Ajker Patrika

কেএনএফে বান্দরবান অশান্ত, পর্যটনে ধস

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৪ মে ২০২৩, ০৩: ০২
কেএনএফে বান্দরবান অশান্ত, পর্যটনে ধস

পাহাড়ি সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর তৎপরতায় অশান্ত হয়ে উঠেছে বান্দরবান জেলা। আগে এই জেলায় সন্ত্রাসীগোষ্ঠী কুকিচিনের অস্তিত্ব থাকলেও গত বছরের অক্টোবর থেকে কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামে তারা তৎপরতা শুরু করে। প্রায়ই নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে কেএনএফের পাল্টাপাল্টি গুলির ঘটনা ঘটছে। সাম্প্রতিক সময়ে রুমা উপজেলায় কেএনএফ আর নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর বন্দুকযুদ্ধে দুই সেনা সদস্যসহ ১২ জন নিহত হন। সরকারিভাবে এখনো তিন উপজেলায় পর্যটক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এতে ধস নেমেছে এ জেলার পর্যটনশিল্পে। হোটেল-মোটেলগুলোতে নামমাত্র পর্যটকের অবস্থান। এই শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যদের অর্থনৈতিক অবস্থাও দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বান্দরবানের হানাহানির নেপথ্যে রয়েছে স্থানীয় সশস্ত্র বিভিন্ন গোষ্ঠী ও সংগঠনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার এবং চাঁদাবাজির দ্বন্দ্ব। এদের মধ্যে জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), জনসংহতি সমিতি (জেএসএস সংস্কার), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক), মগ পার্টি ও কেএনএফ অন্যতম। বিশেষ করে বান্দরবানের থানচি, রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় কেএনএফের দৌরাত্ম্য সবচেয়ে বেশি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। সীমান্তবর্তী রুমায় কেএনএফ প্রশিক্ষণকেন্দ্র গড়ে তুলেছে বলেও জানিয়েছেন অনেকে। সম্প্রতি ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক গ্রুপের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আটজন কেএনএফ সদস্য নিহত হওয়ায় তারা কিছুটা পিছু হটেছে।

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২২ অক্টোবর প্রথম কেএনএফের সঙ্গে সেনাবাহিনীর রুমা উপজেলার মৌয়াছিপাড়ায় গোলাগুলি হয়। এতে এক সেনাসদস্য নিহত হন। অক্টোবর থেকে যৌথ অভিযানে ২ কেএনএফ সদস্য এবং কেএনএফের গুলিতে মগ পার্টির তিনজন নিহত হন। গত ১২ মার্চ কেএনএফের গুলিতে সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন নিহত হন এবং দুই সেনাসদস্য আহত হন। ৭ এপ্রিল ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক গ্রুপের গুলিতে কেএনএফের আট সদস্য নিহত হন।

সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কেএনএফের ওপর সার্বিকভাবে নজরদারি অব্যাহত রেখেছি। এরই অংশ হিসেবে কেএনএফ অধ্যুষিত রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করেছি।’

এদিকে বান্দরবানে পর্যটনশিল্পে দুরবস্থা সম্পর্কে আবাসিক হোটেল হিলভিউর ব্যবস্থাপক পারভেজ আহাম্মেদ বলেন, ‘১ মে বন্ধের দিনেও কোনো পর্যটক নেই। আমাদের হোটেলে ১০০টি কক্ষের মধ্যে মাত্র ৩০টি বুকিং আছে। এই দিনে অন্য বছরগুলোতে পর্যটকদের কক্ষ দিতে হিমশিম খেতে হতো।’

বান্দরবানের আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, কেএনএফ ঝামেলার কারণে পর্যটক আসা বন্ধ থাকায় বান্দরবানের পুরো অর্থনীতিই থমকে গেছে।’

এ বিষয়ে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, ‘পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে যখন যেটা করা দরকার, সেটাই করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কা, নিহত ২

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৬
কাভার্ড ভ্যানের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে গেছে।
কাভার্ড ভ্যানের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে গেছে।

নাটোরের বড়াইগ্রামে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় দুজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন কাভার্ড ভ্যানের চালক সোহাগ হোসেন (৩০) এবং যাত্রী বিপ্লব হোসেন (৩৫)। আজ মঙ্গলবার সকালে মানিকপুর এলাকায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত সোহাগ নলডাঙ্গা উপজেলার বেলঘড়িয়া এলাকার ফরজ আলীর ছেলে। অন্যদিকে নিহত বিপ্লব টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার চৌবাড়িয়ার ওহেদ আলীর ছেলে। তিনি একটি কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি ছিলেন।

দুর্ঘটনার পর ট্রাক নিয়ে চালক পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।

বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, সকাল ৬টার দিকে নাটোর থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রাক মানিকপুর এলাকায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে দাঁড়িয়ে ছিল। একই দিক থেকে ছেড়ে আসা একটি কাভার্ড ভ্যান পেছন থেকে ট্রাকটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে কাভার্ড ভ্যানের চালক ও যাত্রী নিহত হন। ওসি আরও বলেন, লাশ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তরের ও আইনগত বিষয় চলমান রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জে মনোনয়নপত্র জমা দেননি বিএনপির বিদ্রোহী নেতারা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
মনোনয়নপত্রের ফরম সংগ্রহ করলেও শেষ পর্যন্ত তা জমা দেননি বিএনপির বিদ্রোহী নেতারা।
মনোনয়নপত্রের ফরম সংগ্রহ করলেও শেষ পর্যন্ত তা জমা দেননি বিএনপির বিদ্রোহী নেতারা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল, গোমস্তাপুর, ভোলাহাট) আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন বিএনপির চার বিদ্রোহী নেতা। তবে ফরম সংগ্রহ করলেও জমা দেওয়ার শেষ দিন সোমবার পর্যন্ত তা জমা দেননি তাঁরা। ফলে এই আসনে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে থাকছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি মো. আমিনুল ইসলাম। এ ছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মনোনীত এক প্রার্থীও শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন দাখিল করেননি।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে ১০ প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেও জমা দিয়েছেন ৫ জন।

মনোনয়নপত্র জমা না দেওয়া বিএনপি নেতারা হলেন বুয়েটের আহসানুল্লাহ হল সংসদের সাবেক ভিপি ও সাবেক ছাত্রনেতা ইঞ্জিনিয়ার ইমদাদুল হক মাসুদ, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগাঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম তুহিন, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক মাসউদা আফরোজ হক শুচি ও বিএনপি নেতা সাহাফুজ আলম অপু। এ ছাড়াও এনসিপি মনোনীত প্রার্থী ও এনসিপির জেলা শাখার সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব নাজমুল হুদা খান রুবেল মনোনয়নপত্র জমা দেননি।

এই আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, বিএনপির প্রার্থী মো. আমিনুল ইসলাম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ড. মিজানুর রহমান, জাতীয় পার্টির মুহা. খুরশিদ আলম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মো. সাদেকুল ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের মো. ইব্রাহিম খলিল।

দলীয় মনোনয়ন না পাওয়া জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক মাসউদা আফরোজ হক শুচি বলেন, ‘দলীয় প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা থেকেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলাম। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্ত যেহেতু পরিবর্তন হয়নি, তাই মনোনয়নপত্র জমা দিইনি।’

মনোনয়ন না পাওয়া আরেক বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইমদাদুল হক মাসুদ বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তন হয়নি, তাই মনোনয়নপত্র জমা দিইনি।’

এর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী বদলের দাবিতে মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্য নেতারা এককাট্টা হয়ে অন্তত ১২ বার মশাল মিছিল, মতবিনিময় ও আলোচনা সভা, রেলপথ অবরোধ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মির্জাপুরে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের চালক নিহত

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় এক মোটরসাইকেলের চালক নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের দেওহাটা ফ্লাইওভারের পশ্চিম পাশে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহত ব্যক্তির নাম জানা যায়নি। তবে তিনি গোড়াই সাউথ ইস্ট কারখানার কর্মী বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।

জানা গেছে, সকাল সোয়া ৭টার দিকে সকালে মোটরসাইকেল চালিয়ে মহাসড়কের ধীরগতির লেন দিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিলেন চালক। মহাসড়কের দেওহাটা ফ্লাইওভারের কাছে পৌঁছালে টাঙ্গাইল থেকে ছেড়ে আসা আলোকিত মধুপুর নামে যাত্রীবাহী বাস মহাসড়ক ছেড়ে ধীরগতির লেনে ঢুকে পড়ে মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেলের চালক নিহত হন।

দেওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক গিয়াসউদ্দিন জানান, নিহত ব্যক্তি গোড়াই সাউথ ইস্ট কারখানায় চাকরি করতেন বলে জানতে পেরেছেন। বাসটি জব্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভালুকায় সহকর্মীর গুলিতে আনসার সদস্য নিহত, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৪০
ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বজেন্দ্র দাসকে মৃত ঘোষণা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বজেন্দ্র দাসকে মৃত ঘোষণা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাক কারখানায় সহকর্মীর গুলিতে বজেন্দ্র বিশ্বাস (৪০) নামের এক আনসার সদস্য নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রাত ৭টায় উপজেলার মেহরাবাড়ি এলাকায় লাবিব গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সুলতানা সোয়েটার্স লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত সহকর্মী আনসার সদস্য নোমান মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিহত আনসার সদস্য বজেন্দ্র বিশ্বাস সিলেট সদর উপজেলার কাদিরপুর গ্রামের পবিত্র বিশ্বাসের ছেলে। অভিযুক্ত নোমান মিয়া সুনামগঞ্জ জেলার তাহেরপুর থানার বালুটুরি বাজার এলাকার লুৎফর রহমানের ছেলে। দুজনই সুলতানা সোয়েটার্স লিমিটেড কারখানায় কর্মরত ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কারখানাটিতে ২০ জন আনসার সদস্য কর্মরত ছিলেন। ঘটনার সময় আনসার সদস্য নোমান মিয়া ও বজেন্দ্র দাস একসঙ্গে বসেছিলেন। এ সময় অসাবধানতাবশত নোমান মিয়ার হাতে থাকা শটগান থেকে গুলি বের হলে বজেন্দ্র দাসের বাঁ ঊরুতে গুলি লাগে এবং তিনি গুরুতর আহত হন। পরে সহকর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর অভিযুক্ত নোমান মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত