Ajker Patrika

পটিয়ার পাহাড়ি সীমান্ত এলাকায় অপহরণ আতঙ্ক 

কাউছার আলম, পটিয়া (চট্টগ্রাম) 
পটিয়ার পাহাড়ি সীমান্ত এলাকায় অপহরণ আতঙ্ক 

চট্টগ্রামের পটিয়ায় পাহাড়ি এলাকায় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে অপহরণ শুরু করেছে সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে তাদের ভয়ে আতঙ্কে রয়েছেন উপজেলার পাহাড়ি এলাকার লোকজন। দিনমজুর থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণির লোকজনকে পাহাড়ে ধরে নিয়ে পরবর্তীতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চাঁদা আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে অভিযান চালিয়েও এখন পর্যন্ত কোনো সন্ত্রাসীদের আটক করতে পারেনি পুলিশ।

স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ে যারা গাছ বাগান, লেবু বাগানসহ দিন মজুরের কাজ করেন এমন লোকজনকে ধরে নিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে। গত বছর পূর্ব হাইদগাঁও মাহাদাবাদ এলাকায় মো. আরিফুল্লাহ নামের এক যুবককে অস্ত্রধারী পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা মারধর করেন। এর আগে পূর্ব হাইদগাঁও আলম মাস্টারের এগ্রো প্রজেক্টে জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। প্রায় সময় উপজেলার কেলিশহর, হাইদগাঁও, কচুয়াই, শ্রীমাই পাহাড় ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বোয়ালখালী ও চন্দনাইশ উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের মহড়া চলছে বলে স্থানীয় দিনমজুর ও কাঠুরিয়ারা জানিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে পটিয়া, বোয়ালখালী, রাঙ্গুনিয়া, দোহাজারি, চন্দনাইশ এলাকার গহিন অরণ্য থেকে এসব সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়েছে।

২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মিনি ট্রাক চালক মোসলেম উদ্দিনকে পূর্ব হাইদগাঁও আলম মাস্টারের প্রজেক্টের পাশ থেকে ১০-১২ জনের কয়েকজন পাহাড়ি সন্ত্রাসী অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যান। ট্রাক চালক চন্দনাইশ উপজেলার পশ্চিম এলাহাবাদ গ্রামের বাসিন্দা। গত ২ বছরেও পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করতে পারেনি। এ সময় অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে তিন লাখ টাকা দাবি করে। এ ঘটনায় অপহৃতের বড় ভাই আবু তাহের বাদী হয়ে পটিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে এই মামলার তদন্তভার যায় পিবিআইয়ের হাতে।

ঘটনার প্রায় দেড় বছর পর চন্দনাইশের ধোপাছড়ি থেকে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পরিমল তঞ্চঙ্গ্যা ও পরিতোষ তঞ্চঙ্গ্যা নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।

তবে পিবিআই দাবি করেছে, এই দুই আসামি গাড়িচালক মোসলেমকে হত্যার পাশাপাশি তাঁর লাশ গুমের ব্যাপারে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এরপরই ওই দুই আসামিকে সঙ্গে নিয়ে গত বছরের ৩১ জুলাই পটিয়ার পূর্ব হাইদগাঁও দুর্গম পাহাড়ের কালামার ছড়ায় অভিযান চালায় পিবিআই। তবে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা খোঁজাখুঁজি করেও সেখানে লাশের কোনো সন্ধান মেলেনি।

দিকে প্রতি বছর মৌসুমে পাহাড়ের পটিয়া সীমান্তে পাহাড়ি সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠে। পাহাড়ের শ্রীমাই, বুদবুদি ছড়া, রাঙ্গুনিয়া কমলছড়ি, ক্রুশিয়া, বেনিপাড়া, ছীপছড়িপাড়া, ডলুছড়ি, এলাকায় প্রায় সময় সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেন। দক্ষিণ শ্রীমাই এলাকার মো. শফি (৪৪) নামের এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে গহিন পাহাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে।

সূত্রে জানা গেছে, রাঙ্গুনিয়া-বান্দরবান সীমান্ত হয়ে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা পটিয়ার পাহাড়ে প্রবেশ করছে। অস্ত্রধারী এসব সন্ত্রাসীরা মানুষকে ধরে নিয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মুক্তিপণ দাবি করছে। কেউ টাকা দিতে না পারলে তাকে মারধর করা হচ্ছে। পাহাড়ে যারা লেবু বাগান করেছে প্রতিটি লেবু বাগানের মালিকের কাছ থেকে সন্ত্রাসীরা টাকা আদায় করছে।

দিনমজুর ও বিভিন্ন শ্রেণির লোকজনকে পাহাড়ে দিয়ে যাচ্ছে সন্ত্রাসীরা। অভিযান চালিয়েও আটক করা যায়নি কাউকেপটিয়া-বোয়ালখালী সীমান্তে পাহাড়ের লেবু বাগান থেকে ৩২ বাগান মালিক ও লেবুচাষিকে অপহরণের শিকার হন। তাঁদের মধ্যে ১১ জনের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হয় বলে জানা গেছে।

গত মঙ্গলবার দুপুরে পটিয়া-বোয়ালখালী সীমান্তের কড়লডেঙ্গা পাহাড়ের ছালদাছড়ির মুখ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মুক্তিপণ আদায় করে মঙ্গলবার রাতে তাদের ছেড়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। অপহৃত সবাই বোয়ালখালী ও পটিয়ার বাসিন্দা।

এ বিষয়ে অপহৃত লেবু বাগানের মালিক সরোয়ার আলম জানান, প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার সকালে তাঁরা কড়লড়েঙ্গা পাহাড়ের লেবু বাগানে কাজ করতে যান। দুপুরের দিকে ১৫-২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী গ্রুপ অস্ত্রের মুখে ৩০-৩৫ জন লেবুচাষি ও বাগান মালিককে জিম্মি করে নিয়ে যায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা পাহাড়ের গহিনে নিয়ে গিয়ে তাঁদের মারধর করে। পরে ২১ জন শ্রমিককে সন্ত্রাসীরা ছেড়ে দিয়ে বাকি ১১ জন বাগান মালিককে আটকে রাখে। ১১ জনের মধ্যে শাহেদ ও আসিফকে বিকেলে ছেড়ে দিয়ে আটকদের পরিবারের কাছে মুক্তিপণের জন্য খবর দেয়। তাঁরা এসে পরিবারের কাছে খবর দিলে পরিবারের লোকজন মুক্তিপণের ব্যবস্থা করে জিম্মিদের ছাড়িয়ে আনেন। বাকি ৯ জনকে গত বুধবার ভোর রাতে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে মুক্তিপণের টাকার পরিমাণ জানা যায়নি।

এদিকে বাগান মালিক ও লেবুচাষিদের ধরে নিয়ে যাওয়ার পর এলাকার লোকজন বিষয়টি পটিয়া থানা-পুলিশকে জানালে তাঁরা খবর পেয়ে বোয়ালখালী ও পটিয়া থানা যৌথ পুলিশের একটি বিশেষ টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে।

পটিয়া কেলিশহরের আহমদ হোসেনের ছেলে বাগান মালিক মো. জাহেদকে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণের জন্য আটকে রাখে। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁকেও মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয়। তবে তারা কত টাকা মুক্তিপণ দিয়েছে তা জানা যায়নি। সন্ত্রাসীরা কয়েকজনকে বেশ মারধর করেছে। এ ঘটনায় লেবুচাষি ও বাগান মালিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এদিকে সোমবার দিনভর পটিয়ার গহিন পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের আস্তানার খোঁজে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অভিযান চালিয়েছে। সকালে র‍্যাব ও পুলিশ উপজেলার কেলিশহর ইউনিয়নের মৌলভীবাজার হয়ে গহিন পাহাড়ে এ অভিযান পরিচালনা করে। একই সময়ে পটিয়া সীমান্তের পার্বত্য চট্টগ্রাম বান্দরবানের সেনাবাহিনীর ডলুপাড়া ক্যাম্পের একটি টিম অভিযান চালায়। তবে খুঁজে পায়নি পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের আস্তানা।

জানা গেছে, পটিয়া, বোয়ালখালী, চন্দনাইশ ও রাঙ্গুনিয়ার পাহাড় নিয়ন্ত্রণ রাখতে দীর্ঘদিন ৩ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সক্রিয়। তারা প্রতিনিয়ত পাহাড়ের বাগান মালিক ও কাজে যাওয়া শ্রমিকদের জিম্মি করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে দুটি চাকমা গ্রুপ ও একটি বিভিন্ন সন্ত্রাসীদের সমন্বয়ে গঠিত সন্ত্রাসী গ্রুপ। তারা জলপাই কালারের পোশাক ও ওয়াকিটকি ব্যবহার করে থাকে।

গত ১২ এপ্রিল পটিয়া উপজেলার কেলিশহর ইউনিয়নের মৌলভীবাজার এলাকার পাহাড় থেকে সন্ত্রাসীরা ১২ জনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে পরে ছেড়ে দিয়েছে। এরপর র‍্যাব, পুলিশ ও সীমান্তের বান্দরবানের ডলুপাড়া ক্যাম্পের সেনাবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে বান্দরবান সীমান্তে নেতৃত্ব দিয়েছেন সেনাবাহিনীর ডলুপাড়া ক্যাম্পের মেজর মোহাম্মদ তাহমিদ ও পটিয়া সীমান্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) কবির আহমদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পটিয়া সার্কেল) তারিক রহমান, র‍্যাব-৭ এর পরিদর্শক নূরে আলম ও পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার।

এ বিষয়ে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম মজুমদার জানান, পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা এলাকার কৃষক ও সাধারণ লোকজনকে অপহরণ এবং মুক্তিপণ আদায়ের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়া গেছে। যার কারণে র‍্যাব, পুলিশ ও পটিয়া সীমান্তের বান্দরবানের ডলু ক্যাম্পের সেনাবাহিনীর টিম একই সময়ে যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করেছে। তবে সন্ত্রাসীদের আস্তানা খুঁজে পাননি। অভিযান চলমান রাখা হবে এবং অপহরণকারীদের অবস্থান জানা গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি সম্মিলিত নারী প্রয়াসের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিজয় দিবস উপলক্ষে ‘সম্মিলিত নারী প্রয়াস’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিজয় দিবস উপলক্ষে ‘সম্মিলিত নারী প্রয়াস’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের পাশাপাশি ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সব দলের জন্য সমান প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) তৈরির দাবি জানিয়েছেন সম্মিলিত নারী প্রয়াস সংগঠনের সভানেত্রী এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামীমা তাসনিম।

আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘নতুন বাংলাদেশ, চাই সুষ্ঠু নির্বাচন, চাই যোগ্য নেতৃত্ব’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকের আয়োজন করে সম্মিলিত নারী প্রয়াস।

সরকারের কাছে দাবি তুলে শামীমা তাসনিম বলেন, ‘সব দলের রাজনৈতিক সুযোগ রেখে সমান প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেটাকে আমরা বলছি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড। সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের নিরাপত্তা দিতে হবে এবং সেটি ভয়ভীতি যেন না দেখানো হয়। মানে ভোট দিতে যে আমি যাব, যেন সুস্থ অবস্থায় ফেরত আসতে পারি।’

অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছ নির্বাচনের কথা বলতে গিয়ে ড. শামীমা তাসনিম বলেন, বাংলাদেশে অতীতে যে দলই ক্ষমতায় এসেছে, তারা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো ব্যবহার করেছে। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে আমলা নিয়োগ এবং পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে দলীয় আনুগত্যকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। অতীতে ছাত্রলীগের কর্মীদের নিয়োগের বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি।

কথায় ও কাজে সৎ এবং জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন, যিনি দুর্নীতি করবেন না এবং দুর্নীতির প্রশ্রয় দেবেন না, যিনি বাংলাদেশকে একমাত্র স্থায়ী ঠিকানা মনে করবেন এবং বিদেশে কোনো ‘সেকেন্ড হোম’ রাখবেন না, আধিপত্যবিরোধী হবেন—এমন নেতৃত্ব আনার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

সম্মিলিত নারী প্রয়াস সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার নিয়ামা ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সংগঠনটির সেক্রেটারি ড. ফেরদৌস আরা খানম, সহকারী সম্পাদক মাহসিনা মমতাজ মারিয়া, লেকচারার ড. জেবুন্নেসা, ড. মেহের আফরোজ লুৎফা, জান্নাতুন নাইম প্রমি প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিক্ষক নেটওয়ার্ক বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি: রাকসু জিএস আম্মার

রাবি প্রতিনিধি  
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ৩০
রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মার। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) শিক্ষক নেটওয়ার্কের ‘ক্যাম্পাসে ছাত্র প্রতিনিধিদের এখতিয়ারবহির্ভূত তৎপরতা বন্ধ হোক’ শিরোনামে দেওয়া বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় এই আহ্বান জানান তিনি।

শিক্ষক নেটওয়ার্কের ফেসবুক পেজে দেওয়া ওই বিবৃতির মন্তব্যে আম্মার লেখেন, ‘শিক্ষক নেটওয়ার্ক বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি’।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘আমি কমেন্ট করেছি, ডিলিট করি নাই। তাঁরা (শিক্ষক নেটওয়ার্ক) আমার কাজকে যদি অপতৎপরতা হিসেবে দেখের, তাহলে আমিও তাঁদের বিবৃতি সন্দেহের চোখে দেখি। তাঁরা আমাকে একটি আহ্বান জানিয়েছেন, আমিও তাঁদের আহ্বান জানিয়েছি। তাঁরা এটাকে স্বাধীনতা হিসেবে দেখলে, আমিও আমার স্বাধীনতা প্রকাশ করছি।’

শিক্ষক নেটওয়ার্কের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মারের নেতৃত্বে নানা ধরনের মবপ্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। ডিনদের পদত্যাগ করানো, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের হয়রানি তৎপরতা চলমান আছে। রাকসুর জিএস প্রশাসনের কাছে জবাবদিহি না চেয়ে বরং ছয়জন ডিনের পদত্যাগ দাবি করেন। কেবল তা-ই নয়, নিজেই যেন “প্রশাসন” হয়ে অত্যন্ত ঔদ্ধত্যপূর্ণ ভাষায় ডিনদের বিরুদ্ধে হুমকি দেন, এমনকি এখতিয়ারবহির্ভূতভাবে নিজে পদত্যাগপত্র লিখে এনে বিভিন্ন বিভাগে গিয়ে ডিনদের খুঁজতে থাকেন, সম্ভবত লাঞ্ছিত করার উদ্দেশ্যে। মোট ১২ জন ডিনের প্রত্যেকেই গত আওয়ামী শাসনামলে নির্বাচিত হলেও, বাকি ছয়জন হয়তো রাকসু জিএসের বিবেচনায় “রাজনৈতিক বিবেচনায় উত্তীর্ণ”, ফলে তাঁদের পদত্যাগের দাবি ওঠেনি, তাঁদের নিয়ে অবমাননাকর কিছু বলাও হয়নি। এই উদ্ভূত অসম্মানজনক পরিস্থিতিতে “প্রগতিশীল শিক্ষক” হিসেবে পরিচিত ছয়জন ডিন দায়িত্ব পালতে অপারগতা প্রকাশ করেন।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে রাকসুর জিএস ভব্যতার সব সীমা ছাড়িয়ে বারবার ঘোষণা করতে থাকেন, লীগপন্থী শিক্ষকেরা ক্যাম্পাসে ঢুকলে কলার ধরে টেনে এনে প্রশাসন ভবনের সামনে বেঁধে রাখা হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যা করছেন, তা রাকসুর এখতিয়ারবহির্ভূত এবং তাঁদের আচরণও আগ্রাসী ও সন্ত্রাসীদের মতো। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমরা এর জবাবদিহি প্রত্যাশা করি। কেননা, রাকসুর নেতৃবৃন্দের এ রকম আচরণ কেবল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করেনি; এটা সরাসরি বিদ্যায়তনিক স্বাধীনতার ওপরে হামলা। এর “স্পাইরাল ইফেক্ট” পড়েছে সারা দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।’

সার্বিক বিষয়ে রাবির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও শিক্ষক নেটওয়ার্কের সদস্য সৌভিক রেজা বলেন, ‘শিক্ষক নেটওয়ার্ক ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে। যদি ভিন্ন মতাদর্শের হওয়ার কারণে চাকরি চলে যেত বা পদচ্যুত করানো হতো তাহলে তো শিক্ষক নেটওয়ার্কের অনেকেরই আওয়ামী আমলে চাকরি চলে যেত। ৭৩-এর অধ্যাদেশ আমাদেরকে একটা রক্ষাকবজ দিয়েছে, যে কারণে আমরা শিক্ষকেরা সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার পরও আমাদের চাকরি চলে যায়নি।’

সৌভিক রেজা আরও বলেন, ‘ভিন্ন মতাদর্শের শিক্ষক কর্মকর্তাদের গাছে বেঁধে রাখা, চাকরিচ্যুত কিংবা জোরপূর্বক পদত্যাগ করানো একজন শিক্ষার্থীর এখতিয়ারের বাইরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও এ ক্ষমতা রাখেন না। তবে শিক্ষকেরা কিন্তু আইনের ঊর্ধ্বে নন। আইনানুযায়ী তাঁদের শাস্তি দেওয়া যেতে পারে, তবে মব সৃষ্টি করে নয়। কেউ যদি সরাসরি হামলা বা দালালি করে থাকেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু একজন নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধি এভাবে কাউকে পদত্যাগে বাধ্য করতে পারেন না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাতক্ষীরায় জেলা আ.লীগ নেতার মনোনয়নপত্র জমা, সমর্থক আটক

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
এস এম মুজিবর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
এস এম মুজিবর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরার চারটি সংসদীয় আসনে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ.লীগ নেতাসহ ২৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। আজ সোমবার জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিজ নিজ মনোনয়নপত্র জমা দেন তাঁরা।

সাতক্ষীরা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সাতক্ষীরা-১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপির হাবিবুল ইসলাম হাবিব, জামায়াতের মো. ইজ্জতুল্লাহ, জাতীয় পার্টির জিয়াউর রহমান ও ইসলামী আন্দোলনের শেখ মো. রেজাউল করিম ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. ইয়ারুল ইসলাম।

আর কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক এস এম মুজিবর রহমান ওরফে সরদার মুজিব স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। পরে তাঁর পক্ষে মনোনয়ন জমা দেওয়ার অভিযোগে মাগফুর রহমান নামের এক সমর্থককে আটক করেছে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন জানান, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষে মনোনয়ন জমা দেওয়ার অভিযোগে মাগফুর রহমান নামের এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে আটক করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা-২ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জামায়াতের মুহাম্মদ আব্দুল খালেক, বিএনপির মো. আব্দুর রউফ, জাতীয় পার্টির মো. আশরাফুজ্জামান ও মাতলুব হোসেন।

এ ছাড়া এলডিপির শফিকুল ইসলাম শাহেদ, ইসলামী আন্দোলনের মুফতি রবিউল ইসলাম, বাংলাদেশ জাসদের মো. ইদ্রিস আলী ও এবি পার্টির জিএম সালাউদ্দীন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

সাতক্ষীরা-৩ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জামায়াতের মুহা. রবিউল ইসলাম, বিএনপির কাজী আলাউদ্দীন ও জাতীয় পার্টির মো. আলিপ হোসেন।

এ ছাড়া মাইনরিটি জনতা পার্টির রুবেল হোসেন, ইসলামী আন্দোলনের ওয়েজ কুরনী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এম এ আসফউদ্দৌলা খান, আসলাম আল মেহেদী ও ডা. শহিদুল আলম (বিএনপির বিদ্রোহী) মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

সাতক্ষীরা-৪ আসনে জামায়াতের গাজী নজরুল ইসলাম, বিএনপির মো. মনিরুজ্জামান ও জাতীয় পার্টির হুসেইন মো. মায়াজ, গণঅধিকার পরিষদের এইচ এম গোলাম রেজা, ইসলামী আন্দোলনের মোস্তফা আল মামুন ও আব্দুল ওয়াহেদ (বিএনপির বিদ্রোহী) প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোলায় বিজেপি কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর

ভোলা প্রতিনিধি
ভোলায় বিজেপি কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভোলায় বিজেপি কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে সোমবার বিকেলে ভোলায় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছুড়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।

বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শহরের নতুন বাজার এলাকায় জেলা বিজেপি অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে ছাত্রদলের নেতা সিফাত হত্যার প্রতিবাদ মিছিলে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আল আমিন অভিযোগ করেন, মিছিলটি নতুন বাজার এলাকায় বিজেপি অফিসের সামনে পৌঁছালে সেখান থেকে মিছিল লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হলে বিক্ষুব্ধ জনতা বিজেপি অফিসে হামলা চালায়।

বিজেপির অঙ্গ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক পার্টির জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সামছুল আলম অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাঁদের দলীয় অফিস বন্ধ ছিল। বিজেপির জনসমর্থনে ঈর্ষান্বিত হয়ে বিএনপি পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছে।

ভোলা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে বিজেপি অফিসে হামলা কিংবা কোনো ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে কি না তা আমাদের জানা নেই।’ তিনি আরও জানান, কে বা কারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, সেটা এখনো পুলিশ নিশ্চিত হতে পারেনি।

ভোলার জেলা প্রশাসক ডা. শামীম রহমান রাতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন সামনে রেখে যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন তৎপর রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত