Ajker Patrika

এবার নিজেকে ‘গার্ডিয়ান অব চিটাগাং’ ঘোষণা করলেন শাহজাহান চৌধুরী, ভিডিও ভাইরাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ১১
মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

‘প্রশাসনকে আমরা বললে উঠবে, বসবে, মামলা দেবে’ এমন মন্তব্যের সমালোচনার রেশ কাটতে না কাটতে জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীর আরেকটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই বক্তব্যে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘এক বছর কাজ করার জন্য ড. ইউনূস ঘোষণা করেছেন শাহজাহান চৌধুরী গার্ডিয়ান অব চিটাগাং।’

এদিকে জামায়াত নেতার বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাকে এ রকম কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এ রকম কিছু হলে আমরা জানার কথা। একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় অফিস আদেশের মধ্য দিয়ে হয়ে থাকবে। মৌখিকভাবেও আমরা কোনো নির্দেশনা পাইনি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৫ নভেম্বর রাতে জামায়াতের সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তিনি এই বক্তব্য দেন। সম্প্রতি বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

৩ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের ওই বক্তব্যে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘আমি দুইবারের এমপি, চারবার পার্লামেন্ট নির্বাচন করেছি। ৪২ বছর সাতকানিয়া, লোহাগাড়ার জনসাধারণকে বুকে নিয়ে আমি বারবার আপনাদের কাছে এসেছি। আপনারা আমাকে সম্মানিত করেছেন। ১৯৯১-তে এমপি বানিয়েছেন, ২০০১ সালে নির্বাচিত করেছেন। আজকে বাংলার সাতকানিয়া-লোহাগাড়া নয়, পুরো চট্টগ্রামে এক বছর ধরে কাজ করার জন্য ড. ইউনূস ঘোষণা করেছেন, শাহজাহান চৌধুরী গার্ডিয়ান অব চিটাগাং। চট্টগ্রামের অভিভাবক হচ্ছেন শাহজাহান চৌধুরী।’

শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘আমি এমপিগিরি রাজনীতির মাধ্যমে কোনো ধান্দাবাজি করিনি। তাই আজকে আপনাদের দুয়ারে এসেছি। আগামী নির্বাচনে আপনাদের সবার কাছে অনুরোধ, আসুন শুধুমাত্র কাঞ্চনা নয়, সাতকানিয়া-লোহাগাড়া নয়, চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে সেকেন্ড সিঙ্গাপুর করার স্বপ্ন নিয়ে আজকে চট্টগ্রামে রাজনীতি করছি। তাই আমার কাছে কোনো জামায়াতে ইসলামী নয়, কোনো রাজনীতি নয়, জাতি, ধর্ম-বর্ণ নয়, আমি মানুষকে ভালোবাসি। মানুষের মুক্তির জন্য কাজ করেছি। ৫৪ বছর ধরে রাজনীতি করে ৪২ বছর সাতকানিয়া লোহাগাড়ার নির্যাতিত, নিপীড়িত, অসহায়, নিরন্ন মানুষের খেদমত করেছি। আজকে সাতকানিয়া লোহাগাড়ার কী অবস্থা। রাস্তা নেই, ঘাট নেই, ব্রিজ নেই, কালভার্ট নেই।’

এ বিষয়ে কথা বলতে জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।

তবে জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ও চট্টগ্রাম জোনাল হেড মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। এ ব্যাপারে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’

বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটি অবান্তর কথাবার্তা। এ ধরনের কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তা ছাড়া দেশ চালাচ্ছে এখন অন্তর্বর্তী সরকার। শাহজাহান চৌধুরী একজন রাজনীতিবিদ। তাকে কেন এই দায়িত্ব দেওয়া হবে।’

এর আগে গত শনিবার নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে জামায়াতের নির্বাচনী দায়িত্বশীলদের সমাবেশে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘যার যার নির্বাচনী এলাকায়, প্রশাসনে যারা আছে, তাদের অবশ্যই আমাদের আন্ডারে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের কথায় উঠবে, আমাদের কথায় বসবে, আমাদের কথায় গ্রেপ্তার করবে, আমাদের কথায় মামলা করবে।’

শাহজাহান চৌধুরী আরও বলেন, ‘প্রাইমারি স্কুলের মাস্টারকে দাঁড়িপাল্লার কথা বলতে হবে। উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সব শিক্ষককে দাঁড়িপাল্লার কথা বলতে হবে। পুলিশকে আপনার পেছনে পেছনে হাঁটতে হবে। ওসি সাহেব আপনার কী প্রোগ্রাম সকাল বেলায় জেনে নেবে, আর আপনাকে প্রটোকল দেবে। টিএনও (ইউএনও) সাহেব যা উন্নয়ন এসেছে, সমস্ত উন্নয়নের হিসেব যিনি নমিনি (জামায়াতের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী), তার থেকে খুঁজে বের করতে হবে।’ তাঁর এ বক্তব্য প্রচারের পর সারা দেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টাঙ্গাইল: আট আসনে লড়াইয়ে বিএনপিরই ২৪ জন

  • জামায়াত, এনসিপি ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে মোট প্রার্থী ৪১ জন।
  • দীর্ঘদিন ধরে নেই বিএনপির পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি।
  • কেন্দ্রীয় দুই নেতার দ্বন্দ্বে আটকে রয়েছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি।
  • এক যুগ ধরে জেলা বিএনপির নিজস্ব কার্যালয় নেই।
আনোয়ার সাদাৎ ইমরান, টাঙ্গাইল 
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২: ০১
আবদুস সালাম পিন্টু, আহমেদ আযম খান, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বেনজির আহমেদ টিটু, ওবায়দুল হক নাসির, রবিউল আউয়াল লাভলু, ফকির মাহবুব আনাম স্বপন, লুৎফর রহমান মতিন ও আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী।ছবি: সংগৃহীত
আবদুস সালাম পিন্টু, আহমেদ আযম খান, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বেনজির আহমেদ টিটু, ওবায়দুল হক নাসির, রবিউল আউয়াল লাভলু, ফকির মাহবুব আনাম স্বপন, লুৎফর রহমান মতিন ও আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী।ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলে এক যুগ ধরে জেলা বিএনপির অফিস নেই। তিন বছরেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি। উপজেলা পর্যায়েও পকেট কমিটির অভিযোগে নেতা-কর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত। এমন পরিস্থিতিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার আটটি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে দলটি। তবে এর বাইরে আরও ১৬ জন নেতা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

২০২২ সালের ১ নভেম্বর সরাসরি ভোটের মাধ্যমে হাসানুজ্জামিল শাহীন জেলা সভাপতি ও ফরহাদ ইকবাল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সভাপতি পদে জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছাইদুল হক ছাদু ও সাবেক সহসভাপতি আলী ইমাম তপন। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন জেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব মাহমুদুল হক সানু।

নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের দুজনই দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খানের সমর্থিত। অন্যদিকে পরাজিতরা ছিলেন প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সমর্থিত। কেন্দ্রীয় এই দুই নেতার দ্বন্দ্বে প্রায় তিন বছরেও জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি।

দ্বিধাবিভক্ত কমিটির কারণে দিন দিন সাংগঠনিক শৃঙ্খলা দুর্বল হয়ে পড়ছে। উপজেলা পর্যায়ে পকেট কমিটির অভিযোগ এনে নেতা-কর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে দলীয় কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছেন। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এই বিভক্তি আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। আট আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন দলের ২৪ জন নেতা। আর বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে বিভিন্ন দল থেকে মোট মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন অন্তত ৪১ জন।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বলেন, ‘আমরা নির্বাচিত হওয়ার পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটি তা অনুমোদন দেয়নি। ফলে তিন বছর ধরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ছাড়াই কর্মকাণ্ড চালাতে হচ্ছে। সংসদ নির্বাচন ঘিরে অনেক আসনে একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। দু-একটি আসনে অন্য এলাকার নেতাকে মনোনয়ন দেওয়ায় সমস্যা জটিল হয়েছে। পুনর্বিবেচনা করলে সব ঠিক হয়ে যাবে।’

টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন। তবে এর বাইরে আলাদাভাবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী ও সাবেক এমপি আশিকা আকবরের ছেলে আফিফ আহমেদ। বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আসাদুল ইসলাম আজাদও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর–গোপালপুর) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু। এখানে দলের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই।

টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম ওবায়দুল হক নাসির। তবে তাঁর জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী ও তিনবারের সংসদ সদস্য লুৎফর রহমান খান আজাদ এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. মাইনুল ইসলাম।

টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. লুৎফর রহমান মতিন। পৃথকভাবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ঢাকা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটো।

টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। তবে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবালও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

টাঙ্গাইল-৬ (দেলদুয়ার-নাগরপুর) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী নাগরপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য রবিউল আওয়াল। তবে তাঁর মনোনয়নে ক্ষুব্ধ দলের অন্য অংশ। এই আসনে পৃথকভাবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন উপজেলা বিএনপির সদস্য মো. ইকবাল হোসেন খান, ছাত্রদল নেতা আতিকুর রহমান ও মো. জুয়েল সরকার।

টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে আলাদাভাবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন কেন্দ্রীয় সহসংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক সাইদুর রহমান সাইদ সোরহাব, বহিষ্কৃত নেতা ফিরোজ হায়দার খান ও কৃষক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক দীপু হায়দার খান।

টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান। আলাদাভাবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন শিল্পপতি সালাউদ্দিন আলমগীর রাসেল, হাবিবুর রহমান কামাল ও বহিষ্কৃত সখীপুর উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস এম হাবিবুর রহমান। তবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও সালাউদ্দিন আলমগীর রাসেল ও হাবিবুর রহমান কামালের কোনো দলীয় পদবি নেই।

জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছাইদুল হক ছাদু বলেন, দীর্ঘদিনেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় এবং জেলা বিএনপির কোনো সাংগঠনিক অফিস না থাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিভিন্ন দোকান, হোটেল ও ফুটপাতে বসে দলীয় কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। জেলায় পকেট রাজনীতি শুরু হওয়ায় অধিকাংশ নেতা-কর্মী অন্য নেতার পকেটের ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। জেলা শহর থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যন্ত সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। কেউ কারও কমান্ড শুনছে না। দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশনা অমান্য করে বিভিন্ন আসনে একাধিক নেতা মনোনয়নপত্র কিনছেন। সেগুলোও দেখার কেউ নেই। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আগামী নির্বাচনে খেসারত দিতে হবে।

জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি জিয়াউল হক শাহীন বলেন, বড় দলে একাধিক প্রার্থী থাকে, আবার সমঝোতাও হয়। নির্দিষ্ট কার্যালয় ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় হযবরল অবস্থা। স্থানীয়ভাবে সমঝোতার উদ্যোগ না থাকায় কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে।

জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন বলেন, ‘আমরা সমঝোতার চেষ্টায় রয়েছি। কেন্দ্রীয় নেতারাও বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কাজ করছেন। আগামী নির্বাচনে সব কটি আসনে বিজয় নিশ্চিতের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব। যাঁরা সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন তাঁদের বিষয়টি সাংগঠনিকভাবে বিবেচনা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবিটি ভিডিও থেকে নেওয়া
ছবিটি ভিডিও থেকে নেওয়া

চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার খোঁজ নিতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার পরে হাসপাতালে যান তিনি। পরে সেখানে আধঘণ্টারও বেশি সময় অবস্থান করে রাত ১২টা ৮ মিনিটে বেরিয়ে যান। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এই তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে শনিবার মধ্যরাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের অবস্থা অত্যন্ত জটিল বলে জানিয়েছিলেন তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। খালেদা জিয়া সংকটময় মুহূর্ত অতিক্রম করছেন বলেও উল্লেখ করেন ডা. জাহিদ।

চিকিৎসারত খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ কী অবস্থা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এই চিকিৎসক বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই ওনার (খালেদা জিয়া) অবস্থার উন্নতি হয়েছে, এ কথা বলা যাবে না।...ওনার অবস্থা অত্যন্ত জটিল এবং উনি একটা সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন।’

শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়াই রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এই ব্রিফ করা হয়।

ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২৩ নভেম্বর এখানে (এভারকেয়ার হাসপাতাল) ভর্তি হয়েছেন; ভর্তি হওয়ার পরবর্তীতে ওনার (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থার বেশ অবনতি হয়েছিল।’

স্বাস্থ্যের ক্রমাগত অবনতির কারণেই খালেদা জিয়াকে কেবিন থেকে সিসিইউ এবং সেখানে থেকে পরবর্তীতে আইসিইউতে নেওয়া হয় বলেও জানান তিনি।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের এই সদস্য জানান, দেশি-বিদেশি চিকিৎসকেরা বিএনপি চেয়ারপারসনকে চিকিৎসা দিচ্ছেন, তাঁর পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান তাতে যুক্ত রয়েছেন।

১৭ বছর পর গত বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ফেরার পর মাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন তারেক রহমান। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দিনভর নানা কর্মসূচি শেষে আবারও মাকে দেখতে যান তিনি। দুই ঘণ্টার বেশি সময় সেখানে অবস্থান করে রাত ১১টা ৫৮ মিনিটে তিনি হাসপাতাল ছাড়েন।

গত ২৩ নভেম্বর থেকে খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নানা শারীরিক জটিলতার মধ্যে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদ্‌যন্ত্র ও ফুসফুসের সমস্যা ওঠানামা করছে। নিয়মিত চিকিৎসার অংশ হিসেবে তাঁর কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিয়মিত করা হচ্ছে।

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের এমন পরিস্থিতিতে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার কথা বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হলেও শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি। বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা আকাশযাত্রার উপযোগী না হওয়ায় দেশেই তাঁর চিকিৎসা চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লক্ষ্মীপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র মাহফুজ আলম, এনসিপির পক্ষে মনোনয়নপত্র নিলেন বড় ভাই মাহবুব

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব আলম ও তাঁর ছোট ভাই সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ছবি: সংগৃহীত
এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব আলম ও তাঁর ছোট ভাই সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ছবি: সংগৃহীত

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে নিজ এলাকা লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।

রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমানের কাছ থেকে মাহফুজ আলমের পক্ষে এই মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হয়। উপদেষ্টা পদ ছেড়ে দেওয়ার পর তিনি সরাসরি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন—এমন খবরে রামগঞ্জসহ পুরো জেলায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, এই নির্বাচনী লড়াইয়ে মাহফুজ আলমের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছেন তাঁর আপন বড় ভাই মাহবুব আলম মাহিরও। তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি একই আসন থেকে দলীয়ভাবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

মাহফুজ আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র নিলেও তিনি কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দিচ্ছেন কি না, তা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা বজায় রেখেছেন। আজ রাতেই এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এনসিপি বা জামায়াত-এনসিপি জোটে যোগ না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

একই আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বিএলডিপি বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগদান করা শাহাদাত হোসেন সেলিম, ঢাকা মহানগর বিএনপির (দক্ষিণ) যুগ্ম আহ্বায়ক ও মতিঝিল ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার হারুন অর রশিদসহ মোট ১৬ জন প্রার্থী।

এ ছাড়া রামগঞ্জ আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে (২০১৪) আওয়ামী মহাজোটের শরিক বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব লায়ন এম এ আউয়াল। তিনি নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে বর্তমানে হত্যা মামলাসহ নানান কারণে বিতর্কিত এ নেতা এলাকা ছেড়ে ঢাকায় অবস্থান করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম। ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ–সাতকানিয়া আংশিক) আসনে চন্দনাইশ উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন আহমেদের ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়ন পাওয়ার খবরে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তাঁর মনোনয়নের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

অনেকেই আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে জসিম উদ্দিনের ছবি শেয়ার করে প্রশ্ন তুলছেন তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় ও অবস্থান নিয়ে।

যদিও সন্ধ্যা পর্যন্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কিছু জানা না গেলেও চট্টগ্রামের রিটার্নিং কর্মকর্তার পাঠানো তথ্যে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম রয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া জসিম উদ্দিন আহমেদ মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে তাঁর মনোনয়নের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্যমতে, জসিম উদ্দিন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সহযোগী। তাঁর মালিকানায় কক্সবাজারে ‘রামাদা কক্সবাজার’ এবং দুবাইয়ে ‘রামাদা দুবাই’ হোটেল রয়েছে। চট্টগ্রাম নগরীর লালদীঘি এলাকায় ‘মহল মার্কেট’, খুলশীতে ‘জসিম হিল পার্ক’সহ একাধিক বাণিজ্যিক ও আবাসিক স্থাপনার মালিক তিনি। এ ছাড়া তাঁর সম্পদের উৎস ও দ্রুত উত্থান ঘিরে রয়েছে নানা অভিযোগ।

অভিযোগ উঠেছে, জসিম উদ্দিন সাবেক দুই আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও শহিদুল হকের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন এবং আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী একাধিক নেতার সান্নিধ্য পেয়েছিলেন। এ ছাড়া ২০২৪ সালে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি চন্দনাইশ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

চন্দনাইশ উপজেলা বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে যিনি সুবিধাভোগী ছিলেন, তাঁর হাতে ধানের শীষ দেওয়া আমাদের জন্য লজ্জাজনক। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।’

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জসিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি একজন ব্যবসায়ী। বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে আমার ছবি থাকতেই পারে। এসব বিষয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে বিস্তারিত বলব।’ এ কথা বলেই তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত