার্যালয় থেকে ধারণ করা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভিডিওটি প্রথম পোস্ট করা হয় স্থানীয় সাংবাদিক নিজাম নকিবের ‘নগদ খবর’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে।

জানতে চাইলে নিজাম নকিব জানান, গত মঙ্গলবার এক ব্যক্তি তাঁকে ভিডিওটি পাঠিয়েছেন এবং এটি আজকে ধারণ করা বলে জানান তিনি। তবে ওই ব্যক্তি নিজের নাম ইমতিয়াজ আসিফ বললেও অন্য পরিচয় গোপন রাখেন।

ভিডিওতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির (ঠিকাদার প্রতিনিধি) সঙ্গে কথা বলার আগে কাজের বিলের ফাইল স্বাক্ষর করার সময় ৪৫ হাজার টাকা নেওয়ার বিষয়টিও উঠে আসে। এ ছাড়া নতুন করে আরও পাঁচ হাজার টাকা না দেওয়ায় গড়িমসি করতে থাকেন ওই প্রকৌশলী। একপর্যায়ে তাঁকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়ে পকেটে রাখতে দেখা যায়।

নগরকান্দা এলজিইডি প্রকৌশলী। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
নগরকান্দা এলজিইডি প্রকৌশলী। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

এ সময় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘স্যার, রাখেন এইটা স্যার, বিলের ফাইল ছাড়ার সময় ৪৫ হাজার টাকা নিলেনই আপনি আমার কাছ থেকে। রাখেন স্যার, তিন হাজার টাকা রাখেন, পাঁচ হাজার টাকা নাই।’

পরে প্রকৌশলী আব্দুল খালেক বলেন, ‘আমি সই করব, তারপর ইউএনও সই করবে। আমি সই না করলে ইউএনও (ফাইলে) সই করবে না।’

ভিডিওটির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকৌশলী আব্দুল খালেক মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এক বদমাশ ভিডিওটি করেছে। আমি তাকে চিনিও না, জানিও না। আন্দাজে কী কয় কী হয়, যা পারে করুক। এগুলো নিয়ে এখন আর কিছু বলার নেই।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহরাজ শারবীন বলেন, ‘ভিডিওটি পূর্বের, আমি দেখেছি। এ ছাড়া আমি নতুন এসেছি। এসব বিষয়ে তাদের ডিপার্টমেন্ট (এলজিইডি) থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আনোয়ারায় সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার দুই শিশুর পরিচয় মিলেছে, বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে মামলা

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
আনোয়ারায় দুই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আনোয়ারায় দুই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কনকনে শীতের মধ্যে সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া দুই শিশুর পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। তাদের বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলায়। আজ বুধবার দুপুরে খোরশেদ আলম নামের এক ব্যক্তি নিজেকে ওই শিশুদের বাবা দাবি করে আনোয়ারার ইউএনও ও থানার ওসির সঙ্গে দেখা করেন। এ ছাড়া আদালতের নির্দেশে দুই শিশুর বাবা ও মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে প্রশাসন।

এর আগে গত রোববার সন্ধ্যায় আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন ইউনিয়নের মাজারগেট এলাকা থেকে আয়শা (৪) ও মোরশেদ (২) নামের শিশু দুটিকে উদ্ধার করে নিজের হেফাজতে রাখেন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মহিম উদ্দিন। গত সোমবার সারা দিন আনোয়ারা থানা ও উপজেলা প্রশাসন ওই শিশুদের পরিবার ও অভিভাবকদের তথ্য পেতে চেষ্টা করে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ওই দুই শিশুকে নিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কাছে যান আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার। জেলা প্রশাসক তাদের চিকিৎসা ও যাবতীয় খরচের দায়িত্ব নেন। পরে দুই শিশুর মধ্যে আয়শাকে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের জিম্মায় তুলে দেওয়া হয়। গুরুতর অসুস্থ মোরশেদকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আজ দুপুরে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন শিশুদের বাবা খোরশেদ। বর্তমানে তিনি পুলিশের হেফাজতে আছেন বলে নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুনায়েদ চৌধুরী।

পুলিশের হেফাজতে থাকা খোরশেদ আলমের বরাতে পুলিশ জানায়, খোরশেদ পেশায় একজন অটোরিকশাচালক। পাশাপাশি বাঁশখালীর একটি ভাঙারির দোকানেও কাজ করেন। খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার মহামনি এলাকায় তাঁর বাড়ি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাঁশখালীর মিয়ার বাজার লস্করপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তাঁর স্ত্রীর বাড়ি সাতকানিয়া। ৫-৬ মাস আগে তাঁর স্ত্রী দুই সন্তানকে নিয়ে ঘর থেকে পালিয়ে যান। স্ত্রী তাঁর ছোট প্রতিবন্ধী শিশুটিকে দিয়ে ভিক্ষা করাতেন। এটা নিয়েও স্বামী-স্ত্রীর একাধিকবার ঝগড়া হয়েছিল।

এদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে শিশু দুটিকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি আমলে নিয়ে আজ চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাখাওয়াত হোসেন আনোয়ারা থানাকে মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আনোয়ারা থানার শিশুবিষয়ক পুলিশ কর্মকর্তা শিশু আইন-২০১৩-এর বিধান অনুযায়ী কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, সে সম্পর্কে ৫ জানুয়ারির মধ্যে লিখিত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

আদালতের আদেশ পাওয়ার কথা স্বীকার করে আনোয়ারা থানার ওসি মো. জুনায়েত চৌধুরী বলেন, ‘আমরা শিশুদের বাবার খোঁজ পেয়েছি। বিস্তারিত জানার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘আদালত জানতে চেয়েছেন শিশুদের ব্যাপারে আমরা কী কী পদক্ষেপ নিয়েছি।’

ইউএনও তাহমিনা আক্তার বলেন, সড়কের পাশে পাওয়া দুই শিশুর দায়িত্ব নিয়েছেন জেলা প্রশাসক। তাদের একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং বড় শিশুকে আশ্রয়দানকারী মহিম উদ্দিনের হেফাজতে রাখা হয়। তিনি বলেন, আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন এবং প্রশাসন স্বামী-স্ত্রী দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জামায়াত প্রার্থী মাসুদের বাড়ি নেই, পেশা ব্যবসা ও পরামর্শক

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের প্রার্থী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি জেনারেল ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের কোনো বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট নেই। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী ও পরামর্শক। বছরে আয় ১০ লাখ ১২ হাজার ৮৩০ টাকা।

নির্বাচনী হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

হলফনামা অনুযায়ী, ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের মোট সম্পদের পরিমাণ ৪৪ লাখ ৭৭ হাজার ৯৬৪ টাকা। তাঁর বার্ষিক আয় ১০ লাখ ১২ হাজার ৮৩০ টাকা। এর বিপরীতে তিনি ৪৫ হাজার ৪২৫ টাকা আয়কর পরিশোধ করেছেন।

হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁর হাতে নগদ রয়েছে ৪৩ হাজার ২৫০ টাকা। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে তাঁর জমা রয়েছে ১৬ লাখ ২৫ হাজার ২৯৩ টাকা। পেশা হিসেবে তিনি নিজেকে পরামর্শক উল্লেখ করেছেন।

এ ছাড়া বন্ড, ঋণপত্র এবং শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাঁর ৩ লাখ ৫ হাজার টাকার শেয়ার রয়েছে।

হলফনামায় আরও বলা হয়েছে, ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নামে কোনো জমি, বাড়ি কিংবা অ্যাপার্টমেন্ট নেই। তবে তাঁর পরিবারের মোট ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

তাঁর স্ত্রী পেশায় একজন চিকিৎসক। সর্বশেষ আয়কর বিবরণী অনুযায়ী, তাঁর স্ত্রীর বার্ষিক আয় ৬ লাখ ৪১ হাজার ৮৭৫ টাকা এবং মোট সম্পদের পরিমাণ ১২ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৩ টাকা।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের মালিকানায় রয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকার বৈদ্যুতিকসামগ্রী এবং ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র। তবে তাঁর বা তাঁর পরিবারের নামে কোনো যানবাহন বা ব্যক্তিগত গাড়ি নেই।

হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর আয়ের প্রধান উৎস ব্যবসা ও পরামর্শক পেশা। ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৫ লাখ ২ হাজার ৮৩০ টাকা এবং পরামর্শক পেশা থেকে আয় ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য খাত থেকে তাঁর আয় রয়েছে ৩০ হাজার টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

১৭০ টাকার জন্য চাচার হাতে ভাতিজি খুন

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১০
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় ১৭০ টাকার জন্য চাচার হাতে মাদ্রাসাপড়ুয়া এক কিশোরীর নিহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার আওরাবুনিয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত কিশোরীর নাম লামিয়া আক্তার (১৪)। সে উত্তর চরাইল হাসেমিয়া দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির বড় ভাই ফারুক খানের সৎকন্যা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পকেট থেকে ১৭০ টাকা হারিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে প্রথমে লামিয়ার মা লিলি বেগমের সঙ্গে অভিযুক্ত জাকির হোসেন খানের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তিনি লিলি বেগমকে মারধর শুরু করেন। মাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে লামিয়াও মারধরের শিকার হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মা ও মেয়েকে স্বজনেরা বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাতে লামিয়া আক্তার মারা যায়। আহত লিলি বেগম বর্তমানে একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযুক্ত জাকির হোসেন খানকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। একই সঙ্গে এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

কাঁঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাছের রায়হান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বরিশালে ময়নাতদন্ত শেষে আজ বুধবার দুপুরে নিহত ব্যক্তির মরদেহ দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত