Ajker Patrika

তিন ফসলি জমিতে স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রস্তাব, ক্ষুব্ধ কৃষক

চাঁদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৪, ১৪: ০৭
তিন ফসলি জমিতে স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রস্তাব, ক্ষুব্ধ কৃষক

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলায় খাসজমি থাকলেও তিন ফসলি জমিতে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করার প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন কৃষক ও এলাকাবাসী। কৃষকেরা ইতিমধ্যে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে ফসলি জমি রক্ষার জন্য স্মারকলিপি দিয়েছেন। 

উপজেলার আলগী দুর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের উত্তর আলগী গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, প্রস্তাবিত ফসলি মাঠে অনেক কৃষক কাজ করছেন। সেচ প্রকল্পের অভ্যন্তরে হওয়ার কারণে বছরে খুব সহজেই এসব জমিতে একাধিক ফসল উৎপাদন হয়। 

উত্তর আলগী গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে স্টেডিয়াম হলে আমাদের ক্ষতি হবে। কারণ এই জমিগুলোতে তিন ফসল উৎপাদন হয়। আমাদের ফসল উৎপাদন করেই চলতে হয়। আমরা চাই সরকার মিনি স্টেডিয়াম করুক। তবে ফসলি জমিতে নয়, যেখানে পরিত্যক্ত জমি আছে সেখানে করা হোক।’ 

কৃষক মকসুদ মিয়া বলেন, ‘আমাদের এই মাঠে অনেকে নিজের জমির সঙ্গে অন্যের জমি ইজারা নিয়ে ফসল উৎপাদন করে। এখানে স্টেডিয়াম হলে কী করে খাবে? আমরা এই স্থানে স্টেডিয়াম চাই না।’ 

ওই মাঠে কয়েক একর জমি আছে শহীদ গাজীর। তিনি বলেন, ‘এই মাঠের রাস্তার পাশের জমি প্রতি শতাংশ বিক্রি করি ৫ লাখ টাকা করে। এখানে মিনি স্টেডিয়াম হলে আমরা সঠিক মূল্য পাব না এবং ফসল উৎপাদন বন্ধ হবে। আমাদের স্টেডিয়ামের প্রয়োজন নাই।’ 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২২ সালে হাইমচর উপজেলার লামচরি গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) খাসজমিতে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়। ওই সময় পাউবোকে বিষয়টি না জানানোয় প্রস্তাবটি বাতিল যায়। এরপর আলগী দুর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত উত্তর আলগী মৌজায় প্রায় সাড়ে ৩ দশমিক ১৯০০ একর পতিত নাল জমি দেখিয়ে স্টেডিয়ামের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়। অথচ এই তিন ফসলি মাঠই উপজেলার সবচেয়ে বড়। কৃষকেরা তাঁদের জমিতে স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের পর বালু দিয়ে ভরাটের খবর পেয়েই ফুসে ওঠেন। 

ওই গ্রামের যুবক রাব্বি বলেন, ‘এই মাঠের জমিগুলো তিন ফসলি। হাইমচরে অনেক জমি আছে, যেখানে এক ফসল হয়। সেখানে অথবা অপ্রয়োজনীয় অনেক জমি আছে, সেখানে স্টেডিয়াম করা হোক। আমরা স্টেডিয়ামের বিপক্ষে না। উন্নয়নের পক্ষে। কারণ এটি হলে খেলাধুলা বাড়বে।’ 

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আল-আমিন বলেন, ‘এলাকার সব প্রান্তিক কৃষকের পক্ষে আমি গত ২৩ মে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করি। সেখানে ফসলি জমিতে প্রস্তাবিত শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম না করার দাবি জানাই। কারণ তিন ফসলি জমিতে এটি হলে কৃষকেরা ভূমিহীন হয়ে পড়বেন। আমরা তখন জেলা প্রশাসককে উপজেলার চরভাঙ্গা মৌজায় স্টেডিয়াম করার জন্য মতামত দেই।’ 

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, ‘কৃষকেরা যেখানে আপত্তি জানাচ্ছে, সেখানে না করে আমাদের ইউনিয়নের লামচরিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি আছে। সেখানেও করা যেতে পারে, যদি কারও আপত্তি না থাকে।’ 

তবে এ বিষয়ে ভিন্ন মতামত দিলেন হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ‘যেখানে আমরা স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছি, সেখানে কোনো কৃষকের ক্ষতি হবে না। বরং এলাকার উন্নয়ন হবে। এ ছাড়া ভালো কাজ করতে গেলে সামান্য কিছু মানুষের ক্ষতি হলেও উপজেলার আড়াই লাখ মানুষের উপকার হবে।’ 

হাইমচর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিরুপম মজুমদার বলেন, ‘উপজেলায় যেখানে মিনি স্টেডিয়াম করার প্রস্তাব হয়েছে, সেখানকার কৃষকেরা আমাদের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করে দিয়েছেন। ওই কমিটি রিপোর্ট দিলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় শ্রমিক শক্তি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় জামায়াত সেক্রেটারির উদ্বেগ

খুলনা প্রতিনিধি
জাতীয় শ্রমিক শক্তির বিভাগীয় কমিটির প্রতিনিধি মো. মোতালেব শিকদার (৪০)। ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় শ্রমিক শক্তির বিভাগীয় কমিটির প্রতিনিধি মো. মোতালেব শিকদার (৪০)। ছবি: সংগৃহীত

খুলনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠন জাতীয় শ্রমিক শক্তির বিভাগীয় কমিটির আহ্বায়ক মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।

আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি—অবিলম্বে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দোষীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে হবে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ জরুরিভাবে পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।’

বিবৃতিতে গোলাম পরওয়ার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সব প্রার্থী, দলীয় কর্মী ও সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তায় কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

এদিকে অনুরূপ বিবৃতি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান এবং সেক্রেটারি কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় গুলিবিদ্ধ এনসিপি নেতা শঙ্কামুক্ত

খুলনা প্রতিনিধি
জাতীয় শ্রমিক শক্তির বিভাগীয় কমিটির প্রতিনিধি মো. মোতালেব শিকদার (৪০)। ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় শ্রমিক শক্তির বিভাগীয় কমিটির প্রতিনিধি মো. মোতালেব শিকদার (৪০)। ছবি: সংগৃহীত

খুলনায় গুলিবিদ্ধ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সহযোগী সংগঠন জাতীয় শ্রমিক শক্তির বিভাগীয় কমিটির প্রতিনিধি মো. মোতালেব শিকদার শঙ্কামুক্ত। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন গুলিটি তার বাম কানের চামড়া ভেদ করে বের হয়ে গেছে। মাথায় গুলির কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। আহত মোতালেব শঙ্কা মুক্ত।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে নগরীর সোনাডাঙ্গা বেসরকারি গাজী মেডিকেলের সামনে তাঁকে গুলি করা হয়।

কেএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মাদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, আজ সোমবার সকালে আমরা তথ্য পেয়েছি এনসিপির একজন গাজী মেডিকেলের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সত্যতা যাচাই কারার জন্য ঘটনাস্থলে আসি। ঘটনাস্থল এবং সাক্ষী খুঁজে পাচ্ছিলাম না। পরে এনসিপির ভিকটিমের প্রাইভেট কার পড়ে থাকতে দেখতে পেয়ে সন্দেহ হয় আশেপাশে কোথাও হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তখন লাজফার্মা থেকে আমরা একটি ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করি। রাত সাড়ে ১২ টার দিকে ভিকটিমসহ আরও দুইজন এখানে আসে এবং কোথায়ও অবস্থান করে। সেই তথ্য পর্যবেক্ষণ করে আমরা এখানে আসি। তখন মুক্তা হাউসের নীচ তলার একটি কক্ষ থেকে আমরা মাদকের বিভিন্ন উপকরণ উদ্ধার করি। এখানে মেয়েদেরকে নিয়ে এসে ফূর্তি করা হতো বলে আমরা জানতে পারি।

কেএমপির উপপুলিশ কমিশনার তাজুল বলেন, গতকাল রোববার দিবাগত রাতে মোতালেব শিকদার এখানে এসেছিল এবং এখানে বিভিন্ন ধরণের অসমাজিক কার্যকালাপে লিপ্ত হন। তাদের নিজেদের মধ্যে কোন্দলের কারণে এই গুলির ঘটনা ঘটেছে, যেটা আমরা প্রাথমিক তদন্তে পেয়েছি। এর সঙ্গে আরও অনেকই জাড়িত আছে। মোতালেবকে জিজ্ঞাসা করলে আমরা বাকিদের নাম জানতে পারব। যারা জড়িত আছেন তাদের খুব শিগগিরই আইনের আওতায় আনতে পারব। গুলিটি তার কানের চামড়া ভেদ করে বের হয়ে গেছে। মোতালেব এখন শঙ্কামুক্ত।

জানতে চাইলে মজিদ স্বরণী রোডের মুক্তা হাউজের মালিকের স্ত্রী আশরাফুন্নাহার বলেন, স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তন্বী নামে এক তরুণী একমাস (ডিসেম্বরের ১ তারিখ) আগে নীচের ফ্লোরটি ভাড়া নেয়। সে নিজেকে এনজিও কর্মী হিসেবে দাবি করে প্রায় সময় বাড়ির বাইরে থাকত। তার কক্ষে একাধিক পুরুষের আসা-যাওয়া ছিল। পরে অন্যদের মাধ্যমে তার অসমাজিক কার্যকালাপের বিষয়টি জানতে পেরে এক মাসে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ প্রদান করি। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে ছেলের ওপর গুলির ঘটনা জানতে পেরে হাসপাতালে ছুটে যান মোতালেবের মা রাবেয়া বেগম, স্ত্রী ফাহিমা আক্তার ও তিন বছরের কন্যা সন্তান। সেখানে তারা এ প্রতিবেদককে বলেন, গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তার সঙ্গে সর্বশেষ মোবাইলে কথা হয়। মোতালেব তাদেরকে জানায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের একজন কর্মী আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার সার্বিক খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছি।

এরপর ডাক বাংলো মোড়ে স্যান্ডেল কেনার জন্য যাব। এ কথা বলে মোতালেব ফোন কেটে দেয়। রাতে আর কোনো কথা হয়নি তার সঙ্গে। বেলা ১১ টার দিকে একজন ফোন করে জানায় মোতালেবকে গুলি করা হয়েছে। তারা আরও জানান, জাতীয় নাগরিক পার্টিতে যোগ দেওয়ার কারণে প্রতিপক্ষ তাকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা চালায়।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপালে উপস্থিত এনসিপি খুলনা মহানগর সংগঠক আহম্মেদ হামীম রাহাত বলেন, সোনাডাঙ্গা এলাকায় মোতালেব সিকদারকে গুলি করা হয়েছে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, খুলনা সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। বিগত দিনে খুলনায় অহরহ গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। আর এই সবগুলো সন্ত্রাসী গ্রুপই আওয়ামী নেতাদের আশীর্বাদপুষ্ট। নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী নেতাদের মদদেই সন্ত্রাসীরা খুলনাকে অশান্ত করার মিশনে নেমেছে। অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

এনসিপির খুলনা জেলা প্রধান সমন্বয়কারী মাফুজুল হাসান ফয়জুল্লাহ এ ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগকে সরাসরি দায়ি করে বলেন, মোতালেব হাসপাতালের সামনে গাড়ি থেকে নামার পর তাকে টেনে হিঁচড়ে একটি চায়ের দোকানে নিয়ে মারধর করার পর গুলি করা হয়। তবে তার এ বক্তব্যের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক হারুন অর রশিদ বলেন, গুলিটি তার বাম কানের চামড়া ভেদ করে বের হয়ে গেছে। খুলনা সিটি ইমেজিং সেন্টারে তার মাথার স্ক্যান করা হয়েছে। সেখানে মাতায় গুলির কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। আহত মোতালেব মিয়া এখন শঙ্কা মুক্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজনীতিতে পরস্পরের বিরুদ্ধে গালাগালিতে শত্রুরা উপকৃত হয়: ড. মাহবুব উল্লাহ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পিআইবি মিলনায়তনে বক্তব্য দেন ড. মাহবুব উল্লাহ। ছবি: আজকের পত্রিকা
পিআইবি মিলনায়তনে বক্তব্য দেন ড. মাহবুব উল্লাহ। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজনীতিতে পরস্পরের বিরুদ্ধে হানাহানি ও গালমন্দে লিপ্ত হওয়ায় শত্রুরা উপকৃত হয় বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে পিআইবি মিলনায়তনে ‘প্রকাশনা উৎসব’ অনুষ্ঠানে সভাপ্রধানের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে। তিনটি পুনঃপ্রকাশনার বই হলো—‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়নে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান’, ‘প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের উন্নয়ন উদ্যোগ’ ও ‘ফারাক্কা চুক্তি স্বাক্ষরে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ভূমিকা’।

মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘আমরা যে পরস্পরের বিরুদ্ধে হানাহানিতে লিপ্ত হই, একে অপরের বিরুদ্ধে অকথ্য ভাষায় সোশ্যাল মিডিয়ায় গালাগালি করি, গালমন্দ করি; রাজনীতির চেয়ে সেখানে হিংসা-ঘৃণা আরও অনেক বেশি প্রবল হয়ে ওঠে। এর ফলে আমাদের জাতীয় ঐক্যের চেয়ে কত বড় ক্ষতি হয়, সেটা আমরা বুঝতে পারছি। আমাদের যারা শত্রু, তারা যে কতভাবে উপকৃত হয়, সেটা বোঝার ক্ষমতাও আমাদের নেই।’

জুলাই অভ্যুত্থানের পর শত্রুকে মোকাবিলা করার জন্য ঐক্য দরকার—মন্তব্য করে ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘আজকে জুলাই অভ্যুত্থানের পর যেখানে আমাদের শত্রুরা আরও সক্রিয়, সেই শত্রুকে মোকাবিলা করতে আমাদের যেটা প্রয়োজন—ঐক্য, সহিষ্ণুতা, পরমতকে শ্রদ্ধা করা এবং আমাদের যেটা প্রয়োজন, যারা সৈনিক এই লড়াইয়ের, তাদের মধ্যে পারস্পরিক সহমর্মিতা। আজ সেই সহমর্মিতা যেন হারিয়ে গেছে।’

মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘হাদির মৃত্যুর মধ্য দিয়ে, শাহাদাতের মধ্য দিয়ে যে বিশাল সমাবেশ হয়েছে, তার মেসেজটা তোমরা বিভক্ত হয়ো না। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, আমাদের প্রতিজ্ঞা হবে, আমাদের শত্রুর সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে, সীমাবদ্ধ করে আনতে হবে। আর আমাদের ঐক্যকে বিশালভাবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে আমরা সেই সীমিত শত্রুর বিরুদ্ধে জয় লাভ করতে পারি। সেটাই আমাদের রণকৌশল হওয়া উচিত, সেই রণকৌশল যাতে আমরা গ্রহণ করি।’

প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আলোচক হিসেবে ছিলেন ইতিহাসবিদ ড. আহমেদ কামাল, দৈনিক দিনকাল ডিজিটালের নির্বাহী সম্পাদক আতিকুর রহমান রুমন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ, সাংবাদিক এহ্সান মাহমুদ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় ১৫ জন কারাগারে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ১২
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দৈনিক ‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার ১৫ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানা তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

যাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে তাঁরা হলেন— মো. নাইম ইসলাম (২৫), মো. সাগর ইসলাম (৩৭), মো. আহাদ শেখ (২০), মো. বিপ্লব (২০), মো. নজরুল ইসলাম ওরফে মিনহাজ (২০), মো. জাহাঙ্গীর (২৮), মো. সোহেল মিয়া (২৫), মো. হাসান (২২), মো. রাসেল (২৬), মো. আব্দুল বারেক শেখ ওরফে আলামিন (৩১), মো. রাশেদুল ইসলাম (২৫), মো. সাইদুর রহমান (২৫), আবুল কাশেম (৩৩), মো. প্রাপ্ত সিকদার (২১) ও মো. রাজু আহমেদ (৩৩)।

সন্ধ্যার আগে তাঁদের আদালতে হাজির করে তেজগাঁও থানা-পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। কয়েকজন আসামির পক্ষে আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে যাদের জামিনের আবেদন করা হয়েছিল তাঁদের জামিন নামঞ্জুর করেন ও প্রত্যেককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

ঢাকা মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী ১৫ জনকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গত ১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাতে একদল সন্ত্রাসী রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার কার্যালয়ে নজিরবিহীন তাণ্ডব চালায়। সন্ত্রাসীরা কার্যালয় দুটিতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর পর আগুন ধরিয়ে দেয়।

প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় ইতিমধ্যেই রাজধানীর তেজগাঁও থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাতে অজ্ঞাতনামা ৩৫০ থেকে ৪৫০ জনকে আসামি করে এই মামলাটি করা হয়। মামলায় সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের বিভিন্ন ধারা যুক্ত করা হয়েছে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, প্রথম আলোতে হামলাকারী ব্যক্তিগণ হত্যার উদ্দেশ্যে প্রথম আলো আগুন ধরিয়ে দেয়, ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে, ব্যাপক ভাঙচুর করে লুটপাট করে, মূল্যবান বিভিন্ন জিনিসপত্র নষ্ট করে। এতে প্রথম আলোর ৩২ কোটি টাকা ক্ষতি হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত